অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার
ভূমিকা
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার (Asthenosphere) হলো ভূ mantle-এর একটি স্তর, যা লিথোস্ফিয়ার-এর নিচে অবস্থিত। এই শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘অ্যাস্থেনেস’ (asthenes) থেকে এসেছে, যার অর্থ দুর্বল। অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারকে দুর্বল স্তর বলার কারণ হলো এই স্তরের শিলাগুলি আংশিকভাবে গলিত অবস্থায় থাকে এবং এর ফলে এটি ভূ plates-এর নড়াচড়ায় সাহায্য করে। এটি ভূ অভ্যন্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি এবং পর্বত গঠন-এর মতো ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াগুলির সাথে জড়িত।
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের অবস্থান ও গভীরতা
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার সাধারণত প্রায় ১০০ থেকে ৭০০ কিলোমিটার গভীরতায় ভূ mantle-এর মধ্যে অবস্থিত। এর উপরের সীমা লিথোস্ফিয়ারের সাথে মিলিত হয় এবং নিচের সীমা ভূ core-এর দিকে বিস্তৃত থাকে। অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের গভীরতা বিভিন্ন ভূগোলীয় স্থানে ভিন্ন হতে পারে, কারণ ভূ crust-এর পুরুত্ব এবং তাপমাত্রার পার্থক্য বিদ্যমান। মহাসাগরীয় অঞ্চলের তুলনায় মহাদেশীয় অঞ্চলে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার অগভীর অবস্থায় থাকে।
গঠন ও বৈশিষ্ট্য
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের প্রধান উপাদান হলো পেরিডোটাইট (Peridotite) নামক শিলা, যা অলিভিন (Olivine), পাইরক্সিন (Pyroxene) এবং প্ল্যাজিওক্লেজ (Plagioclase) ইত্যাদি খনিজ পদার্থ দ্বারা গঠিত। এই শিলাগুলি উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপের কারণে আংশিকভাবে গলিত অবস্থায় থাকে। অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলো:
- গলিত শিলা: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের শিলাগুলি সম্পূর্ণরূপে গলিত নয়, বরং আংশিকভাবে গলিত। এই গলিত শিলাগুলি magma হিসেবে পরিচিত এবং এটি ভূ plates-এর নড়াচড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- নমনীয়তা: এই স্তরের শিলাগুলি অত্যন্ত নমনীয়, যা লিথোস্ফিয়ারের উপর অবস্থিত ভূ plates-কে সহজে সরিয়ে নিতে সাহায্য করে।
- উচ্চ তাপমাত্রা: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের তাপমাত্রা প্রায় ১,১০০ থেকে ১,৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। এই উচ্চ তাপমাত্রা শিলাগুলির আংশিক গলনের জন্য দায়ী।
- কম ঘনত্ব: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের শিলাগুলির ঘনত্ব লিথোস্ফিয়ারের শিলাগুলির তুলনায় কম।
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের ভূমিকা
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার ভূ plates-এর নড়াচড়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিচে এর কয়েকটি ভূমিকা আলোচনা করা হলো:
- ভূ plates-এর চলন: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের নমনীয়তা ভূ plates-কে এর উপর ভেসে থাকতে এবং নড়াচড়া করতে সাহায্য করে। এই নড়াচড়ার ফলে continental drift এবং plate tectonics-এর মতো প্রক্রিয়াগুলি ঘটে।
- ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরি: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের অভ্যন্তরে magma-র সঞ্চালন ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরি সৃষ্টির কারণ হতে পারে। ভূ plates-এর সংঘর্ষ বা পৃথকীকরণের ফলে এই প্রক্রিয়াগুলি আরও তীব্র হয়।
- পর্বত গঠন: যখন দুটি ভূ plates একে অপরের দিকে অগ্রসর হয়, তখন অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের শিলাগুলি উপরে উঠে পর্বত গঠন করে। হিমালয় পর্বতমালা এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
- mantle plume: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার থেকে উৎপন্ন mantle plume (ভূ mantle plume) ভূ crust-এর দুর্বল স্থান ভেদ করে উপরে উঠে hotspot তৈরি করে। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ এর একটি উদাহরণ।
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার এবং লিথোস্ফিয়ারের মধ্যে সম্পর্ক
লিথোস্ফিয়ার হলো পৃথিবীর কঠিন বাইরের স্তর, যা ভূ crust এবং ভূ mantle-এর উপরের অংশ নিয়ে গঠিত। লিথোস্ফিয়ার অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের উপরে অবস্থিত এবং এটি কয়েকটি বড় এবং ছোট ভূ plates-এ বিভক্ত। অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার লিথোস্ফিয়ারের নিচে একটি দুর্বল এবং নমনীয় স্তর হিসেবে কাজ করে, যা লিথোস্ফিয়ারের ভূ plates-গুলিকে সরিয়ে নিতে সাহায্য করে। এই দুটি স্তরের মধ্যেকার সম্পর্ক plate tectonics-এর মূল ভিত্তি।
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার গবেষণা পদ্ধতি
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার নিয়ে গবেষণা করার জন্য বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
- ভূকম্পন তরঙ্গ বিশ্লেষণ: ভূমিকম্পের সময় উৎপন্ন ভূকম্পন তরঙ্গ (seismic waves) অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের গতি এবং দিক পরিবর্তিত হয়। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের গঠন এবং বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন।
- ভূ-তাপীয় গবেষণা: ভূ-তাপীয় (geothermal) ডেটা বিশ্লেষণ করে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের তাপমাত্রা এবং তাপমাত্রার পরিবর্তন সম্পর্কে জানা যায়।
- ভূ-রাসায়নিক বিশ্লেষণ: ভূ-রাসায়নিক (geochemical) বিশ্লেষণের মাধ্যমে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের শিলাগুলির উপাদান এবং গঠন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
- কম্পিউটার মডেলিং: কম্পিউটার মডেলিং ব্যবহার করে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের আচরণ এবং ভূ plates-এর নড়াচড়া সম্পর্কে সিমুলেশন তৈরি করা হয়।
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের প্রভাব
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের প্রভাব ভূ পৃষ্ঠের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। নিচে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব আলোচনা করা হলো:
- ভূ-সংস্থানিক পরিবর্তন: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের নড়াচড়ার কারণে ভূ পৃষ্ঠে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়, যেমন পর্বত গঠন, সমুদ্রখাত সৃষ্টি এবং ভূ-চ্যুতি (fault) তৈরি হওয়া।
- জলবায়ু পরিবর্তন: আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত গ্যাস এবং ধূলিকণা জলবায়ু-এর উপর প্রভাব ফেলে। অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের কার্যকলাপ আগ্নেয়গিরি-র অগ্ন্যুৎপাতের কারণ হতে পারে।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ: ভূমিকম্প এবং সুनामी-র মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলি অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের কার্যকলাপের সাথে সম্পর্কিত।
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর মধ্যে সম্পর্ক (রূপক)
যদিও অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার একটি ভূতাত্ত্বিক ধারণা এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি আর্থিক বিষয়, তবুও এদের মধ্যে একটি রূপক সম্পর্ক স্থাপন করা যেতে পারে। অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার যেমন পৃথিবীর পৃষ্ঠের পরিবর্তনশীলতার ভিত্তি, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর বাজারও অত্যন্ত পরিবর্তনশীল।
- ঝুঁকি এবং পুরস্কার: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের গলিত শিলা যেমন অস্থির, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে, সঠিক বিশ্লেষণ এবং কৌশল অবলম্বন করে উচ্চ পুরস্কার অর্জন করা সম্ভব।
- গতিশীলতা: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার যেমন ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়, তেমনি বাইনারি অপশন বাজারের গতিবিধিও পূর্বাভাস করা কঠিন। এখানে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়া জরুরি।
- গভীর বিশ্লেষণ: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার গবেষণা করার জন্য যেমন বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ সফল হওয়ার জন্য টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ, ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ-এর মতো কৌশলগুলি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
উপসংহার
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার ভূ অভ্যন্তর-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা পৃথিবীর ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াগুলিকে প্রভাবিত করে। এর গঠন, বৈশিষ্ট্য এবং ভূমিকা সম্পর্কে সঠিক ধারণা ভূ-বিজ্ঞান এবং ভূ-প্রকৌশল-এর জন্য অপরিহার্য। অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার নিয়ে গবেষণা ভবিষ্যতে ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরি-র মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়ক হতে পারে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে এর রূপক সম্পর্ক বিনিয়োগকারীদের বাজারের ঝুঁকি এবং পরিবর্তনশীলতা সম্পর্কে সচেতন করে তোলে।
আরও জানতে:
- ভূ mantle
- লিথোস্ফিয়ার
- ভূ plates
- ভূ অভ্যন্তর
- ভূমিকম্প
- আগ্নেয়গিরি
- পর্বত গঠন
- পেরিডোটাইট
- অলিভিন
- পাইরক্সিন
- প্ল্যাজিওক্লেজ
- magma
- continental drift
- plate tectonics
- mantle plume
- hotspot
- ভূকম্পন তরঙ্গ
- ভূ-তাপীয়
- ভূ-রাসায়নিক
- টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
- ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ
- ভলিউম বিশ্লেষণ
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
- ট্রেডিং কৌশল
- বাজার বিশ্লেষণ
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
