ওরেগন
ওরেগন
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
ওরেগন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের একটি রাজ্য। এর উত্তরে ওয়াশিংটন, পূর্বে আইডাহো, দক্ষিণে নেভাডা ও ক্যালিফোর্নিয়া এবং পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর অবস্থিত। ওরেগন তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈচিত্র্যময় জলবায়ু এবং প্রগতিশীল রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পরিচিত। রাজ্যটির আয়তন ৯৮,৩৮১ বর্গ মাইল (২৫৪,১৯৮ বর্গ কিলোমিটার) এবং জনসংখ্যা প্রায় ৪.২ মিলিয়ন। সালেম ওরেগনের রাজধানী এবং পোর্টল্যান্ড বৃহত্তম শহর।
ইতিহাস
ওরেগনের ইতিহাস হাজার হাজার বছর আগের আদিবাসী আমেরিকানদের বসতি স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হয়। এখানে বসবাসকারী প্রধান উপজাতিগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ল্যাটসপ, চিনুক, মোলালা, পাইউট এবং শোষোন। ১৮০৫ সালে লুইস ও ক্লার্ক অভিযান এই অঞ্চলে প্রথম ইউরোপীয়দের আগমন ঘটায়। লুইস ও ক্লার্ক অভিযান এই অঞ্চলের ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক সম্পদ সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে।
১৯ শতকের প্রথম দিকে, ফার ট্রেডিং (পশম ব্যবসা) এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ব্রিটিশ হudson's Bay Company এখানে প্রভাবশালী ছিল। ১৮৪৬ সালে ওরেগন চুক্তির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেন ওরেগন অঞ্চলের উপর তাদের দাবি নিষ্পত্তি করে, যার ফলে ওরেগন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হয়।
১৮৫৯ সালে ওরেগন ৩৩তম রাজ্য হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যোগদান করে। এরপর, কৃষি, বনজ শিল্প এবং পরবর্তীতে প্রযুক্তি শিল্প এই রাজ্যের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে।
ভূগোল ও জলবায়ু
ওরেগনের ভূগোল অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। এখানে ক্যাসকেড পর্বতমালার উঁচু শৃঙ্গ, উইলamette উপত্যকার উর্বর ভূমি, উপকূলীয় সমভূমি এবং হাই ডেজার্ট অঞ্চল বিদ্যমান। রাজ্যের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল মাউন্ট হুড, যার উচ্চতা ১১,২৪৯ ফুট (৩,৪৪৬ মিটার)।
ওরেগনের জলবায়ু অঞ্চলভেদে ভিন্ন হয়। পশ্চিমাঞ্চলীয় অংশে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু দেখা যায়, যেখানে গ্রীষ্মকাল উষ্ণ ও শুষ্ক এবং শীতকাল হালকা ও বৃষ্টিবহুল। পূর্বাঞ্চলে আধা-শুষ্ক জলবায়ু বিরাজ করে, যেখানে তাপমাত্রা চরমভাবাপন্ন হতে পারে। উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় সারা বছরই বৃষ্টিপাত হয়।
| অঞ্চল | গ্রীষ্মকাল | শীতকাল | বৃষ্টিপাত | পশ্চিমাঞ্চল | উষ্ণ ও শুষ্ক | হালকা ও বৃষ্টিবহুল | প্রচুর | পূর্বাঞ্চল | গরম ও শুষ্ক | ঠান্ডা ও তুষারপাতযুক্ত | কম | উপকূলীয় অঞ্চল | মৃদু | হালকা | সারা বছর বৃষ্টি |
অর্থনীতি
ওরেগনের অর্থনীতি মূলত কৃষি, বনজ শিল্প, প্রযুক্তি এবং পর্যটন নির্ভর। কৃষি উৎপাদনে গম, আলু, আপেল, নাশপাতি এবং বেরি উল্লেখযোগ্য। বনজ শিল্প রাজ্যটির অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যদিও পরিবেশগত উদ্বেগের কারণে এর পরিধি হ্রাস পাচ্ছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ওরেগন প্রযুক্তি শিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। পোর্টল্যান্ড এবং সিলিকন ফরেস্ট অঞ্চলে অনেক প্রযুক্তি কোম্পানি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। Nike, Intel এবং Columbia Sportswear এর মতো বড় কোম্পানিগুলো ওরেগনে অবস্থিত।
পর্যটনও ওরেগনের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জাতীয় উদ্যান, এবং উপকূলীয় অঞ্চলগুলো পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়।
সংস্কৃতি ও জীবনধারা
ওরেগন তার প্রগতিশীল সংস্কৃতি এবং পরিবেশ-বান্ধব জীবনযাত্রার জন্য পরিচিত। এখানে শিল্পকলা, সঙ্গীত এবং সাহিত্যের একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। পোর্টল্যান্ড বিশেষভাবে তার খাদ্য সংস্কৃতি, কফি শপ এবং স্বাধীন সঙ্গীত দৃশ্যের জন্য বিখ্যাত।
ওরেগনের বাসিন্দারা সাধারণত আউটডোর কার্যকলাপ পছন্দ করে, যেমন হাইকিং, বাইকিং, স্কিইং এবং সার্ফিং। রাজ্যটিতে অসংখ্য রাজ্য উদ্যান, জাতীয় বন এবং বন্যপ্রাণী আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে, যা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার সুযোগ প্রদান করে।
পরিবহন
ওরেগনের পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত। এখানে বিস্তৃত রাজ্য মহাসড়ক এবং আন্তঃরাজ্য মহাসড়ক নেটওয়ার্ক রয়েছে। পোর্টল্যান্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাজ্যের বৃহত্তম বিমানবন্দর, যা দেশের বিভিন্ন শহরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। এছাড়াও, এখানে ট্রেন এবং বাস পরিষেবাও রয়েছে।
শিক্ষা
ওরেগনে বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয় রয়েছে। ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয়, ওরেগন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং পোর্টল্যান্ড স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এই প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণার সুযোগ প্রদান করে।
রাজনীতি
ওরেগন রাজনৈতিকভাবে একটি উদারপন্থী রাজ্য হিসেবে পরিচিত। এখানে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রভাব বেশি, তবে রিপাবলিকান পার্টিরও যথেষ্ট সমর্থন রয়েছে। রাজ্যটি পরিবেশগত সুরক্ষা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং প্রগতিশীল নীতিগুলোর প্রতি বিশেষভাবে আগ্রহী।
গুরুত্বপূর্ণ শহর
- পোর্টল্যান্ড: ওরেগনের বৃহত্তম শহর, যা সংস্কৃতি, খাদ্য এবং প্রযুক্তির কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
- সালেম: রাজ্য রাজধানী, যা উইলamette উপত্যকায় অবস্থিত।
- ইউজিন: ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয়ের所在地, যা শিক্ষা এবং সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত।
- বে Bend: কেন্দ্রীয় ওরেগনের একটি শহর, যা আউটডোর কার্যকলাপের জন্য জনপ্রিয়।
- Medford: দক্ষিণ ওরেগনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর, যা কৃষি ও পর্যটনের কেন্দ্র।
পর্যটন আকর্ষণ
- ক্র্যাটার লেক জাতীয় উদ্যান: একটি গভীর নীল রঙের হ্রদ, যা একটি আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখে গঠিত।
- ক্যাসকেড পর্বতমালা: হাইকিং, স্কিইং এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত।
- ওরেগন উপকূল: মনোরম সমুদ্র সৈকত, পাথুরে উপকূল এবং বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল।
- উইলamette উপত্যকা: виноградник এবং কৃষি খামারের জন্য পরিচিত।
- হাই ডেজার্ট জাদুঘর: ওরেগনের মরু অঞ্চলের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বাইনারি অপশন ট্রেডিং এর সাথে ওরেগনের সম্পর্ক
ওরেগনে বাইনারি অপশন ট্রেডিং বৈধ, তবে এটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। ফিনান্সিয়াল ইন্ডাস্ট্রি রেগুলেটরি অথরিটি (FINRA) এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC) এই ট্রেডিং কার্যক্রম তদারকি করে। ওরেগনের বাসিন্দারা লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্রোকারের মাধ্যমে বাইনারি অপশন ট্রেড করতে পারেন।
বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ, যেখানে বিনিয়োগকারী একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের মূল্য বৃদ্ধি পাবে নাকি হ্রাস পাবে তা অনুমান করে। সঠিক অনুমান করলে বিনিয়োগকারী লাভবান হন, অন্যথায় তিনি তার বিনিয়োগের অর্থ হারাতে পারেন।
এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাইনারি অপশন ট্রেডিং কৌশল আলোচনা করা হলো:
- **ট্রেন্ড ফলোয়িং:** বাজারের প্রবণতা অনুসরণ করে ট্রেড করা।
- **রিভার্সাল ট্রেডিং:** বাজারের বিপরীত দিকে ট্রেড করা।
- **ব্রেকআউট ট্রেডিং:** যখন দাম একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করে, তখন ট্রেড করা।
- **প্যাটার্ন ট্রেডিং:** চার্টে বিভিন্ন প্যাটার্ন সনাক্ত করে ট্রেড করা।
- **নিউজ ট্রেডিং:** গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খবরের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করা।
টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মাধ্যমে চার্ট এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম ব্যবহার করে ভবিষ্যতের মূল্য নির্ধারণের চেষ্টা করা হয়। কিছু জনপ্রিয় টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর হল:
- **মুভিং এভারেজ (Moving Average)**
- **রিলেটিভ স্ট্রেংথ ইন্ডেক্স (RSI)**
- **MACD**
- **বলিঙ্গার ব্যান্ডস (Bollinger Bands)**
- **ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট (Fibonacci Retracement)**
ভলিউম বিশ্লেষণও বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভলিউম হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি সম্পদের কতগুলি শেয়ার বা চুক্তি কেনা বেচা হয়েছে তার পরিমাণ। ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাজারের গতিবিধি এবং সম্ভাব্য প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
- **অন-ব্যালেন্স ভলিউম (OBV)**
- **ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস (VWAP)**
বাইনারি অপশন ট্রেডিং করার সময় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দিকে ध्यान রাখা জরুরি। স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করে ক্ষতির পরিমাণ সীমিত করা যেতে পারে।
উপসংহার
ওরেগন একটি সুন্দর এবং সমৃদ্ধ রাজ্য, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতির সমন্বয়ে গঠিত। এর বৈচিত্র্যময় ভূগোল, প্রগতিশীল সমাজ এবং উন্নত অর্থনীতি এটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আকর্ষণীয় রাজ্যে পরিণত করেছে। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে ওরেগন একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ প্রদান করে, যেখানে বিনিয়োগকারীরা সচেতনভাবে এবং সতর্কতার সাথে ট্রেড করতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যসমূহ পোর্টল্যান্ড সালেম ক্যাসকেড পর্বতমালা ক্র্যাটার লেক জাতীয় উদ্যান ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয় লুইস ও ক্লার্ক অভিযান ওরেগন চুক্তি প্রযুক্তি শিল্প কৃষি পর্যটন বাইনারি অপশন ফিনান্সিয়াল ইন্ডাস্ট্রি রেগুলেটরি অথরিটি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ট্রেন্ড ফলোয়িং টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ভলিউম বিশ্লেষণ মুভিং এভারেজ রিলেটিভ স্ট্রেংথ ইন্ডেক্স MACD বলিঙ্গার ব্যান্ডস ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট অন-ব্যালেন্স ভলিউম ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি উত্তর-পশ্চিম আমেরিকা ওরেগনের ইতিহাস
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
