Double Touch Option
ডাবল টাচ অপশন
ডাবল টাচ অপশন হল বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর একটি বিশেষ প্রকার। এই অপশনটিতে, একজন ট্রেডার ভবিষ্যদ্বাণী করে যে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি অ্যাসেটের মূল্য দুটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা (টার্গেট প্রাইস) স্পর্শ করবে। অন্যান্য অপশন ট্রেডিং পদ্ধতির তুলনায় এটি কিছুটা জটিল, তবে সঠিকভাবে বুঝলে লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি। এই নিবন্ধে, ডাবল টাচ অপশন ট্রেডিংয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ডাবল টাচ অপশন কী?
ডাবল টাচ অপশন হলো একটি ফিনান্সিয়াল ডেরিভেটিভ। এখানে, ট্রেডার একটি নির্দিষ্ট অ্যাসেটের (যেমন: মুদ্রা জোড়া, কমোডিটি, স্টক) দামের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা দেয়। ডাবল টাচ অপশনের মূল বৈশিষ্ট্য হলো, ট্রেডারকে দুটি টার্গেট প্রাইস নির্ধারণ করতে হয় - একটি উপরের দিকে এবং অন্যটি নিচের দিকে। ট্রেডটি লাভজনক হবে যদি অ্যাসেটের দাম নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই দুটি টার্গেট প্রাইসকে স্পর্শ করে।
ডাবল টাচ অপশন সাধারণত দুটি ধরনের হয়ে থাকে:
- আপার ডাবল টাচ (Upper Double Touch): এই ক্ষেত্রে, ট্রেডার মনে করে যে অ্যাসেটের দাম প্রথমে নিচের টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করবে এবং তারপর উপরের টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করবে।
- লোয়ার ডাবল টাচ (Lower Double Touch): এই ক্ষেত্রে, ট্রেডার মনে করে যে অ্যাসেটের দাম প্রথমে উপরের টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করবে এবং তারপর নিচের টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করবে।
ডাবল টাচ অপশন কিভাবে কাজ করে?
ডাবল টাচ অপশন ট্রেড করার জন্য, প্রথমে ট্রেডারকে একটি অ্যাসেট নির্বাচন করতে হবে এবং তারপর দুটি টার্গেট প্রাইস নির্ধারণ করতে হবে। এরপর, ট্রেডারকে ট্রেডের মেয়াদকাল (Expiration Time) নির্বাচন করতে হবে। মেয়াদকাল হলো সেই সময়সীমা, যার মধ্যে অ্যাসেটের দাম দুটি টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করতে হবে।
যদি অ্যাসেটের দাম মেয়াদকালের মধ্যে দুটি টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করে, তাহলে ট্রেডার লাভবান হন। লাভের পরিমাণ সাধারণত ট্রেড করা অর্থের ৮০-৯৫% পর্যন্ত হতে পারে। তবে, যদি অ্যাসেটের দাম দুটি টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ট্রেডার তার বিনিয়োগের সম্পূর্ণ পরিমাণ হারাতে পারেন।
| Scenario | Description | আপার ডাবল টাচ | ট্রেডার বিশ্বাস করে দাম প্রথমে নিচে গিয়ে তারপর উপরে যাবে | লোয়ার ডাবল টাচ | ট্রেডার বিশ্বাস করে দাম প্রথমে উপরে গিয়ে তারপর নিচে যাবে |
ডাবল টাচ অপশনের সুবিধা
- উচ্চ লাভের সম্ভাবনা: ডাবল টাচ অপশনে লাভের পরিমাণ অন্যান্য অপশনের তুলনায় বেশি হতে পারে।
- নমনীয়তা: ট্রেডাররা তাদের নিজস্ব টার্গেট প্রাইস নির্ধারণ করতে পারে, যা তাদের ট্রেডিং কৌশল অনুসারে কাস্টমাইজ করা যায়।
- বিভিন্ন অ্যাসেটে ট্রেড করার সুযোগ: ডাবল টাচ অপশন বিভিন্ন ধরনের অ্যাসেটে ট্রেড করা যায়, যেমন বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা, চাকা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি।
- কম ঝুঁকি: অন্যান্য জটিল ট্রেডিং কৌশলের তুলনায় ডাবল টাচ অপশন তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ।
ডাবল টাচ অপশনের অসুবিধা
- জটিলতা: ডাবল টাচ অপশন অন্যান্য অপশনের তুলনায় কিছুটা জটিল, তাই নতুন ট্রেডারদের জন্য এটি কঠিন হতে পারে।
- দুটি টার্গেট স্পর্শ করার প্রয়োজনীয়তা: অ্যাসেটের দামকে অবশ্যই দুটি টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করতে হবে, যা সবসময় সম্ভব নাও হতে পারে।
- সময়সীমা: ট্রেডটি লাভজনক হওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে দুটি টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করতে হয়, যা চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
ডাবল টাচ অপশনের জন্য ট্রেডিং কৌশল
ডাবল টাচ অপশন ট্রেড করার জন্য কিছু জনপ্রিয় কৌশল নিচে উল্লেখ করা হলো:
- টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস ব্যবহার: চার্ট প্যাটার্ন, ট্রেন্ড লাইন, এবং সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল বিশ্লেষণ করে টার্গেট প্রাইস নির্ধারণ করা যায়।
- ভলিউম অ্যানালাইসিস ব্যবহার: ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায় এবং সেই অনুযায়ী ট্রেড করা যায়।
- মোমেন্টাম ইন্ডিকেটর ব্যবহার: আরএসআই (Relative Strength Index) এবং এমএসিডি (Moving Average Convergence Divergence) এর মতো মোমেন্টাম ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি নির্ণয় করা যায়।
- ব্যান্ড ভিত্তিক কৌশল : বোলিঙ্গার ব্যান্ড-এর মতো ব্যান্ড ব্যবহার করে সম্ভাব্য টার্গেট প্রাইস নির্ধারণ করা যায়।
- নিউজ এবং ইভেন্ট ট্রেডিং: গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খবর এবং রাজনৈতিক ঘটনার দিকে নজর রেখে ট্রেড করা যায়, কারণ এগুলোর কারণে বাজারে বড় ধরনের মুভমেন্ট হতে পারে।
- টার্গেট প্রাইস নির্ধারণ: অ্যাসেটের ঐতিহাসিক ডেটা এবং বর্তমান বাজারের পরিস্থিতি বিবেচনা করে টার্গেট প্রাইস নির্ধারণ করা উচিত। খুব কাছাকাছি টার্গেট প্রাইস নির্ধারণ করলে ট্রেডটি দ্রুত শেষ হয়ে যেতে পারে, আবার খুব দূরে নির্ধারণ করলে ট্রেডটি লাভজনক নাও হতে পারে।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
ডাবল টাচ অপশন ট্রেডিংয়ে ঝুঁকির পরিমাণ কমাতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত:
- স্টপ-লস ব্যবহার: স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করে সম্ভাব্য ক্ষতি সীমিত করা যায়।
- ছোট বিনিয়োগ: প্রথমে ছোট বিনিয়োগের মাধ্যমে ট্রেড শুরু করা উচিত, যাতে বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো যায়।
- পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন: বিভিন্ন অ্যাসেটে বিনিয়োগ করে পোর্টফোলিওকে বৈচিত্র্যময় করা উচিত।
- মানসিক শৃঙ্খলা: ট্রেডিংয়ের সময় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। অতিরিক্ত লোভ বা ভয় থেকে ট্রেড করা উচিত নয়।
- ঝুঁকি-পুরস্কার অনুপাত বিবেচনা: প্রতিটি ট্রেডের ঝুঁকি এবং সম্ভাব্য পুরস্কারের অনুপাত বিবেচনা করা উচিত।
ডাবল টাচ অপশন এবং অন্যান্য অপশন
ডাবল টাচ অপশন অন্যান্য বাইনারি অপশন থেকে কিভাবে আলাদা, তা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- হাই/লো অপশন: এই অপশনে, ট্রেডার শুধু ভবিষ্যদ্বাণী করে যে অ্যাসেটের দাম একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়বে নাকি কমবে। ডাবল টাচ অপশনে দুটি টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করার শর্ত থাকে।
- টাচ/নো-টাচ অপশন: এই অপশনে, ট্রেডার ভবিষ্যদ্বাণী করে যে অ্যাসেটের দাম একটি নির্দিষ্ট টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করবে কিনা। ডাবল টাচ অপশনে দুটি টার্গেট প্রাইস স্পর্শ করার প্রয়োজন হয়।
- রेंज বাউন্ড অপশন: এই অপশনটি একটি নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে দাম থাকার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। ডাবল টাচ অপশন রেঞ্জের বাইরে দুটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট স্পর্শ করার উপর নির্ভরশীল।
| Option Type | Description | হাই/লো অপশন | দাম বাড়বে বা কমবে কিনা তার পূর্বাভাস | টাচ/নো-টাচ অপশন | দাম একটি নির্দিষ্ট টার্গেট স্পর্শ করবে কিনা তার পূর্বাভাস | ডাবল টাচ অপশন | দাম দুটি নির্দিষ্ট টার্গেট স্পর্শ করবে কিনা তার পূর্বাভাস |
উপসংহার
ডাবল টাচ অপশন একটি আকর্ষণীয় এবং লাভজনক ট্রেডিং বিকল্প হতে পারে, যদি ট্রেডাররা এটি সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পারে এবং সঠিক কৌশল অবলম্বন করে। এই অপশনটি ট্রেড করার আগে মার্কেট বিশ্লেষণ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং ট্রেডিং কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান থাকা জরুরি। নতুন ট্রেডারদের উচিত প্রথমে ডেমো অ্যাকাউন্টে অনুশীলন করা এবং তারপর ধীরে ধীরে লাইভ ট্রেডিং শুরু করা। এছাড়াও, নিয়মিত বাজারের খবরাখবর রাখা এবং অভিজ্ঞ ট্রেডারদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বাইনারি অপশন প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করার সময়, নির্ভরযোগ্য এবং নিয়ন্ত্রিত প্ল্যাটফর্ম বেছে নেওয়া উচিত।
ট্রেডিং সাইকোলজি এবং মানি ম্যানেজমেন্ট-এর গুরুত্বও এখানে অনস্বীকার্য।
অ্যাসেট শ্রেণী সম্পর্কে জ্ঞান আপনাকে আরও ভালো ট্রেড করতে সাহায্য করবে।
অপশন গ্রিকস সম্পর্কে ধারণা থাকলে ঝুঁকি আরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন এবং ওয়েভ থিওরি এর মতো টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস টুল ব্যবহার করে ট্রেডিংয়ের সম্ভাবনা বাড়ানো যেতে পারে।
ব্যাকটেস্টিং এর মাধ্যমে আপনার কৌশলগুলির কার্যকারিতা পরীক্ষা করুন।
ডেমো অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বাস্তব ট্রেডিংয়ের পূর্বে অভিজ্ঞতা অর্জন করুন।
শিক্ষা এবং গবেষণা চালিয়ে যান, কারণ বাজার সর্বদা পরিবর্তনশীল।
সেন্ট্রাল ব্যাংক পলিসি এবং ভূ-রাজনৈতিক ঘটনা বাজারের উপর প্রভাব ফেলে, তাই সেগুলোর দিকে নজর রাখুন।
কর এবং আইন সম্পর্কে অবগত থাকুন।
সফটওয়্যার এবং সরঞ্জাম ব্যবহার করে আপনার ট্রেডিং প্রক্রিয়াকে স্বয়ংক্রিয় করুন।
কমিউনিটি এবং ফোরাম-এ যোগ দিয়ে অন্যান্য ট্রেডারদের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময় করুন।
দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ এবং স্বল্পমেয়াদী ট্রেডিং-এর মধ্যে পার্থক্য বুঝুন।
বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করুন।
আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে কোম্পানির অবস্থা সম্পর্কে ধারণা নিন।
বাজারের পূর্বাভাস এবং বিশ্লেষণ সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট থাকুন।
যোগাযোগ এবং সমর্থন-এর জন্য একটি ভালো ব্রোকার নির্বাচন করুন।
প্রযুক্তিগত সূচক ব্যবহার করে ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিন।
ভলিউম স্প্রেড অ্যানালাইসিস ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি আরও ভালোভাবে বুঝুন।
ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট ব্যবহার করে সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল সনাক্ত করুন।
হারমোনিক প্যাটার্ন ব্যবহার করে ট্রেডিংয়ের সুযোগ খুঁজুন।
ইম্পালস ওয়েভ এবং correctional wave চিহ্নিত করুন।
Elliott Wave Theory ব্যবহার করে বাজারের দীর্ঘমেয়াদী প্রবণতা নির্ণয় করুন।
গ্যাপ অ্যানালাইসিস ব্যবহার করে দামের হঠাৎ পরিবর্তনে লাভবান হওয়ার সুযোগ খুঁজুন।
পয়েন্ট এবং ফিগার চার্ট ব্যবহার করে বাজারের দৃশ্যপট বিশ্লেষণ করুন।
রেনকো চার্ট ব্যবহার করে নয়েজ ফিল্টার করুন এবং স্পষ্ট প্রবণতা সনাক্ত করুন।
হিহাসিক ডেটা বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ বাজারের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা নিন।
সেন্টিমেন্ট অ্যানালাইসিস ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের মানসিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করুন।
ম্যাক্রোইকোনমিক ফ্যাক্টর যেমন সুদের হার এবং মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনা করুন।
ঝুঁকি সহনশীলতা এবং বিনিয়োগের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করুন।
পোর্টফোলিও অপটিমাইজেশন করে আপনার বিনিয়োগের রিটার্ন বাড়ান।
ডাইভারসিফিকেশন করে ঝুঁকির প্রভাব কমান।
নিয়মিত পর্যালোচনা এবং পুনর্গঠন করুন আপনার ট্রেডিং কৌশল।
অভিজ্ঞ পরামর্শক-এর সাহায্য নিন।
ট্রেডিং জার্নাল তৈরি করে আপনার ট্রেডগুলি নথিভুক্ত করুন।
মানসিক বাধা অতিক্রম করুন এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে ট্রেড করুন।
ধৈর্য এবং অনুশাসন বজায় রাখুন।
শেখা এবং উন্নতি চালিয়ে যান।
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
