ভৌতিক চলচ্চিত্র

ভৌতিক চলচ্চিত্র: এক আতঙ্কজনক জগৎ

ভৌতিক চলচ্চিত্র হলো চলচ্চিত্রের একটি জনপ্রিয় ধরণ যা দর্শকদের মধ্যে ভয়, শঙ্কা এবং উদ্বেগের অনুভূতি জাগানোর উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়। এই ধরনের চলচ্চিত্রে প্রায়শই অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা, ভূতের উপস্থিতি, অশরীরী সত্তা এবং অশুভ ঘটনা দেখানো হয়। ভৌতিক চলচ্চিত্রের ইতিহাস বেশ পুরনো এবং সময়ের সাথে সাথে এর নির্মাণশৈলী এবং বিষয়বস্তুতে অনেক পরিবর্তন এসেছে।

ইতিহাস

ভৌতিক চলচ্চিত্রের শুরুটা হয় ১৯ শতকের শেষের দিকে এবং বিংশ শতাব্দীর শুরুতে। এই সময়কালে, নোভেল এবং নাটকের মাধ্যমে ভয়ের গল্পগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে। চলচ্চিত্রের প্রথম দিকের উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে জর্জেস মেলিয়েসের ১৯০২ সালের "Le Manoir du Diable" (The House of the Devil), যা ভৌতিক চলচ্চিত্রের ভিত্তি স্থাপন করে।

১৯২০-এর দশকে, জার্মান প্রকাশবাদ (German Expressionism) চলচ্চিত্রের প্রভাব পড়ে ভৌতিক চলচ্চিত্রে। এফ. ডব্লিউ. মুর্নাউয়ের ১৯২২ সালের "Nosferatu", যা ব্রাম স্টোকারের "Dracula" উপন্যাসের একটি অননুমোদিত সংস্করণ, এই ধারার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। এই চলচ্চিত্রটি ভয়ের পরিবেশ তৈরি করার জন্য আলো এবং ছায়ার ব্যবহার এবং অদ্ভুত ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল ব্যবহার করে।

১৯৩০-এর দশকে, ইউনিভার্সাল স্টুডিওস (Universal Studios) ভৌতিক চলচ্চিত্রের সোনালী যুগ শুরু করে। এই সময়কালে "Dracula" (১৯৩১), "Frankenstein" (১৯৩১) এবং "The Mummy" (১৯৩২) এর মতো ক্লাসিক চলচ্চিত্রগুলো মুক্তি পায়। এই চলচ্চিত্রগুলো ভয়ের নতুন সংজ্ঞা তৈরি করে এবং ভৌতিক চরিত্রগুলো দর্শকদের মধ্যে স্থায়ী ছাপ ফেলে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, ভৌতিক চলচ্চিত্র আরও বেশি মানসিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট যুক্ত হতে শুরু করে। ১৯৫০-এর দশকে, শীতল যুদ্ধের (Cold War) প্রভাবের কারণে বিজ্ঞান কল্পকাহিনী এবং ভৌতিক চলচ্চিত্রের মিশ্রণ দেখা যায়, যেখানে পরমাণুর ভয় এবং এলিয়েন আক্রমণের ধারণাগুলো প্রাধান্য পায়।

১৯৬0-এর দশকে, আলফ্রেড হিচকক-এর "Psycho" (১৯৬০) চলচ্চিত্রটি ভৌতিক চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। এই চলচ্চিত্রটি মানসিক থ্রিলার এবং হররgenerations এর মধ্যে একটি নতুন ধারার সৃষ্টি করে।

১৯৭০-এর দশকে, "The Exorcist" (১৯৭৩) চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়, যা অভিশাপ এবং অশুভ আত্মার ধারণাকে নতুনভাবে উপস্থাপন করে। এই চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে ব্যাপক সাফল্য লাভ করে এবং ভৌতিক চলচ্চিত্রকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে।

১৯৮০-এর দশকে, স্ল্যাশার ফিল্ম (Slasher film)গুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে, যেখানে একজন সিরিয়াল কিলার একের পর এক চরিত্রকে হত্যা করে। "Halloween" (১৯৭৮), "Friday the 13th" (১৯৮০) এবং "A Nightmare on Elm Street" (১৯৮৪) এই ধারার উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।

১৯৯০-এর দশকে, "The Blair Witch Project" (১৯৯৯) চলচ্চিত্রটি ফাউন্ড ফুটেজ (Found footage) ধারার জন্ম দেয়, যেখানে চলচ্চিত্রটি এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন এটি হারিয়ে যাওয়া ভিডিও টেপের ফুটেজ।

ভৌতিক চলচ্চিত্রের উপাদান

ভৌতিক চলচ্চিত্রে কিছু নির্দিষ্ট উপাদান প্রায়শই ব্যবহার করা হয়, যা দর্শকদের মধ্যে ভয়ের অনুভূতি তৈরি করে:

• অশরীরী সত্তা: ভূত, পিশাচ, অভিশাপগ্রস্থ আত্মা ইত্যাদি।
• ভয়ঙ্কর স্থান: পরিত্যক্ত বাড়ি, কবরস্থান, অন্ধকার বন, ইত্যাদি।
• অস্বাভাবিক ঘটনা: অপ্রত্যাশিত শব্দ, আলো নিভে যাওয়া, জিনিসপত্র নিজে থেকে নড়াচড়া করা, ইত্যাদি।
• মানসিক চাপ: চরিত্রগুলোর মানসিক দুর্বলতা এবং দুঃস্বপ্ন।
• গথিক উপাদান: পুরনো দুর্গ, অন্ধকার পরিবেশ, রহস্যময় পরিবেশ।
• jumpscare: আকস্মিক ভীতিকর দৃশ্য।
• গোর: রক্ত, হিংসা এবং মৃতদেহর দৃশ্য (কিছু চলচ্চিত্রে)।

ভৌতিক চলচ্চিত্রের প্রকারভেদ

ভৌতিক চলচ্চিত্র বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন:

• অতিপ্রাকৃত থ্রিলার (Supernatural Thriller): এই ধরনের চলচ্চিত্রে অতিপ্রাকৃত ঘটনা এবং মানসিক থ্রিলার একসাথে থাকে।
• স্ল্যাশার ফিল্ম (Slasher Film): যেখানে একজন সিরিয়াল কিলার একের পর এক চরিত্রকে হত্যা করে।
• অভিশাপ চলচ্চিত্র (Curse Film): যেখানে কোনো ব্যক্তি বা স্থান কোনো অভিশাপের শিকার হয়।
• ভূতের গল্প (Ghost Story): যেখানে ভূতের উপস্থিতি এবং তাদের কার্যকলাপ দেখানো হয়।
• মনস্তাত্ত্বিক হরর (Psychological Horror): যেখানে মানুষের মানসিক অবস্থা এবং ভীতিকে ব্যবহার করে ভয় দেখানো হয়।
• ফাউন্ড ফুটেজ (Found Footage): যেখানে চলচ্চিত্রটি এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন এটি হারিয়ে যাওয়া ভিডিও টেপের ফুটেজ।

ভৌতিক চলচ্চিত্রের উদাহরণ

! পরিচালক |! বছর |

এফ. ডব্লিউ. মুর্নাউ | ১৯২২ |

টড ব্রাউনিং | ১৯৩১ |

জেমস Whale | ১৯৩১ |

আলফ্রেড হিচকক | ১৯৬০ |

উইলিয়াম ফ্রিডকিন | ১৯৭৩ |

জন Carpenter | ১৯৭৮ |

স্ট্যানলি Kubrick | ১৯৮০ |

ওয়েস Craven | ১৯৮৪ |

জোনাথন Demme | ১৯৯১ |

ড্যানিয়েল Myrick & Eduardo Sánchez | ১৯৯৯ |

গোর verbinski | ২০০২ |

জেমস Wan | ২০১৩ |

জর্ডান Peele | ২০১৭ |

নির্মাণশৈলী এবং কৌশল

ভৌতিক চলচ্চিত্রের নির্মাণে বেশ কিছু বিশেষ কৌশল ব্যবহার করা হয়:

• আলো এবং ছায়া: ভয়ের পরিবেশ তৈরি করার জন্য আলো এবং ছায়ার ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
• শব্দ: অপ্রত্যাশিত শব্দ, সংগীত এবং নীরবতা ব্যবহার করে দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করা হয়।
• ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল: অদ্ভুত ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল এবং মুভমেন্ট ব্যবহার করে দর্শকদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি করা হয়।
• সম্পাদনা: দ্রুত সম্পাদনা এবং দৃশ্যের পরিবর্তন ব্যবহার করে ভয়ের অনুভূতি বাড়ানো হয়।
• বিশেষ প্রভাব: ভিজ্যুয়াল এফেক্টস এবং অডিও এফেক্টস ব্যবহার করে অতিপ্রাকৃত ঘটনাগুলোকে বাস্তবসম্মত করে তোলা হয়।
• গল্প বলা: একটি আকর্ষণীয় এবং রহস্যময় গল্প দর্শকদের ধরে রাখতে সাহায্য করে।

ভৌতিক চলচ্চিত্রের প্রভাব

ভৌতিক চলচ্চিত্র দর্শকদের মধ্যে গভীর মানসিক প্রভাব ফেলতে পারে। এই ধরনের চলচ্চিত্রগুলো মানুষের ভয়, দুশ্চিন্তা এবং অনিশ্চয়তার অনুভূতিকে জাগিয়ে তোলে। কিছু দর্শক ভৌতিক চলচ্চিত্র দেখে আনন্দ পান, আবার কিছু দর্শক মানসিক চাপ অনুভব করেন।

ভৌতিক চলচ্চিত্র সংস্কৃতি এবং সমাজের উপরও প্রভাব ফেলে। এই ধরনের চলচ্চিত্রগুলো প্রায়শই মানুষের অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার এবং ভয় নিয়ে আলোচনা করে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এর সাথে সম্পর্ক (রূপক)

ভৌতিক চলচ্চিত্রের মতো, বাইনারি অপশন ট্রেডিংও একটি ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্র। এখানে, "ভয়" হলো বাজারের অনিশ্চয়তা। একজন ট্রেডারকে বাজারের গতিবিধি সঠিকভাবে "অনুমান" করতে হয়, যা অনেকটা ভূতের অস্তিত্ব অনুভব করার মতো। ভুল "অনুমান" করলে আর্থিক ক্ষতি হতে পারে, যা ভৌতিক চলচ্চিত্রের ভয়ের মতো মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

• ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: ভৌতিক চলচ্চিত্রে চরিত্ররা যেমন বিপদ এড়াতে চেষ্টা করে, তেমনি বাইনারি অপশনে ট্রেডারদের ঝুঁকি কমাতে স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করা উচিত। (ঝুঁকি হ্রাস কৌশল)
• বিশ্লেষণ: ভৌতিক গল্পের রহস্য উন্মোচন করার মতো, বাইনারি অপশনে ট্রেডারদের টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং মৌলিক বিশ্লেষণ করতে হয়। (টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর)
• সম্ভাব্যতা: ভৌতিক ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা যেমন কম, তেমনি বাইনারি অপশনে সফল হওয়ার সম্ভাবনাও কম। (সম্ভাব্যতা তত্ত্ব)
• মানসিক নিয়ন্ত্রণ: ভৌতিক চলচ্চিত্র দেখার সময় ভয় নিয়ন্ত্রণ করার মতো, ট্রেডিংয়ের সময় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। (মানসিক ট্রেডিং)
• ভলিউম বিশ্লেষণ: বাজারের ভলিউম বিশ্লেষণ করে ট্রেডিংয়ের সুযোগ খুঁজে বের করা যায়। (ভলিউম ট্রেডিং)
• চার্ট প্যাটার্ন: বিভিন্ন চার্ট প্যাটার্ন দেখে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়। (চার্ট বিশ্লেষণ)
• ট্রেন্ড অনুসরণ: বাজারের ট্রেন্ড অনুসরণ করে ট্রেড করা লাভজনক হতে পারে। (ট্রেন্ড ট্রেডিং)
• সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স: সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো চিহ্নিত করে ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। (সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স)
• মুভিং এভারেজ: মুভিং এভারেজ ব্যবহার করে বাজারের গড় গতিবিধি বোঝা যায়। (মুভিং এভারেজ)
• আরএসআই: আরএসআই (Relative Strength Index) ব্যবহার করে বাজারের অতিরিক্ত কেনা বা বিক্রির চাপ বোঝা যায়। (আরএসআই)
• MACD: MACD (Moving Average Convergence Divergence) ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি এবং সম্ভাব্য পরিবর্তনগুলো চিহ্নিত করা যায়। (MACD)
• বলিঙ্গার ব্যান্ডস: বলিঙ্গার ব্যান্ডস ব্যবহার করে বাজারের অস্থিরতা পরিমাপ করা যায়। (বলিঙ্গার ব্যান্ডস)
• ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট: ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট ব্যবহার করে সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো খুঁজে বের করা যায়। (ফিবোনাচ্চি)
• ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন: ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্নগুলো বাজারের সম্ভাব্য গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা দেয়। (ক্যান্ডেলস্টিক)
• ভলিউম ইন্ডিকেটর: বিভিন্ন ভলিউম ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে বাজারের শক্তি এবং দুর্বলতা বোঝা যায়। (ভলিউম ইন্ডিকেটর)

ভৌতিক চলচ্চিত্র এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং দুটোই দর্শকদের বা ট্রেডারদের মধ্যে উত্তেজনা এবং ভয়ের মিশ্রণ তৈরি করে।

উপসংহার

ভৌতিক চলচ্চিত্র একটি জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী চলচ্চিত্রের ধরণ। সময়ের সাথে সাথে এর নির্মাণশৈলী এবং বিষয়বস্তুতে অনেক পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু এর মূল উদ্দেশ্য দর্শকদের মধ্যে ভয় এবং শঙ্কা জাগানোই রয়ে গেছে। ভৌতিক চলচ্চিত্র সংস্কৃতি এবং সমাজের উপর গভীর প্রভাব ফেলে এবং মানুষের ভয় ও অন্ধবিশ্বাস নিয়ে আলোচনা করে।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ