ওয়াল্ট ডিজনি

ওয়াল্ট ডিজনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর একজন প্রভাবশালী চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, কণ্ঠ অভিনেতা এবং অ্যানিমেটর। তিনি ডিজনি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। কার্টুন এবং চলচ্চিত্র জগতে তার অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ওয়াল্ট ডিজনি শুধুমাত্র একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন স্বপ্নদ্রষ্টা যিনি শৈশবকে উদযাপন করেছেন এবং বিশ্বজুড়ে মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন।

প্রাথমিক জীবন এবং কর্মজীবন

ওয়াল্ট ডিজনি ১৯০১ সালের ৫ ডিসেম্বর শিকাগো, ইলিনয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম ওয়াল্টার এলিয়াস ডিজনি। তার বাবা এলিয়াস ডিজনি এবং মা ফ্লোরা কলিন্স ডিজনি। ওয়াল্টের শৈশব কাটে মিসৌরি-তে। ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে ছবি আঁকার প্রবল আগ্রহ দেখা যায়। তিনি স্থানীয় আর্ট স্কুলে ছবি আঁকা শেখেন।

১৯১৯ সালে, ডিজনি কানসাস সিটি-তে একটি বিজ্ঞাপন সংস্থা শুরু করেন। কিন্তু খুব শীঘ্রই সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিনি অ্যানিমেশন জগতে প্রবেশ করেন এবং "Laugh-O-Gram Films" নামে একটি ছোট অ্যানিমেশন স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে, তিনি তার ভাই রয় ও. ডিজনির সাথে লস অ্যাঞ্জেলেস-এ এসে "Disney Brothers Cartoon Studio" প্রতিষ্ঠা করেন। এই স্টুডিওই পরবর্তীতে "The Walt Disney Company" নামে পরিচিত হয়।

সাফল্যের পথে

ওয়াল্ট ডিজনির প্রথম দিকের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো "অলিভার দ্য ক্যাট" (Oliver the Cat)। কিন্তু তার আসল সাফল্য আসে ১৯২৮ সালে "স্টিমবোট উইলি" (Steamboat Willie) নামক একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে। এই চলচ্চিত্রে মিকি মাউস নামক একটি নতুন কার্টুন চরিত্র আত্মপ্রকাশ করে, যা খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। মিকি মাউস ওয়াল্ট ডিজনির সবচেয়ে বিখ্যাত সৃষ্টিগুলোর মধ্যে অন্যতম।

১৯৩০-এর দশকে, ডিজনি "সিল্কি স্ক্রিন সিম্ফনি" (Silly Symphonies) নামক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের একটি সিরিজ তৈরি করেন। এর মধ্যে "ফ্লাওয়ার্স অ্যান্ড ট্রিজ" (Flowers and Trees) চলচ্চিত্রটি অ্যাকাডেমি পুরস্কার জিতে নেয়।

পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং নতুন দিগন্ত

ওয়াল্ট ডিজনি প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র "স্নো হোয়াইট অ্যান্ড দ্য সেভেন dwarfs" (Snow White and the Seven Dwarfs) তৈরি করেন ১৯৩৭ সালে। এটি ছিল অ্যানিমেশন ইতিহাসের একটি যুগান্তকারী ঘটনা। চলচ্চিত্রটি ব্যাপক সাফল্য লাভ করে এবং ডিজনিকে চলচ্চিত্র জগতে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়। এরপর তিনি "পিনোকিও" (Pinocchio), "ফ্যান্টাসিয়া" (Fantasia), "ডাম্বো" (Dumbo) এবং "বাম্বি" (Bambi)-এর মতো আরও অনেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র তৈরি করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, ডিজনি প্রশিক্ষণ এবং প্রচারমূলক চলচ্চিত্র তৈরি করেন। যুদ্ধের পরে, তিনি লাইভ-অ্যাকশন চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন প্রোগ্রাম তৈরি করা শুরু করেন। ১৯৫৩ সালে, তিনি "টুয়েন্টি থাউজেন্ড লিগস আন্ডার দ্য সি" (Twenty Thousand Leagues Under the Sea) চলচ্চিত্রটি মুক্তি দেন, যা একটি বড় সাফল্য ছিল।

ডিজনিল্যান্ড এবং থিম পার্ক

ওয়াল্ট ডিজনি সবসময় একটি এমন জায়গা তৈরি করার স্বপ্ন দেখেছিলেন যেখানে শিশুরা এবং বড়রা উভয়েই আনন্দ করতে পারবে। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য তিনি ১৯৫৫ সালে অ্যানাহেইম, ক্যালিফোর্নিয়ায় "ডিজনিল্যান্ড" (Disneyland) থিম পার্কটি প্রতিষ্ঠা করেন। ডিজনিল্যান্ড খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং এটি বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত থিম পার্কে পরিণত হয়। পরবর্তীতে, তিনি ফ্লোরিডা-তে "ওয়াল্ট ডিজনি ওয়ার্ল্ড" (Walt Disney World) প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন

ওয়াল্ট ডিজনি চলচ্চিত্র নির্মাণে নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং কৌশল ব্যবহার করতে আগ্রহী ছিলেন। তিনি মাল্টিপ্লেন ক্যামেরা (Multiplane camera) আবিষ্কার করেন, যা অ্যানিমেশনকে আরও বাস্তবসম্মত করে তোলে। এছাড়াও, তিনি স্টেরিও সাউন্ড এবং উন্নত অ্যানিমেশন কৌশল ব্যবহার করেন।

ব্যক্তিগত জীবন

ওয়াল্ট ডিজনি ১৯২৫ সালে লিলিানBounds-কে বিয়ে করেন। তাদের দুটি মেয়ে ছিল - ডায়ান এবং শারন। ওয়াল্ট ডিজনি ছিলেন একজন কঠোর পরিশ্রমী এবং দূরদর্শী মানুষ। তিনি সবসময় নতুন কিছু করার চেষ্টা করতেন এবং তার কাজের মাধ্যমে মানুষের জীবনে আনন্দ নিয়ে আসতে চেয়েছেন।

শেষ দিন এবং উত্তরাধিকার

ওয়াল্ট ডিজনি ১৯৬৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর লস অ্যাঞ্জেলেস-এ ফুসফুসের ক্যান্সার-এ আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত্যুর আগে, তিনি "ইপকট" (Epcot) নামক একটি নতুন থিম পার্কের পরিকল্পনা করেছিলেন, যা পরবর্তীতে তার ভাই রয় ও. ডিজনি সম্পন্ন করেন।

ওয়াল্ট ডিজনি তার কাজের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে বিনোদনের জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। তার সৃষ্টিগুলো আজও মানুষের মনে বেঁচে আছে এবং অনুপ্রাণিত করে চলেছে।

ওয়াল্ট ডিজনির উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
চলচ্চিত্র	মুক্তি বছর
স্নো হোয়াইট অ্যান্ড দ্য সেভেন dwarfs	১৯৩৭
পিনোকিও	১৯৪০
ফ্যান্টাসিয়া	১৯৪০
ডাম্বো	১৯৪১
বাম্বি	১৯৪২
সিন্দ্রেলার	১৯৫০
পিটার প্যান	১৯৫৩
লেডি অ্যান্ড দ্য ট্রাম্প	১৯৫৩
স্লিপিং বিউটি	১৯৫৮
মেরি পপিন্স	১৯৬৪

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে ওয়াল্ট ডিজনির প্রাসঙ্গিকতা

ওয়াল্ট ডিজনি একজন সফল উদ্যোক্তা ছিলেন এবং তার সাফল্যের পেছনে ছিল ঝুঁকি নেওয়ার সাহস এবং ভবিষ্যতের পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষমতা। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ক্ষেত্রেও এই দুটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: ওয়াল্ট ডিজনি বিভিন্ন সময়ে নতুন নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছেন, যেখানে ঝুঁকির সম্ভাবনা ছিল। তেমনি, বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ বিনিয়োগের আগে ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনা করা উচিত এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা যায়।

ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণ: ওয়াল্ট ডিজনি সবসময় ভবিষ্যতের চাহিদা এবং দর্শকদের পছন্দ সম্পর্কে ধারণা রাখতে চেষ্টা করতেন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ-এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের বাজার সম্পর্কে ধারণা তৈরি করা যায়।

ধৈর্য এবং অধ্যবসায়: ওয়াল্ট ডিজনিকে অনেক প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হয়েছে, কিন্তু তিনি কখনোই হাল ছাড়েননি। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও সফল হতে হলে ধৈর্য এবং অধ্যবসায় প্রয়োজন। ট্রেডিং সাইকোলজি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বৈচিত্র্যকরণ: ওয়াল্ট ডিজনি শুধুমাত্র অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র তৈরি করেননি, তিনি লাইভ-অ্যাকশন চলচ্চিত্র, টেলিভিশন প্রোগ্রাম এবং থিম পার্কের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছেন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যকরণ করা উচিত, যাতে কোনো একটি ট্রেডে ব্যর্থ হলে সামগ্রিক বিনিয়োগে বড় ধরনের ক্ষতি না হয়।

ভলিউম বিশ্লেষণ: ভলিউম এবং মূল্যের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়। ওয়াল্ট ডিজনি তার ব্যবসার প্রসারের জন্য বাজারের চাহিদা এবং যোগানের দিকে নজর রাখতেন।

ট্রেন্ড অনুসরণ: ট্রেন্ড অনুসরণ করা বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। ওয়াল্ট ডিজনিও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন প্রযুক্তি এবং ধারণা গ্রহণ করতেন।

সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স: সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো চিহ্নিত করে ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। ওয়াল্ট ডিজনি তার চলচ্চিত্র এবং থিম পার্কের জনপ্রিয়তা ধরে রাখার জন্য দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন করতেন।

মুভিং এভারেজ: মুভিং এভারেজ ব্যবহার করে বাজারের গড় গতিবিধি বোঝা যায়। ওয়াল্ট ডিজনি তার ব্যবসার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরি করতেন।

আরএসআই (RSI): আরএসআই ব্যবহার করে বাজারের অতিরিক্ত কেনা বা বিক্রির চাপ বোঝা যায়। ওয়াল্ট ডিজনি তার চলচ্চিত্রের প্রচারণার সময় বাজারের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতেন।

MACD: MACD ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি এবং সম্ভাব্য ট্রেডিং সুযোগগুলো চিহ্নিত করা যায়। ওয়াল্ট ডিজনি নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সন্ধান করতেন।

ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট: ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট লেভেলগুলো ব্যবহার করে সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো চিহ্নিত করা যায়।

ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন: ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্নগুলো বাজারের সম্ভাব্য গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে।

বোলিঙ্গার ব্যান্ড: বোলিঙ্গার ব্যান্ড ব্যবহার করে বাজারের অস্থিরতা পরিমাপ করা যায়।

স্টোকাস্টিক অসিলেটর: স্টোকাস্টিক অসিলেটর ব্যবহার করে বাজারের অতিরিক্ত কেনা বা বিক্রির অবস্থা নির্ণয় করা যায়।

চার্ট প্যাটার্ন: বিভিন্ন চার্ট প্যাটার্ন যেমন হেড অ্যান্ড শোল্ডারস, ডাবল টপ, ডাবল বটম ইত্যাদি ব্যবহার করে বাজারের ভবিষ্যৎ গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

ওয়াল্ট ডিজনি ছিলেন একজন দূরদর্শী এবং উদ্ভাবনী মানুষ। তার কর্মজীবন থেকে আমরা অনেক মূল্যবান শিক্ষা নিতে পারি, যা বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর মতো জটিল ক্ষেত্রে সফল হতে সহায়ক হতে পারে।

আরও দেখুন

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ