অ্যান্ড্রয়েড কম্পোনেন্ট
অ্যান্ড্রয়েড কম্পোনেন্ট
অ্যান্ড্রয়েড একটি বহুল ব্যবহৃত মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম, যা মূলত স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট ডিভাইসের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। অ্যান্ড্রয়েডের মূল ভিত্তি হলো এর বিভিন্ন কম্পোনেন্ট বা উপাদান। এই উপাদানগুলো একত্রে কাজ করে একটি সম্পূর্ণ এবং কার্যকরী অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করে। এই নিবন্ধে, অ্যান্ড্রয়েডের গুরুত্বপূর্ণ কম্পোনেন্টগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
সূচিপত্র
১. কার্নেল (Kernel) ২. হার্ডওয়্যার অ্যাবস্ট্রাকশন লেয়ার (HAL) ৩. নেটিভ লাইব্রেরি (Native Libraries) ৪. অ্যান্ড্রয়েড রানটাইম (ART) ৫. অ্যাপ্লিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক (Application Framework) ৬. অ্যাপ্লিকেশন (Applications)
১. কার্নেল (Kernel)
অ্যান্ড্রয়েড কার্নেল হলো অপারেটিং সিস্টেমের কেন্দ্র। এটি লিনাক্স কার্নেল-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। কার্নেল হার্ডওয়্যারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে এবং সিস্টেমের রিসোর্সগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। এর প্রধান কাজগুলো হলো:
- মেমরি ম্যানেজমেন্ট: মেমরি বরাদ্দ এবং পরিচালনা করা।
- প্রসেস ম্যানেজমেন্ট: প্রসেস তৈরি, চালানো এবং বন্ধ করা।
- ডিভাইস ড্রাইভার: হার্ডওয়্যার ডিভাইসগুলোর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা।
- সিকিউরিটি: সিস্টেমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
- নেটওয়ার্কিং: নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপন এবং ডেটা আদান-প্রদান করা।
২. হার্ডওয়্যার অ্যাবস্ট্রাকশন লেয়ার (HAL)
হার্ডওয়্যার অ্যাবস্ট্রাকশন লেয়ার (HAL) হলো কার্নেল এবং হার্ডওয়্যারের মধ্যে একটি ইন্টারফেস। এটি হার্ডওয়্যার প্রস্তুতকারকদের তাদের ড্রাইভারগুলোকে স্ট্যান্ডার্ড ইন্টারফেসের মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়েডের সাথে যুক্ত করতে সাহায্য করে। HAL এর সুবিধাগুলো হলো:
- পোর্টেবিলিটি: অ্যান্ড্রয়েডকে বিভিন্ন হার্ডওয়্যারে সহজে চালানো যায়।
- মডুলারিটি: হার্ডওয়্যার পরিবর্তন করলেও সিস্টেমের মূল অংশে পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় না।
- সুরক্ষা: হার্ডওয়্যার অ্যাক্সেস নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৩. নেটিভ লাইব্রেরি (Native Libraries)
অ্যান্ড্রয়েডে কিছু নেটিভ লাইব্রেরি রয়েছে, যেগুলো C এবং C++ প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা। এই লাইব্রেরিগুলো অ্যাপ্লিকেশন ফ্রেমওয়ার্কের জন্য প্রয়োজনীয় ফাংশন সরবরাহ করে। গুরুত্বপূর্ণ নেটিভ লাইব্রেরিগুলো হলো:
- libc: স্ট্যান্ডার্ড C লাইব্রেরি।
- libm: গাণিতিক ফাংশন।
- libpthread: থ্রেড ম্যানেজমেন্ট।
- libdl: ডায়নামিক লিঙ্কিং।
- libwebp: ছবি এবং ভিডিও কম্প্রেশন।
- libjpeg: JPEG ছবি প্রক্রিয়াকরণ।
৪. অ্যান্ড্রয়েড রানটাইম (ART)
অ্যান্ড্রয়েড রানটাইম (ART) হলো অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি অ্যাপ্লিকেশন কোডকে মেশিন কোডে অনুবাদ করে এবং চালায়। ART এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
- Ahead-of-Time (AOT) কম্পাইলেশন: অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করার সময় কোডকে মেশিন কোডে অনুবাদ করে, ফলে অ্যাপ্লিকেশন দ্রুত চলে।
- Just-in-Time (JIT) কম্পাইলেশন: প্রয়োজন অনুযায়ী কোডকে অনুবাদ করে, যা কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
- garbage collection : অব্যবহৃত মেমরি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনরুদ্ধার করে।
- ডালভিক ভার্চুয়াল মেশিন (DVM): ART এর পূর্ববর্তী সংস্করণ, যা এখন আর ব্যবহৃত হয় না।
অ্যাপ্লিকেশন অপটিমাইজেশন এর জন্য ART অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৫. অ্যাপ্লিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক (Application Framework)
অ্যাপ্লিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক হলো অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপারদের জন্য একটি শক্তিশালী কাঠামো। এটি বিভিন্ন সার্ভিস এবং API সরবরাহ করে, যা অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে সাহায্য করে। ফ্রেমওয়ার্কের প্রধান উপাদানগুলো হলো:
- অ্যাক্টিভিটি ম্যানেজার: অ্যাক্টিভিটিগুলোর জীবনচক্র পরিচালনা করে।
- কন্টেন্ট প্রোভাইডার: বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে ডেটা শেয়ার করার সুবিধা দেয়।
- রিসোর্স ম্যানেজার: অ্যাপ্লিকেশন রিসোর্স (যেমন: ছবি, লেআউট, স্ট্রিং) সরবরাহ করে।
- নোটিফিকেশন ম্যানেজার: ব্যবহারকারীকে নোটিফিকেশন দেখানোর ব্যবস্থা করে।
- ভিউ সিস্টেম: ইউজার ইন্টারফেস (UI) তৈরি এবং পরিচালনা করে।
- প্যাকেজ ম্যানেজার: অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল, আনইনস্টল এবং আপডেট করার সুবিধা দেয়।
৬. অ্যাপ্লিকেশন (Applications)
অ্যাপ্লিকেশন হলো অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে ব্যবহারকারীর সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপনকারী উপাদান। এগুলি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন:
- সিস্টেম অ্যাপ্লিকেশন: অ্যান্ড্রয়েডের সাথে আগে থেকে ইনস্টল করা থাকে (যেমন: ফোন, মেসেজ, সেটিংস)।
- ব্যবহারকারী অ্যাপ্লিকেশন: ব্যবহারকারী নিজে থেকে ডাউনলোড এবং ইনস্টল করে (যেমন: গেমস, সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিলিটি)।
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনের প্রকারভেদ:
- নেটিভ অ্যাপ্লিকেশন: C/C++ এ লেখা এবং ART দ্বারা চালিত।
- ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন: ওয়েব প্রযুক্তি (HTML, CSS, JavaScript) ব্যবহার করে তৈরি।
- হাইব্রিড অ্যাপ্লিকেশন: নেটিভ এবং ওয়েব প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি।
অ্যান্ড্রয়েড কম্পোনেন্টগুলোর মধ্যে সম্পর্ক
অ্যান্ড্রয়েড কম্পোনেন্টগুলো একটি স্তরায়িত (layered) কাঠামোতে সাজানো থাকে। নিচে একটি চিত্রসহ এদের সম্পর্ক দেখানো হলো:
``` +---------------------+ | Applications | +---------------------+
|
+---------------------+ | Application Framework| +---------------------+
|
+---------------------+ | ART/HAL | +---------------------+
|
+---------------------+ | Native Libs | +---------------------+
|
+---------------------+ | Kernel | +---------------------+
|
+---------------------+ | Hardware | +---------------------+ ```
অ্যান্ড্রয়েড ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম এবং বাইনারি অপশন
অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্ম বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের জন্য একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। অনেক ব্রোকার তাদের ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের জন্য অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন সরবরাহ করে। এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহারকারীদের যেকোনো স্থান থেকে ট্রেড করার সুবিধা দেয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের জন্য অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে সাধারণত নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো থাকে:
- রিয়েল-টাইম কোট: বিভিন্ন অ্যাসেটের লাইভ মূল্য প্রদর্শন।
- ট্রেডিং অপশন: কল (Call) এবং পুট (Put) অপশন নির্বাচন করার সুবিধা।
- চার্ট এবং বিশ্লেষণ: টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের জন্য বিভিন্ন চার্ট এবং সরঞ্জাম।
- অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট: ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট পরিচালনা এবং ফান্ড জমা/উত্থাপন করার সুবিধা।
- নোটিফিকেশন: ট্রেডিং সংকেত এবং বাজারের গুরুত্বপূর্ণ খবর সম্পর্কে জানানোর ব্যবস্থা।
বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের কৌশল
বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে সফল হওয়ার জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা উচিত। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল আলোচনা করা হলো:
- ট্রেন্ড অনুসরণ: বাজারের প্রবণতা (Trend) অনুসরণ করে ট্রেড করা।
- সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল: সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো চিহ্নিত করে ট্রেড করা।
- মোমেন্টাম ট্রেডিং: মোমেন্টামের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করা।
- রিভার্সাল ট্রেডিং: বাজারের রিভার্সাল পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করে ট্রেড করা।
- নিউজ ট্রেডিং: অর্থনৈতিক খবর এবং ঘটনার উপর ভিত্তি করে ট্রেড করা।
ভলিউম বিশ্লেষণ
ভলিউম বিশ্লেষণ বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভলিউম হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি অ্যাসেটের কতগুলো ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে তার পরিমাণ। ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাজারের গতিবিধি এবং সম্ভাব্য প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
- ভলিউম স্পাইক: হঠাৎ করে ভলিউম বৃদ্ধি পেলে, এটি একটি শক্তিশালী প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়।
- ভলিউম কনফার্মেশন: একটি ট্রেন্ডের সাথে ভলিউম বৃদ্ধি পেলে, এটি ট্রেন্ডের নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করে।
- ডাইভারজেন্স: মূল্য এবং ভলিউমের মধ্যে পার্থক্য দেখা গেলে, এটি একটি সম্ভাব্য রিভার্সালের ইঙ্গিত দেয়।
টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ হলো চার্ট এবং অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার করে বাজারের ভবিষ্যৎ গতিবিধিPredict করার একটি পদ্ধতি। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর হলো:
- মুভিং এভারেজ (Moving Average): বাজারের গড় মূল্য নির্ধারণ করে।
- রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স (RSI): বাজারের অতিরিক্ত কেনা বা বিক্রির অবস্থা নির্দেশ করে।
- MACD: দুটি মুভিং এভারেজের মধ্যে সম্পর্ক দেখায়।
- বলিঙ্গার ব্যান্ডস (Bollinger Bands): বাজারের অস্থিরতা পরিমাপ করে।
- ফিওনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট (Fibonacci Retracement): সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো চিহ্নিত করে।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
বাইনারি অপশন ট্রেডিং ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কিছু নিয়ম অনুসরণ করা উচিত:
- স্টপ-লস অর্ডার: সম্ভাব্য ক্ষতি সীমিত করার জন্য স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করা।
- পজিশন সাইজিং: প্রতিটি ট্রেডে বিনিয়োগের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা।
- ডাইভারসিফিকেশন: বিভিন্ন অ্যাসেটে বিনিয়োগ করে ঝুঁকি কমানো।
- মানসিক নিয়ন্ত্রণ: আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে যুক্তিযুক্তভাবে ট্রেড করা।
উপসংহার
অ্যান্ড্রয়েড কম্পোনেন্টগুলো একটি জটিল এবং সমন্বিত কাঠামো তৈরি করে, যা আধুনিক স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট ডিভাইসের ভিত্তি। এই উপাদানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট এবং সিস্টেম অপটিমাইজেশনের জন্য অপরিহার্য। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে, অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্ম একটি সুবিধাজনক মাধ্যম, তবে সফল ট্রেডিংয়ের জন্য সঠিক কৌশল, বিশ্লেষণ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা জরুরি।
অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্ট , লিনাক্স কার্নেল , মোবাইল টেকনোলজি , বাইনারি অপশন , টেকনিক্যাল এনালাইসিস , ভলিউম ট্রেডিং , ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ,অ্যাক্টিভিটি লাইফসাইকেল , ফ্র্যাগমেন্ট , ভিউ , ইনটেন্ট , ব্রডকাস্ট রিসিভার , সার্ভিস , কন্টেন্ট প্রোভাইডার , অ্যান্ড্রয়েড আর্কিটেকচার , ডালভিক মেশিন , আর্ট রানটাইম , অ্যান্ড্রয়েড স্টুডিও , গ্রেডল , জেসন
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
