জন ল্যাসেটার

জন ল্যাসেটার: বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর একজন অগ্রদূত

পরিচিতি

জন ল্যাসেটার একজন সুপরিচিত বিনিয়োগকারী, ট্রেডার এবং আর্থিক বিশ্লেষক। তিনি বিশেষ করে বাইনারি অপশন ট্রেডিং জগতে তার অবদান এবং উদ্ভাবনী পদ্ধতির জন্য পরিচিত। ল্যাসেটার প্রায় কয়েক দশক ধরে আর্থিক বাজারে কাজ করছেন এবং এই সময়ে তিনি ট্রেডিং কৌশল, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বাজারের গতিশীলতা সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করেছেন। এই নিবন্ধে, জন ল্যাসেটারের জীবন, কর্ম এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর উপর তার প্রভাব বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে।

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা

জন ল্যাসেটারের জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় স্থানীয় স্কুলগুলোতে। এরপর তিনি অর্থনীতি এবং ফিনান্সের উপর উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন। যদিও তার আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বিস্তারিত তথ্য খুব বেশি পাওয়া যায় না, তবে জানা যায় যে তিনি বাজারের জটিলতাগুলো বুঝতে এবং বিশ্লেষণ করতে প্রচুর সময় ব্যয় করেছেন। স্ব-শিক্ষিত একজন ট্রেডার হিসেবে তিনি বিভিন্ন আর্থিক মডেল এবং ট্রেডিং কৌশল নিয়ে গবেষণা করেন।

কর্মজীবন

জন ল্যাসেটারের কর্মজীবন শুরু হয় একজন স্টক ব্রোকার হিসেবে। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন এবং ধীরে ধীরে ট্রেডিংয়ের প্রতি তার আগ্রহ বাড়তে থাকে। নব্বইয়ের দশকে তিনি ফোরেক্স ট্রেডিং এবং কমোডিটি মার্কেট নিয়ে কাজ শুরু করেন। ২০০০-এর দশকের শুরুতে, বাইনারি অপশনের ধারণা জনপ্রিয় হয়ে উঠলে তিনি এই নতুন বাজারে প্রবেশ করেন এবং খুব দ্রুতই এর সম্ভাবনা ও জটিলতাগুলো উপলব্ধি করেন।

ল্যাসেটার বুঝতে পারেন যে বাইনারি অপশন ট্রেডিং ঐতিহ্যবাহী ট্রেডিং থেকে অনেক আলাদা। এখানে, ট্রেডারদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের দাম বাড়বে নাকি কমবে তা সঠিকভাবে অনুমান করতে হয়। এই সরলতা সত্ত্বেও, বাইনারি অপশন ট্রেডিং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, যদি না সঠিক কৌশল এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা হয়।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ অবদান

জন ল্যাসেটার বাইনারি অপশন ট্রেডিংকে আরও সহজবোধ্য এবং কার্যকরী করার জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মডেল তৈরি: ল্যাসেটার একটি কার্যকরী ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা মডেল তৈরি করেছেন, যা ট্রেডারদের তাদের মূলধন রক্ষা করতে এবং সম্ভাব্য ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে। এই মডেলে, তিনি পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন, স্টপ-লস অর্ডার এবং পজিশন সাইজিংয়ের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের প্রয়োগ: তিনি টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস ব্যবহার করে বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। বিভিন্ন চার্ট প্যাটার্ন, ইন্ডিকেটর এবং ট্রেন্ড বিশ্লেষণ করে তিনি ট্রেডারদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেন। ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন এবং মুভিং এভারেজ এর ব্যবহার এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ভলিউম বিশ্লেষণের প্রবর্তন: ল্যাসেটার ভলিউম অ্যানালাইসিস-এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি দেখান যে, ভলিউম ডেটা ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি এবং সম্ভাব্য ব্রেকআউট সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। অন ব্যালেন্স ভলিউম (OBV) এবং ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস (VWAP) এর মতো ইন্ডিকেটরগুলো তিনি বিশেষভাবে ব্যবহার করেন।
শিক্ষামূলক কার্যক্রম: জন ল্যাসেটার বাইনারি অপশন ট্রেডিং সম্পর্কে শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি সেমিনার, কর্মশালা এবং অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে ট্রেডারদের প্রশিক্ষণ দেন এবং তাদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করেন।

ট্রেডিং কৌশল

জন ল্যাসেটার বিভিন্ন ধরনের ট্রেডিং কৌশল ব্যবহার করেন, যা বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ অত্যন্ত কার্যকরী। নিচে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কৌশল আলোচনা করা হলো:

ট্রেন্ড ফলোয়িং: এই কৌশলে, ট্রেডাররা বাজারের বিদ্যমান ট্রেন্ড অনুসরণ করে ট্রেড করেন। যদি দাম বাড়ার প্রবণতা থাকে, তবে তারা কল অপশন কেনেন, এবং দাম কমার প্রবণতা থাকলে তারা পুট অপশন কেনেন। ট্রেন্ড লাইন এবং সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রেকআউট ট্রেডিং: এই কৌশলে, ট্রেডাররা বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল ব্রেক করার সময় ট্রেড করেন। যখন দাম রেজিস্ট্যান্স লেভেল অতিক্রম করে উপরে যায়, তখন এটি একটি বুলিশ ব্রেকআউট হিসেবে বিবেচিত হয়, এবং ট্রেডাররা কল অপশন কেনেন।
রিভার্সাল ট্রেডিং: এই কৌশলে, ট্রেডাররা বাজারের ট্রেন্ড বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা দেখলে ট্রেড করেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকে এবং তারপর একটি বিয়ারিশ ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন দেখা যায়, তবে ট্রেডাররা পুট অপশন কিনতে পারেন। আরএসআই (Relative Strength Index) এবং এমএসিডি (Moving Average Convergence Divergence) এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
স্ট্র্যাডেল এবং স্ট্র্যাঙ্গল: এই কৌশলগুলো অপশন ট্রেডিং থেকে নেওয়া হয়েছে এবং বাইনারি অপশনেও ব্যবহার করা যেতে পারে। স্ট্র্যাডেল কৌশলে, ট্রেডাররা একই স্ট্রাইক প্রাইস এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখের কল এবং পুট অপশন উভয়ই কেনেন। স্ট্র্যাঙ্গল কৌশলে, ট্রেডাররা বিভিন্ন স্ট্রাইক প্রাইসের কল এবং পুট অপশন কেনেন। এই কৌশলগুলো বাজারের অস্থিরতা থেকে লাভবান হতে সাহায্য করে।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা

জন ল্যাসেটার সবসময় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ সফল হতে হলে ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা অত্যাবশ্যক। তার মতে, ট্রেডারদের নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে:

ছোট আকারের ট্রেড: প্রতিটি ট্রেডে আপনার মূলধনের শুধুমাত্র একটি ছোট অংশ বিনিয়োগ করুন। এটি আপনার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।
স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার: স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করে আপনি আপনার সম্ভাব্য ক্ষতি সীমিত করতে পারেন।
পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন: বিভিন্ন সম্পদে বিনিয়োগ করে আপনার পোর্টফোলিওকে বৈচিত্র্যময় করুন।
মানসিক শৃঙ্খলা: আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে ট্রেড করুন এবং কোনো অবস্থাতেই তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নেবেন না। মানসিক ট্রেডিং একটি বড় সমস্যা।

জন ল্যাসেটারের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল
কৌশল	বিবরণ
ছোট আকারের ট্রেড	প্রতিটি ট্রেডে মূলধনের ১-২% বিনিয়োগ করুন
স্টপ-লস অর্ডার	পূর্বনির্ধারিত স্তরে ক্ষতি সীমিত করুন
পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন	বিভিন্ন সম্পদে বিনিয়োগ করুন
মানসিক শৃঙ্খলা	আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে ট্রেড করুন

জন ল্যাসেটারের সমালোচনা

জন ল্যাসেটারের কিছু সমালোচনাও রয়েছে। কেউ কেউ অভিযোগ করেন যে তার কৌশলগুলো খুব জটিল এবং নতুন ট্রেডারদের জন্য বোঝা কঠিন। আবার কেউ কেউ বলেন যে তিনি বাইনারি অপশনের ঝুঁকি সম্পর্কে যথেষ্ট সতর্ক করেন না। তবে, বেশিরভাগ ট্রেডার তার অবদানকে স্বীকৃতি দেন এবং তার শিক্ষামূলক কার্যক্রম থেকে উপকৃত হন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

জন ল্যাসেটার বর্তমানে আর্থিক প্রযুক্তি (ফিনটেক) এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ব্যবহার করে ট্রেডিং কৌশল উন্নত করার জন্য কাজ করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, এই প্রযুক্তিগুলো ট্রেডারদের আরও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে এবং বাজারের সুযোগগুলো আরও ভালোভাবে কাজে লাগাতে সাহায্য করতে পারে। তিনি একটি স্বয়ংক্রিয় ট্রেডিং সিস্টেম তৈরি করার পরিকল্পনা করছেন, যা অ্যালগরিদমের মাধ্যমে ট্রেড করবে এবং ঝুঁকি কমিয়ে লাভজনক ফলাফল নিয়ে আসবে। অ্যালগরিদমিক ট্রেডিং বর্তমানে খুব জনপ্রিয়।

উপসংহার

জন ল্যাসেটার বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তার উদ্ভাবনী কৌশল, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা মডেল এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রম ট্রেডারদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। যদিও তার কিছু সমালোচনা রয়েছে, তবে তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বাজারের গতিশীলতা বুঝতে এবং সফল ট্রেডিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে ট্রেডারদের অনুপ্রাণিত করেন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ভবিষ্যৎ উন্নয়নে তার অবদান অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং ফিনান্সিয়াল মার্কেট ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস ভলিউম অ্যানালাইসিস ফোরেক্স ট্রেডিং কমোডিটি মার্কেট ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন মুভিং এভারেজ আরএসআই (Relative Strength Index) এমএসিডি (Moving Average Convergence Divergence) স্ট্র্যাডেল স্ট্র্যাঙ্গল অপশন ট্রেডিং মানসিক ট্রেডিং অ্যালগরিদমিক ট্রেডিং ফিনটেক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল ট্রেন্ড লাইন অন ব্যালেন্স ভলিউম (OBV) ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস (VWAP)

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ