Colonial আমেরিকা

ঔপনিবেশিক আমেরিকা

ঔপনিবেশিক আমেরিকা বলতে সপ্তদশ থেকে উনিশ শতকের মধ্যে আমেরিকা মহাদেশে ইউরোপীয় দেশগুলির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত উপনিবেশগুলিকে বোঝায়। এই উপনিবেশগুলি ধীরে ধীরে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিকশিত হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা-র মতো আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের জন্ম দেয়। ঔপনিবেশিক আমেরিকার ইতিহাস ইউরোপের ইতিহাস, আফ্রিকার ইতিহাস এবং আমেরিকার আদিবাসীদের ইতিহাসের সাথে গভীরভাবে জড়িত।

পটভূমি

পঞ্চদশ শতাব্দীতে ইউরোপীয় নাবিকদের নতুন সমুদ্রপথ আবিষ্কারের আগ্রহ ঔপনিবেশিক আমেরিকার পটভূমি তৈরি করে। ক্রিস্টোফার কলম্বাস ১৪৯২ সালে আমেরিকা আবিষ্কার করার পর স্পেন, পর্তুগাল, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ইত্যাদি দেশগুলি আমেরিকাতে উপনিবেশ স্থাপন করতে শুরু করে। এর প্রধান কারণ ছিল অর্থনৈতিক সম্পদ অর্জন, নতুন বাণিজ্যপথের সন্ধান, রাজনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ধর্মীয় গোঁড়ামি থেকে মুক্তি।

উপনিবেশ স্থাপনের পর্যায়

ঔপনিবেশিক আমেরিকা মূলত তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত করা যায়:

প্রথম পর্যায় (১৬০৭-১৭৫৪): এই সময়ে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, স্পেন, নেদারল্যান্ডস প্রভৃতি দেশ আটলান্টিক উপকূলের বিভিন্ন অংশে উপনিবেশ স্থাপন করে। জেমস্‌টাউন (১৬০৭) ছিল ব্রিটিশদের প্রথম স্থায়ী উপনিবেশ। এই সময়কালে তামাক, তুলা, চিনি ইত্যাদি বাণিজ্যিক ফসল উৎপাদন শুরু হয় এবং দাসপ্রথা বিস্তার লাভ করে।
দ্বিতীয় পর্যায় (১৭৫৪-১৭৭৫): এই সময়কালে উপনিবেশগুলির মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বৃদ্ধি পায়। ফরাসি ও ভারতীয় যুদ্ধ (French and Indian War) ছিল এই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ব্রিটিশ সরকার উপনিবেশগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে শুরু করে, যা উপনিবেশবাদীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।
তৃতীয় পর্যায় (১৭৭৫-১৭৮৩): এই সময়ে আমেরিকান বিপ্লব সংঘটিত হয়। উপনিবেশবাদীরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং স্বাধীনতা অর্জন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণা (Declaration of Independence) ১৭৭৬ সালে করা হয়।

উপনিবেশগুলির প্রকারভেদ

ঔপনিবেশিক আমেরিকা বিভিন্ন ধরনের উপনিবেশ ছিল, যা তাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ছিল।

উপনিবেশগুলির প্রকারভেদ
প্রকার	বৈশিষ্ট্য
রাজকীয় উপনিবেশ	সরাসরি রাজার দ্বারা শাসিত		মালিকানাধীন উপনিবেশ	ব্যক্তি বা কোম্পানির দ্বারা শাসিত		স্ব-শাসিত উপনিবেশ	উপনিবেশবাদীরা নিজেরাই নিজেদের শাসনকার্য পরিচালনা করত

অর্থনৈতিক ব্যবস্থা

ঔপনিবেশিক আমেরিকার অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর ছিল। বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক ফসল উৎপাদিত হতো।

উত্তর উপনিবেশ: এখানে ছোট আকারের খামার এবং মৎস্য শিকার ছিল অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি। জাহাজ নির্মাণ এবং বাণিজ্যও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
মধ্য উপনিবেশ: এই অঞ্চলে গম, ভুট্টা, বার্লি ইত্যাদি শস্য উৎপাদিত হতো। এটি "খাদ্যশস্যের ঝুড়ি" নামে পরিচিত ছিল।
দক্ষিণ উপনিবেশ: এখানে তামাক, তুলা, ধান ইত্যাদি রোপণ ফসল উৎপাদিত হতো। দাসপ্রথা এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।

সামাজিক কাঠামো

ঔপনিবেশিক আমেরিকার সমাজ বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত ছিল।

উপরে: ধনী জমির মালিক, বণিক এবং রাজনৈতিক নেতারা সমাজের উচ্চ স্তরে ছিল।
মাঝামাঝি: ছোট কৃষক, কারিগর এবং ব্যবসায়ীরা মধ্যবিত্ত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিল।
নিচে: দাস, indentured servant (চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক) এবং ভূমিহীন শ্রমিকরা সমাজের নিম্ন স্তরে ছিল।

রাজনৈতিক উন্নয়ন

ঔপনিবেশিক আমেরিকাতে রাজনৈতিক উন্নয়ন ধীরে ধীরে ঘটে।

ভার্জিনিয়া হাউস অফ বার্জেস: এটি ছিল আমেরিকার প্রথম নির্বাচিত আইনসভা (১৬১৯)।
মেফিলভার চুক্তি: (Mayflower Compact) ১৬২০ সালে Pilgrim Fathers দ্বারা স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি, যা আমেরিকার প্রথম রাজনৈতিক দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়।
উপনিবেশীয় আইনসভা: প্রতিটি উপনিবেশে নিজস্ব আইনসভা ছিল, যা স্থানীয় আইন তৈরি করত।

ধর্মীয় জীবন

ঔপনিবেশিক আমেরিকাতে ধর্মীয় স্বাধীনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।

Puritanism: Puritanরা ধর্মীয় সংস্কারের জন্য ইংল্যান্ড থেকে আমেরিকাতে আসে এবং ম্যাসাচুসেটস উপনিবেশ স্থাপন করে।
Quakerism: Quakerরা শান্তি ও অ-সহিংসতার উপর জোর দিত এবং পেনসিলভানিয়া উপনিবেশে বসতি স্থাপন করে।
Great Awakening: অষ্টাদশ শতাব্দীতে আমেরিকার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় পুনর্জাগরণ ঘটে, যা ধর্মীয় অনুভূতিকে নতুন করে উদ্দীপিত করে।

আমেরিকান বিপ্লব

আমেরিকান বিপ্লব ছিল ঔপনিবেশিক আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ব্রিটিশ সরকারের কঠোর নীতি এবং করের বোঝা উপনিবেশবাদীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।

স্ট্যাম্প অ্যাক্ট: ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক আরোপিত এই কর উপনিবেশবাদীরা তীব্রভাবে বিরোধিতা করে।
বোস্টন টি পার্টি: ১৭৭৩ সালে উপনিবেশবাদীরা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চা সমুদ্রে ফেলে দেয়, যা বিপ্লবের অন্যতম কারণ হয়।
স্বাধীনতা ঘোষণা: ১৭৭৬ সালের ৪ঠা জুলাই থমাস জেফারসন রচিত স্বাধীনতা ঘোষণা পত্রের মাধ্যমে উপনিবেশগুলি স্বাধীনতা লাভ করে।
বিপ্লবের ফলাফল: আমেরিকার স্বাধীনতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নামক একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্ম দেয়, যা গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার আদর্শের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়।

উপনিবেশগুলির বর্তমান অবস্থা

ঔপনিবেশিক আমেরিকার বিভিন্ন উপনিবেশ বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকো-র অংশ। এই দেশগুলি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে উন্নত হয়েছে এবং বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

আরও জানার জন্য

এই নিবন্ধটি ঔপনিবেশিক আমেরিকার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানার জন্য বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থ এবং ওয়েবসাইটের সাহায্য নিতে পারেন।

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস এবং ভলিউম বিশ্লেষণের জন্য সহায়ক লিঙ্ক:

1. Moving Averages 2. Bollinger Bands 3. MACD 4. RSI 5. Fibonacci Retracement 6. Candlestick Patterns 7. Volume Weighted Average Price (VWAP) 8. On Balance Volume (OBV) 9. Accumulation/Distribution Line 10. Money Flow Index (MFI) 11. Ichimoku Cloud 12. Pivot Points 13. Support and Resistance Levels 14. Trend Lines 15. Chart Patterns

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ