ডেরিভ প্ল্যাটফর্ম

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

ডেরিভ প্ল্যাটফর্ম: একটি বিস্তারিত আলোচনা

ভূমিকা

ডেরিভ (Deriv) একটি বিশ্বব্যাপী অনলাইন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম। এটি পূর্বে Binary.com নামে পরিচিত ছিল। এটি বিভিন্ন ধরনের ট্রেডিং উপকরণ সরবরাহ করে, যার মধ্যে বাইনারি অপশন অন্যতম। এছাড়াও, ডেরিভে ফরেক্স, সিএফডি এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংয়ের সুযোগ রয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মটি বিশেষ করে নতুন ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত, কারণ এটি ব্যবহার করা সহজ এবং এখানে শিক্ষামূলক উপকরণ প্রচুর রয়েছে। এই নিবন্ধে, ডেরিভ প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন দিক, যেমন - অ্যাকাউন্ট তৈরি, ট্রেডিং প্রক্রিয়া, প্ল্যাটফর্মের বৈশিষ্ট্য, সুবিধা, অসুবিধা এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

ডেরিভ প্ল্যাটফর্মের ইতিহাস

ডেরিভ প্ল্যাটফর্মটি ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে, এটি অনলাইন ট্রেডিং শিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পৌঁছেছে। প্ল্যাটফর্মটি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অবস্থিত এবং বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে এর পরিষেবা প্রদান করে। Binary.com থেকে Deriv এ পরিবর্তনের মাধ্যমে, প্ল্যাটফর্মটি তার ট্রেডিং উপকরণ এবং পরিষেবাগুলির পরিধি বৃদ্ধি করেছে।

অ্যাকাউন্ট তৈরি এবং যাচাইকরণ প্রক্রিয়া

ডেরিভে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা একটি সহজ প্রক্রিয়া। নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য এখানে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়:

১. রেজিস্ট্রেশন: প্রথমে, ডেরিভের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান এবং "সাইন আপ" বোতামে ক্লিক করুন। ২. তথ্য প্রদান: আপনার ইমেল ঠিকানা, নাম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করুন। ৩. অ্যাকাউন্ট নির্বাচন: আপনি যে ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে চান তা নির্বাচন করুন (যেমন - ডেমো অ্যাকাউন্ট বা রিয়েল অ্যাকাউন্ট)। ৪. যাচাইকরণ: রিয়েল অ্যাকাউন্টের জন্য, আপনাকে আপনার পরিচয় এবং ঠিকানা যাচাই করতে হতে পারে। এর জন্য সাধারণত পরিচয়পত্র, ঠিকানার প্রমাণ এবং অন্যান্য নথি জমা দিতে হয়। ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন होने के बाद ही আপনি ট্রেডিং শুরু করতে পারবেন।

ডেরিভ প্ল্যাটফর্মের ট্রেডিং উপকরণ

ডেরিভ প্ল্যাটফর্ম বিভিন্ন ধরনের ট্রেডিং উপকরণ সরবরাহ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:

  • বাইনারি অপশন: এটি ডেরিভের প্রধান আকর্ষণ। এখানে, ব্যবহারকারীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের দাম বাড়বে বা কমবে কিনা তা অনুমান করে ট্রেড করতে পারে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং কৌশলগুলি এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • ফরেক্স: ডেরিভে বিভিন্ন মুদ্রা জোড়া ট্রেড করার সুযোগ রয়েছে। ফরেক্স ট্রেডিংয়ের জন্য এখানে উন্নত চার্টিং সরঞ্জাম এবং বিশ্লেষণমূলক উপকরণ সরবরাহ করা হয়।
  • সিএফডি: ডেরিভে সিএফডি ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্পদ, যেমন - স্টক, ইন্ডেক্স এবং কমোডিটি ট্রেড করা যায়।
  • ক্রিপ্টোকারেন্সি: প্ল্যাটফর্মটিতে বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, এবং অন্যান্য জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেড করার সুযোগ রয়েছে।

ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম এবং এর বৈশিষ্ট্য

ডেরিভের ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করা খুবই সহজ এবং এটি বিভিন্ন ডিভাইসে অ্যাক্সেস করা যায়, যেমন - ডেস্কটপ, ট্যাবলেট এবং মোবাইল ফোন। প্ল্যাটফর্মের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • সহজ ইন্টারফেস: ডেরিভের প্ল্যাটফর্মের ইন্টারফেসটি খুবই সহজ এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব। নতুন ট্রেডারদের জন্য এটি দ্রুত শেখা এবং ব্যবহার করা সহজ।
  • চার্টিং সরঞ্জাম: এখানে উন্নত মানের চার্টিং সরঞ্জাম রয়েছে, যা ট্রেডারদের দামের গতিবিধি বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।
  • বিভিন্ন ধরনের অর্ডার: ডেরিভে বিভিন্ন ধরনের অর্ডার দেওয়ার সুযোগ রয়েছে, যেমন - মার্কেট অর্ডার, লিমিট অর্ডার এবং স্টপ-লস অর্ডার।
  • ডেমো অ্যাকাউন্ট: নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য ডেরিভ একটি ডেমো অ্যাকাউন্ট সরবরাহ করে, যার মাধ্যমে তারা কোনো ঝুঁকি ছাড়াই ট্রেডিং অনুশীলন করতে পারে।
  • মোবাইল অ্যাপ: ডেরিভের মোবাইল অ্যাপ আপনাকে যেকোনো সময় এবং যেকোনো স্থান থেকে ট্রেডিং করার সুবিধা দেয়।

ডেরিভের সুবিধা

  • কম ন্যূনতম ট্রেড পরিমাণ: ডেরিভে খুব কম পরিমাণ অর্থ দিয়ে ট্রেডিং শুরু করা যায়, যা ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বড় সুবিধা।
  • দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম: ডেরিভের প্ল্যাটফর্মটি খুব দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য, যা ট্রেডারদের জন্য একটি মসৃণ ট্রেডিং অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
  • শিক্ষামূলক উপকরণ: ডেরিভে ট্রেডিং শেখার জন্য প্রচুর শিক্ষামূলক উপকরণ রয়েছে, যেমন - টিউটোরিয়াল, ওয়েবিনার এবং ই-বুক
  • গ্রাহক পরিষেবা: ডেরিভের গ্রাহক পরিষেবা খুবই উন্নত। এখানে ইমেল, ফোন এবং লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে সহায়তা পাওয়া যায়।
  • বিভিন্ন ভাষায় সহায়তা: ডেরিভ বিভিন্ন ভাষায় তাদের পরিষেবা প্রদান করে, যা বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী।

ডেরিভের অসুবিধা

  • কিছু দেশে পরিষেবা উপলব্ধ নয়: ডেরিভের পরিষেবা কিছু দেশে সীমাবদ্ধ, তাই সব ব্যবহারকারী এটি ব্যবহার করতে পারে না।
  • জটিল আর্থিক উপকরণ: বাইনারি অপশন এবং সিএফডি-র মতো উপকরণগুলি জটিল হতে পারে এবং নতুন ট্রেডারদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
  • উত্তোলন ফি: কিছু ক্ষেত্রে, ডেরিভ থেকে অর্থ উত্তোলনের জন্য ফি চার্জ করা হতে পারে।

ট্রেডিং কৌশল এবং টিপস

ডেরিভে সফল ট্রেডিংয়ের জন্য কিছু কৌশল এবং টিপস নিচে দেওয়া হলো:

  • ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: ট্রেডিংয়ের সময় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বিনিয়োগের একটি ছোট অংশই ট্রেডে ব্যবহার করুন এবং স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করে আপনার ঝুঁকি সীমিত করুন।
  • মার্কেট বিশ্লেষণ: ট্রেড করার আগে মার্কেট বিশ্লেষণ করুন। টেকনিক্যাল এবং ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাজারের গতিবিধি বোঝার চেষ্টা করুন।
  • ডেমো অ্যাকাউন্টে অনুশীলন: রিয়েল অ্যাকাউন্টে ট্রেড করার আগে ডেমো অ্যাকাউন্টে অনুশীলন করুন। এটি আপনাকে বাজারের নিয়ম এবং ট্রেডিং কৌশল সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে।
  • সঠিক সময়ে ট্রেড করুন: বাজারের সঠিক সময়ে ট্রেড করা গুরুত্বপূর্ণ। সময় বিশ্লেষণ করে উপযুক্ত সময়ে ট্রেড করুন।
  • আবেগ নিয়ন্ত্রণ: ট্রেডিংয়ের সময় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। আবেগপ্রবণ হয়ে ট্রেড করলে ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ে।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ হল বাজারের ঐতিহাসিক ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভবিষ্যতের দামের গতিবিধিPredict করার একটি পদ্ধতি। ডেরিভে ট্রেডিংয়ের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর হলো:

  • মুভিং এভারেজ (Moving Average): এটি দামের গড় গতিবিধি দেখায়।
  • রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স (RSI): এটি অতিরিক্ত কেনা বা অতিরিক্ত বিক্রির পরিস্থিতি নির্দেশ করে।
  • MACD: এটি দুটি মুভিং এভারেজের মধ্যে সম্পর্ক দেখায় এবং ট্রেডিং সংকেত প্রদান করে।
  • বলিঙ্গার ব্যান্ড (Bollinger Bands): এটি দামের অস্থিরতা পরিমাপ করে।

ভলিউম বিশ্লেষণ

ভলিউম বিশ্লেষণ বাজারের লেনদেনের পরিমাণ বিশ্লেষণ করে দামের গতিবিধি বোঝার একটি পদ্ধতি। উচ্চ ভলিউম সাধারণত শক্তিশালী প্রবণতা নির্দেশ করে। ডেরিভে ভলিউম বিশ্লেষণের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করা যেতে পারে:

  • ভলিউম স্পাইক: হঠাৎ করে ভলিউম বৃদ্ধি পাওয়া কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ইঙ্গিত হতে পারে।
  • ভলিউম কনফার্মেশন: দামের গতিবিধির সাথে ভলিউমের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে প্রবণতা নিশ্চিত করা যায়।
  • অন ব্যালেন্স ভলিউম (OBV): এটি ভলিউম এবং দামের মধ্যে সম্পর্ক দেখায়।

ডেরিভের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য

ডেরিভ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের জন্য উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • এসএসএল এনক্রিপশন: ডেরিভ তার ওয়েবসাইটে এবং প্ল্যাটফর্মে এসএসএল এনক্রিপশন ব্যবহার করে, যা ব্যবহারকারীদের ডেটা সুরক্ষিত রাখে।
  • দুই-স্তর বিশিষ্ট প্রমাণীকরণ (Two-Factor Authentication): এই ফিচারের মাধ্যমে অ্যাকাউন্টের সুরক্ষাকে আরও জোরদার করা যায়।
  • নিয়মিত নিরীক্ষণ: ডেরিভ নিয়মিতভাবে তাদের সিস্টেম নিরীক্ষণ করে নিরাপত্তা দুর্বলতা খুঁজে বের করে এবং তা সমাধান করে।
  • Segregation of Funds: ক্লায়েন্টদের তহবিল আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা হয়, যা প্ল্যাটফর্মের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।

উপসংহার

ডেরিভ প্ল্যাটফর্ম অনলাইন ট্রেডিংয়ের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব প্ল্যাটফর্ম। এটি নতুন এবং অভিজ্ঞ উভয় ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত। প্ল্যাটফর্মটিতে বিভিন্ন ধরনের ট্রেডিং উপকরণ, উন্নত চার্টিং সরঞ্জাম এবং শিক্ষামূলক উপকরণ রয়েছে। তবে, ট্রেডিংয়ের সময় ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সঠিক কৌশল অবলম্বন করা জরুরি। ডেরিভের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যগুলি ব্যবহারকারীদের ডেটা এবং তহবিল সুরক্ষিত রাখতে সহায়ক।

আরও জানতে:

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер