ট্রান্সপোর্ট লেয়ার
ট্রান্সপোর্ট লেয়ার
ট্রান্সপোর্ট লেয়ার হলো ওএসআই মডেল-এর চতুর্থ স্তর। এটি নেটওয়ার্ক লেয়ার থেকে ডেটা গ্রহণ করে এবং অ্যাপ্লিকেশন লেয়ার-এ ডেটা সরবরাহ করে। এই লেয়ারের প্রধান কাজ হলো নির্ভরযোগ্য এবং ত্রুটিমুক্ত ডেটা ট্রান্সফার নিশ্চিত করা। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো, যেখানে ডেটার সঠিক সময়ে ডেলিভারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, ট্রান্সপোর্ট লেয়ার নেটওয়ার্ক কমিউনিকেশনে একইরকম নির্ভরযোগ্যতা প্রদান করে।
ট্রান্সপোর্ট লেয়ারের কার্যাবলী
ট্রান্সপোর্ট লেয়ারের প্রধান কার্যাবলীগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. সেগমেন্টেশন (Segmentation): অ্যাপ্লিকেশন লেয়ার থেকে আসা বড় ডেটাগুলোকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করা হয়, যাদেরকে সেগমেন্ট বলা হয়। এই সেগমেন্টগুলো নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সহজে প্রেরণযোগ্য হয়।
২. সিকোয়েন্সিং (Sequencing): সেগমেন্টগুলোকে সঠিক ক্রমে সাজানো হয়, যাতে গ্রহণকারী প্রান্তে ডেটা পুনরায় একত্রিত করার সময় কোনো সমস্যা না হয়।
৩. এরর কন্ট্রোল (Error Control): ডেটা ট্রান্সমিশনের সময় কোনো ত্রুটি দেখা দিলে, তা সনাক্ত করা এবং পুনরায় ডেটা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
৪. ফ্লো কন্ট্রোল (Flow Control): ডেটা প্রেরণের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়, যাতে গ্রহণকারী প্রান্ত ডেটা গ্রহণ করতে সক্ষম হয় এবং ডেটা হারিয়ে না যায়।
৫. মাল্টিপ্লেক্সিং এবং ডিমাল্টিপ্লেক্সিং (Multiplexing and Demultiplexing): একাধিক অ্যাপ্লিকেশন থেকে আসা ডেটা একটিমাত্র চ্যানেলের মাধ্যমে প্রেরণ করা এবং গ্রহণকারী প্রান্তে সেগুলোকে সঠিক অ্যাপ্লিকেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়।
ট্রান্সপোর্ট লেয়ারের প্রোটোকল
ট্রান্সপোর্ট লেয়ারে প্রধানত দুটি প্রোটোকল ব্যবহৃত হয়:
১. ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রোটোকল (TCP): এটি একটি সংযোগ-ভিত্তিক (connection-oriented) প্রোটোকল। TCP ডেটা ট্রান্সফারের আগে প্রেরক এবং গ্রহণকারীর মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপন করে এবং ডেটা নির্ভরযোগ্যভাবে প্রেরণের নিশ্চয়তা দেয়। TCP হলো বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো, যেখানে প্রতিটি ট্রেড নিশ্চিতভাবে সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন।
বৈশিষ্ট্য:
- নির্ভরযোগ্য ডেটা ট্রান্সফার
- সংযোগ-ভিত্তিক যোগাযোগ
- ফ্লো কন্ট্রোল এবং এরর কন্ট্রোল
- ডেটা সিকোয়েন্সিং
২. ইউজার ডেটাগ্রাম প্রোটোকল (UDP): এটি একটি সংযোগবিহীন (connectionless) প্রোটোকল। UDP ডেটা ট্রান্সফারের আগে কোনো সংযোগ স্থাপন করে না এবং ডেটা প্রেরণের নিশ্চয়তা দেয় না। UDP দ্রুত ডেটা ট্রান্সফারের জন্য উপযুক্ত, তবে ডেটা হারানোর সম্ভাবনা থাকে। রিয়েল-টাইম ডেটা যেমন স্টক মার্কেট ফিডের জন্য UDP ব্যবহার করা হয়, যেখানে সামান্য ডেটা লস গ্রহণযোগ্য কিন্তু দ্রুততা অত্যাবশ্যক।
বৈশিষ্ট্য:
- দ্রুত ডেটা ট্রান্সফার
- সংযোগবিহীন যোগাযোগ
- ফ্লো কন্ট্রোল এবং এরর কন্ট্রোল নেই
- ডেটা সিকোয়েন্সিং নেই
| প্রোটোকল | সংযোগ | নির্ভরযোগ্যতা | গতি | ব্যবহার |
|---|---|---|---|---|
| TCP | হ্যাঁ | উচ্চ | কম | ওয়েব ব্রাউজিং, ইমেল, ফাইল ট্রান্সফার |
| UDP | না | কম | বেশি | ভিডিও স্ট্রিমিং, অনলাইন গেমিং, ডিএনএস |
পোর্ট নম্বর (Port Number)
পোর্ট নম্বর হলো একটি ১৬-বিট সংখ্যা, যা একটি নির্দিষ্ট অ্যাপ্লিকেশন বা সার্ভিসকে চিহ্নিত করে। ট্রান্সপোর্ট লেয়ার পোর্ট নম্বরের মাধ্যমে ডেটা সঠিক অ্যাপ্লিকেশনে পৌঁছে দেয়। কিছু বহুল ব্যবহৃত পোর্ট নম্বর নিচে দেওয়া হলো:
- ৮0: HTTP (ওয়েব)
- ৪৪৩: HTTPS (সিকিউর ওয়েব)
- ২১: FTP (ফাইল ট্রান্সফার)
- ২২: SSH (সিকিউর শেল)
- ২৫: SMTP (ইমেল)
- ৫০: POP3 (ইমেল)
- ৫৩: DNS (ডোমেইন নেইম সিস্টেম)
সাবনেট মাস্ক এবং আইপি অ্যাড্রেস এর সাথে পোর্ট নম্বর মিলিতভাবে একটি সম্পূর্ণ সংযোগ স্থাপন করে।
ফ্লো কন্ট্রোল মেকানিজম (Flow Control Mechanism)
ফ্লো কন্ট্রোল মেকানিজম ডেটা প্রেরণের গতি নিয়ন্ত্রণ করে, যাতে গ্রহণকারী প্রান্ত ডেটা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়। TCP-তে ব্যবহৃত কিছু ফ্লো কন্ট্রোল মেকানিজম হলো:
১. উইন্ডোইং (Windowing): গ্রহণকারী প্রান্ত প্রেরকের কাছে একটি উইন্ডো সাইজ জানায়, যা নির্দেশ করে যে সে কত পরিমাণ ডেটা গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
২. স্লাইডিং উইন্ডো (Sliding Window): উইন্ডোটি ডেটা স্ট্রিমের সাথে সাথে সরে যায়, যা প্রেরককে ডেটা প্রেরণের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
এরর কন্ট্রোল মেকানিজম (Error Control Mechanism)
এরর কন্ট্রোল মেকানিজম ডেটা ট্রান্সমিশনের সময় কোনো ত্রুটি সনাক্ত করে এবং তা সংশোধনের ব্যবস্থা করে। TCP-তে ব্যবহৃত কিছু এরর কন্ট্রোল মেকানিজম হলো:
১. চেকসাম (Checksum): ডেটা সেগমেন্টের সাথে একটি চেকসাম মান যুক্ত করা হয়। গ্রহণকারী প্রান্তে এই মান যাচাই করে ত্রুটি সনাক্ত করা হয়।
২. অ্যাকনলেজমেন্ট (Acknowledgement - ACK): গ্রহণকারী প্রান্ত সফলভাবে ডেটা গ্রহণ করলে প্রেরককে একটি অ্যাকনলেজমেন্ট বার্তা পাঠায়।
৩. টাইমআউট (Timeout): প্রেরক একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অ্যাকনলেজমেন্ট না পেলে ধরে নেয় যে ডেটা হারিয়ে গেছে এবং পুনরায় প্রেরণ করে।
ট্রান্সপোর্ট লেয়ারের গুরুত্ব
ট্রান্সপোর্ট লেয়ার নেটওয়ার্ক কমিউনিকেশন-এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ডেটা ট্রান্সফারের নির্ভরযোগ্যতা, ত্রুটিমুক্ততা এবং সঠিক ক্রম নিশ্চিত করে। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে, দ্রুত এবং নির্ভুল ডেটা ট্রান্সফার অত্যন্ত জরুরি, যা ট্রান্সপোর্ট লেয়ারের মাধ্যমে সম্ভব হয়। এছাড়াও, ক্লাউড কম্পিউটিং, ভয়েস ওভার আইপি (VoIP) এবং অন্যান্য নেটওয়ার্ক অ্যাপ্লিকেশনে ট্রান্সপোর্ট লেয়ারের ভূমিকা অপরিহার্য।
টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ
- ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন : শেয়ার বাজারের গতিবিধি বোঝার জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
- মুভিং এভারেজ : এটি ডেটার গড় গতিবিধি নির্ণয় করে।
- আরএসআই (Relative Strength Index) : এটি শেয়ারের অতিরিক্ত ক্রয় বা বিক্রয় পরিস্থিতি নির্দেশ করে।
- এমএসিডি (Moving Average Convergence Divergence) : এটি দুটি মুভিং এভারেজের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করে।
- বলিঙ্গার ব্যান্ডস : এটি শেয়ারের দামের অস্থিরতা পরিমাপ করে।
- ফাইবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট : এটি সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেল চিহ্নিত করে।
- ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস (VWAP) : এটি ভলিউমের উপর ভিত্তি করে গড় মূল্য নির্ণয় করে।
- অন ব্যালেন্স ভলিউম (OBV) : এটি ভলিউম এবং দামের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে।
- অ্যাকুমুলেশন/ডিস্ট্রিবিউশন লাইন : এটি শেয়ারের ক্রয় এবং বিক্রয়ের চাপ পরিমাপ করে।
- প্যারাবলিক সার : এটি ট্রেন্ডের দিক এবং শক্তি নির্ধারণ করে।
- স্টোকাস্টিক অসিলেটর : এটি শেয়ারের বর্তমান মূল্য এবং তার দামের পরিসরের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করে।
- এলডার স্ক্রোল : এটি ট্রেন্ডের পরিবর্তন সনাক্ত করতে সাহায্য করে।
- ইচিওয় ক্লাউড : এটি সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেল চিহ্নিত করে এবং ভবিষ্যৎ প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা দেয়।
- ডনচিয়ান চ্যানেল : এটি শেয়ারের দামের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ করে।
- কাকিয়ান লাইন : এটি শেয়ারের দামের গতিবিধি এবং সম্ভাব্য ব্রেকআউট পয়েন্ট সনাক্ত করে।
এই কৌশলগুলো বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যেখানে দ্রুত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ডেটা বিশ্লেষণ অপরিহার্য।
ভবিষ্যৎ প্রবণতা
ট্রান্সপোর্ট লেয়ারের ভবিষ্যৎ উন্নয়নগুলো হলো:
১. কোয়াডরাম ইউডিপি (QUIC): এটি গুগল কর্তৃক উদ্ভাবিত একটি নতুন ট্রান্সপোর্ট প্রোটোকল, যা UDP-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং TCP-এর মতো নির্ভরযোগ্যতা প্রদান করে।
২. HTTP/3: এটি QUIC প্রোটোকলের উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং ওয়েব ব্রাউজিংয়ের গতি বাড়াতে সাহায্য করে।
৩. উন্নত ফ্লো কন্ট্রোল এবং এরর কন্ট্রোল মেকানিজম: নেটওয়ার্কের যানজট কমাতে এবং ডেটা ট্রান্সফারের নির্ভরযোগ্যতা বাড়াতে নতুন ফ্লো কন্ট্রোল এবং এরর কন্ট্রোল মেকানিজম তৈরি করা হচ্ছে।
উপসংহার
ট্রান্সপোর্ট লেয়ার কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি ডেটা ট্রান্সফারের নির্ভরযোগ্যতা এবং ত্রুটিমুক্ততা নিশ্চিত করে। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ্লিকেশনে এর ভূমিকা অপরিহার্য। ভবিষ্যৎ উন্নয়নগুলো এই লেয়ারকে আরও শক্তিশালী এবং কার্যকরী করে তুলবে।
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
