বৈদেশিক সহায়তা

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

বৈদেশিক সহায়তা

ভূমিকা

বৈদেশিক সহায়তা হলো একটি রাষ্ট্র কর্তৃক অন্য রাষ্ট্রকে প্রদত্ত আর্থিক, বস্তুগত বা কারিগরি সাহায্য। এই সহায়তা সাধারণত অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানবিক সহায়তা, বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য প্রদান করা হয়। বৈদেশিক সহায়তা বিভিন্ন রূপে হতে পারে, যেমন - অনুদান, ঋণ, কারিগরি সহায়তা, খাদ্য সাহায্য, এবং সামরিক সহায়তা। এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতে এর significant প্রভাব রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

বৈদেশিক সহায়তার প্রকারভেদ

বৈদেশিক সহায়তাকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়। নিচে কয়েকটি প্রধান প্রকার আলোচনা করা হলো:

  • আর্থিক সহায়তা (Financial Aid):* এটি বৈদেশিক সহায়তার সবচেয়ে সাধারণ রূপ। এর মধ্যে অনুদান (grants) এবং ঋণ (loans) অন্তর্ভুক্ত। অনুদান হলো ফেরত দিতে হয় না এমন অর্থ, যা সাধারণত মানবিক সহায়তা বা নির্দিষ্ট উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য দেওয়া হয়। ঋণ হলো নির্দিষ্ট শর্তে ফেরত দিতে হয় এমন অর্থ, যা সাধারণত অবকাঠামো উন্নয়ন বা অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য দেওয়া হয়। অর্থায়ন
  • বস্তুগত সহায়তা (Material Aid):* এই সহায়তার মধ্যে খাদ্য, ঔষধ, বস্ত্র, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী অন্তর্ভুক্ত। এটি সাধারণত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মানবিক সংকটের সময় প্রদান করা হয়। মানবিক সহায়তা
  • কারিগরি সহায়তা (Technical Assistance):* এই সহায়তার মধ্যে প্রযুক্তিগত জ্ঞান, দক্ষতা, এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এটি উন্নয়নশীল দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে সহায়ক। প্রযুক্তি
  • সামরিক সহায়তা (Military Aid):* এই সহায়তার মধ্যে অস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম, এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এটি সাধারণত রাজনৈতিক মিত্রদের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য দেওয়া হয়। সামরিক বিজ্ঞান
  • খাদ্য সহায়তা (Food Aid):* খাদ্য ঘাটতিপূর্ণ দেশগুলোকে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এটি দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক। খাদ্য নিরাপত্তা
বৈদেশিক সহায়তার প্রকারভেদ
প্রকার বিবরণ উদাহরণ
আর্থিক সহায়তা অনুদান ও ঋণ আকারে প্রদান করা হয় উন্নয়ন প্রকল্প, অর্থনৈতিক সংস্কার
বস্তুগত সহায়তা খাদ্য, ঔষধ, বস্ত্র সরবরাহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মানবিক সংকট
কারিগরি সহায়তা প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ প্রদান মানবসম্পদ উন্নয়ন
সামরিক সহায়তা অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ রাজনৈতিক মিত্রদের নিরাপত্তা
খাদ্য সহায়তা খাদ্য ঘাটতিপূর্ণ দেশে খাদ্য সরবরাহ দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা

বৈদেশিক সহায়তার উৎস

বৈদেশিক সহায়তা বিভিন্ন উৎস থেকে আসতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি প্রধান উৎস নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • দ্বিপাক্ষিক সহায়তা (Bilateral Aid):* এই সহায়তা একটি দেশ সরাসরি অন্য দেশকে প্রদান করে। যেমন - যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ-কে সহায়তা প্রদান। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি
বৈদেশিক সহায়তার উৎস
উৎস বিবরণ উদাহরণ
দ্বিপাক্ষিক সহায়তা একটি দেশ থেকে সরাসরি অন্য দেশে সহায়তা যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে সহায়তা
বহুপাক্ষিক সহায়তা আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে সহায়তা বিশ্বব্যাংকের ঋণ
বেসরকারি সংস্থা NGO-এর মাধ্যমে সহায়তা ব্র্যাকের উন্নয়ন কার্যক্রম

বৈদেশিক সহায়তার উদ্দেশ্য

বৈদেশিক সহায়তার প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হলো:

  • দারিদ্র্য হ্রাস (Poverty Reduction):* উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দারিদ্র্য কমাতে সহায়তা করা। দারিদ্র্য
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন (Education & Health Sector Development):* শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন করা। শিক্ষা , স্বাস্থ্য
  • সুশাসন প্রতিষ্ঠা (Good Governance):* সুশাসন, গণতন্ত্র, এবং মানবাধিকারের উন্নতিতে সহায়তা করা। সুশাসন
  • মানবিক সহায়তা প্রদান (Humanitarian Assistance):* প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সংঘাতের শিকার হওয়া মানুষদের সহায়তা করা। মানবাধিকার
  • ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ (Geo-Political Interests):* সহায়তাকারী দেশের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করা। ভূ-রাজনীতি

বৈদেশিক সহায়তার প্রভাব

বৈদেশিক সহায়তার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটো প্রভাবই রয়েছে।

  • ইতিবাচক প্রভাব (Positive Impacts):*
   * অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।
   * দারিদ্র্য হ্রাস পায়।
   * শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন হয়।
   * অবকাঠামো উন্নত হয়।
   * প্রযুক্তিগত জ্ঞান বৃদ্ধি পায়।
   * মানবসম্পদ উন্নয়ন হয়।
   উন্নয়ন অর্থনীতি
  • নেতিবাচক প্রভাব (Negative Impacts):*
   * সহায়তার উপর নির্ভরশীলতা সৃষ্টি হতে পারে।
   * দুর্নীতি বৃদ্ধি পেতে পারে।
   * সহায়তার শর্তাবলী সহায়তাকারী দেশের স্বার্থে অনুকূল হতে পারে।
   * স্থানীয় অর্থনীতির ক্ষতি হতে পারে।
   * রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা থাকে।
   দুর্নীতি

বৈদেশিক সহায়তার কার্যকারিতা মূল্যায়ন

বৈদেশিক সহায়তার কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা একটি জটিল বিষয়। সহায়তার প্রভাব বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে, যেমন - সহায়তার পরিমাণ, সহায়তার ধরন, সহায়তাকারী দেশের নীতি, এবং গ্রহণকারী দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। সহায়তার কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে:

  • প্রভাব মূল্যায়ন (Impact Evaluation):* সহায়তার ফলে কী ধরনের পরিবর্তন হয়েছে, তা মূল্যায়ন করা।
  • খরচ-সুবিধা বিশ্লেষণ (Cost-Benefit Analysis):* সহায়তার খরচ এবং এর থেকে প্রাপ্ত সুবিধাগুলোর মধ্যে তুলনা করা।
  • দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা (Accountability & Transparency):* সহায়তার ব্যবহার এবং ফলাফল সম্পর্কে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
  • স্থানীয় মালিকানা (Local Ownership):* স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্ব নিশ্চিত করা।
   পরিকল্পনা মূল্যায়ন

বৈদেশিক সহায়তার বিকল্প

বৈদেশিক সহায়তার বিকল্প হিসেবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে:

  • বেসরকারি বিনিয়োগ (Private Investment):* বেসরকারি খাত থেকে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা। বিনিয়োগ
  • বাণিজ্য (Trade):* মুক্ত বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
  • অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ (Domestic Resource Mobilization):* কর ব্যবস্থার সংস্কার এবং রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করা। রাজস্ব
  • দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা (South-South Cooperation):* উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। উন্নয়নশীল দেশ
  • রেমিটেন্স (Remittance):* প্রবাসী কর্মীদের পাঠানো অর্থ ব্যবহার করা। রেমিটেন্স

বর্তমান প্রেক্ষাপট

বর্তমানে, বৈদেশিক সহায়তার ধরণে পরিবর্তন আসছে। ঐতিহ্যবাহী অনুদান এবং ঋণের পাশাপাশি, নতুন ধরনের সহায়তা, যেমন - মিশ্র অর্থায়ন (blended finance) এবং উদ্ভাবনী অর্থায়ন (innovative finance) জনপ্রিয় হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, জলবায়ু পরিবর্তন, মহামারী, এবং মহামারী -এর মতো নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বৈদেশিক সহায়তার গুরুত্ব আরও বাড়ছে। টেকসই উন্নয়ন

কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা

  • USAID (United States Agency for International Development)
  • DFID (Department for International Development - UK)
  • JICA (Japan International Cooperation Agency)
  • GIZ (Deutsche Gesellschaft für Internationale Zusammenarbeit)
  • CIDA (Canadian International Development Agency)

উপসংহার

বৈদেশিক সহায়তা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হতে পারে, যদি তা সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়। সহায়তার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করার জন্য, সহায়তাকারী এবং গ্রহণকারী উভয় দেশেরই সমন্বিত উদ্যোগ এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিকল্প উৎসগুলোর উপর জোর দেওয়া এবং স্থানীয় মালিকানা বৃদ্ধি করাও জরুরি।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা উন্নয়ন পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক অর্থনীতি রাজনৈতিক অর্থনীতি বৈশ্বিক শাসন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা দারিদ্র্য বিমোচন কৌশল মানব উন্নয়ন সূচক জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি বিশ্বব্যাংকের ভূমিকা আইএমএফ এর ঋণ আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রভাব বাণিজ্য উদারীকরণ অর্থনৈতিক আঞ্চলিকতা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি বাংলাদেশের অর্থনীতি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৈদেশিক ঋণ বৈদেশিক বাণিজ্য চুক্তি

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер