दुर्गম এলাকা
दुर्गম এলাকা
thumb|right|উত্তরাখণ্ডের একটি দুর্গম অঞ্চল
ভূমিকা दुर्गম এলাকা বলতে সাধারণত এমন ভৌগোলিক অঞ্চলকে বোঝায় যেখানে যাতায়াত, যোগাযোগ এবং জীবনযাত্রার অসুবিধা বিদ্যমান। এই অঞ্চলগুলি প্রায়শই অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। ভারতের প্রেক্ষাপটে, দুর্গম এলাকাগুলি বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা, যেমন - উঁচু পর্বতমালা, ঘন জঙ্গল, নদী-নালা, এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে চিহ্নিত করা হয়। এই অঞ্চলগুলির উন্নয়ন অত্যন্ত কঠিন এবং এখানে বসবাসকারী মানুষের জীবনযাত্রা বহুলাংশে শহর অঞ্চলের থেকে ভিন্ন।
दुर्गম এলাকার সংজ্ঞা दुर्गম এলাকার কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই, তবে সাধারণভাবে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি থাকলে কোনো অঞ্চলকে দুর্গম হিসেবে বিবেচনা করা হয়:
- ভূ-প্রকৃতি: উঁচু পর্বত, গভীর খাদ, ঘন বন, বা জলাভূমির উপস্থিতি।
- যোগাযোগ ব্যবস্থা: দুর্বল সড়ক যোগাযোগ, রেলপথের অভাব, বা সীমিত বিমান পরিষেবা।
- জনবসতি: কম জনঘনত্ব এবং বিচ্ছিন্ন বসতি।
- অর্থনৈতিক সুযোগ: সীমিত কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক কার্যকলাপ।
- সামাজিক পরিষেবা: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলির অভাব।
- প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা: ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্কের দুর্বল কভারেজ।
ভারতের দুর্গম এলাকা ভারতে বিভিন্ন ধরনের দুর্গম এলাকা বিদ্যমান। এদের মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অঞ্চল হলো:
- হিমালয় অঞ্চল: হিমালয় পর্বতমালা ভারতের উত্তর দিকে বিস্তৃত, যার মধ্যে উত্তরাখণ্ড, হিমachal প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর এবং আরুনাচল প্রদেশ-এর মতো রাজ্যগুলি অন্তর্ভুক্ত। এই অঞ্চলগুলি দুর্গম ভূ-প্রকৃতি, চরম আবহাওয়া এবং সীমিত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে চিহ্নিত।
- 東北 ভারত: অসম, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মণিপুর, ত্রিপুরা এবং সিকিম-এর মতো রাজ্যগুলি ঘন জঙ্গল, পাহাড় এবং বিচ্ছিন্ন বসতির কারণে দুর্গম।
- মধ্য ভারত: ছত্তিশগঢ়, ঝাড়খণ্ড, মাদ্যপ্রদেশ এবং ওড়িশা-র কিছু অংশ ঘন বন এবং আদিবাসী জনবসতির কারণে দুর্গম।
- মরুভূমি অঞ্চল: রাজস্থান-এর পশ্চিমাঞ্চলীয় অংশ থর মরুভূমি দ্বারা আচ্ছাদিত, যা চরম তাপমাত্রা এবং জলের অভাবের কারণে দুর্গম।
- দ্বীপ অঞ্চল: অন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং লক্ষद्वीप-এর মতো দ্বীপগুলি ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা এবং সীমিত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে দুর্গম।
दुर्गম এলাকার সমস্যা दुर्गম এলাকাগুলি একাধিক সমস্যায় জর্জরিত। এই সমস্যাগুলি মানুষের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তোলে এবং উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করে। প্রধান সমস্যাগুলি হলো:
- দারিদ্র্য: দুর্গম এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ কম থাকায় দারিদ্র্য একটি প্রধান সমস্যা।
- শিক্ষার অভাব: বিদ্যালয়ের অভাব, শিক্ষকের অভাব এবং দূরত্বের কারণে অনেক শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়।
- স্বাস্থ্যসেবার অভাব: স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং চিকিৎসকের অভাবের কারণে মানুষ সহজে চিকিৎসা পরিষেবা পায় না।
- যোগাযোগের অভাব: দুর্বল সড়ক যোগাযোগ এবং পরিবহন ব্যবস্থার কারণে দুর্গম এলাকার মানুষজন বাজার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় স্থানে যেতে পারে না।
- বিদ্যুতের অভাব: অনেক দুর্গম এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই, যার ফলে জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ে।
- জল সরবরাহ: বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব একটি সাধারণ সমস্যা।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ: বন্যা, ভূমিধস, এবং খরা দুর্গম এলাকার মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে।
- প্রশাসন ও নিরাপত্তা: প্রশাসনিক পরিষেবা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর অভাবের কারণে দুর্গম এলাকার মানুষজন বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে।
दुर्गম এলাকার উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগ ভারত সরকার দুর্গম এলাকার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ হলো:
- প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা (PMGSY): এই প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্গম গ্রামগুলিকে সড়ক পথের সঙ্গে যুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
- মনरेगा (MGNREGA): মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা আইন-এর মাধ্যমে দুর্গম এলাকার মানুষকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
- ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন (NRHM): এই মিশনের মাধ্যমে দুর্গম এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা উন্নত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
- সার্ব শিক্ষা অভিযান: এই অভিযানের লক্ষ্য হলো দুর্গম এলাকার সকল শিশুকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা এবং তাদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া।
- ডিজিটাল ইন্ডিয়া: এই প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্গম এলাকায় ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্কের কভারেজ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
- উত্তর-পূর্ব বিশেষ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প: এই প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের দুর্গম এলাকায় রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, এবং অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন করা হচ্ছে।
- border area development program (BADP): এই প্রকল্পের মাধ্যমে সীমান্তवर्ती অঞ্চলের উন্নয়ন করা হচ্ছে।
दुर्गম এলাকার উন্নয়নে বেসরকারি সংস্থার ভূমিকা বেসরকারি সংস্থাগুলিও (NGO) দুর্গম এলাকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জীবিকা এবং পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। কিছু উল্লেখযোগ্য বেসরকারি সংস্থা হলো:
- সেবা ভারতী
- রামকৃষ্ণ মিশন
- বিশ্ব হিন্দু পরিষদ
- অক্সফাম ইন্ডিয়া
- CARE ইন্ডিয়া
दुर्गম এলাকার অর্থনীতি दुर्गম এলাকার অর্থনীতি মূলত কৃষি, বনজ সম্পদ এবং পশুপালনের উপর নির্ভরশীল। তবে, পর্যটন এবং হস্তশিল্পের মাধ্যমেও কিছু অঞ্চলের অর্থনীতি উন্নত হচ্ছে।
- কৃষি: কৃষি দুর্গম এলাকার প্রধান জীবিকা। তবে, প্রতিকূল পরিবেশ এবং আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে উৎপাদনশীলতা কম।
- বনজ সম্পদ: বন থেকে কাঠ, বাঁশ, মধু এবং অন্যান্য বনজ সম্পদ সংগ্রহ করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে।
- পশুपालन: পশুपालन দুর্গম এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যকলাপ। ছাগল, ভেড়া, গরু এবং অন্যান্য পশু পালন করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে।
- পর্যটন: কিছু দুর্গম এলাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
- হস্তশিল্প: দুর্গম এলাকার মানুষ ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে।
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা दुर्गম এলাকাগুলির উন্নয়নের জন্য সরকার এবং বেসরকারি সংস্থাগুলির সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে, নিম্নলিখিত বিষয়গুলির উপর ध्यान দেওয়া উচিত:
- যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি: রাস্তাঘাট, রেলপথ এবং বিমান পরিষেবা উন্নত করা।
- শিক্ষার প্রসার: বিদ্যালয় স্থাপন, শিক্ষকের নিয়োগ এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
- স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি: স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, চিকিৎসকের নিয়োগ এবং স্বাস্থ্য বীমা চালু করা।
- কর্মসংস্থানের সৃষ্টি: স্থানীয় শিল্প এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো।
- বিদ্যুৎ সরবরাহ: সৌর শক্তি এবং অন্যান্য বিকল্প শক্তি উৎসের ব্যবহার বাড়ানো।
- জল সরবরাহ: বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা এবং জল সংরক্ষণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা: দুর্যোগ পূর্বাভাস এবং মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।
- প্রশাসন ও নিরাপত্তা: প্রশাসনিক পরিষেবা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা।
উপসংহার दुर्गম এলাকাগুলি ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই অঞ্চলগুলির উন্নয়ন দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। সরকার এবং বেসরকারি সংস্থাগুলির সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দুর্গম এলাকাগুলির উন্নয়ন সম্ভব।
আরও জানতে:
- গ্রামীণ উন্নয়ন
- দারিদ্র্য বিমোচন
- শিক্ষা
- স্বাস্থ্য
- যোগাযোগ
- কৃষি
- পর্যটন
- বনজ সম্পদ
- পশুपालन
- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
- PMGSY
- MGNREGA
- NRHM
- সার্ব শিক্ষা অভিযান
- ডিজিটাল ইন্ডিয়া
- BADP
- ভারতের অর্থনীতি
- ভূগোল
- জনসংখ্যা
- পরিবেশ
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
