ফিলিপ ফিশার

ফিলিপ ফিশার : একজন সফল ট্রেডার এবং বিনিয়োগকারীর পথ

ফিলিপ ফিশার একজন স্বনামধন্য ট্রেডার এবং বিনিয়োগকারী। তিনি বিশেষ করে বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের জগতে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। ফিশারের কর্মজীবন এবং কৌশলগুলি বহু বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের জন্য আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এই নিবন্ধে, ফিলিপ ফিশারের জীবন, কর্মজীবন, ট্রেডিং কৌশল এবং সাফল্যের পেছনের মূল কারণগুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

ফিলিপ ফিশারের প্রাথমিক জীবন এবং কর্মজীবন

ফিলিপ ফিশারের জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি অর্থনীতি এবং ফিনান্সের উপর পড়াশোনা করেছেন। শিক্ষাজীবন শেষ করার পর তিনি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন। প্রথমে তিনি একজন ফিনান্সিয়াল বিশ্লেষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন, যেখানে তিনি বিভিন্ন কোম্পানির আর্থিক অবস্থা মূল্যায়ন করতেন। এরপর তিনি ধীরে ধীরে ট্রেডিংয়ের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং এই ক্ষেত্রে নিজেকে আরও দক্ষ করে তোলার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ফিশার দ্রুত বুঝতে পারছিলেন যে বাজার বিশ্লেষণ এবং সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ট্রেডিংয়ের মূল চাবিকাঠি।

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে প্রবেশ

ফিলিপ ফিশার ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে বাইনারি অপশন ট্রেডিং শুরু করেন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং তখন নতুন এবং দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করছিল। ফিশার এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে নিজের ট্রেডিং কৌশল তৈরি করেন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই সাফল্য অর্জন করেন। তিনি বুঝতে পারলেন, বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে সাফল্যের জন্য প্রয়োজন সঠিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং পুঁজি ব্যবস্থাপনা।

ফিলিপ ফিশারের ট্রেডিং কৌশল

ফিলিপ ফিশার বেশ কয়েকটি ট্রেডিং কৌশল ব্যবহার করেন, যা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। নিচে তার কয়েকটি প্রধান কৌশল আলোচনা করা হলো:

ট্রেন্ড অনুসরণ (Trend Following): ফিশার বিশ্বাস করেন যে বাজারে একটি নির্দিষ্ট ট্রেন্ড থাকলে, সেই ট্রেন্ড অনুসরণ করে ট্রেড করা উচিত। তিনি ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে বাজারের ট্রেন্ড নির্ধারণ করেন।
ব্রেকআউট ট্রেডিং (Breakout Trading): এই কৌশল অনুযায়ী, যখন কোনো শেয়ার বা সম্পদের দাম একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করে, তখন ট্রেড করা উচিত। ফিশার সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল চিহ্নিত করে ব্রেকআউট ট্রেডিং করেন।
রিভার্সাল ট্রেডিং (Reversal Trading): ফিশার মাঝে মাঝে বাজারের রিভার্সালগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন। এর জন্য তিনি আরএসআই (Relative Strength Index) এবং এমএসিডি (Moving Average Convergence Divergence) এর মতো মোমেন্টাম ইন্ডিকেটর ব্যবহার করেন।
নিউজ ট্রেডিং (News Trading): ফিশার মনে করেন যে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংবাদ বাজারের উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই তিনি নিউজের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করেন, তবে এক্ষেত্রে তিনি সতর্ক থাকেন এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দিকে বিশেষ নজর দেন।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং পুঁজি ব্যবস্থাপনা

ফিলিপ ফিশারের সাফল্যের অন্যতম কারণ হলো তার কঠোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল। তিনি কখনোই তার মোট পুঁজির ২% এর বেশি কোনো একটি ট্রেডে বিনিয়োগ করেন না। এছাড়াও, তিনি সবসময় স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করেন, যাতে কোনো ট্রেড খারাপ হলে তিনি দ্রুত বেরিয়ে আসতে পারেন। ফিশার বিশ্বাস করেন যে দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের জন্য পুঁজি সংরক্ষণ করা খুবই জরুরি।

ফিলিপ ফিশারের ট্রেডিং কৌশল
কৌশল	বিবরণ	ঝুঁকি স্তর
ট্রেন্ড অনুসরণ	বাজারের গতিবিধি অনুসরণ করে ট্রেড করা	মাঝারি
ব্রেকআউট ট্রেডিং	সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল অতিক্রম করার পর ট্রেড করা	উচ্চ
রিভার্সাল ট্রেডিং	বাজারের বিপরীত দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা চিহ্নিত করে ট্রেড করা	খুব উচ্চ
নিউজ ট্রেডিং	অর্থনৈতিক খবরের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করা	মাঝারি থেকে উচ্চ

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ

ফিলিপ ফিশার টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ এর উপর খুব বেশি গুরুত্ব দেন। তিনি মনে করেন যে এই দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য পাওয়া যায়।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ: ফিশার বিভিন্ন চার্ট প্যাটার্ন, যেমন - হেড অ্যান্ড শোল্ডারস (Head and Shoulders), ডাবল টপ (Double Top), এবং ডাবল বটম (Double Bottom) ব্যবহার করেন। এছাড়াও, তিনি মুভিং এভারেজ (Moving Average), বলিঙ্গার ব্যান্ড (Bollinger Bands) এবং ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট (Fibonacci Retracement) এর মতো ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে বাজারের সম্ভাব্য গতিবিধি নির্ণয় করেন।
ভলিউম বিশ্লেষণ: ফিশার ভলিউমকে বাজারের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে দেখেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে দামের পরিবর্তনের সাথে ভলিউমের পরিবর্তন বিশ্লেষণ করে বাজারের আসল চিত্র বোঝা যায়। তিনি অন ব্যালেন্স ভলিউম (On Balance Volume) এবং ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস (Volume Weighted Average Price) এর মতো ইন্ডিকেটর ব্যবহার করেন।

ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট (Candlestick Chart) এবং জাপানি ক্যান্ডেলস্টিক (Japanese Candlestick) প্যাটার্নগুলিও তিনি নিয়মিত ব্যবহার করেন।

ফিলিপ ফিশারের সাফল্যের মূল কারণ

ফিলিপ ফিশারের সাফল্যের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি প্রধান কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:

ধৈর্য (Patience): ফিশার কখনোই তাড়াহুড়ো করে ট্রেড করেন না। তিনি সঠিক সুযোগের জন্য অপেক্ষা করেন এবং তারপর ট্রেড করেন।
শৃঙ্খলা (Discipline): তিনি তার ট্রেডিং পরিকল্পনা কঠোরভাবে মেনে চলেন এবং আবেগ দ্বারা প্রভাবিত হন না।
শেখার আগ্রহ (Learning Attitude): ফিশার সবসময় নতুন কিছু শিখতে আগ্রহী। তিনি নিয়মিত বাজার বিশ্লেষণ করেন এবং নিজের ট্রেডিং কৌশল উন্নত করার চেষ্টা করেন।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দক্ষতা (Risk Management Skills): ফিশার অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ঝুঁকি পরিচালনা করতে পারেন, যা তার সাফল্যের অন্যতম কারণ।
সঠিক মানসিকতা (Right Mindset): ট্রেডিংয়ের জন্য একটি ইতিবাচক এবং শান্ত মানসিকতা থাকা জরুরি, যা ফিশারের রয়েছে।

ফিলিপ ফিশারের পরামর্শ

ফিলিপ ফিশার নতুন ট্রেডারদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন:

প্রথমে ডেমো অ্যাকাউন্টে অনুশীলন করুন।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার নিয়মগুলি কঠোরভাবে মেনে চলুন।
আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন এবং যুক্তি দিয়ে ট্রেড করুন।
সবসময় শেখার চেষ্টা করুন এবং নিজের ট্রেডিং কৌশল উন্নত করুন।
দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং ধৈর্য ধরে ট্রেড করুন।
ট্রেডিং জার্নাল (Trading Journal) তৈরি করুন এবং আপনার ট্রেডগুলি বিশ্লেষণ করুন।

ফিলিপ ফিশারের সমালোচনা

ফিলিপ ফিশারের ট্রেডিং কৌশল সবসময় সফল হয় না। কিছু সমালোচক মনে করেন যে তার কিছু কৌশল ঝুঁকিপূর্ণ এবং নতুন ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত নয়। এছাড়াও, কেউ কেউ বলেন যে তিনি শুধুমাত্র নিজের সাফল্যের কথা বলেন এবং ব্যর্থতার কথা গোপন করেন। তবে, অধিকাংশ ট্রেডার ফিশারের কৌশলগুলোর প্রশংসা করেন এবং এগুলো অনুসরণ করে উপকৃত হন।

উপসংহার

ফিলিপ ফিশার একজন সফল ট্রেডার এবং বিনিয়োগকারী। তার ট্রেডিং কৌশল, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং পুঁজি ব্যবস্থাপনার দক্ষতা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। তিনি নতুন ট্রেডারদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা এবং তার পরামর্শগুলো অনুসরণ করে অনেকেই সফল হয়েছেন। তবে, মনে রাখতে হবে যে ট্রেডিংয়ে সাফল্য পাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য এবং সঠিক জ্ঞান থাকা জরুরি। শেয়ার বাজার (Share Market) এবং বৈদেশিক মুদ্রা বাজার (Forex Market) সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। এছাড়াও, অর্থনৈতিক সূচক (Economic Indicator) এবং রাজনৈতিক ঘটনা (Political Events) ট্রেডিংয়ের উপর প্রভাব ফেলে, তাই এগুলোর দিকেও নজর রাখা উচিত।

ফিনান্সিয়াল মার্কেট (Financial Market) -এর জটিলতা বুঝতে হলে বাজারের গতিশীলতা (Market Dynamics) সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক।

আরও দেখুন

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ