কর্মের অধিকার

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

কর্মের অধিকার

কর্মের অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার যা প্রত্যেক মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার-এর সঙ্গে জড়িত। এটি শুধু একটি কাজ পাওয়ার অধিকার নয়, বরং একটি উপযুক্ত ও ন্যায্য পরিবেশে কাজ করার অধিকারকেও বোঝায়। এই অধিকার সংবিধানআইন দ্বারা সুরক্ষিত।

কর্মের অধিকারের ধারণা

কর্মের অধিকারের ধারণাটি ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘের সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা-তে (Universal Declaration of Human Rights) এই অধিকারের কথা বলা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, প্রত্যেকেরই কাজের অধিকার আছে, স্বাধীনভাবে পছন্দের পেশা বেছে নেওয়ার অধিকার আছে এবং কাজের ক্ষেত্রে ন্যায্য ও অনুকূল শর্ত পাওয়ার অধিকার আছে।

কর্মের অধিকার শুধু বেঁচে থাকার জন্য রোজগার করার সুযোগই দেয় না, এটি মানুষের মর্যাদা এবং আত্মসম্মান বজায় রাখতেও সাহায্য করে। কাজের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সমাজের প্রতি অবদান রাখতে পারে এবং নিজের দক্ষতা ও সম্ভাবনাকে বিকশিত করার সুযোগ পায়।

কর্মের অধিকারের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

শিল্প বিপ্লবের আগে, কাজের ধারণাটি প্রায়শই ভূমি বা বংশগত পেশার সাথে যুক্ত ছিল। কিন্তু শিল্প বিপ্লবের পর, যখন কারখানা এবং নতুন শিল্প গড়ে উঠল, তখন শ্রমিকদের অধিকারের প্রশ্নটি সামনে আসে। শ্রমিকরা প্রায়শই দীর্ঘ সময় ধরে কম মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য হতো এবং তাদের কাজের পরিবেশ ছিল অস্বাস্থ্যকর ও বিপজ্জনক।

এই পরিস্থিতিতে, শ্রমিক সংগঠন এবং ট্রেড ইউনিয়নগুলি শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম শুরু করে। ধীরে ধীরে, বিভিন্ন দেশে শ্রমিকদের জন্য আইন তৈরি করা হয়, যা তাদের কাজের সময়, মজুরি, নিরাপত্তা এবং অন্যান্য অধিকার নিশ্চিত করে।

বেঙ্গল ল্যাবরেস অ্যাক্ট, ১৯৪৫ ব্রিটিশ ভারতের শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।

কর্মের অধিকারের উপাদান

কর্মের অধিকারের মধ্যে বেশ কয়েকটি উপাদান অন্তর্ভুক্ত। নিচে কয়েকটি প্রধান উপাদান আলোচনা করা হলো:

  • কাজের সুযোগ: প্রত্যেক মানুষের কাজের সুযোগ পাওয়ার অধিকার আছে। সরকার এবং অন্যান্য সংস্থাগুলির উচিত এমন কর্মসংস্থান তৈরি করা, যা সকলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করে।
  • উপযুক্ত কর্মপরিবেশ: কাজের পরিবেশ নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর এবং শ্রমিকদের জন্য অনুকূল হওয়া উচিত।
  • ন্যায্য মজুরি: শ্রমিকদের তাদের কাজের জন্য ন্যায্য মজুরি পাওয়ার অধিকার আছে, যা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সহায়ক হবে।
  • ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার: শ্রমিকদের নিজেদের ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার এবং collective bargaining-এর মাধ্যমে নিজেদের অধিকার রক্ষার অধিকার আছে।
  • বৈষম্যহীনতা: কর্মক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, বর্ণ বা অন্য কোনো কারণে বৈষম্য করা উচিত নয়।
  • শিশুশ্রম বন্ধ: শিশুশ্রম একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং এটি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা উচিত।
  • জোরপূর্বক শ্রম বন্ধ: কোনো ব্যক্তিকে জোর করে কাজ করানো উচিত নয়।
কর্মের অধিকারের মূল উপাদান
উপাদান বিবরণ
কাজের সুযোগ সকলের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা
উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা
ন্যায্য মজুরি জীবনযাত্রার মান অনুযায়ী সঠিক মজুরি প্রদান করা
ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার শ্রমিকদের সংগঠন করার ও দর কষাকষির অধিকার
বৈষম্যহীনতা কর্মক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকার
শিশুশ্রম বন্ধ ১৪ বছরের কম বয়সীদের কাজ করানো নিষিদ্ধ
জোরপূর্বক শ্রম বন্ধ কোনো ব্যক্তিকে বাধ্য করে কাজ করানো যাবে না

সংবিধান ও আইনে কর্মের অধিকার

বিভিন্ন দেশের সংবিধানে কর্মের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান-এর ৩৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, "প্রত্যেক নাগরিকের সামর্থ্যের স্বীকৃতি অনুযায়ী কর্মের সুযোগ পাওয়ার অধিকার আছে।" এছাড়া, বিভিন্ন শ্রম আইন, যেমন - কর্মসংস্থান আইন, ২০০৬, শ্রম আইন, ২০০৬ শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করে।

সংবিধান ও আইনগুলি শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি, তাদের দায়িত্ব সম্পর্কেও সচেতন করে।

কর্মের অধিকার লঙ্ঘন এবং প্রতিকার

কর্মের অধিকার প্রায়শই লঙ্ঘিত হয়। এর কিছু সাধারণ রূপ হলো:

  • কম মজুরি প্রদান
  • অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা
  • বিপজ্জনক কর্মপরিবেশ
  • বৈষম্যমূলক আচরণ
  • ট্রেড ইউনিয়ন বিরোধী কার্যকলাপ
  • শিশুশ্রম ও জোরপূর্বক শ্রম

কর্মের অধিকার লঙ্ঘিত হলে শ্রমিকরা বিভিন্ন প্রতিকার চাইতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • অভিযোগ জানানো: শ্রমিকরা তাদের কর্মীর বিরুদ্ধে বা শ্রম আদালতে অভিযোগ জানাতে পারেন।
  • ট্রেড ইউনিয়নের সাহায্য: ট্রেড ইউনিয়নগুলি শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • আইনি পদক্ষেপ: শ্রমিকরা আদালতে মামলা করে তাদের অধিকার আদায় করতে পারেন।
  • সরকারি সহায়তা: সরকার শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় এবং সহায়তা প্রদান করে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং কর্মের অধিকার

বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি জটিল আর্থিক বাজার। এখানে বিনিয়োগকারীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সম্পদের দাম বাড়বে নাকি কমবে, তা নিয়ে বাজি ধরে। এই ধরনের ট্রেডিং-এ কর্মের অধিকারের কিছু বিশেষ দিক রয়েছে:

  • ঝুঁকির সচেতনতা: বাইনারি অপশন ট্রেডিং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বিনিয়োগকারীদের এই ঝুঁকির বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
  • স্বচ্ছতা: ব্রোকারদের উচিত ট্রেডিংয়ের শর্তাবলী সম্পর্কে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ থাকা।
  • নিয়ন্ত্রণ: এই বাজারের উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত, যাতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা যায়।
  • শিক্ষা: বিনিয়োগকারীদের এই ট্রেডিং সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ক্ষেত্রে, বিনিয়োগকারীর অধিকার রক্ষা করা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এছাড়াও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, মানি ম্যানেজমেন্ট, চার্ট প্যাটার্ন, ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন, সমর্থন এবং প্রতিরোধ, ট্রেন্ড লাইন, মুভিং এভারেজ, আরএসআই, MACD, বলিঙ্গার ব্যান্ড, ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট, বাইনারি অপশন কৌশল, এবং ব্রোকার নির্বাচন ইত্যাদি বিষয়গুলো ভালোভাবে জানতে হয়।

কর্মের অধিকার সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সংস্থা

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্মের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO): এটি জাতিসংঘের একটি বিশেষায়িত সংস্থা, যা শ্রমিকদের অধিকার এবং কর্মসংস্থান নিয়ে কাজ করে।
  • অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল: এটি একটি মানবাধিকার সংস্থা, যা বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
  • হিউম্যান রাইটস ওয়াচ: এটিও একটি মানবাধিকার সংস্থা, যা বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

এই সংস্থাগুলি কর্মের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলি তুলে ধরে।

উপসংহার

কর্মের অধিকার একটি অপরিহার্য মানবাধিকার। এটি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে, মর্যাদা ও আত্মসম্মান বজায় রাখতে এবং সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখতে সহায়ক। সরকার, শ্রমিক সংগঠন, এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই অধিকারকে রক্ষা করা সম্ভব। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো ক্ষেত্রগুলোতেও এই অধিকারের সুরক্ষা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер