Cboe Options Exchange

Cboe Options Exchange

Cboe Options Exchange (Cboe OE) হল বিশ্বের বৃহত্তম অপশন এক্সচেঞ্জ। এটি মূলত Chicago Board Options Exchange (CBOE) নামে পরিচিত ছিল। এই এক্সচেঞ্জটি অপশন ট্রেডিং এবং ডেরিভেটিভস মার্কেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। Cboe OE বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধরনের অপশন চুক্তি ট্রেড করার সুযোগ প্রদান করে, যা তাদের পোর্টফোলিও রক্ষা করতে এবং সম্ভাব্য লাভ বাড়াতে সহায়ক। এই প্রবন্ধে Cboe Options Exchange-এর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

ইতিহাস এবং পটভূমি Cboe Options Exchange-এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৩ সালে, যখন এটি প্রথম স্ট্যান্ডার্ডাইজড অপশন চুক্তি চালু করে। এর আগে অপশন ট্রেডিং মূলত ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) মার্কেটে হতো, যা জটিল এবং অস্বচ্ছ ছিল। Cboe OE অপশন ট্রেডিংকে একটি সুসংহত কাঠামো দেয় এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য এটিকে আরও সহজলভ্য করে তোলে। সময়ের সাথে সাথে Cboe OE বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তি এবং পণ্যের প্রবর্তন করে নিজেদেরকে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন করেছে।

Cboe OE-এর গঠন Cboe Options Exchange একটি জটিল কাঠামো নিয়ে গঠিত। এর প্রধান অংশগুলো হলো:

• মার্কেট মেকিং: Cboe OE-তে মার্কেট মেকাররা অপশন চুক্তির দাম নির্ধারণ এবং লিকুইডিটি প্রদানের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
• ক্লিয়ারিং এবং সেটেলমেন্ট: অপশন চুক্তিগুলো ক্লিয়ারিং কর্পোরেশন অফ আমেরিকা (CCA) দ্বারা ক্লিয়ার এবং সেটেল করা হয়, যা ট্রেডিংয়ের ঝুঁকি কমায়।
• রেগুলেশন: Cboe OE ইউ.এস. সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

ট্রেড করা অপশনের প্রকারভেদ Cboe OE বিভিন্ন ধরনের অপশন চুক্তি ট্রেড করার সুযোগ দেয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো:

• স্টক অপশন: কোনো নির্দিষ্ট স্টকের উপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়া অপশন। যেমন – অ্যাপল স্টক অপশন
• ইনডেক্স অপশন: কোনো নির্দিষ্ট স্টক মার্কেট ইনডেক্সের (যেমন S&P 500) উপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়া অপশন। S&P 500 অপশন
• ইটিএফ অপশন: এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড (ETF)-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়া অপশন। SPY ETF অপশন
• ফিউচার অপশন: ফিউচার কন্ট্রাক্টের উপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়া অপশন।
• ফরেন কারেন্সি অপশন: বিভিন্ন দেশের মুদ্রার উপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়া অপশন।

বাইনারি অপশন Cboe OE-তে সরাসরি ট্রেড করা যায় না, তবে এর মাধ্যমে অন্যান্য অপশন ট্রেড করে বাইনারি অপশনের ঝুঁকি কমানো যায়।

ট্রেডিং প্রক্রিয়া Cboe OE-তে অপশন ট্রেডিং একটি ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ট্রেডিং প্রক্রিয়াটি সাধারণত নিম্নরূপ:

১. অর্ডার প্লেসমেন্ট: বিনিয়োগকারী একটি ব্রোকারের মাধ্যমে অপশন কেনার বা বিক্রির জন্য অর্ডার দেয়। ২. অর্ডার ম্যাচিং: Cboe OE-এর সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্রয় এবং বিক্রয় অর্ডারগুলো ম্যাচ করে। ৩. ট্রেড এক্সিকিউশন: অর্ডার ম্যাচ হলে ট্রেডটি সম্পন্ন হয়। ৪. ক্লিয়ারিং এবং সেটেলমেন্ট: ট্রেডটি CCA-এর মাধ্যমে ক্লিয়ার এবং সেটেল করা হয়।

Cboe OE-এর সুবিধা Cboe Options Exchange বিনিয়োগকারীদের জন্য অনেক সুবিধা প্রদান করে:

• লিকুইডিটি: Cboe OE বিশ্বের বৃহত্তম অপশন এক্সচেঞ্জ হওয়ায় এখানে লিকুইডিটি অনেক বেশি, যা বিনিয়োগকারীদের দ্রুত এবং সহজে অপশন ট্রেড করতে সাহায্য করে।
• স্বচ্ছতা: Cboe OE-তে ট্রেডিং প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা ন্যায্য মূল্যে অপশন ট্রেড করতে পারে।
• ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: অপশন ট্রেডিং বিনিয়োগকারীদের তাদের পোর্টফোলিওতে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। হেজিং একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।
• সুযোগ: Cboe OE বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধরনের অপশন চুক্তি ট্রেড করার সুযোগ দেয়, যা তাদের বিনিয়োগের সুযোগ বাড়ায়।

Cboe OE-এর অসুবিধা Cboe Options Exchange-এর কিছু অসুবিধা রয়েছে:

• জটিলতা: অপশন ট্রেডিং জটিল হতে পারে, বিশেষ করে নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য।
• ঝুঁকি: অপশন ট্রেডিংয়ে ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে, বিশেষ করে যদি বিনিয়োগকারী অপশনের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ভালোভাবে না জানে।
• কমিশন এবং ফি: Cboe OE-তে ট্রেড করার জন্য ব্রোকারদের কমিশন এবং অন্যান্য ফি দিতে হয়।

Cboe OE এবং বাইনারি অপশন Cboe OE সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিং সমর্থন করে না। বাইনারি অপশন হলো একটি ডিজিটাল অপশন, যেখানে বিনিয়োগকারী একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সম্পদের মূল্য একটি নির্দিষ্ট স্তরের উপরে বা নিচে যাবে কিনা তা অনুমান করে। যদিও Cboe OE-তে সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেড করা যায় না, তবে এর মাধ্যমে অন্যান্য অপশন ট্রেড করে বাইনারি অপশনের ঝুঁকি কমানো যায়।

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের বিকল্প কৌশল Cboe OE-তে উপলব্ধ অপশন ব্যবহার করে বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের কিছু বিকল্প কৌশল নিচে উল্লেখ করা হলো:

১. কল স্প্রেড (Call Spread): একটি নির্দিষ্ট স্ট্রাইক প্রাইসের কল অপশন কিনে এবং অন্য একটি উচ্চ স্ট্রাইক প্রাইসের কল অপশন বিক্রি করে এই কৌশল তৈরি করা হয়। এটি বাইনারি অপশনের মতো একটি নির্দিষ্ট মূল্যের উপরে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে। কল অপশন

২. পুট স্প্রেড (Put Spread): একটি নির্দিষ্ট স্ট্রাইক প্রাইসের পুট অপশন কিনে এবং অন্য একটি নিম্ন স্ট্রাইক প্রাইসের পুট অপশন বিক্রি করে এই কৌশল তৈরি করা হয়। এটি বাইনারি অপশনের মতো একটি নির্দিষ্ট মূল্যের নিচে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে। পুট অপশন

৩. স্ট্র্যাডল (Straddle): একই স্ট্রাইক প্রাইস এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখের একটি কল অপশন এবং একটি পুট অপশন একসাথে কিনে এই কৌশল তৈরি করা হয়। এটি বাজারের উচ্চ অস্থিরতা থেকে লাভবান হতে সাহায্য করে। স্ট্র্যাডল কৌশল

৪. স্ট্র্যাঙ্গল (Strangle): বিভিন্ন স্ট্রাইক প্রাইসের একটি কল অপশন এবং একটি পুট অপশন একসাথে কিনে এই কৌশল তৈরি করা হয়। এটি স্ট্র্যাডলের মতোই, তবে কম খরচে বাজারের অস্থিরতা থেকে লাভবান হওয়ার সুযোগ দেয়। স্ট্র্যাঙ্গল কৌশল

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস এবং ইনডিকেটর Cboe OE-তে অপশন ট্রেড করার সময় টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস এবং বিভিন্ন ইনডিকেটর ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। কিছু জনপ্রিয় ইনডিকেটর হলো:

• মুভিং এভারেজ (Moving Average): এটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মূল্যের গড় দেখায় এবং ট্রেন্ড নির্ধারণে সাহায্য করে। মুভিং এভারেজ
• রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইনডেক্স (RSI): এটি মূল্যের গতি এবং পরিবর্তনের হার পরিমাপ করে এবং ওভারবট বা ওভারসোল্ড অবস্থা নির্দেশ করে। RSI ইনডেক্স
• MACD (Moving Average Convergence Divergence): এটি দুটি মুভিং এভারেজের মধ্যে সম্পর্ক দেখায় এবং ট্রেডিং সিগন্যাল প্রদান করে। MACD ইনডেক্স
• বলিঙ্গার ব্যান্ডস (Bollinger Bands): এটি মূল্যের অস্থিরতা পরিমাপ করে এবং সম্ভাব্য ব্রেকআউট চিহ্নিত করে। বোলিঙ্গার ব্যান্ডস
• ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট (Fibonacci Retracement): এটি সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল নির্ধারণ করে। ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট

ট্রেডিং ভলিউম এবং মার্কেট ট্রেন্ড Cboe OE-তে ট্রেডিং ভলিউম এবং মার্কেট ট্রেন্ড অপশন ট্রেডিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ দিক। উচ্চ ট্রেডিং ভলিউম সাধারণত বাজারের আগ্রহ এবং লিকুইডিটি নির্দেশ করে। মার্কেট ট্রেন্ড নির্ধারণ করে বিনিয়োগকারীরা তাদের ট্রেডিং কৌশল তৈরি করতে পারে।

• বুলিশ ট্রেন্ড: যখন মূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। বুলিশ মার্কেট
• বিয়ারিশ ট্রেন্ড: যখন মূল্যের নিম্নগতি দেখা যায়। বিয়ারিশ মার্কেট
• সাইডওয়েজ ট্রেন্ড: যখন মূল্য কোনো নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে ওঠানামা করে। সাইডওয়েজ মার্কেট

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অপশন ট্রেডিংয়ে ঝুঁকি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিনিয়োগকারীদের উচিত তাদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কৌশল তৈরি করা এবং তা অনুসরণ করা। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা টিপস হলো:

• স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করা: এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি নির্দিষ্ট মূল্যে অপশন বিক্রি করে দেয়, যা সম্ভাব্য ক্ষতি কমায়। স্টপ-লস অর্ডার
• পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন: বিভিন্ন ধরনের অপশন এবং সম্পদে বিনিয়োগ করে ঝুঁকি কমানো যায়। পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন
• লিভারেজ সীমিত করা: অতিরিক্ত লিভারেজ ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। লিভারেজ
• মার্কেট বিশ্লেষণ: ট্রেড করার আগে মার্কেট এবং অপশনের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ভালোভাবে বিশ্লেষণ করা উচিত। মার্কেট অ্যানালাইসিস

Cboe OE-এর ভবিষ্যৎ Cboe Options Exchange ক্রমাগত নিজেদেরকে উন্নত করছে এবং নতুন প্রযুক্তি ও পণ্য প্রবর্তন করছে। ভবিষ্যতে Cboe OE আরও বেশি ইলেকট্রনিক ট্রেডিং, উন্নত ডেটা বিশ্লেষণ এবং নতুন ধরনের অপশন চুক্তি নিয়ে আসবে বলে আশা করা যায়।

উপসংহার Cboe Options Exchange অপশন ট্রেডিং এবং ডেরিভেটিভস মার্কেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধরনের অপশন চুক্তি ট্রেড করার সুযোগ প্রদান করে, যা তাদের পোর্টফোলিও রক্ষা করতে এবং সম্ভাব্য লাভ বাড়াতে সহায়ক। যদিও Cboe OE সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিং সমর্থন করে না, তবে এর মাধ্যমে অন্যান্য অপশন ট্রেড করে বাইনারি অপশনের ঝুঁকি কমানো যায়। অপশন ট্রেডিংয়ে সফল হতে হলে বিনিয়োগকারীদের মার্কেট সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে এবং সঠিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল অনুসরণ করতে হবে।

অপশন ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজি ডেরিভেটিভস মার্কেট ফিনান্সিয়াল মার্কেট বিনিয়োগের ঝুঁকি Cboe Global Markets

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (ন্যূনতম জমা $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (ন্যূনতম জমা $5)

আমাদের কমিউনিটিতে যোগ দিন

আমাদের Telegram চ্যানেল @strategybin সাবস্ক্রাইব করুন: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সিগন্যাল ✓ একচেটিয়া কৌশল বিশ্লেষণ ✓ মার্কেট ট্রেন্ডের অ্যালার্ট ✓ নবীনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ