উপক্রান্তীয়
উপক্রান্তীয় অঞ্চল
উপক্রান্তীয় অঞ্চল বলতে সাধারণত ক্রান্তীয় অঞ্চল এবং সমভাবাপন্ন অঞ্চল-এর মধ্যে অবস্থিত ভৌগোলিক অঞ্চলকে বোঝায়। এই অঞ্চলগুলি চরমভাবাপন্ন জলবায়ু এবং ক্রান্তীয় অঞ্চলের আর্দ্রতা থেকে কিছুটা ভিন্ন বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। উপক্রান্তীয় অঞ্চলে সাধারণত উষ্ণ গ্রীষ্মকাল এবং মৃদু শীতকাল দেখা যায়। এই অঞ্চলের জলবায়ু, উদ্ভিদকুল, প্রাণিকুল এবং মানব জীবনযাত্রা—সবকিছুতেই একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
ভূগোল
উপক্রান্তীয় অঞ্চলগুলি সাধারণত অক্ষাংশ ২৫° থেকে ৪০° এর মধ্যে অবস্থিত। এই অঞ্চলগুলি পৃথিবীর বিভিন্ন মহাদেশে বিস্তৃত, যেমন— উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া। উল্লেখযোগ্য উপক্রান্তীয় অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে—
- উত্তর আমেরিকার দক্ষিণ-পূর্ব যুক্তরাষ্ট্র এবং মেক্সিকো-র কিছু অংশ।
- দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে এবং ব্রাজিল-এর কিছু অংশ।
- এশিয়ার চীন, জাপান, ভারত এবং মধ্যপ্রাচ্য-এর কিছু অংশ।
- আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি-র দক্ষিণ প্রান্ত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা-র কিছু অংশ।
- অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড এবং নতুন দক্ষিণ ওয়েলস-এর কিছু অংশ।
জলবায়ু
উপক্রান্তীয় অঞ্চলের জলবায়ু বিভিন্ন প্রকার হতে পারে, তবে সাধারণভাবে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায়:
- উষ্ণ গ্রীষ্মকাল: গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা প্রায় ৩০° সেলসিয়াস থেকে ৪০° সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে।
- মৃদু শীতকাল: শীতকালে তাপমাত্রা সাধারণত ০° সেলসিয়াসের উপরে থাকে, তবে মাঝে মাঝে তুষারপাতও হতে পারে।
- বৃষ্টিপাত: এই অঞ্চলে সাধারণত বছরে ৫০ থেকে ১৫০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিপাত সাধারণত গ্রীষ্মকালে বেশি এবং শীতকালে কম হয়।
- আর্দ্রতা: উপক্রান্তীয় অঞ্চলের আর্দ্রতা ক্রান্তীয় অঞ্চলের তুলনায় কম, তবে সমভাবাপন্ন অঞ্চলের তুলনায় বেশি।
উদ্ভিদকুল
উপক্রান্তীয় অঞ্চলের উদ্ভিদকুল বেশ বৈচিত্র্যময়। এই অঞ্চলে বিভিন্ন प्रकारের গাছপালা দেখতে পাওয়া যায়, যেমন—
- চিরসবুজ বন: এই বনগুলিতে সাধারণত ওক, পাইন, সাইপ্রেস এবং অন্যান্য চিরসবুজ গাছ দেখা যায়।
- পত্রঝড়ি বন: এই বনগুলিতে সাধারণত ম্যাপল, বিচ, বার্চ এবং অন্যান্য পত্রঝড়ি গাছ দেখা যায়।
- ঘাসভূমি: এই অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকার ঘাস এবং গুল্ম দেখতে পাওয়া যায়।
- ঝোপঝাড়: এই অঞ্চলে সাধারণত ছোট গাছ এবং ঝোপঝাড় দেখা যায়।
প্রাণিকুল
উপক্রান্তীয় অঞ্চলের প্রাণিকুলও বেশ বৈচিত্র্যময়। এই অঞ্চলে বিভিন্ন प्रकारের প্রাণী দেখতে পাওয়া যায়, যেমন—
- স্তন্যপায়ী প্রাণী: এই অঞ্চলে হরিণ, ভালুক, নেকড়ে, শেয়াল এবং অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়।
- সরীসৃপ প্রাণী: এই অঞ্চলে সাপ, কুমির, টিকটিকি এবং অন্যান্য সরীসৃপ প্রাণী দেখা যায়।
- পাখি: এই অঞ্চলে বিভিন্ন प्रकारের পাখি দেখা যায়, যেমন— ঈগল, শকুন, পেঁচা এবং অন্যান্য শিকারী পাখি।
- কীটপতঙ্গ: এই অঞ্চলে বিভিন্ন प्रकारের কীটপতঙ্গ দেখা যায়, যেমন— প্রজাপতি, মশা, মাছি এবং অন্যান্য কীটপতঙ্গ।
মানব জীবনযাত্রা
উপক্রান্তীয় অঞ্চলে মানব জীবনযাত্রা প্রকৃতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এই অঞ্চলের মানুষেরা সাধারণত কৃষি, পশুপালন এবং বনজ সম্পদ আহরণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে।
- কৃষি: উপক্রান্তীয় অঞ্চলের মাটি সাধারণত উর্বর হয়, তাই এখানে বিভিন্ন प्रकारের ফসল উৎপাদন করা যায়। এই অঞ্চলে গম, ভুট্টা, চাল, তুলা, এবং অন্যান্য খাদ্যশস্য ও বাণিজ্যিক ফসল উৎপাদিত হয়।
- পশুপালন: এই অঞ্চলে গরু, ছাগল, ভেড়া, এবং অন্যান্য গৃহপালিত পশু পালন করা হয়।
- বনজ সম্পদ আহরণ: উপক্রান্তীয় অঞ্চলের বনগুলি কাঠ, বাঁশ, মধু, এবং অন্যান্য বনজ সম্পদ সরবরাহ করে।
অর্থনীতি
উপক্রান্তীয় অঞ্চলের অর্থনীতি মূলত কৃষি ও পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। এই অঞ্চলের অনেক দেশ পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। এছাড়াও, এই অঞ্চলের কিছু দেশে শিল্প ও খনিজ সম্পদও বিদ্যমান, যা তাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
উপক্রান্তীয় অঞ্চলের কিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ হলো—
- জলবায়ু পরিবর্তন: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই অঞ্চলে খরা, বন্যা, এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকোপ বাড়ছে, যা কৃষিকাজ ও অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
- ভূমি অবক্ষয়: অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ এবং পরিবেশ দূষণের কারণে এই অঞ্চলের ভূমি অবক্ষয় হচ্ছে, যা কৃষিকাজের জন্য হুমকি স্বরূপ।
- দারিদ্র্য: এই অঞ্চলের অনেক দেশে দারিদ্র্য একটি বড় সমস্যা।
টেবিল: উপক্রান্তীয় অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য
| বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
|---|---|
| জলবায়ু !! উষ্ণ গ্রীষ্মকাল এবং মৃদু শীতকাল | |
| বৃষ্টিপাত !! বছরে ৫০ থেকে ১৫০ সেন্টিমিটার | |
| উদ্ভিদকুল !! চিরসবুজ বন, পত্রঝড়ি বন, ঘাসভূমি, ঝোপঝাড় | |
| প্রাণিকুল !! স্তন্যপায়ী প্রাণী, সরীসৃপ প্রাণী, পাখি, কীটপতঙ্গ | |
| অর্থনীতি !! কৃষি ও পর্যটন নির্ভর |
উপসংহার
উপক্রান্তীয় অঞ্চল পৃথিবীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই অঞ্চলগুলি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদকুল ও প্রাণিকুল এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতিতে ভরপুর। তবে, এই অঞ্চলগুলি জলবায়ু পরিবর্তন, ভূমি অবক্ষয় এবং দারিদ্র্যের মতো কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করে উপক্রান্তীয় অঞ্চলগুলিকে আরও উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করে তোলা সম্ভব।
আরও জানার জন্য:
- জলবায়ু পরিবর্তন
- কৃষি
- পর্যটন
- অর্থনীতি
- পরিবেশ দূষণ
- ভূমি অবক্ষয়
- ক্রান্তীয় অঞ্চল
- সমভাবাপন্ন অঞ্চল
- পৃথিবী
- যুক্তরাষ্ট্র
- মেক্সিকো
- আর্জেন্টিনা
- উরুগুয়ে
- ব্রাজিল
- চীন
- জাপান
- ভারত
- মধ্যপ্রাচ্য
- আফ্রিকা
- দক্ষিণ আফ্রিকা
- অস্ট্রেলিয়া
- কুইন্সল্যান্ড
- নতুন দক্ষিণ ওয়েলস
এই নিবন্ধে উপক্রান্তীয় অঞ্চলের একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই অঞ্চলের ভূগোল, জলবায়ু, উদ্ভিদকুল, প্রাণিকুল, মানব জীবনযাত্রা এবং অর্থনীতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও, এই অঞ্চলের কিছু চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে।
কৌশল, টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণের জন্য অতিরিক্ত লিঙ্ক:
১. মুভিং এভারেজ ২. আরএসআই (রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স) ৩. এমএসিডি (মুভিং এভারেজ কনভারজেন্স ডাইভারজেন্স) ৪. ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট ৫. বোলিঙ্গার ব্যান্ডস ৬. ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন ৭. ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস (ভিডব্লিউএপি) ৮. অন ব্যালেন্স ভলিউম (ওবিভি) ৯. চাইকিন মানি ফ্লো ১০. ডাইভারজেন্স ট্রেডিং ১১. সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল ১২. ট্রেড ম্যানেজমেন্ট ১৩. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ১৪. পজিশন সাইজিং ১৫. মার্কেট সেন্টিমেন্ট ১৬. ইকোনমিক ক্যালেন্ডার ১৭. ফরেক্স ট্রেডিং ১৮. স্টক মার্কেট ১৯. ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং ২০. ডে ট্রেডিং
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
