ফুসফুস

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

ফুসফুস : গঠন, কাজ এবং রোগসমূহ

ভূমিকা

ফুসফুস মানবদেহের একটি অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ। এটি শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড বের করে দেয়। ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখা জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নিবন্ধে ফুসফুসের গঠন, কাজ, রোগসমূহ এবং এগুলোর প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ফুসফুসের গঠন

ফুসফুস দুটি প্রধান অংশে বিভক্ত: ডান ফুসফুস এবং বাম ফুসফুস। এই দুটি ফুসফুস বুকের মধ্যে অবস্থিত এবং পাঁজর দ্বারা সুরক্ষিত। ফুসফুসের প্রধান গঠনগুলো হলো:

  • শ্বাসনালী: এটি মুখ ও নাকের মাধ্যমে আসা বাতাস ফুসফুসে বহন করে। শ্বাসনালী
  • শ্বাসনালীর শাখা: শ্বাসনালী ফুসফুসের ভেতরে প্রবেশ করার পর ছোট ছোট শাখায় বিভক্ত হয়, এগুলোকে ব্রঙ্কাইলাস বলা হয়। ব্রঙ্কাইলাস
  • ব্রঙ্কিওলস: ব্রঙ্কাইলাসের আরও ছোট শাখাগুলো হলো ব্রঙ্কিওলস।
  • অ্যালভিওলাই: ব্রঙ্কিওলসের শেষে ছোট ছোট থলির মতো গঠন রয়েছে, এগুলো অ্যালভিওলাই নামে পরিচিত। অ্যালভিওলাইগুলোই অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের আদান-প্রদানে সাহায্য করে। অ্যালভিওলাই
  • প্লুরা: ফুসফুসের চারপাশে দুটি পর্দা থাকে, এদের প্লুরা বলে। এটি ফুসফুসকে রক্ষা করে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসকালে ঘর্ষণ কমায়। প্লুরা
  • ডায়াফ্রাম: এটি বুকের নিচে অবস্থিত একটি পেশী, যা শ্বাস-প্রশ্বাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডায়াফ্রাম

ফুসফুসের কাজ

ফুসফুসের প্রধান কাজ হলো শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্যাস বিনিময় করা। এই প্রক্রিয়াটি দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়:

  • ইনহেলেশন (শ্বাস গ্রহণ): ডায়াফ্রাম এবং বুকের পেশীগুলোর সংকোচনের ফলে বুকের গহ্বর প্রসারিত হয় এবং বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করে।
  • এক্সহেলেশন (শ্বাস ত্যাগ): ডায়াফ্রাম এবং বুকের পেশীগুলো শিথিল হওয়ার ফলে বুকের গহ্বর ছোট হয়ে আসে এবং বাতাস ফুসফুস থেকে বেরিয়ে যায়।

ফুসফুস থেকে অক্সিজেন রক্তে মিশে যায় এবং রক্ত ​​​​সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। একই সময়ে, রক্ত থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড ফুসফুসে আসে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীর থেকে নির্গত হয়।

ফুসফুসের রোগসমূহ

বিভিন্ন কারণে ফুসফুসে রোগ হতে পারে। এদের মধ্যে কিছু সাধারণ রোগ নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • নিউমোনিয়া: এটি ফুসফুসের সংক্রমণ, যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক দ্বারা হতে পারে। নিউমোনিয়া
  • ব্রঙ্কাইটিস: শ্বাসনালীর প্রদাহ। এটি সাধারণত ধূমপান বা দূষণের কারণে হয়। ব্রঙ্কাইটিস
  • অ্যাজমা: এটি শ্বাসনালীর একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যাতে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। অ্যাজমা
  • সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ): এটি ফুসফুসের একটিProgressive রোগ, যা শ্বাস-প্রশ্বাসকে কঠিন করে তোলে। সিওপিডি
  • ফুসফুসের ক্যান্সার: ফুসফুসের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। ধূমপান এর প্রধান কারণ। ফুসফুসের ক্যান্সার
  • যক্ষ্মা (টিউবারকিউলোসিস): এটি একটি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ, যা ফুসফুসে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। যক্ষ্মা
  • প্লুরিসি: প্লুরা নামক ফুসফুসের চারপাশের পর্দার প্রদাহ। প্লুরিসি
  • পালমোনারি embolism: ফুসফুসে রক্ত ​​​​জমাট বাঁধা। পালমোনারি embolism
  • সিস্টিক ফাইব্রোসিস: একটি বংশগত রোগ যা ফুসফুস এবং অন্যান্য অঙ্গকে প্রভাবিত করে। সিস্টিক ফাইব্রোসিস
  • অ্যাসবেস্টোসিস: অ্যাসবেস্টস নামক খনিজ পদার্থের সংস্পর্শে আসার কারণে ফুসফুসের রোগ। অ্যাসবেস্টোসিস

রোগের লক্ষণ

ফুসফুসের রোগের লক্ষণগুলো রোগের ধরনের উপর নির্ভর করে। কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:

  • শ্বাসকষ্ট
  • কাশি
  • বুকে ব্যথা
  • শ্বাস নেওয়ার সময় শব্দ হওয়া
  • কাশির সাথে রক্ত ​​পড়া
  • ওজন কমে যাওয়া
  • ক্লান্তি

রোগ নির্ণয়

ফুসফুসের রোগ নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলো করা যেতে পারে:

  • শারীরিক পরীক্ষা: ডাক্তার আপনার ফুসফুস শুনে এবং আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস পর্যবেক্ষণ করে রোগ নির্ণয় করতে পারেন।
  • বুকের এক্স-রে: ফুসফুসের ছবি তোলার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়। এক্স-রে
  • সিটি স্ক্যান: বুকের আরও বিস্তারিত ছবি তোলার জন্য এই পরীক্ষা করা হয়। সিটি স্ক্যান
  • পালমোনারি ফাংশন পরীক্ষা: ফুসফুসের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করার জন্য এই পরীক্ষা করা হয়। পালমোনারি ফাংশন পরীক্ষা
  • ব্রঙ্কোস্কোপি: শ্বাসনালীর ভেতরে দেখার জন্য একটি ছোট ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। ব্রঙ্কোস্কোপি
  • স্পুটাম পরীক্ষা: কাশির সাথে আসা কফ পরীক্ষা করে রোগের কারণ নির্ণয় করা যায়। স্পুটাম পরীক্ষা

চিকিৎসা

ফুসফুসের রোগের চিকিৎসা রোগের ধরনের উপর নির্ভর করে। কিছু সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি হলো:

  • ওষুধ: সংক্রমণ, প্রদাহ এবং অন্যান্য উপসর্গ উপশমের জন্য ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
  • অক্সিজেন থেরাপি: শ্বাসকষ্ট হলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ানোর জন্য অক্সিজেন থেরাপি দেওয়া হয়।
  • পালমোনারি পুনর্বাসন: ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য ব্যায়াম এবং অন্যান্য কৌশল শেখানো হয়।
  • সার্জারি: কিছু ক্ষেত্রে, ফুসফুসের ক্যান্সার বা অন্যান্য গুরুতর রোগের জন্য সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।

প্রতিরোধ

ফুসফুসের রোগ প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে:

  • ধূমপান পরিহার করুন: ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রধান কারণ।
  • দূষণ থেকে দূরে থাকুন: বায়ু দূষণ ফুসফুসের রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: ব্যায়াম ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করে।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান: স্বাস্থ্যকর খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান: রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্তকরণের জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত।

ফুসফুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খাদ্য

কিছু খাবার ফুসফুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক হতে পারে:

  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার: ফল, সবজি এবং বাদাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ফুসফুসকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
  • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার: ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
  • ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার: মাছ এবং অন্যান্য ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়াম

কিছু শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়াম ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে:

  • ডায়াফ্রামাটিক শ্বাস-প্রশ্বাস: গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ায়।
  • ব্যাগ শ্বাস-প্রশ্বাস: এই ব্যায়াম ফুসফুসের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • চক্রীয় শ্বাস-প্রশ্বাস: এই ব্যায়াম ফুসফুসের অক্সিজেন গ্রহণের ক্ষমতা বাড়ায়।

গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ লিঙ্ক

কৌশল, টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণের জন্য লিঙ্ক:

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер