আলফ্রেড হিচকক

আলফ্রেড হিচকক: সাসপেন্সের মাস্টার

আলফ্রেড হিচকক (১৮৯৯-১৯৮০) ছিলেন ব্রিটিশ চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক এবং চিত্রনাট্যকার। তাঁকে প্রায়শই ‘সাসপেন্সের মাস্টার’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অবদান অসামান্য এবং তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণশৈলীর নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। হিচকক এমন একটি স্বতন্ত্র শৈলী তৈরি করেছিলেন যা দর্শকদের মানসিক উত্তেজনা ও উদ্বেগের মধ্যে ডুবিয়ে রাখত। এই নিবন্ধে, আলফ্রেড হিচককের জীবন, কর্ম এবং তাঁর চলচ্চিত্রের বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

জীবন ও কর্মজীবন

আলফ্রেড জোসেফ হিচকক ১৮৯৯ সালের ১৩ই আগস্ট লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন একজন ফল বিক্রেতা এবং মা ছিলেন গৃহিণী। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি নৌবাহিনীতে সামান্য সময় কাজ করেন। এরপর তিনি বিজ্ঞাপন শিল্পে যোগদান করেন এবং ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে ঝুঁকে পড়েন।

১৯২০-এর দশকে হিচকক চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯২৫ সালে তিনি তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ‘দ্য pleasure garden’ পরিচালনা করেন। এরপর তিনি বেশ কয়েকটি নির্বাক চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। ১৯২৯ সালে ‘ব্ল্যাকমেল’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি প্রথম সাউন্ড চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন এবং এটি বক্স অফিসে সাফল্য লাভ করে।

১৯৪০-এর দশকে হিচকক হলিউডে পাড়ি জমান এবং সেখানে তিনি দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই সময় তিনি ‘রেবেকা’ (Rebecca, ১৯৪০), ‘সাসপিশন’ (Suspicion, ১৯৪১), ‘শ্যাডো অফ আ ডাউট’ (Shadow of a Doubt, ১৯৪৩) এবং ‘নটোরিয়াস’ (Notorious, ১৯৪৬) এর মতো কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

হিচককের কর্মজীবনের সবচেয়ে সফল সময়কাল ছিল ১৯৫০-এর দশক। এই দশকে তিনি ‘স্ট্র্যাঞ্জার্স অন আ ট্রেন’ (Strangers on a Train, ১৯৫১), ‘ডায়াল এম ফর মার্ডার’ (Dial M for Murder, ১৯৫৪), ‘রিয়ার উইন্ডো’ (Rear Window, ১৯৫৪), ‘ভার্টিগো’ (Vertigo, ১৯৫৮) এবং ‘সাইকো’ (Psycho, ১৯৬০) এর মতো মাস্টারপিস নির্মাণ করেন। ‘সাইকো’ চলচ্চিত্রটি তাঁকে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দেয়।

হিচককের চলচ্চিত্র নির্মাণশৈলী

আলফ্রেড হিচককের চলচ্চিত্র নির্মাণশৈলী অত্যন্ত স্বতন্ত্র এবং প্রভাবশালী। তিনি সাসপেন্স তৈরি করার জন্য বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করতেন। তাঁর কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো:

• সাসপেন্সের ব্যবহার: হিচকক সাসপেন্স তৈরি করতে দর্শকদের কাছে তথ্য গোপন করতেন অথবা ধীরে ধীরে প্রকাশ করতেন। এর ফলে দর্শকদের মধ্যে একটি চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হতো। সাসপেন্স একটি শক্তিশালী আবেগ যা দর্শকদের ধরে রাখতে সাহায্য করে।
• দৃষ্টিভঙ্গির ব্যবহার: তিনি প্রায়শই ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল এবং শট কম্পোজিশন ব্যবহার করে দর্শকদের নির্দিষ্ট চরিত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনা দেখতে বাধ্য করতেন। এর মাধ্যমে দর্শকদের মানসিক অবস্থা চরিত্রগুলোর সাথে মিশে যেত।
• সংগীতের ব্যবহার: হিচকক তাঁর চলচ্চিত্রে আবহসংগীতের ব্যবহার অত্যন্ত সচেতনভাবে করতেন। বার্নার্ড হারম্যানের সাথে তাঁর সহযোগিতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সংগীত সাসপেন্স এবং উত্তেজনা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত।
• ম্যাকগাফিন (MacGuffin): এটি এমন একটি প্লট ডিভাইস যা চলচ্চিত্রের চরিত্রদের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে, কিন্তু দর্শকদের কাছে এর আসল গুরুত্ব খুব কম। এটি কাহিনীকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
• হিউমার: হিচককের চলচ্চিত্রে প্রায়শই কালো humor বা dark humor দেখা যায়, যা সাসপেন্সের সাথে মিশে গিয়ে দর্শকদের অভিজ্ঞতা আরও গভীর করে।

উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহ

আলফ্রেড হিচকক অসংখ্য কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র নিচে উল্লেখ করা হলো:

আলফ্রেড হিচককের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র

চলচ্চিত্র	বছর	ধারা
রেবেকা	১৯৪০	সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার
সাসপিশন	১৯৪১	সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার
শ্যাডো অফ আ ডাউট	১৯৪৩	সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার
নটোরিয়াস	১৯৪৬	সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার
স্ট্র্যাঞ্জার্স অন আ ট্রেন	১৯৫১	সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার
ডায়াল এম ফর মার্ডার	১৯৫৪	সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার
রিয়ার উইন্ডো	১৯৫৪	সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার
ভার্টিগো	১৯৫৮	সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার
সাইকো	১৯৬০	হরর থ্রিলার
দ্য বার্ডস	১৯৬৩	সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার

প্রভাব ও উত্তরাধিকার

আলফ্রেড হিচককের চলচ্চিত্র নির্মাণশৈলী পরবর্তী প্রজন্মের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। স্টিভেন স্পিলবার্গ, মার্টিন স্কোরসেজি, ফ্রান্সিস ফোর্ড কোপলা-এর মতো বিখ্যাত পরিচালকেরা তাঁর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন।

হিচককের সাসপেন্স তৈরি করার কৌশল, ক্যামেরার ব্যবহার এবং সংগীতের প্রয়োগ আজও চলচ্চিত্রকারদের কাছে শিক্ষার বিষয়। তিনি চলচ্চিত্রকে একটি শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে সংযোগ

যদিও আলফ্রেড হিচককের চলচ্চিত্র এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং আপাতদৃষ্টিতে ভিন্ন, তবে উভয়ের মধ্যে কিছু আকর্ষণীয় মিল রয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই ঝুঁকি এবং পুরস্কার জড়িত।

• ঝুঁকি মূল্যায়ন: হিচককের চলচ্চিত্রে চরিত্ররা যেমন ঝুঁকি মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেয়, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি মূল্যায়ন করে ট্রেড করতে হয়। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
• সম্ভাব্য ফলাফল: হিচককের চলচ্চিত্রে অপ্রত্যাশিত মোড় আসে, যা দর্শকদের চমকে দেয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও বাজারের অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনে বিনিয়োগকারীরা লাভ বা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
• সময়সীমা: হিচককের সাসপেন্স তৈরি করার কৌশল সময়ের উপর নির্ভরশীল। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ট্রেড সম্পন্ন করতে হয়। সময় ব্যবস্থাপনা এখানে অত্যন্ত জরুরি।
• বিশ্লেষণ: হিচকক যেমন প্রতিটি দৃশ্য নিখুঁতভাবে বিশ্লেষণ করে নির্মাণ করতেন, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ করে ট্রেড করতে হয়।
• মনস্তত্ত্ব: হিচকক দর্শকদের মনস্তত্ত্ব বুঝতেন এবং সেই অনুযায়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করতেন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও বাজারের মনস্তত্ত্ব বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। মার্কেট সাইকোলজি এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা।
• ভলিউম বিশ্লেষণ: হিচককের চলচ্চিত্রে চরিত্রদের গতিবিধি এবং সংলাপের ভলিউম একটি নির্দিষ্ট অর্থ বহন করে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও ভলিউম বিশ্লেষণ করে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়।
• সম্ভাব্য রিটার্ন: হিচককের চলচ্চিত্রগুলো দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ করে একটি নির্দিষ্ট রিটার্ন দিত। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও বিনিয়োগকারীরা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রিটার্ন আশা করেন।
• ঝুঁকি-রিটার্ন অনুপাত: হিচককের চলচ্চিত্রে ঝুঁকির সাথে সাথে উত্তেজনার পরিমাণ বাড়ে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও ঝুঁকি এবং রিটার্নের মধ্যে একটি অনুপাত থাকে।
• কৌশল: হিচকক চলচ্চিত্র নির্মাণে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করতেন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও বিভিন্ন ট্রেডিং কৌশল অবলম্বন করা হয়।
• অর্থ ব্যবস্থাপনা: হিচককের চলচ্চিত্র প্রযোজনায় বাজেট এবং অর্থ ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও অর্থ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি।
• প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন: হিচকক সঠিক প্রেক্ষাপট নির্বাচন করতেন চলচ্চিত্রের জন্য। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও সঠিক ব্রোকার প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করা জরুরি।
• সংকেত বিশ্লেষণ: হিচককের চলচ্চিত্রে লুকানো সংকেত দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও সংকেত বিশ্লেষণ করে ট্রেড করা হয়।
• চার্ট প্যাটার্ন: হিচককের চলচ্চিত্রে ভিজ্যুয়াল প্যাটার্ন একটি অর্থ বহন করে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও চার্ট প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ প্রবণতা বোঝা যায়।
• ইন্ডিকেটর: হিচককের চলচ্চিত্রে কিছু বিশেষ উপাদান দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও বিভিন্ন টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা হয়।
• নিউজ ট্রেডিং: হিচককের চলচ্চিত্রগুলো প্রায়শই সমসাময়িক ঘটনা দ্বারা প্রভাবিত হতো। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও নিউজ ট্রেডিং করে লাভবান হওয়া যায়।

শেষ কথা

আলফ্রেড হিচকক ছিলেন চলচ্চিত্রের একজন অগ্রগামী পরিচালক। তাঁর কাজ শুধু বিনোদন নয়, চলচ্চিত্র শিল্পের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। সাসপেন্সের মাস্টার হিসেবে তিনি চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে তাঁর কাজের সাদৃশ্যগুলো প্রমাণ করে যে, ঝুঁকি, বিশ্লেষণ এবং কৌশল—এই তিনটি উপাদান যেকোনো ক্ষেত্রেই সাফল্যের জন্য অপরিহার্য।

ফিল্ম ডিরেক্টর সাসপেন্স থ্রিলার চলচ্চিত্রের ইতিহাস হলিউড ব্রিটিশ চলচ্চিত্র বার্নার্ড হারম্যান স্টিভেন স্পিলবার্গ মার্টিন স্কোরসেজি ফ্রান্সিস ফোর্ড কোপলা টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ মার্কেট সাইকোলজি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সময় ব্যবস্থাপনা ট্রেডিং কৌশল অর্থ ব্যবস্থাপনা ব্রোকার প্ল্যাটফর্ম সংকেত বিশ্লেষণ চার্ট প্যাটার্ন টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর নিউজ ট্রেডিং

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ