National Academy of Engineering

ন্যাশনাল একাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং (National Academy of Engineering - NAE) হল একটি মার্কিন অলাভজনক সংস্থা। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তিগত নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে। এটি ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল-এর একটি অংশ, যা আবার ন্যাশনাল একাডেমিজ অফ সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যান্ড মেডিসিন-এর অধীনে গঠিত। NAE শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশলীদের সম্মানসূচক সদস্যপদ প্রদান করে না, বরং জাতীয় স্বার্থে প্রকৌশলবিদ্যা ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

প্রতিষ্ঠা ও ইতিহাস

NAE ১৯ ১৯৬৫ সালে জন এফ কেনেডি কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি congressional charter-এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং জনকল্যাণের জন্য প্রকৌশল এবং প্রযুক্তির ব্যবহারকে উৎসাহিত করা। NAE-এর যাত্রা শুরু হয়েছিল প্রযুক্তিগত অগ্রগতির একটি সন্ধিক্ষণে, যখন স্পেস রেস এবং ঠান্ডা যুদ্ধ উভয়ই প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের উপর জোর দিচ্ছিল। প্রথম সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৯ ৬৬ সালে।

উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম

NAE-এর প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হলো:

প্রকৌশলীদের নির্বাচন ও স্বীকৃতি: NAE প্রতি বছর নতুন সদস্য নির্বাচন করে, যারা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। এই সদস্যপদ প্রকৌশলীদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মানের একটি প্রতীক।
নীতি বিষয়ক পরামর্শ: NAE সরকার এবং অন্যান্য সংস্থাকে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত নীতি বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে। এই পরামর্শগুলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং জাতীয় সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণা ও উন্নয়ন: NAE বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করে এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তির নতুন ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে।
শিক্ষা ও জনসচেতনতা: NAE প্রকৌশল শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: NAE আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অন্যান্য প্রকৌশল একাডেমির সাথে সহযোগিতা করে এবং জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করে।

সদস্যপদ

NAE-এর সদস্যপদ অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ এবং এটি প্রকৌশলীদের জন্য একটি বিশেষ স্বীকৃতি। সদস্য হওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা প্রয়োজন। সাধারণত, NAE-এর সদস্য হওয়ার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়:

অসাধারণ প্রকৌশলগত অর্জন: প্রার্থীকে তার কর্মজীবনে উল্লেখযোগ্য প্রকৌশলগত অবদান রাখতে হবে।
পেশাগত অভিজ্ঞতা: প্রকৌশল ক্ষেত্রে দীর্ঘ এবং সফল কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
নেতৃত্বগুণ: প্রকৌশল পেশায় নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিচিতি: প্রার্থীকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচিত এবং সম্মানিত হতে হবে।

সদস্যদের বিভিন্ন বিভাগে বিভক্ত করা হয়, যেমন - বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, রাসায়নিক প্রকৌশল, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, বৈদ্যুতিক প্রকৌশল, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি।

NAE সদস্যের বিভাগ
বিভাগ
বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
রাসায়নিক প্রকৌশল
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
বৈদ্যুতিক প্রকৌশল
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
Materials Science and Engineering
Nuclear Engineering
অন্যান্য

গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ও প্রকাশনা

NAE বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং নিয়মিতভাবে বিভিন্ন প্রকাশনা প্রকাশ করে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:

The Bridge: এটি NAE-এর একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা, যেখানে প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।
NAE Reports: NAE বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যা নীতি নির্ধারকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে।
Peer Review: NAE প্রকৌশল প্রকল্পগুলোর গুণগত মান যাচাই করার জন্য peer review প্রক্রিয়া পরিচালনা করে।
Workshops and Conferences: NAE নিয়মিতভাবে কর্মশালা এবং সম্মেলনের আয়োজন করে, যেখানে প্রকৌশলীরা তাদের অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান বিনিময় করতে পারেন।
Grand Challenges for Engineering: NAE ২১ শতকের জন্য ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকৌশল চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে, যা মানবজাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে সহায়ক। এই চ্যালেঞ্জগুলো হলো:

   * Sustainable Supply of Water
   * Renewable Energy
   * Carbon Sequestration
   * Health Monitoring
   * Brain Understanding
   * Cyber Security
   * ইত্যাদি।

NAE এবং সরকারি নীতি

NAE মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। NAE-এর সদস্যরা প্রায়শই কংগ্রেসের শুনানিতে সাক্ষ্য দেন এবং সরকারকে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিষয়ে পরামর্শ দেন। NAE-এর প্রতিবেদনগুলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নীতি প্রণয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখে। উদাহরণস্বরূপ, NAE-এর একটি প্রতিবেদন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নতুন প্রযুক্তির বিকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ পেশ করেছিল।

NAE-এর প্রভাব

NAE-এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এটি প্রকৌশলীদের জন্য একটি সম্মানজনক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে এবং প্রকৌশল শিক্ষার মানোন্নয়নে সহায়তা করেছে। NAE-এর গবেষণা এবং নীতি বিষয়ক পরামর্শগুলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। NAE-এর Grand Challenges for Engineering প্রকৌশলীদের নতুন নতুন সমস্যা সমাধানে উৎসাহিত করছে এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তি বিকাশে সহায়তা করছে।

সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ

আরও জানতে

NAE-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: [1](https://www.nae.edu/)
ন্যাশনাল একাডেমিজ অফ সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যান্ড মেডিসিন: [2](https://www.nationalacademies.org/)

এই নিবন্ধটি ন্যাশনাল একাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কে একটি বিস্তৃত ধারণা প্রদান করে। NAE-এর উদ্দেশ্য, কার্যক্রম, সদস্যপদ এবং প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখানে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ