ডারivatives

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

ডেরিভেটিভস : একটি বিস্তারিত আলোচনা

ডেরিভেটিভস বা похідজাত উপকরণ হল এমন এক ধরনের আর্থিক চুক্তি যার মূল্য অন্য কোনো সম্পদ, যেমন স্টক, বন্ড, মুদ্রা, পণ্য বা সুদের হারের ওপর নির্ভরশীল। ডেরিভেটিভসগুলি সরাসরি কেনা বা বেচা হয় না, বরং এদের মূল্য অন্য কোনো সম্পদের মূল্যের পরিবর্তন থেকে নির্ধারিত হয়। এই কারণে এদেরকে ‘ডেরিভেটিভ’ বলা হয়, যার অর্থ ‘উৎপাদিত’ বা ‘আগত’। ডেরিভেটিভস বাজার একটি জটিল এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল ক্ষেত্র, যা বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ এবং ঝুঁকি প্রদান করে।

ডেরিভেটিভসের প্রকারভেদ

ডেরিভেটিভস বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, কিন্তু প্রধান চারটি প্রকার হলো:

  • ফরওয়ার্ড কন্ট্রাক্ট (Forward Contracts): এটি দুটি পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি, যেখানে একটি নির্দিষ্ট তারিখে ভবিষ্যতে একটি নির্দিষ্ট মূল্য্যে একটি সম্পদ কেনা বা বেচা হয়। এই চুক্তিগুলি সাধারণত ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) বাজারে লেনদেন করা হয় এবং এদের শর্তাবলী কাস্টমাইজ করা যায়।
  • ফিউচার্স কন্ট্রাক্ট (Futures Contracts): এটি ফরওয়ার্ড কন্ট্রাক্টের মতোই, তবে এটি একটি এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত থাকে এবং স্ট্যান্ডার্ডাইজড শর্তাবলী মেনে চলে। ফিউচার্স কন্ট্রাক্টগুলি মার্জিন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করা হয় এবং নিয়মিতভাবে সেটেলমেন্ট করা হয়।
  • অপশন (Options): অপশন হল একটি চুক্তি যা ক্রেতাকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট মূল্য্যে একটি সম্পদ কেনা (কল অপশন) বা বেচা (পুট অপশন) করার অধিকার দেয়, কিন্তু বাধ্য করে না। অপশনগুলি এক্সচেঞ্জে বা OTC বাজারে লেনদেন করা যেতে পারে। বাইনারি অপশন হলো অপশনের একটি সরল রূপ।
  • সোয়াপ (Swaps): সোয়াপ হল দুটি পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি, যেখানে তারা নির্দিষ্ট সময়কালে নগদ প্রবাহের বিনিময় করে। সুদের হার সোয়াপ, মুদ্রা সোয়াপ এবং ক্রেডিট ডিফল্ট সোয়াপ হল বহুল ব্যবহৃত কিছু সোয়াপ।

ডেরিভেটিভসের ব্যবহার

ডেরিভেটিভস বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা (Risk Management): ডেরিভেটিভসগুলি বিনিয়োগকারীদের তাদের পোর্টফোলিওতে থাকা বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি, যেমন সুদের হারের ঝুঁকি, মুদ্রার ঝুঁকি এবং পণ্যের দামের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। হেজিং একটি সাধারণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কৌশল।
  • স্পেকুলেশন (Speculation): ডেরিভেটিভসগুলি বিনিয়োগকারীদের কোনো সম্পদের দামের ভবিষ্যৎ গতিবিধি সম্পর্কে অনুমান করে লাভ করার সুযোগ প্রদান করে।
  • আর্বিট্রেজ (Arbitrage): ডেরিভেটিভসগুলি বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন বাজারে একই সম্পদের দামের পার্থক্য থেকে লাভ করার সুযোগ প্রদান করে।
  • leverage ( লিভারেজ ): ডেরিভেটিভস বিনিয়োগকারীদের কম মূলধন দিয়ে বড় পজিশন নিতে সাহায্য করে, যা সম্ভাব্য লাভ এবং ক্ষতি উভয়ই বাড়িয়ে তোলে।

ডেরিভেটিভস বাজারের অংশগ্রহণকারী

ডেরিভেটিভস বাজারে বিভিন্ন ধরনের অংশগ্রহণকারী রয়েছে, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • হেজার (Hedgers): যারা তাদের বিদ্যমান পোর্টফোলিওতে থাকা ঝুঁকি কমাতে ডেরিভেটিভস ব্যবহার করে।
  • স্পেকুলেটর (Speculators): যারা দামের ভবিষ্যৎ গতিবিধি সম্পর্কে অনুমান করে লাভ করার জন্য ডেরিভেটিভস ব্যবহার করে।
  • আর্বিট্রেজার (Arbitrageurs): যারা বিভিন্ন বাজারে দামের পার্থক্য থেকে লাভ করার জন্য ডেরিভেটিভস ব্যবহার করে।
  • মার্কেট মেকার (Market Makers): যারা ডেরিভেটিভস বাজারে লিকুইডিটি সরবরাহ করে এবং ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।

ডেরিভেটিভসের সুবিধা

ডেরিভেটিভসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা রয়েছে:

  • ঝুঁকি হ্রাস: ডেরিভেটিভস বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • উচ্চ লিভারেজ: কম মূলধন দিয়ে বড় পজিশন নেওয়ার সুযোগ থাকে।
  • বাজারের দক্ষতা বৃদ্ধি: ডেরিভেটিভস বাজারগুলি দাম আবিষ্কার এবং তথ্য বিতরণে সহায়তা করে।
  • খরচ কম: অনেক ক্ষেত্রে, ডেরিভেটিভস সরাসরি সম্পদ কেনার চেয়ে কম খরচে লেনদেন করা যায়।

ডেরিভেটিভসের অসুবিধা

ডেরিভেটিভসের কিছু অসুবিধা রয়েছে:

  • জটিলতা: ডেরিভেটিভসগুলি জটিল উপকরণ এবং এদের বোঝা কঠিন হতে পারে।
  • উচ্চ ঝুঁকি: লিভারেজের কারণে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক বেশি।
  • counterparty risk (প্রতিপক্ষ ঝুঁকি): OTC বাজারে লেনদেন করা ডেরিভেটিভসের ক্ষেত্রে counterparty default (প্রতিপক্ষ ডিফল্ট) এর ঝুঁকি থাকে।
  • নিয়ন্ত্রণের অভাব: কিছু ডেরিভেটিভস বাজার কম নিয়ন্ত্রিত হতে পারে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

ডেরিভেটিভস এবং অর্থনীতি

ডেরিভেটিভস আধুনিক অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা আর্থিক বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উন্নতি করতে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। তবে, ডেরিভেটিভসের অপব্যবহার আর্থিক সংকট তৈরি করতে পারে, যেমন ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটে দেখা গেছে।

বাংলাদেশে ডেরিভেটিভস বাজার

বাংলাদেশে ডেরিভেটিভস বাজার এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE) ফিউচার্স এবং অপশন ট্রেডিং চালু করার পরিকল্পনা করছে। বর্তমানে, কিছু ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান OTC বাজারে ডেরিভেটিভস পণ্য সরবরাহ করে।

ডেরিভেটিভস পণ্যের উদাহরণ
পণ্য বিবরণ সুদের হার ফিউচার্স সুদের হারের ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণ করে। মুদ্রা ফিউচার্স বিভিন্ন মুদ্রার ভবিষ্যৎ বিনিময় হার নির্ধারণ করে। স্টক অপশন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট মূল্যে স্টক কেনার বা বিক্রি করার অধিকার। পণ্য ফিউচার্স স্বর্ণ, তেল, খাদ্যশস্যের মতো পণ্যের ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণ করে। ক্রেডিট ডিফল্ট সোয়াপ কোনো ঋণগ্রহীতার ডিফল্ট হওয়ার ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ডেরিভেটিভস

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ডেরিভেটিভস ট্রেডিং-এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এটি ঐতিহাসিক মূল্য এবং ভলিউম ডেটার উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যৎ মূল্য প্রবণতাPredict করার চেষ্টা করে। কিছু জনপ্রিয় টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর হল:

ভলিউম বিশ্লেষণ এবং ডেরিভেটিভস

ভলিউম বিশ্লেষণ বাজারের গতিবিধি বোঝার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। ভলিউম পরিবর্তনের মাধ্যমে শক্তিশালী প্রবণতা এবং সম্ভাব্য রিভার্সাল সনাক্ত করা যায়।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কৌশল

ডেরিভেটিভস ট্রেডিং-এ ঝুঁকি কমানোর জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা উচিত:

  • স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করা।
  • পজিশন সাইজিং নিয়ন্ত্রণ করা।
  • ডাইভারসিফিকেশন করা।
  • লিভারেজ সীমিত করা।
  • বাজারের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত থাকা।

উপসংহার

ডেরিভেটিভস একটি শক্তিশালী আর্থিক হাতিয়ার, যা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে বিনিয়োগকারীদের জন্য অনেক সুবিধা নিয়ে আসতে পারে। তবে, এর জটিলতা এবং ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে সতর্কতার সাথে ট্রেড করা উচিত। ডেরিভেটিভস বাজার সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান এবং সঠিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল অবলম্বন করে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হতে পারে।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ফিনান্সিয়াল মার্কেট বিনিয়োগ পোর্টফোলিও হেজিং স্পেকুলেশন আর্বিট্রেজ লিভারেজ ফরওয়ার্ড কন্ট্রাক্ট ফিউচার্স কন্ট্রাক্ট অপশন সোয়াপ টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ভলিউম বিশ্লেষণ মুভিং এভারেজ আরএসআই এমএসিডি বলিঙ্গার ব্যান্ডস ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট অন ব্যালেন্স ভলিউম ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер