পলিমারের রসায়ন

পলিমারের রসায়ন

ভূমিকা পলিমার রসায়ন রসায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। এটি বৃহৎ আণবিক গঠনযুক্ত পলিমার নিয়ে আলোচনা করে। পলিমারগুলি ছোট ছোট পুনরাবৃত্তিমূলক একক বা মনোমার দিয়ে গঠিত। এই মনোমারগুলি রাসায়নিক বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে দীর্ঘ শৃঙ্খল গঠন করে। পলিমার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। খাদ্য প্যাকেজিং থেকে শুরু করে পোশাক, পরিবহন, নির্মাণ, ইলেকট্রনিক্স, এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান—সবক্ষেত্রেই পলিমারের ব্যবহার রয়েছে।

পলিমারের সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ পলিমার শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘পলি’ (বহু) এবং ‘মার’ (একক) থেকে এসেছে। এর অর্থ হলো অসংখ্য একক বা মনোমারের সমন্বয়ে গঠিত যৌগ। পলিমারকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়:

• প্রাকৃতিক পলিমার: এই পলিমারগুলি প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। যেমন - স্টার্চ, সেলুলোজ, প্রোটিন, প্রাকৃতিক রাবার ইত্যাদি।
• কৃত্রিম পলিমার: এই পলিমারগুলি গবেষণাগারে বা শিল্প কারখানায় তৈরি করা হয়। যেমন - পলিথিন, পলিভিনাইল ক্লোরাইড (পিভিসি), নাইলন, টেফলন ইত্যাদি।

এছাড়াও, পলিমারের গঠন এবং বৈশিষ্ট্য অনুসারে বিভিন্ন প্রকারভেদ দেখা যায়:

• রৈখিক পলিমার: মনোমারগুলি সরল রেখায় যুক্ত হয়ে গঠিত হয়।
• শাখাযুক্ত পলিমার: মূল শৃঙ্খলের সাথে পার্শ্বীয় শাখা যুক্ত থাকে।
• ক্রস-লিঙ্কড পলিমার: পলিমার শৃঙ্খলগুলি একে অপরের সাথে যুক্ত হয়ে জালকের মতো গঠন তৈরি করে।

পলিমার তৈরির প্রক্রিয়া পলিমার তৈরির প্রক্রিয়াকে পলিমারাইজেশন বলা হয়। পলিমারাইজেশন প্রধানত দুই প্রকার:

• অ্যাডিশন পলিমারাইজেশন: মনোমারগুলি সরাসরি যুক্ত হয়ে পলিমার গঠন করে, যেখানে কোনো ছোট অণু নির্গত হয় না। পলিথিন, পলিভিনাইল ক্লোরাইড (পিভিসি) ইত্যাদি এই পদ্ধতিতে তৈরি হয়।
• কন্ডেনসেশন পলিমারাইজেশন: মনোমারগুলি যুক্ত হওয়ার সময় ছোট অণু (যেমন - জল, অ্যালকোহল) নির্গত হয়। নাইলন, পলিয়েস্টার ইত্যাদি এই পদ্ধতিতে তৈরি হয়।

গুরুত্বপূর্ণ পলিমার এবং তাদের ব্যবহার বিভিন্ন ধরনের পলিমার এবং তাদের ব্যবহার নিচে উল্লেখ করা হলো:

গুরুত্বপূর্ণ পলিমার এবং তাদের ব্যবহার

পলিমারের নাম | মনোমার | ব্যবহার |

পলিথিন | ইথিলিন | প্লাস্টিক ব্যাগ, বোতল, ফিল্ম তৈরি |

পলিভিনাইল ক্লোরাইড (পিভিসি) | ভিনাইল ক্লোরাইড | পাইপ, তার, খেলনা, মেঝে তৈরি |

পলিপ্রোপিলিন | প্রোপিলিন | দড়ি, কার্পেট, প্যাকেজিং সামগ্রী তৈরি |

পলিস্টাইরিন | স্টাইরিন | ফোম, প্যাকেজিং, ডিসপোজেবল পাত্র তৈরি |

নাইলন | হেক্সামেথিলিন ডায়ামিন ও অ্যাডিপিক অ্যাসিড | বস্ত্র, দড়ি, ব্রাশ, মাছ ধরার জাল তৈরি |

পলিয়েস্টার | ইথিলিন গ্লাইকল ও টেরেফথালিক অ্যাসিড | বস্ত্র, বোতল, ফিল্ম তৈরি |

টেফলন | টেট্রাফ্লুরোইথিলিন | নন-স্টিক কুকওয়্যার, রাসায়নিক পাত্র তৈরি |

প্রাকৃতিক রাবার | আইসোপ্রিন | টায়ার, টিউব, ইলাস্টিক ব্যান্ড তৈরি |

সেলুলোজ | গ্লুকোজ | কাগজ, বস্ত্র, কাঠ তৈরি |

স্টার্চ | গ্লুকোজ | খাদ্য, আঠা, কাগজ তৈরি |

পলিমারের বৈশিষ্ট্য পলিমারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো:

• আণবিক ভর: পলিমারের আণবিক ভর অনেক বেশি হয়।
• গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক: পলিমারের গলনাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক সাধারণত বেশি হয়।
• নমনীয়তা ও স্থিতিস্থাপকতা: কিছু পলিমার নমনীয় এবং স্থিতিস্থাপক হয়।
• রাসায়নিক নিষ্ক্রিয়তা: অনেক পলিমার রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকে।
• অপরিবাহী: সাধারণভাবে পলিমার বিদ্যুৎ অপরিবাহী, তবে কিছু পলিমারকে পরিবাহী করা যায়।

পলিমারাইজেশন কৌশল পলিমারাইজেশন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:

• ফ্রি র‍্যাডিক্যাল পলিমারাইজেশন: এই পদ্ধতিতে ফ্রি র‍্যাডিক্যাল অনুঘটক ব্যবহার করা হয়।
• আয়নিক পলিমারাইজেশন: এখানে আয়নিক অনুঘটক ব্যবহার করা হয়।
• কোঅর্ডিনেশন পলিমারাইজেশন: এই পদ্ধতিতে ধাতব কমপ্লেক্স অনুঘটক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
• লিভিং পলিমারাইজেশন: এই পদ্ধতিতে পলিমার শৃঙ্খলগুলি সক্রিয় থাকে এবং ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।

পলিমারের প্রয়োগক্ষেত্র পলিমারের ব্যবহার ব্যাপক ও বহুমুখী। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র উল্লেখ করা হলো:

• প্যাকেজিং শিল্প: খাদ্য ও অন্যান্য পণ্য সংরক্ষণে পলিমার ব্যবহার করা হয়।
• নির্মাণ শিল্প: পাইপ, দরজা, জানালা, এবং অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী তৈরিতে পলিমার ব্যবহৃত হয়।
• পরিবহন শিল্প: গাড়ির যন্ত্রাংশ, টায়ার, এবং অন্যান্য পরিবহন সামগ্রী তৈরিতে পলিমার ব্যবহৃত হয়।
• চিকিৎসা বিজ্ঞান: ওষুধ, সার্জিক্যাল সরঞ্জাম, এবং কৃত্রিম অঙ্গ তৈরিতে পলিমার ব্যবহৃত হয়।
• কৃষি শিল্প: পলিমার ফিল্ম, সেচ পাইপ, এবং অন্যান্য কৃষি উপকরণ তৈরিতে পলিমার ব্যবহৃত হয়।
• টেক্সটাইল শিল্প: পোশাক, কার্পেট, এবং অন্যান্য বস্ত্র তৈরিতে পলিমার ব্যবহৃত হয়।
• ইলেকট্রনিক্স শিল্প: ইন্সুলেশন, সেমিকন্ডাক্টর, এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক উপাদান তৈরিতে পলিমার ব্যবহৃত হয়।

পলিমার এবং পরিবেশ পলিমারের ব্যবহার পরিবেশের উপর কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পলিমার সহজে পচে না, ফলে এটি পরিবেশ দূষণ করে। এই সমস্যা সমাধানে পরিবেশ-বান্ধব পলিমার তৈরি এবং পলিমার পুনর্ব্যবহার করার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। বায়োডিগ্রেডেবল পলিমার, যা প্রাকৃতিকভাবে পচে যেতে পারে, বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ক্ষেত্র।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা পলিমার রসায়ন একটি দ্রুত বিকাশমান ক্ষেত্র। ভবিষ্যতে নতুন নতুন পলিমার এবং তাদের ব্যবহার উদ্ভাবিত হবে বলে আশা করা যায়। ন্যানোটেকনোলজি এবং পলিমার রসায়নের সমন্বয়ে নতুন যৌগ তৈরি হচ্ছে, যা উন্নত বৈশিষ্ট্যযুক্ত এবং পরিবেশ-বান্ধব হবে।

আরও জানতে সহায়ক লিঙ্ক

• মনোমার
• পলিমারাইজেশন
• পলিথিন
• পিভিসি
• নাইলন
• সেলুলোজ
• স্টার্চ
• টেফলন
• বায়োডিগ্রেডেবল পলিমার
• রাসায়নিক বন্ধন
• আণবিক ভর
• গলনাঙ্ক
• স্ফুটনাঙ্ক
• ফ্রি র‍্যাডিক্যাল
• আয়নিক পলিমারাইজেশন
• কোঅর্ডিনেশন পলিমারাইজেশন
• লিভিং পলিমারাইজেশন
• প্যাকেজিং শিল্প
• নির্মাণ শিল্প
• চিকিৎসা বিজ্ঞান
• পরিবেশ দূষণ

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এর সাথে সম্পর্ক

যদিও পলিমার রসায়ন এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি ক্ষেত্র, তবে এদের মধ্যে একটি যোগসূত্র স্থাপন করা যেতে পারে। পলিমার রসায়নে, বিভিন্ন উপাদানের সংমিশ্রণে নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত পলিমার তৈরি করা হয়। তেমনি, বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে বিভিন্ন অ্যাসেটের (যেমন - স্টক, কমোডিটি, কারেন্সি) উপর ভিত্তি করে ট্রেডিংয়ের সুযোগ তৈরি করা হয়। উভয় ক্ষেত্রেই ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

• ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: পলিমার তৈরির সময় তাপমাত্রা, চাপ, এবং অনুঘটকের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। তেমনি, বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে ঝুঁকির পরিমাণ নির্ধারণ করে ট্রেড করা উচিত। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
• বিশ্লেষণ: পলিমারের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়েও টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ এর মাধ্যমে মার্কেটের গতিবিধি বোঝা যায়।
• কৌশল: পলিমারাইজেশন কৌশলগুলির মতো, বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়েও বিভিন্ন ট্রেডিং কৌশল অবলম্বন করা হয়।
• সম্ভাবনা: পলিমার রসায়নে নতুন পলিমার তৈরির সম্ভাবনা যেমন থাকে, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়েও লাভের সম্ভাবনা থাকে।
• সময়সীমা: পলিমারাইজেশন প্রক্রিয়ার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়েও মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার সময়সীমা থাকে। মেয়াদ উত্তীর্ণ
• বাজার বিশ্লেষণ: পলিমারের চাহিদা এবং যোগান বাজারের উপর নির্ভর করে, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের জন্য বাজার বিশ্লেষণ অত্যাবশ্যক।
• পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন: বিভিন্ন ধরনের পলিমার তৈরি করে পোর্টফোলিও ডাইভারসিফাই করা যায়, যা ঝুঁকি কমায়। বাইনারি অপশনেও পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন করে ঝুঁকি কমানো যায়।
• trend analysis: পলিমারের নতুন ট্রেন্ডস যেমন দেখা যায়, তেমনি বাইনারি অপশনেও ট্রেন্ড এনালাইসিস গুরুত্বপূর্ণ।
• support and resistance: পলিমারের স্থিতিশীলতা এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বাইনারি অপশনে সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেলগুলো ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
• moving averages: পলিমারের গড় বৈশিষ্ট্য বের করার মতো, বাইনারি অপশনেও মুভিং এভারেজ ব্যবহার করা হয়।
• Bollinger Bands: পলিমারের ডেটা বিশ্লেষণের জন্য যেমন বিভিন্ন ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়, তেমনি বাইনারি অপশনেও Bollinger Bands ব্যবহৃত হয়।
• Fibonacci Retracements: পলিমারের গঠন এবং বিন্যাস বোঝার জন্য যেমন ফিবোনাচ্চি সংখ্যা ব্যবহার করা হয়, তেমনি বাইনারি অপশনেও Fibonacci Retracements ব্যবহৃত হয়।
• candlestick patterns: পলিমারের পরিবর্তনগুলো বোঝার জন্য যেমন বিভিন্ন প্যাটার্ন দেখা হয়, তেমনি বাইনারি অপশনেও ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন দেখা হয়।
• risk-reward ratio: পলিমার তৈরির খরচ ও লাভের হিসাব যেমন করা হয়, তেমনি বাইনারি অপশনেও risk-reward ratio হিসাব করা হয়।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ