ভার্টিকাল স্প্রেড কৌশল

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

ভার্টিকাল স্প্রেড কৌশল

ভার্টিকাল স্প্রেড একটি বহুল ব্যবহৃত অপশন কৌশল যা একই ধরনের অ্যাসেট-এর উপর বিভিন্ন স্ট্রাইক প্রাইসের কল বা পুট অপশন ব্যবহার করে গঠিত হয়। এই কৌশলটি সাধারণত বাজারের দিকনির্দেশনা সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট ধারণা থাকলে এবং ঝুঁকি সীমিত করতে ব্যবহার করা হয়। এটি নতুন এবং অভিজ্ঞ উভয় ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত।

ভার্টিকাল স্প্রেড কী?

ভার্টিকাল স্প্রেড হলো একটি ডেরিভেটিভ কৌশল। এখানে একই মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখের (expiration date) দুটি অপশন কেনা বা বিক্রি করা হয়, কিন্তু তাদের স্ট্রাইক প্রাইস ভিন্ন থাকে। এই কৌশলটি একটি নির্দিষ্ট মূল্যের সীমার মধ্যে বাজারের গতিবিধি থেকে লাভ করার সুযোগ তৈরি করে।

প্রকারভেদ:

ভার্টিকাল স্প্রেড সাধারণত দুই ধরনের হয়:

  • কল স্প্রেড (Call Spread): এই ক্ষেত্রে, কম স্ট্রাইক প্রাইসের একটি কল অপশন কেনা হয় এবং একই সাথে বেশি স্ট্রাইক প্রাইসের একটি কল অপশন বিক্রি করা হয়।
  • পুট স্প্রেড (Put Spread): এখানে, উচ্চ স্ট্রাইক প্রাইসের একটি পুট অপশন কেনা হয় এবং একই সাথে কম স্ট্রাইক প্রাইসের একটি পুট অপশন বিক্রি করা হয়।

কল স্প্রেড

কল স্প্রেড কৌশলটি সাধারণত ব্যবহার করা হয় যখন ট্রেডাররা মনে করেন যে কোনো অ্যাসেটের দাম বাড়বে, কিন্তু তারা দামের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি সম্পর্কে নিশ্চিত নন।

কল স্প্রেড
কৌশল কার্যক্রম প্রত্যাশিত ফলাফল
বুলিশ কল স্প্রেড কম স্ট্রাইক প্রাইসের কল অপশন কেনা এবং বেশি স্ট্রাইক প্রাইসের কল অপশন বিক্রি করা। দাম বাড়লে লাভ, দাম কমলে সীমিত ক্ষতি।
বিয়ারিশ কল স্প্রেড বেশি স্ট্রাইক প্রাইসের কল অপশন বিক্রি করা এবং কম স্ট্রাইক প্রাইসের কল অপশন কেনা। দাম কমলে লাভ, দাম বাড়লে সীমিত ক্ষতি।

উদাহরণ:

ধরা যাক, একটি স্টকের বর্তমান মূল্য ৫০ টাকা। আপনি একটি কল স্প্রেড তৈরি করতে চান। আপনি ৪৫ টাকা স্ট্রাইক প্রাইসের একটি কল অপশন ৫ টাকা প্রিমিয়ামে কিনলেন এবং ৫৫ টাকা স্ট্রাইক প্রাইসের একটি কল অপশন ২ টাকা প্রিমিয়ামে বিক্রি করলেন।

  • সর্বোচ্চ লাভ: ৫৫ - ৪৫ - (৫ - ২) = ৮ টাকা (প্রতি শেয়ার)।
  • সর্বোচ্চ ক্ষতি: ৫ - ২ = ৩ টাকা (প্রতি শেয়ার)।

পুট স্প্রেড

পুট স্প্রেড কৌশলটি ব্যবহার করা হয় যখন ট্রেডাররা মনে করেন যে কোনো অ্যাসেটের দাম কমবে, কিন্তু তারা দামের বড় ধরনের পতন সম্পর্কে নিশ্চিত নন।

পুট স্প্রেড
কৌশল কার্যক্রম প্রত্যাশিত ফলাফল
বুলিশ পুট স্প্রেড কম স্ট্রাইক প্রাইসের পুট অপশন বিক্রি করা এবং বেশি স্ট্রাইক প্রাইসের পুট অপশন কেনা। দাম বাড়লে লাভ, দাম কমলে সীমিত ক্ষতি।
বিয়ারিশ পুট স্প্রেড বেশি স্ট্রাইক প্রাইসের পুট অপশন কেনা এবং কম স্ট্রাইক প্রাইসের পুট অপশন বিক্রি করা। দাম কমলে লাভ, দাম বাড়লে সীমিত ক্ষতি।

উদাহরণ:

ধরা যাক, একটি স্টকের বর্তমান মূল্য ৫০ টাকা। আপনি একটি পুট স্প্রেড তৈরি করতে চান। আপনি ৫৫ টাকা স্ট্রাইক প্রাইসের একটি পুট অপশন ৫ টাকা প্রিমিয়ামে কিনলেন এবং ৪৫ টাকা স্ট্রাইক প্রাইসের একটি পুট অপশন ২ টাকা প্রিমিয়ামে বিক্রি করলেন।

  • সর্বোচ্চ লাভ: ৫৫ - ৪৫ - (৫ - ২) = ৮ টাকা (প্রতি শেয়ার)।
  • সর্বোচ্চ ক্ষতি: ৫ - ২ = ৩ টাকা (প্রতি শেয়ার)।

ভার্টিকাল স্প্রেড ব্যবহারের সুবিধা

  • ঝুঁকি সীমিত: এই কৌশলের প্রধান সুবিধা হলো ঝুঁকি আগে থেকেই নির্ধারণ করা যায়।
  • কম বিনিয়োগ: অন্যান্য অপশন কৌশলের তুলনায় কম বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়।
  • সহজ বাস্তবায়ন: এটি একটি সরল কৌশল এবং সহজেই বোঝা যায়।
  • বিভিন্ন মার্কেট পরিস্থিতিতে ব্যবহারযোগ্য: বুলিশ ( bullish ) এবং বিয়ারিশ ( bearish ) উভয় মার্কেট পরিস্থিতিতেই এই কৌশল ব্যবহার করা যায়।

ভার্টিকাল স্প্রেড ব্যবহারের অসুবিধা

  • সীমাবদ্ধ লাভ: লাভের সম্ভাবনা সীমিত, কারণ স্প্রেডের মাধ্যমে লাভ একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আবদ্ধ থাকে।
  • কমিশন খরচ: একাধিক অপশন ট্রেড করার কারণে কমিশন খরচ বেশি হতে পারে।
  • সময় ক্ষয়: অপশন এর মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে সময়ের সাথে সাথে অপশনের মূল্য হ্রাস পায় (টাইম ডিকে - Time Decay)।

কখন ভার্টিকাল স্প্রেড ব্যবহার করবেন?

  • যখন আপনি বাজারের দিকনির্দেশনা সম্পর্কে নিশ্চিত, কিন্তু দামের বড় ধরনের মুভমেন্ট আশা করছেন না।
  • যখন আপনি ঝুঁকি কমাতে চান এবং একটি নির্দিষ্ট লাভের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে চান।
  • যখন আপনি কম বিনিয়োগে ট্রেড করতে চান।
  • টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ করে বাজারের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পেলে।
  • ভলিউম বিশ্লেষণ করে মার্কেটের চাহিদা ও যোগান সম্পর্কে অবগত হলে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

  • স্ট্রাইক প্রাইস নির্বাচন: স্ট্রাইক প্রাইস নির্বাচন করার সময় বাজারের বর্তমান মূল্য এবং আপনার প্রত্যাশিত মুভমেন্ট বিবেচনা করুন।
  • মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ: মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ আপনার ট্রেডিং কৌশলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া উচিত।
  • প্রিমিয়াম: অপশন কেনার এবং বিক্রির সময় প্রিমিয়ামের পার্থক্য ভালোভাবে হিসাব করুন।
  • ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: আপনার ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করুন এবং সেই অনুযায়ী ট্রেড করুন।

অন্যান্য সম্পর্কিত কৌশল

  • স্ট্র্যাডল (Straddle): যখন বাজারের উচ্চ অস্থিরতা আশা করা হয়।
  • স্ট্র্যাংগল (Strangle): স্ট্র্যাডলের মতোই, তবে কম প্রিমিয়ামের জন্য।
  • বাটারফ্লাই স্প্রেড (Butterfly Spread): একটি নিরপেক্ষ কৌশল, যেখানে তিনটি ভিন্ন স্ট্রাইক প্রাইসের অপশন ব্যবহার করা হয়।
  • কন্ডর স্প্রেড (Condor Spread): বাটারফ্লাই স্প্রেডের মতো, তবে চারটি ভিন্ন স্ট্রাইক প্রাইসের অপশন ব্যবহার করা হয়।
  • কভারড কল (Covered Call): আপনার মালিকানাধীন স্টকের উপর কল অপশন বিক্রি করা।
  • প্রোটেক্টিভ পুট (Protective Put): আপনার মালিকানাধীন স্টকের ঝুঁকি কমাতে পুট অপশন কেনা।

টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর এবং ভার্টিকাল স্প্রেড

ভার্টিকাল স্প্রেড কৌশল প্রয়োগ করার সময় কিছু টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা যেতে পারে:

  • মুভিং এভারেজ (Moving Average): বাজারের ট্রেন্ড নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।
  • আরএসআই (RSI - Relative Strength Index): ওভারবট (overbought) এবং ওভারসোল্ড (oversold) পরিস্থিতি চিহ্নিত করে।
  • এমএসিডি (MACD - Moving Average Convergence Divergence): ট্রেন্ডের পরিবর্তন এবং মোমেন্টাম (momentum) নির্দেশ করে।
  • বলিঙ্গার ব্যান্ড (Bollinger Bands): দামের অস্থিরতা পরিমাপ করে।
  • ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট (Fibonacci Retracement): সম্ভাব্য সাপোর্ট (support) এবং রেজিস্ট্যান্স (resistance) লেভেল চিহ্নিত করে।

ভলিউম বিশ্লেষণ এবং ভার্টিকাল স্প্রেড

ভলিউম বিশ্লেষণ ভার্টিকাল স্প্রেড কৌশলকে আরও কার্যকর করতে সহায়ক হতে পারে:

  • ভলিউম স্পাইক (Volume Spike): অস্বাভাবিক ভলিউম বৃদ্ধি প্রায়শই একটি গুরুত্বপূর্ণ মূল্যের মুভমেন্টের পূর্বাভাস দেয়।
  • অন-ব্যালেন্স ভলিউম (OBV - On Balance Volume): দাম এবং ভলিউমের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে বাজারের প্রবণতা নির্ণয় করে।
  • ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস (VWAP - Volume Weighted Average Price): একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গড় মূল্য নির্ধারণ করে।

উপসংহার

ভার্টিকাল স্প্রেড একটি কার্যকরী অপশন ট্রেডিং কৌশল, যা ঝুঁকি সীমিত করে এবং নির্দিষ্ট মার্কেট পরিস্থিতিতে লাভজনক হতে পারে। এই কৌশলটি সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য বাজারের গতিবিধি, অপশনের বৈশিষ্ট্য এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ধারণা থাকা জরুরি। নিয়মিত অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতার মাধ্যমে এই কৌশলে দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব।

অপশন ট্রেডিং-এর আরও বিস্তারিত জানার জন্য, আপনি বিভিন্ন অনলাইন রিসোর্স এবং শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер