আর্মেনীয় ইতিহাস
আর্মেনীয় ইতিহাস
thumb|right|বিশ্ব মানচিত্রে আর্মেনিয়ার অবস্থান
আর্মেনীয় ইতিহাস মানব সভ্যতার প্রাচীনতম ইতিহাসগুলির মধ্যে অন্যতম। এর দীর্ঘ এবং জটিল পথ নানা সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন, সাংস্কৃতিক বিবর্তন এবং টিকে থাকার সংগ্রামের সাক্ষী। এই ইতিহাস প্রায় ৩০০০ বছর আগের, যা খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতাব্দীতে ইউরাতু রাজ্যের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল বলে মনে করা হয়। ভৌগোলিকভাবে, আর্মেনিয়া ককেশাস অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা ইউরোপ ও এশিয়াকে সংযুক্ত করে।
প্রাচীন আর্মেনিয়া
আর্মেনিয়ার প্রাচীনতম পরিচিত রাজ্য ছিল ইউরাতু, যা খ্রিস্টপূর্ব ৯ম থেকে ৬ষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যে বিদ্যমান ছিল। ইউরাতুরীয়রা ছিল একটি শক্তিশালী জাতি এবং তারা মেসোপটেমিয়া ও আনাটোলিয়া অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করেছিল। ইউরাতু রাজ্যটি আசிரியীয় সাম্রাজ্যের দ্বারা বিজিত হওয়ার পরে, আর্মেনীয় উপজাতিরা এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে এবং ধীরে ধীরে একটি নতুন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে, পারস্যের সাম্রাজ্যের অধীনে আর্মেনিয়া একটি স্যাটেরাপ (প্রদেশ) হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট এর বিজয়ের পর আর্মেনিয়া হেলেনিস্টিক বিশ্বের অংশ হয়ে ওঠে। এই সময়ে, আর্মেনীয় সংস্কৃতিতে গ্রিক প্রভাব বিস্তার লাভ করে।
আর্মেনিয়ার রাজতন্ত্র ও খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ
খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দীতে, আর্তাশেসিয়ান রাজবংশ আর্মেনিয়ায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে এবং আর্মেনিয়াকে একটি স্বাধীন রাজ্য হিসেবে পরিচিত করে তোলে। এই সময়ে, আর্মেনিয়া রোমান সাম্রাজ্য ও পারস্যের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ缓冲区 (বাফার স্টেট) হিসেবে কাজ করে। টিগ্রান দ্য গ্রেট (খ্রিস্টপূর্ব ৯৫-৫৩) ছিলেন এই রাজবংশের সবচেয়ে বিখ্যাত শাসক, যিনি আর্মেনিয়াকে বিশাল সাম্রাজ্যে পরিণত করেছিলেন।
আর্মেনীয়রা বিশ্বের প্রথম জাতিগুলির মধ্যে অন্যতম যারা খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে। খ্রিস্টধর্ম ৩01 খ্রিস্টাব্দে আর্মেনিয়ার রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে গৃহীত হয়। গ্রেগরি দ্য ইলুমিনেটরকে আর্মেনীয় খ্রিস্টধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গণ্য করা হয়। খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের ফলে আর্মেনীয় সংস্কৃতি ও identity দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাইজান্টাইন ও আরব সাম্রাজ্যের অধীনে
রোমান সাম্রাজ্যের বিভাজনের পর, আর্মেনিয়া বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। তবে, ৭ম শতাব্দীতে আরবরা আর্মেনিয়া আক্রমণ করে এবং দীর্ঘকাল ধরে এই অঞ্চলটি তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এই সময়ে, আর্মেনীয়রা তাদের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য ক্রমাগত সংগ্রাম করে।
Kilikian আর্মেনিয়া ও ক্রুসেড
১০ম শতাব্দীতে, Bagratid রাজবংশ আর্মেনিয়ায় পুনরায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে এবং Kilikian আর্মেনিয়া নামে একটি নতুন রাজ্য গঠন করে। এই রাজ্যটি ভূমধ্যসাগরের উপকূলে অবস্থিত ছিল এবং এটি ক্রুসেডের সময় ইউরোপীয়দের সাথে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। Kilikian আর্মেনিয়া প্রায় ৩০০ বছর ধরে টিকে ছিল, কিন্তু ১৩শ শতাব্দীতে মামলুক সাম্রাজ্যের দ্বারা বিজিত হয়।
| রাজবংশ | সময়কাল | Artaxiad | খ্রিস্টপূর্ব ২য়-১ম শতাব্দী | Arsacid | খ্রিস্টাব্দ ১ম-৫ম শতাব্দী | Bagratid | খ্রিস্টাব্দ ৯ম-১১শ শতাব্দী | Rubinid | খ্রিস্টাব্দ ১২শ-১৩শ শতাব্দী |
অটোমান ও পারস্যের অধীনে
Kilikian আর্মেনিয়ার পতনের পর, আর্মেনিয়া অটোমান সাম্রাজ্য ও পারস্যের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। উভয় সাম্রাজ্যই আর্মেনীয়দের উপর কঠোর শাসন চাপিয়ে দেয় এবং তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অধিকার সীমিত করে। এই সময়ে, আর্মেনীয়রা তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষার জন্য মঠ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে।
রুশ-তুর্কি যুদ্ধ ও আধুনিক আর্মেনিয়া
১৯শ শতাব্দীতে, রুশ সাম্রাজ্য ও অটোমান সাম্রাজ্যের মধ্যে বেশ কয়েকবার যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধগুলির ফলে অনেক আর্মেনীয় রুশ সাম্রাজ্যের অধীনে আশ্রয় নেয়। ১৮২৮ ও ১৮২৯ সালের রুশ-তুর্কি যুদ্ধের পর, ইস্টern আর্মেনিয়া রুশ সাম্রাজ্যের অংশ হয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, অটোমান সরকার আর্মেনীয়দের উপর ব্যাপক গণহত্যা চালায়। এই ঘটনা আর্মেনীয় গণহত্যা নামে পরিচিত, যেখানে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন আর্মেনীয় নিহত হন।
১৯১৮ সালে, আর্মেনিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করে, কিন্তু এই স্বাধীনতা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ১৯২০ সালে, আর্মেনিয়া বলশেভিকদের দ্বারাoccupied হয় এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হিসেবে আর্মেনীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৯১ সালে, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আর্মেনিয়া পুনরায় স্বাধীনতা লাভ করে।
বর্তমান আর্মেনিয়া
বর্তমানে, আর্মেনিয়া একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। দেশটি জাতিসংঘ, ইউরোপীয় পরিষদ এবং সিআইএস এর সদস্য। আর্মেনিয়ার অর্থনীতি মূলত কৃষি, শিল্প এবং পর্যটনের উপর নির্ভরশীল।
আর্মেনীয় সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময়। আর্মেনীয় স্থাপত্য, সংগীত, নৃত্য, এবং রান্না বিশ্বজুড়ে পরিচিত। হাগিয়া সোফিয়া এর স্থাপত্যশৈলী আর্মেনীয় চার্চ এর নকশার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
| তারিখ | ঘটনা | মে ২৮, ১৯১৮ | প্রথম আর্মেনীয় প্রজাতন্ত্র ঘোষণা | সেপ্টেম্বর ২১, ১৯৯১ | সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা |
আর্মেনীয়দের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য
আর্মেনীয় সংস্কৃতি কয়েক হাজার বছরের পুরনো এবং এটি বিভিন্ন সভ্যতার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। আর্মেনীয় বর্ণমালা ৪0৫ খ্রিস্টাব্দে মেসরোপ মাসতোৎস দ্বারা উদ্ভাবিত হয়েছিল, যা আর্মেনীয় ভাষার সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আর্মেনীয়রা তাদের ঐতিহ্যবাহী কারিগর, হস্তশিল্প, এবং গালিচা তৈরির জন্য বিখ্যাত। খাচকার হল আর্মেনীয় পাথরের খোদাই করা স্মৃতিস্তম্ভ, যা তাদের শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
আর্মেনীয় রান্নাঘরে শুষ্ক ফল, বাদাম, এবং মশলা ব্যবহার করা হয়। হারিসা, খাশ, এবং লাভাশ হল আর্মেনীয়দের জনপ্রিয় খাবার।
বাইনারি অপশন ট্রেডিং এর সাথে আর্মেনীয় ইতিহাসের সংযোগ
যদিও সরাসরি কোনো ঐতিহাসিক সংযোগ নেই, তবে বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর প্রেক্ষাপটে আর্মেনীয় ইতিহাস থেকে কিছু শিক্ষা নেওয়া যেতে পারে। আর্মেনীয়রা দীর্ঘকাল ধরে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য তাদের বুদ্ধিমত্তা, সাহস এবং কৌশল ব্যবহার করেছে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-ও একটি ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্র, যেখানে সফল হওয়ার জন্য সঠিক বিশ্লেষণ, কৌশল এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন।
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: আর্মেনীয়রা তাদের দীর্ঘ ইতিহাসে বারবার দেখিয়েছে যে তারা কিভাবে ঝুঁকি মোকাবেলা করে এবং নিজেদের রক্ষা করে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিহার্য।
- কৌশলগত চিন্তা: আর্মেনীয় শাসকরা প্রায়শই তাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কৌশলগত সুবিধা অর্জনের জন্য জটিল পরিকল্পনা তৈরি করতেন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ, সঠিক কৌশল নির্বাচন করা সাফল্যের চাবিকাঠি।
- দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা: আর্মেনীয় সংস্কৃতিতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণের উপর জোর দেওয়া হয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ, দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণ এবং ধৈর্যশীল হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
আরও জানতে
- আর্মেনীয় গণহত্যা
- আর্মেনীয় বর্ণমালা
- আর্মেনীয় চার্চ
- ইউরাতু
- টিগ্রান দ্য গ্রেট
- আর্মেনীয় স্থাপত্য
- আর্মেনীয় সঙ্গীত
- আর্মেনীয় রান্না
- আর্মেনীয় সংস্কৃতি
- আর্মেনিয়ার অর্থনীতি
- আর্মেনিয়ার রাজনীতি
- আর্মেনিয়ার ভূগোল
- আর্মেনিয়ার জনসংখ্যা
- আর্মেনিয়ার ভাষা
- আর্মেনিয়ার ইতিহাস
- টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস
- ভলিউম বিশ্লেষণ
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
- ফিনান্সিয়াল মার্কেট
- ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজি
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
