ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব

ভূমিকা: ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব (Frictional Unemployment) অর্থনীতির একটি স্বাভাবিক অংশ। এটি এমন বেকারত্ব যা ঘটে যখন শ্রমিকরা তাদের বর্তমান চাকরি ছেড়ে নতুন চাকরি খুঁজতে শুরু করে। এই সময়কালে, শ্রমিকদের নতুন চাকরি খুঁজে পেতে এবং নিয়োগকারীদের উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে পেতে সময় লাগে। এই বেকারত্ব স্বল্পমেয়াদী হয় এবং সাধারণত অর্থনৈতিক মন্দার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো, যেখানে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়, ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব বাজারের গতিশীলতার একটি অংশের মতো।

ঘর্ষণজনিত বেকারত্বের কারণসমূহ: বিভিন্ন কারণে ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব সৃষ্টি হতে পারে। নিচে কয়েকটি প্রধান কারণ আলোচনা করা হলো:

১. চাকরি পরিবর্তন: শ্রমিকরা ভালো বেতন, সুযোগ-সুবিধা বা কর্মপরিবেশের জন্য প্রায়ই চাকরি পরিবর্তন করতে চান। এই পরিবর্তনের সময়কালে তারা বেকার থাকতে পারেন।

২. নতুন শ্রমশক্তি যোগদান: নতুন শিক্ষা গ্রহণ করে বা অন্য কোনো কারণে যারা কর্মজীবনে প্রবেশ করছেন, তাদের চাকরি খুঁজে পেতে সময় লাগতে পারে।

৩. ভৌগোলিক কারণ: শ্রমিকরা ভালো চাকরির সন্ধানে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারেন। নতুন স্থানে চাকরি খুঁজে পাওয়ার আগে তাদের বেকারত্বে থাকতে হয়।

৪. তথ্যের অভাব: অনেক সময় শ্রমিকরা চাকরির সুযোগ সম্পর্কে জানতে পারেন না, অথবা নিয়োগকারীরা উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়েন। এই কারণেও ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব দেখা যায়।

৫. দক্ষতা এবং চাহিদার মধ্যে পার্থক্য: শ্রমবাজারে কিছু নির্দিষ্ট দক্ষতার চাহিদা থাকে, কিন্তু অনেক শ্রমিকের সেই দক্ষতা নাও থাকতে পারে। এই কারণে তারা চাকরি খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়েন।

৬. সিজনাল বেকারত্ব: কিছু শিল্পে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে কাজের সুযোগ কমে যায়, যেমন কৃষি বা পর্যটন শিল্প। এর ফলে শ্রমিকরা সাময়িকভাবে বেকার হয়ে পড়েন।

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের সাথে তুলনা: বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে, একজন ট্রেডারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং বাজারের গতিবিধি বিশ্লেষণ করতে হয়। ঘর্ষণজনিত বেকারত্বের ক্ষেত্রেও, একজন কর্মীকে দ্রুত নতুন সুযোগ খুঁজতে হয় এবং নিজের দক্ষতা বাজারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করতে হয়।

ঘর্ষণজনিত বেকারত্বের প্রকারভেদ: ঘর্ষণজনিত বেকারত্বকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়:

১. স্বেচ্ছামূলক বেকারত্ব: যখন শ্রমিকরা স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে নতুন চাকরি খুঁজতে শুরু করেন, তখন এটি স্বেচ্ছামূলক বেকারত্ব হিসেবে পরিচিত।

২. অনিচ্ছাকৃত বেকারত্ব: কিছু ক্ষেত্রে, শ্রমিকরা চাকরি হারাতে পারেন এবং তাদের নতুন চাকরি খুঁজে পেতে সময় লাগতে পারে। এটি অনিচ্ছাকৃত বেকারত্ব।

৩. কাঠামোগত বেকারত্ব: যখন শ্রমবাজারে দক্ষতার অভাব থাকে এবং শ্রমিকরা উপযুক্ত কাজ খুঁজে পান না, তখন এটি কাঠামোগত বেকারত্ব হিসেবে পরিচিত। যদিও এটি ঘর্ষণজনিত বেকারত্বের সাথে সম্পর্কিত, তবে এর কারণ ভিন্ন।

অর্থনীতির উপর প্রভাব: ঘর্ষণজনিত বেকারত্বের অর্থনীতির উপর কিছু ইতিবাচক এবং নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।

ইতিবাচক প্রভাব: ১. দক্ষতা বৃদ্ধি: চাকরি খোঁজার সময় শ্রমিকরা নতুন দক্ষতা অর্জন করতে পারেন, যা তাদের কর্মজীবনের জন্য সহায়ক হতে পারে। ২. উন্নত ম্যাচিং: এটি শ্রমিকদের তাদের পছন্দের এবং উপযুক্ত চাকরি খুঁজে পেতে সাহায্য করে, যা সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে। ৩. অর্থনৈতিক গতিশীলতা: চাকরি পরিবর্তনের মাধ্যমে অর্থনীতিতে নতুন ধারণা এবং উদ্ভাবন আসতে পারে।

নেতিবাচক প্রভাব: ১. উৎপাদন হ্রাস: বেকারত্বের কারণে সামগ্রিক উৎপাদন হ্রাস পেতে পারে। ২. আয় হ্রাস: শ্রমিকরা বেকার থাকাকালীন আয় হারাতে পারেন, যা তাদের জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করতে পারে। ৩. সামাজিক অস্থিরতা: দীর্ঘমেয়াদী বেকারত্ব সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব হ্রাস করার উপায়: সরকার এবং অন্যান্য সংস্থাগুলি ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারে। নিচে কয়েকটি উপায় আলোচনা করা হলো:

১. কর্মসংস্থান তথ্য কেন্দ্র: একটি শক্তিশালী কর্মসংস্থান তথ্য কেন্দ্র তৈরি করা উচিত, যা শ্রমিকদের চাকরির সুযোগ সম্পর্কে সঠিক এবং সময়োপযোগী তথ্য সরবরাহ করবে। (কর্মসংস্থান তথ্য কেন্দ্র)

২. প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা: শ্রমিকদের নতুন দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করার জন্য প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা উচিত। (বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ)

৩. ভৌগোলিক গতিশীলতা সহায়তা: শ্রমিকরা যাতে সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারেন, তার জন্য আর্থিক সহায়তা এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদান করা উচিত।

৪. বেকারত্ব ভাতা: বেকারত্বের সময় শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য বেকারত্ব ভাতা চালু করা যেতে পারে। (বেকারত্ব ভাতা)

৫. সরকারি নীতি: সরকার এমন নীতি গ্রহণ করতে পারে, যা চাকরি সৃষ্টি এবং কর্মসংস্থান বাড়াতে সহায়ক হবে। (কর্মসংস্থান নীতি)

৬. অনলাইন জব পোর্টাল: অনলাইন জব পোর্টালগুলির ব্যবহার বাড়ানো উচিত, যাতে শ্রমিকরা সহজে চাকরির সন্ধান করতে পারেন। (অনলাইন জব পোর্টাল)

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের সাথে কৌশলগত মিল: বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে যেমন বিভিন্ন কৌশল (Strategy) ব্যবহার করে ঝুঁকি কমানো যায়, তেমনি ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব কমানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে।

টেবিল: ঘর্ষণজনিত বেকারত্বের কারণ ও প্রতিকার

ঘর্ষণজনিত বেকারত্বের কারণ ও প্রতিকার
প্রতিকার \|	কর্মসংস্থান তথ্য কেন্দ্র, প্রশিক্ষণ \|	বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, ইন্টার্নশিপ \|	স্থানান্তর সহায়তা, আর্থিক প্রণোদনা \|	অনলাইন জব পোর্টাল, কর্মসংস্থান মেলা \|	দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, শিক্ষা কার্যক্রম \|	বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক নিরাপত্তা \|

সম্পর্কিত বিষয়সমূহ:

কৌশল, টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ:

উপসংহার: ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব একটি স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ঘটনা, তবে এটি হ্রাস করার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সরকার, সংস্থা এবং শ্রমিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই বেকারত্ব কমিয়ে আনা সম্ভব। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো, যেখানে বাজারের গতিবিধি বুঝে সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নিতে হয়, তেমনি ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব মোকাবিলা করতে হলে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নিজেদের প্রস্তুত করতে হয়। এছাড়াও, অর্থনীতির অন্যান্য দিকগুলির উপর নজর রাখা এবং সঠিক নীতি গ্রহণ করা জরুরি।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

Navigation menu