জেফ বেজোস

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

জেফ বেজোস: জীবন, কর্ম এবং বিনিয়োগ কৌশল

ভূমিকা জেফ বেজোস একজন আমেরিকান উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী এবং দানশীল। তিনি আমাজন-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান। বেজোসকে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার কর্মজীবন, উদ্ভাবনী চিন্তা এবং বিনিয়োগ কৌশলগুলি বহু মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। এই নিবন্ধে, জেফ বেজোসের জীবন, কর্ম এবং বিনিয়োগের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হলো।

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা জেফ বেজোস ১৯64 সালের ১২ই জানুয়ারি নিউ মেক্সিকোর আলবুquerqueতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম জ্যাকলিন গিস এবং বাবার নাম মাইকেল বেজোস। বেজোস ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত বুদ্ধিমান ছিলেন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি তার আগ্রহ ছিল প্রবল। তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ওয়াল স্ট্রিট-এ কাজ শুরু করেন।

কর্মজীবন ওয়াল স্ট্রিটে কিছু দিন কাজ করার পর, বেজোস ১৯৯৪ সালে সিয়াটলে এসে আমাজন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম দিকে, আমাজন ছিল একটি অনলাইন বইয়ের দোকান। কিন্তু বেজোসের দূরদর্শিতা এবং কঠোর পরিশ্রমে, আমাজন খুব দ্রুত বিশ্বের বৃহত্তম ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়।

আমাজনের উত্থান আমাজনের প্রাথমিক সাফল্য বই বিক্রির মাধ্যমে আসে। কিন্তু বেজোস জানতেন যে, শুধুমাত্র বই বিক্রি করে দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই তিনি আমাজনের পরিধি বাড়াতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে, আমাজনে ইলেকট্রনিক্স, পোশাক, গৃহস্থালি সামগ্রী এবং আরও অনেক ধরনের পণ্য যুক্ত হয়।

ক্লাউড কম্পিউটিং-এর ক্ষেত্রে আমাজনের অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (AWS) একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল। AWS ছোট এবং মাঝারি আকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাশ্রয়ী মূল্যে ক্লাউড কম্পিউটিং সুবিধা প্রদান করে। বর্তমানে, AWS আমাজনের সবচেয়ে লাভজনক বিভাগগুলোর মধ্যে অন্যতম।

অন্যান্য উদ্যোগ আমাজন ছাড়াও, জেফ বেজোস আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে জড়িত। তিনি ব্লু অরিজিন নামক একটি মহাকাশ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন, যার লক্ষ্য হলো মহাকাশ ভ্রমণকে সহজলভ্য করা। এছাড়াও, তিনি ওয়াশিংটন পোস্ট সংবাদপত্রটির মালিক।

বিনিয়োগ কৌশল জেফ বেজোসের বিনিয়োগ কৌশল অত্যন্ত সুচিন্তিত এবং দীর্ঘমেয়াদী। তিনি এমন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন, যেগুলোর উদ্ভাবনী ধারণা রয়েছে এবং ভবিষ্যতে বড় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তার কিছু উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের মধ্যে রয়েছে:

  • গুগল: বেজোস ১৯৯৮ সালে গুগল-এ বিনিয়োগ করেছিলেন, যা তার অন্যতম সফল বিনিয়োগ হিসেবে প্রমাণিত হয়।
  • এয়ারবিএনবি: তিনি এয়ারবিএনবি-তেও বিনিয়োগ করেছেন, যা একটি জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস।
  • উবার: বেজোস উবারেও বিনিয়োগ করেছেন, যা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় রাইড-শেয়ারিং কোম্পানি।
  • টুইটার: সম্প্রতি তিনি টুইটার কিনে নিয়েছেন।

বিনিয়োগের মূলনীতি জেফ বেজোসের বিনিয়োগের কিছু মূলনীতি রয়েছে, যা তাকে সফল হতে সাহায্য করেছে:

১. দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা: বেজোস সবসময় দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা করেন। তিনি এমন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন, যেগুলোর ভবিষ্যতে ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। ২. গ্রাহক centricity: তিনি গ্রাহকদের চাহিদাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন। আমাজনের সাফল্যের পেছনে এটি একটি বড় কারণ। ৩. উদ্ভাবন: বেজোস নতুন নতুন উদ্ভাবনের প্রতি আগ্রহী। তিনি এমন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন, যারা নতুন কিছু করার চেষ্টা করছে। ৪. ঝুঁকি নেওয়া: তিনি ঝুঁকি নিতে ভয় পান না। তবে, তিনি সব সময় ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে ঝুঁকি নেন। ৫. ডেটা-চালিত সিদ্ধান্ত: বেজোস ডেটার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেন। তিনি মনে করেন, ডেটা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ এর ব্যবহার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জেফ বেজোস ডেটা-চালিত সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশ্বাসী। এই ডেটা বিশ্লেষণের মধ্যে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ গুরুত্বপূর্ণ।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ:

  • চার্ট প্যাটার্ন : ঐতিহাসিক মূল্য ডেটার উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণের জন্য চার্ট প্যাটার্ন ব্যবহার করা হয়।
  • মুভিং এভারেজ : নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গড় মূল্য বের করে ভবিষ্যৎ প্রবণতা নির্ণয় করা হয়।
  • আরএসআই (Relative Strength Index) : অতিরিক্ত কেনা বা বেচার পরিস্থিতি চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়।
  • MACD (Moving Average Convergence Divergence) : দুটি মুভিং এভারেজের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ সংকেত পাওয়া যায়।
  • ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট : সম্ভাব্য সমর্থন এবং প্রতিরোধের স্তর চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়।

ভলিউম বিশ্লেষণ:

এই কৌশলগুলো ব্যবহার করে, বেজোস বিনিয়োগের সঠিক সময় এবং পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেন।

ব্যক্তিগত জীবন জেফ বেজোস ১৯৯৩ সালে ম্যাকкенজি স্কটকে বিয়ে করেন। তাদের চারটি সন্তান রয়েছে। ২০১৪ সালে তারা বিবাহবিচ্ছেদ করেন। ২০১৯ সালে তিনি লরেন সানচেজের সাথে সম্পর্কে জড়ান।

দানশীলতা জেফ বেজোস একজন বড় দানশীল। তিনি বেজোস আর্থ ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাজ করে। এছাড়াও, তিনি বিভিন্ন শিক্ষা এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে দান করেন।

সমালোচনা জেফ বেজোসের কিছু কাজের সমালোচনাও রয়েছে। আমাজনের কর্মপরিবেশ এবং কর ফাঁকির অভিযোগের বিষয়ে তিনি সমালোচিত হয়েছেন। তবে, তার উদ্ভাবনী চিন্তা এবং ব্যবসায়িক সাফল্য তাকে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিতে পরিণত করেছে।

আমাজনের ভবিষ্যৎ জেফ বেজোস এখন আমাজনের নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছেন। তিনি কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং নতুন উদ্ভাবনের দিকে নজর রাখছেন। আমাজন বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), মেশিন লার্নিং এবং রোবোটিক্স-এর মতো নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে।

উপসংহার জেফ বেজোস একজন সফল উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী এবং দানশীল। তার জীবন এবং কর্ম বহু মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমাজনকে বিশ্বের বৃহত্তম ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে পরিণত করার মাধ্যমে তিনি ডিজিটাল অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার বিনিয়োগ কৌশল এবং উদ্ভাবনী চিন্তা তাকে সফল হতে সাহায্য করেছে। ভবিষ্যতে, তিনি আরও নতুন নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্বকে পরিবর্তন করবেন বলে আশা করা যায়।

আরও জানতে:

জেফ বেজোসের কর্মজীবন
বছর ঘটনা
১৯৯৪ আমাজন প্রতিষ্ঠা
১৯৯৭ আমাজন পাবলিক হয়
২০০২ আমাজন ওয়েব সার্ভিসেস (AWS) চালু
২০০৭ কিন্ডল ই-রিডার চালু
২০১৪ ওয়াশিংটন পোস্ট কেনা
২০১৯ ব্লু অরিজিন মহাকাশ সংস্থা প্রতিষ্ঠা

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер