নিউটনের সূত্র

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

নিউটনের সূত্র

নিউটনের সূত্রগুলি শাস্ত্রীয় বলবিদ্যা-র ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং এগুলি পদার্থবিদ্যা-র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ১৬৮৭ সালে স্যার আইজ্যাক নিউটন তাঁর ‘ফিলোসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকা’ (Philosophiæ Naturalis Principia Mathematica) গ্রন্থে এই সূত্রগুলি প্রকাশ করেন। এই সূত্রগুলি বস্তুর গতি এবং বলের ধারণা-কে সংজ্ঞায়িত করে। নিউটনের সূত্রগুলি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর মতো জটিল আর্থিক বাজারের মডেলিং এবং বিশ্লেষণেও ব্যবহৃত হতে পারে, যদিও সরাসরি নয়, তবে গাণিতিক মডেল তৈরিতে এর অবদান অনস্বীকার্য।

নিউটনের প্রথম সূত্র: জড়তার সূত্র

নিউটনের প্রথম সূত্রটি হলো জড়তার সূত্র (Law of Inertia)। এই সূত্র অনুযায়ী, কোনো বস্তু স্থির থাকলে স্থির থাকতে চায় এবং গতিশীল থাকলে একই বেগে সরলরেখায় চলতে থাকে, যতক্ষণ না পর্যন্ত কোনো বাহ্যিক বল তার উপর প্রযুক্ত হয়। অর্থাৎ, বস্তুর গতির পরিবর্তন করতে হলে বল প্রয়োগ করা আবশ্যক।

উদাহরণস্বরূপ, একটি ফুটবল মাঠের উপর স্থির অবস্থায় পড়ে আছে। এটি ততক্ষণ পর্যন্ত স্থির থাকবে যতক্ষণ না পর্যন্ত কেউ এসে সেটিকে লাথি মারে। আবার, একটি ফুটবলকে লাথি মারলে সেটি সরলরেখায় চলতে থাকবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত ঘর্ষণ, বায়ুর বাধা অথবা অন্য কোনো বল সেটির গতিকে কমিয়ে দেয় বা দিক পরিবর্তন করে।

এই সূত্র থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, গতি একটি আপেক্ষিক ধারণা। কোনো বস্তুর গতি বর্ণনা করতে হলে প্রসঙ্গ কাঠামোর (frame of reference) উল্লেখ করা জরুরি।

নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র: ত্বরণের সূত্র

নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রটি হলো ত্বরণের সূত্র (Law of Acceleration)। এই সূত্র অনুযায়ী, কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল (F) তার ভর (m) এবং ত্বরণের (a) গুণফলের সমান। এটিকে গাণিতিকভাবে লেখা হয়:

F = ma

অর্থাৎ, কোনো বস্তুর উপর যত বেশি বল প্রয়োগ করা হবে, তার ত্বরণ তত বেশি হবে। একইসাথে, বস্তুর ভর যত বেশি হবে, একই পরিমাণ বল প্রয়োগ করলে তার ত্বরণ তত কম হবে।

উদাহরণস্বরূপ, একটি হালকা গাড়ি-কে ধাক্কা দেওয়া যত সহজ, একটি ভারী ট্রাক-কে ধাক্কা দেওয়া তত কঠিন। কারণ ট্রাকের ভর বেশি হওয়ায় একই পরিমাণ বল প্রয়োগ করলেও এর ত্বরণ কম হবে।

এই সূত্রটি গতির সমীকরণ (equations of motion) এবং বলবিদ্যা-র বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ক্ষেত্রে, এই সূত্রগুলি বাজারের গতিবিধি এবং প্রবণতা (trend) বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করতে পারে, যদিও তা সরাসরি নয়।

নিউটনের তৃতীয় সূত্র: ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সূত্র

নিউটনের তৃতীয় সূত্রটি হলো ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সূত্র (Law of Action and Reaction)। এই সূত্র অনুযায়ী, প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীতমুখী একটি প্রতিক্রিয়া আছে। অর্থাৎ, যখন কোনো বস্তু অন্য কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে, তখন দ্বিতীয় বস্তুটিও প্রথম বস্তুর উপর সমান মানের একটি বিপরীতমুখী বল প্রয়োগ করে।

উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা মাটিতে হাঁটি, তখন আমাদের পা দিয়ে মাটি পেছনের দিকে ধাক্কা দেয় (ক্রিয়া)। এর প্রতিক্রিয়ায় মাটিও আমাদের পাকে সামনের দিকে ধাক্কা দেয়, যার ফলে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাই।

আরেকটি উদাহরণ হলো রকেট উৎক্ষেপণ। রকেট যখন গ্যাস নির্গত করে নিচের দিকে, তখন গ্যাসও রকেটকে উপরের দিকে ধাক্কা দেয়। এই ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বলের ফলেই রকেট উপরে উঠতে পারে।

এই সূত্রটি ভরবেগ সংরক্ষণ সূত্র (conservation of momentum) এবং শক্তি সংরক্ষণ সূত্র (conservation of energy) বোঝার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নিউটনের সূত্রগুলির তাৎপর্য

নিউটনের সূত্রগুলি শুধুমাত্র পদার্থবিদ্যা নয়, প্রকৌশল, মহাকাশ বিজ্ঞান এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সূত্রগুলির মাধ্যমে আমরা গ্রহ-গুলির গতি, নক্ষত্র-গুলির আকর্ষণ এবং বস্তুর গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারি।

  • জড়তার সূত্র আমাদের বুঝতে সাহায্য করে কেন কোনো বস্তু নিজের অবস্থায় থাকতে চায়।
  • ত্বরণের সূত্র বস্তুর গতির পরিবর্তন এবং বলের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে।
  • ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সূত্র বলের দ্বৈততা এবং মিথস্ক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ নিউটনের সূত্রের প্রয়োগ (পরোক্ষভাবে)

যদিও নিউটনের সূত্রগুলি সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ ব্যবহার করা হয় না, তবে এই সূত্রগুলির অন্তর্নিহিত গাণিতিক ধারণাগুলি বাজারের গতিবিধি মডেলিং এবং বিশ্লেষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

১. গতি ও ত্বরণ বিশ্লেষণ: নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র (F=ma) বাজারের গতি এবং ত্বরণ বুঝতে সাহায্য করে। বাজারের 'ভর' (market capitalization) এবং 'বল' (buying/selling pressure) বিবেচনা করে, ট্রেডাররা সম্ভাব্য ত্বরণ এবং দিকনির্দেশনা সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন।

২. ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া এবং বাজার প্রতিক্রিয়া: নিউটনের তৃতীয় সূত্র বাজারের প্রতিক্রিয়াগুলি বুঝতে সাহায্য করে। কোনো বড় সংবাদ বা ঘটনার (ক্রিয়া) ফলে বাজারের যে পরিবর্তন হয় (প্রতিক্রিয়া), তা এই সূত্রের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে।

৩. জড়তা এবং ট্রেন্ড: জড়তার সূত্র বাজারের ট্রেন্ডগুলি (trend) বুঝতে সাহায্য করে। একটি শক্তিশালী আপট্রেন্ড বা ডাউনট্রেন্ড ততক্ষণ পর্যন্ত চলতে থাকে যতক্ষণ না পর্যন্ত কোনো শক্তিশালী বিপরীতমুখী বল (যেমন, বড় অর্থনৈতিক ঘোষণা) সেটিকে থামায়।

৪. গাণিতিক মডেলিং: নিউটনের সূত্রগুলি ঐতিহাসিক ডেটা এবং পরিসংখ্যানিক বিশ্লেষণ-এর মাধ্যমে বাজারের গতিবিধি মডেলিং করতে ব্যবহৃত হতে পারে। এই মডেলগুলি ট্রেডারদের সম্ভাব্য ট্রেডিং সুযোগগুলি সনাক্ত করতে সাহায্য করে।

প্রাসঙ্গিক বিষয়সমূহ

নিউটনের সূত্রগুলির সারসংক্ষেপ
সূত্র বর্ণনা গাণিতিক রূপ উদাহরণ
প্রথম সূত্র (জড়তার সূত্র) কোনো বস্তু স্থির থাকলে স্থির থাকতে চায় এবং গতিশীল থাকলে একই বেগে সরলরেখায় চলতে থাকে। - একটি বই টেবিলের উপর স্থির থাকে যতক্ষণ না কেউ এটিকে নাড়ায়।
দ্বিতীয় সূত্র (ত্বরণের সূত্র) বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল তার ভর ও ত্বরণের গুণফলের সমান। F = ma একটি গাড়িকে ধাক্কা দিলে সেটি ত্বরণ লাভ করে।
তৃতীয় সূত্র (ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সূত্র) প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে। - বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার সময় বন্দুক পেছনের দিকে ধাক্কা দেয়।

এই নিবন্ধটি নিউটনের সূত্রগুলির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদান করে। এই সূত্রগুলি পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি এবং আমাদের চারপাশের বিশ্বকে বুঝতে অপরিহার্য। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের প্রেক্ষাপটে, এই সূত্রগুলির গাণিতিক ধারণাগুলি বাজারের গতিবিধি বিশ্লেষণে সাহায্য করতে পারে।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер