Non-Performing Assets: Difference between revisions

Revision as of 08:15, 23 April 2025

নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস (Non-Performing Assets)

নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস বা NPA (Non-Performing Assets) একটি আর্থিক শব্দ যা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেইসব ঋণ বা বিনিয়োগকে বোঝায়, যেগুলোর আসল বা সুদ কোনোটিই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পরিশোধ করা হয়নি। এই সমস্যাটি আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো আর্থিক বাজারেও NPA-এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়, কারণ এটি সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করে।

NPA-এর সংজ্ঞা এবং শ্রেণীবিভাগ

নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস (NPA) বলতে বোঝায় সেইসব সম্পদ যা আয় তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। সাধারণত, কোনো ঋণ বা বিনিয়োগ ৯০ দিন বা তার বেশি সময় ধরে খেলাপি হলে, তাকে NPA হিসেবে গণ্য করা হয়। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) NPA চিহ্নিতকরণের জন্য সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলী দিয়েছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, NPA মূলত দুই ধরনের:

গ্রস NPA (Gross NPA): এটি হল মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ।
নেট NPA (Net NPA): এটি গ্রস NPA থেকে প্রভিশনিং (Provisioning) বাদ দিলে যা থাকে। প্রভিশনিং হল সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য ব্যাংক কর্তৃক রাখা অর্থ।

NPA আরও বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়:

সাব-স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসেটস (Sub-Standard Assets): এই ধরনের ঋণ বা বিনিয়োগ ১২ মাস বা তার বেশি সময় ধরে খেলাপি থাকে।
ডাউটফুল অ্যাসেটস (Doubtful Assets): এই ধরনের ঋণ বা বিনিয়োগ ১২ মাসের বেশি সময় ধরে সাব-স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে চিহ্নিত থাকে এবং পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা কম থাকে।
লস অ্যাসেটস (Loss Assets): এই ধরনের ঋণ বা বিনিয়োগ ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লোকসান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, অর্থাৎ পুনরুদ্ধারের কোনো সম্ভাবনা থাকে না।

NPA সৃষ্টির কারণ

NPA সৃষ্টির পেছনে বহুবিধ কারণ থাকতে পারে। কিছু প্রধান কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:

অর্থনৈতিক মন্দা: অর্থনৈতিক মন্দার সময় ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে ঋণগ্রহীতারা ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন।
ভুল ঋণ মূল্যায়ন: ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ দেওয়ার আগে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হলে NPA সৃষ্টি হতে পারে।
দুর্নীতি ও দুর্বল ব্যবস্থাপনা: দুর্নীতি এবং দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে অনেক সময় যোগ্য ঋণগ্রহীতাদের ঋণ দেওয়া হয় না এবং অযোগ্য ঋণগ্রহীতাদের ঋণ দেওয়া হয়ে যায়।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ: প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং ঋণ পরিশোধ করতে পারেন না।
সরকারি নীতি: অনেক সময় সরকারের ভুল নীতি বা সিদ্ধান্তের কারণে শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং NPA বৃদ্ধি পায়।
শিল্পখাতের দুর্বলতা: নির্দিষ্ট কিছু শিল্পখাতে দুর্বলতা দেখা দিলে সেইসব শিল্পখাতের ঋণ NPA-তে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

NPA-এর প্রভাব

NPA-এর কারণে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর কিছু প্রধান প্রভাব হলো:

মুনাফা হ্রাস: NPA-এর কারণে ব্যাংকের মুনাফা কমে যায়, কারণ খেলাপি ঋণের উপর সুদ পাওয়া যায় না।
মূলধন ঘাটতি: NPA বৃদ্ধি পেলে ব্যাংকের মূলধন কমে যায়, যা তাদের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতাকে সীমিত করে।
তারল্য সংকট: NPA-এর কারণে ব্যাংক তারল্য সংকটে পড়তে পারে, কারণ আটকে থাকা ঋণের অর্থ তারা ফেরত পায় না।
বিনিয়োগ হ্রাস: NPA-এর কারণে বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ করতে দ্বিধা বোধ করেন, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে।
সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রভাব: ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

NPA মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপ

NPA মোকাবিলায় সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হলো:

ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাংকরাপ্টসি কোড (IBC): এই কোডের মাধ্যমে ঋণ খেলাপিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ঋণ পুনরুদ্ধার করা হয়। ইনসলভেন্সি আইন ঋণদাতাদের জন্য একটি শক্তিশালী কাঠামো প্রদান করে।
সারফেসিএ (SARFAESI) অ্যাক্ট: এই আইনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো জামানত হিসেবে রাখা সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণ পুনরুদ্ধার করতে পারে।
ডেট রিকভারি ট্রাইব্যুনাল (DRT): এই আদালতগুলো দ্রুত ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য গঠিত হয়েছে।
প্রভিশনিংNorms কঠোর করা: RBI ব্যাংকগুলোকে NPA-এর জন্য আরও বেশি প্রভিশনিং করতে বাধ্য করেছে, যাতে তারা সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে।
অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন কোম্পানি (ARC): ARC গঠিত খেলাপি ঋণ ব্যাংক থেকে কিনে নেয় এবং পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে।
ফিউশন এবং একত্রীকরণ: দুর্বল ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী ব্যাংকের সাথে যুক্ত করার মাধ্যমে NPA মোকাবিলা করা হয়।
স্ট্রেসড অ্যাসেট ফান্ড: সরকার স্ট্রেসড অ্যাসেট ফান্ড তৈরি করে খেলাপি ঋণ কেনা এবং পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করেছে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং NPA-এর মধ্যে সম্পর্ক

বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি উচ্চ-ঝুঁকির বিনিয়োগ। NPA-এর কারণে অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হলে, বাইনারি অপশন মার্কেটে তার প্রভাব পড়ে। অর্থনৈতিক মন্দার সময়, বিনিয়োগকারীরা সাধারণত ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ থেকে দূরে থাকেন, যার ফলে বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ভলিউম কমে যেতে পারে।

বাজারের অস্থিরতা: NPA-এর কারণে বাজারের অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়, যা বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
তারল্য হ্রাস: NPA-এর কারণে ব্যাংকিং খাতে তারল্য হ্রাস পেলে, বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।
বিনিয়োগকারীর আস্থা হ্রাস: NPA-এর কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে গেলে, তারা বাইনারি অপশন ট্রেডিং থেকে দূরে থাকতে পারেন।

এই পরিস্থিতিতে, বাইনারি অপশন ট্রেডারদের সতর্কতার সাথে ট্রেড করা উচিত এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল অবলম্বন করা উচিত।

NPA এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ

NPA পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে। কিছু কৌশল নিচে উল্লেখ করা হলো:

মুভিং এভারেজ (Moving Average): বাজারের প্রবণতা নির্ধারণ করতে মুভিং এভারেজ ব্যবহার করা যেতে পারে।
রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স (RSI): RSI ব্যবহার করে বাজারের অতিরিক্ত ক্রয় বা বিক্রয় পরিস্থিতি নির্ণয় করা যায়।
MACD (Moving Average Convergence Divergence): MACD ব্যবহার করে বাজারের গতি এবং দিক পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
ভলিউম বিশ্লেষণ: ভলিউম বিশ্লেষণ করে বাজারের চাহিদা এবং সরবরাহ সম্পর্কে জানা যায়।
সাপোর্ট এবং রেজিস্টেন্স লেভেল: সাপোর্ট এবং রেজিস্টেন্স লেভেল নির্ধারণ করে সম্ভাব্য ট্রেডিং সুযোগ খুঁজে বের করা যায়।

NPA এবং ভলিউম বিশ্লেষণ

ভলিউম বিশ্লেষণ NPA-এর প্রভাব মূল্যায়ন করতে সহায়ক হতে পারে। উচ্চ ভলিউমের সাথে দামের পতন NPA সম্পর্কিত উদ্বেগের ইঙ্গিত দিতে পারে।

অন ব্যালেন্স ভলিউম (OBV): OBV ব্যবহার করে দাম এবং ভলিউমের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা যায়।
অ্যাকুমুলেশন/ডিস্ট্রিবিউশন লাইন (A/D Line): A/D Line ব্যবহার করে বাজারের ক্রয় এবং বিক্রয় চাপ পরিমাপ করা যায়।
ভলিউম প্রাইস ট্রেন্ড (VPT): VPT ব্যবহার করে ভলিউম এবং দামের সমন্বিত বিশ্লেষণ করা যায়।

NPA-এর ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

NPA মোকাবিলা একটি চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে NPA-এর ক্ষেত্রে কিছু নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে:

কোভিড-১৯ এর প্রভাব: কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে অনেক ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে NPA আরও বাড়তে পারে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ঋণ: ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (SME) থেকে নেওয়া ঋণের NPA-এর সম্ভাবনা বেশি, কারণ এই শিল্পগুলো অর্থনৈতিক shocks-এর প্রতি বেশি সংবেদনশীল।
কৃষিঋণ: কৃষিঋণের NPA একটি বড় সমস্যা, কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং ফসলের দামের অনিশ্চয়তার কারণে কৃষকরা ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন।
কর্পোরেট ঋণ: বড় কর্পোরেট ঋণ খেলাপি হলে NPA-এর পরিমাণ অনেক বেড়ে যেতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তন: জলবায়ু পরিবর্তনর কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষিঋণের NPA বাড়তে পারে।

উপসংহার

নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস (NPA) একটি জটিল সমস্যা, যা আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য হুমকি স্বরূপ। NPA মোকাবিলায় সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। বাইনারি অপশন ট্রেডারদের NPA-এর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অস্থিরতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং সতর্কতার সাথে ট্রেড করতে হবে। প্রযুক্তিগত এবং ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাজারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

আর্থিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব উপলব্ধি করে বিনিয়োগকারীদের সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

NPA শ্রেণীবিভাগ
শ্রেণী	বিবরণ	পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
সাব-স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসেটস	১২ মাস বা তার বেশি সময় ধরে খেলাপি	কম
ডাউটফুল অ্যাসেটস	১২ মাসের বেশি সময় ধরে সাব-স্ট্যান্ডার্ড	খুবই কম
লস অ্যাসেটস	ব্যাংক কর্তৃক লোকসান হিসেবে চিহ্নিত	নেই

শ্রেণী:নন-পারফর্মিং_অ্যাসেটস বিনিয়োগ ব্যাংকিং অর্থনীতি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা আর্থিক স্থিতিশীলতা ঋণ বিনিয়োগের ঝুঁকি শেয়ার বাজার বন্ড মার্কেট মুদ্রা বিনিময় বৈদেশিক বিনিয়োগ আর্থিক নীতি ব্যাংক ঋণ কোভিড-১৯ জলবায়ু পরিবর্তন ইনসলভেন্সি আইন SARFAESI অ্যাক্ট ডেট রিকভারি ট্রাইব্যুনাল মুভিং এভারেজ রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স MACD ভলিউম বিশ্লেষণ অন ব্যালেন্স ভলিউম অ্যাকুমুলেশন/ডিস্ট্রিবিউশন লাইন ভলিউম প্রাইস ট্রেন্ড আর্থিক ঝুঁকি

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

@@ Line 1: / Line 1: @@
 নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস (Non-Performing Assets)
-নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস বা এনপিএ (NPA) একটি আর্থিক শব্দ যা ঋণ বা আদায়যোগ্য অর্থের সেই অংশকে বোঝায়, যা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পরিশোধ করা হয়নি। এটি সাধারণত [[ব্যাংকিং]] এবং [[আর্থিক প্রতিষ্ঠান]]গুলির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ এনপিএ তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং [[লভ্যাবলী]]র উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। এই নিবন্ধে, আমরা এনপিএ-র সংজ্ঞা, কারণ, প্রভাব, শ্রেণীবিভাগ এবং মোকাবিলার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
+নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস বা NPA (Non-Performing Assets) একটি আর্থিক শব্দ যা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেইসব ঋণ বা বিনিয়োগকে বোঝায়, যেগুলোর আসল বা সুদ কোনোটিই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পরিশোধ করা হয়নি। এই সমস্যাটি [[আর্থিক স্থিতিশীলতা]] এবং [[অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি]]র জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো আর্থিক বাজারেও NPA-এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়, কারণ এটি সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করে।
-এনপিএ-র সংজ্ঞা
+== NPA-এর সংজ্ঞা এবং শ্রেণীবিভাগ ==
-একটি সম্পদকে নন-পারফর্মিং অ্যাসেট হিসেবে গণ্য করা হয় যখন এটি থেকে কোনো আয় আসে না বা এর মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। [[ঋণ]], [[অগ্রিম]], এবং অন্যান্য [[আর্থিক বিনিয়োগ]] যেগুলো নির্ধারিত সময়ে সুদ বা আসল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়, সেগুলোকে এনপিএ হিসেবে ধরা হয়। সাধারণত, যদি কোনো ঋণ বা অগ্রিম ৯০ দিন বা তার বেশি সময় ধরে খেলাপি থাকে, তবে তা এনপিএ হিসেবে বিবেচিত হয়।
+নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস (NPA) বলতে বোঝায় সেইসব সম্পদ যা আয় তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। সাধারণত, কোনো ঋণ বা বিনিয়োগ ৯০ দিন বা তার বেশি সময় ধরে খেলাপি হলে, তাকে NPA হিসেবে গণ্য করা হয়। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) NPA চিহ্নিতকরণের জন্য সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলী দিয়েছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, NPA মূলত দুই ধরনের:
-এনপিএ-র কারণসমূহ
+* গ্রস NPA (Gross NPA): এটি হল মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ।
+* নেট NPA (Net NPA): এটি গ্রস NPA থেকে প্রভিশনিং (Provisioning) বাদ দিলে যা থাকে। প্রভিশনিং হল সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য ব্যাংক কর্তৃক রাখা অর্থ।
-এনপিএ সৃষ্টির পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কিছু প্রধান কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
+NPA আরও বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়:
-* অর্থনৈতিক মন্দা: [[অর্থনৈতিক মন্দা]] বা [[মন্থর প্রবৃদ্ধি]]র কারণে ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।
+* সাব-স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসেটস (Sub-Standard Assets): এই ধরনের ঋণ বা বিনিয়োগ ১২ মাস বা তার বেশি সময় ধরে খেলাপি থাকে।
-* শিল্পখাতে সমস্যা: কোনো নির্দিষ্ট শিল্পখাতে [[মন্দা]] দেখা দিলে সেই খাতের সাথে জড়িত ঋণগুলো খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
+* ডাউটফুল অ্যাসেটস (Doubtful Assets): এই ধরনের ঋণ বা বিনিয়োগ ১২ মাসের বেশি সময় ধরে সাব-স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে চিহ্নিত থাকে এবং পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা কম থাকে।
-* দুর্বল ঋণ মূল্যায়ন: ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যদি ঋণ দেওয়ার আগে গ্রহীতার [[ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা]] সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে না পারে, তাহলে এনপিএ সৃষ্টি হতে পারে।
+* লস অ্যাসেটস (Loss Assets): এই ধরনের ঋণ বা বিনিয়োগ ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লোকসান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, অর্থাৎ পুনরুদ্ধারের কোনো সম্ভাবনা থাকে না।
-* পরিচালনা ত্রুটি: [[আর্থিক প্রতিষ্ঠান]]গুলোর দুর্বল [[ব্যবস্থাপনা]] এবং নজরদারির অভাবে এনপিএ বাড়তে পারে।
-* প্রাকৃতিক দুর্যোগ: [[প্রাকৃতিক দুর্যোগ]] যেমন বন্যা, খরা, বা ভূমিকম্পের কারণে ঋণগ্রহীতারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হতে পারে।
-* নীতিগত দুর্বলতা: সরকারের ভুল [[আর্থিক নীতি]] বা [[শিল্প নীতি]]র কারণেও এনপিএ বাড়তে পারে।
-* ইচ্ছাকৃত খেলাপি: কিছু ঋণগ্রহীতা ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ না করার চেষ্টা করে, যা এনপিএ-র অন্যতম কারণ।
-এনপিএ-র শ্রেণীবিভাগ
+== NPA সৃষ্টির কারণ ==
-বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনপিএ-কে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করে, যা তাদের ঝুঁকি এবং পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা নির্দেশ করে। সাধারণত, এনপিএ-কে তিনটি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা হয়:
+NPA সৃষ্টির পেছনে বহুবিধ কারণ থাকতে পারে। কিছু প্রধান কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
-* সাব-স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসেটস (Sub-Standard Assets): এই ধরনের সম্পদগুলো ১২ মাস বা তার বেশি সময় ধরে খেলাপি থাকে। এগুলোর পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা কম থাকে।
+* অর্থনৈতিক মন্দা: [[অর্থনৈতিক মন্দা]]র সময় ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে ঋণগ্রহীতারা ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন।
-* ডাউটফুল অ্যাসেটস (Doubtful Assets): এই সম্পদগুলো ১২ মাসের বেশি সময় ধরে সাব-স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে চিহ্নিত থাকে এবং পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা খুবই কম।
+* ভুল ঋণ মূল্যায়ন: ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ দেওয়ার আগে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হলে NPA সৃষ্টি হতে পারে।
-* লস অ্যাসেটস (Loss Assets): এই সম্পদগুলো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সম্পূর্ণরূপে অবলোপনযোগ্য (Write-off) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অর্থাৎ, এগুলো থেকে অর্থ পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
+* দুর্নীতি ও দুর্বল ব্যবস্থাপনা: [[দুর্নীতি]] এবং দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে অনেক সময় যোগ্য ঋণগ্রহীতাদের ঋণ দেওয়া হয় না এবং অযোগ্য ঋণগ্রহীতাদের ঋণ দেওয়া হয়ে যায়।
+* প্রাকৃতিক দুর্যোগ: [[প্রাকৃতিক দুর্যোগ]] যেমন বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং ঋণ পরিশোধ করতে পারেন না।
+* সরকারি নীতি: অনেক সময় সরকারের ভুল নীতি বা সিদ্ধান্তের কারণে শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং NPA বৃদ্ধি পায়।
+* শিল্পখাতের দুর্বলতা: নির্দিষ্ট কিছু শিল্পখাতে দুর্বলতা দেখা দিলে সেইসব শিল্পখাতের ঋণ NPA-তে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
-{| class="wikitable"
+== NPA-এর প্রভাব ==
-|+ এনপিএ-র শ্রেণীবিভাগ
-|-
+NPA-এর কারণে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর কিছু প্রধান প্রভাব হলো:
-| শ্রেণী || সময়কাল || পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা ||
-| সাব-স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসেটস || ১২ মাস বা তার বেশি || কম ||
+* মুনাফা হ্রাস: NPA-এর কারণে ব্যাংকের মুনাফা কমে যায়, কারণ খেলাপি ঋণের উপর সুদ পাওয়া যায় না।
-| ডাউটফুল অ্যাসেটস || ১২ মাসের বেশি (সাব-স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে) || খুবই কম ||
+* মূলধন ঘাটতি: NPA বৃদ্ধি পেলে ব্যাংকের মূলধন কমে যায়, যা তাদের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতাকে সীমিত করে।
-| লস অ্যাসেটস || ব্যাংক কর্তৃক অবলোপনযোগ্য || প্রায় নেই ||
+* তারল্য সংকট: NPA-এর কারণে ব্যাংক তারল্য সংকটে পড়তে পারে, কারণ আটকে থাকা ঋণের অর্থ তারা ফেরত পায় না।
-|}
+* বিনিয়োগ হ্রাস: NPA-এর কারণে বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ করতে দ্বিধা বোধ করেন, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে।
+* সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রভাব: ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
+== NPA মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপ ==
+NPA মোকাবিলায় সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হলো:
+* ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাংকরাপ্টসি কোড (IBC): এই কোডের মাধ্যমে ঋণ খেলাপিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ঋণ পুনরুদ্ধার করা হয়। [[ইনসলভেন্সি আইন]] ঋণদাতাদের জন্য একটি শক্তিশালী কাঠামো প্রদান করে।
+* সারফেসিএ (SARFAESI) অ্যাক্ট: এই আইনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো জামানত হিসেবে রাখা সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণ পুনরুদ্ধার করতে পারে।
+* ডেট রিকভারি ট্রাইব্যুনাল (DRT): এই আদালতগুলো দ্রুত ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য গঠিত হয়েছে।
+* প্রভিশনিংNorms কঠোর করা: RBI ব্যাংকগুলোকে NPA-এর জন্য আরও বেশি প্রভিশনিং করতে বাধ্য করেছে, যাতে তারা সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে।
+* অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন কোম্পানি (ARC): ARC গঠিত খেলাপি ঋণ ব্যাংক থেকে কিনে নেয় এবং পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে।
+* ফিউশন এবং একত্রীকরণ: দুর্বল ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী ব্যাংকের সাথে যুক্ত করার মাধ্যমে NPA মোকাবিলা করা হয়।
+* স্ট্রেসড অ্যাসেট ফান্ড: সরকার স্ট্রেসড অ্যাসেট ফান্ড তৈরি করে খেলাপি ঋণ কেনা এবং পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করেছে।
+== বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং NPA-এর মধ্যে সম্পর্ক ==
+বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি উচ্চ-ঝুঁকির বিনিয়োগ। NPA-এর কারণে অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হলে, বাইনারি অপশন মার্কেটে তার প্রভাব পড়ে। অর্থনৈতিক মন্দার সময়, বিনিয়োগকারীরা সাধারণত ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ থেকে দূরে থাকেন, যার ফলে বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ভলিউম কমে যেতে পারে।
+* বাজারের অস্থিরতা: NPA-এর কারণে বাজারের অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়, যা বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
+* তারল্য হ্রাস: NPA-এর কারণে ব্যাংকিং খাতে তারল্য হ্রাস পেলে, বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।
+* বিনিয়োগকারীর আস্থা হ্রাস: NPA-এর কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে গেলে, তারা বাইনারি অপশন ট্রেডিং থেকে দূরে থাকতে পারেন।
+এই পরিস্থিতিতে, বাইনারি অপশন ট্রেডারদের সতর্কতার সাথে ট্রেড করা উচিত এবং [[ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা]] কৌশল অবলম্বন করা উচিত।
+== NPA এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ==
-এনপিএ-র প্রভাব
+NPA পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে। কিছু কৌশল নিচে উল্লেখ করা হলো:
-এনপিএ-র আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এর কিছু প্রধান প্রভাব নিচে উল্লেখ করা হলো:
+* মুভিং এভারেজ (Moving Average): বাজারের প্রবণতা নির্ধারণ করতে মুভিং এভারেজ ব্যবহার করা যেতে পারে।
+* রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স (RSI): RSI ব্যবহার করে বাজারের অতিরিক্ত ক্রয় বা বিক্রয় পরিস্থিতি নির্ণয় করা যায়।
+* MACD (Moving Average Convergence Divergence): MACD ব্যবহার করে বাজারের গতি এবং দিক পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
+* ভলিউম বিশ্লেষণ: [[ভলিউম বিশ্লেষণ]] করে বাজারের চাহিদা এবং সরবরাহ সম্পর্কে জানা যায়।
+* সাপোর্ট এবং রেজিস্টেন্স লেভেল: সাপোর্ট এবং রেজিস্টেন্স লেভেল নির্ধারণ করে সম্ভাব্য ট্রেডিং সুযোগ খুঁজে বের করা যায়।
-* মুনাফা হ্রাস: এনপিএ-র কারণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের [[মুনাফা]] কমে যায়, কারণ খেলাপি ঋণ থেকে কোনো আয় হয় না।
+== NPA এবং ভলিউম বিশ্লেষণ ==
-* মূলধন ঘাটতি: এনপিএ বাড়লে ব্যাংকগুলোর [[মূলধন পর্যাপ্ততা]] হ্রাস পায়, যা তাদের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
-* তারল্য সংকট: এনপিএ-র কারণে ব্যাংকগুলোর [[তারল্য]] কমে যেতে পারে, কারণ খেলাপি ঋণের অর্থ আটকে থাকে।
-* বিনিয়োগ হ্রাস: এনপিএ বাড়লে বিনিয়োগকারীরা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর আস্থা হারাতে পারে, যার ফলে [[বিনিয়োগ]] হ্রাস পায়।
-* অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস: এনপিএ সামগ্রিকভাবে [[অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি]]কে বাধাগ্রস্ত করে, কারণ এটি ঋণ প্রবাহকে কমিয়ে দেয় এবং বিনিয়োগের সুযোগ হ্রাস করে।
-* খেলাপি সংস্কৃতির বিস্তার: এনপিএ ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের উৎসাহিত করে এবং ঋণ পরিশোধের সংস্কৃতিকে দুর্বল করে দেয়।
-এনপিএ মোকাবিলার উপায়
+ভলিউম বিশ্লেষণ NPA-এর প্রভাব মূল্যায়ন করতে সহায়ক হতে পারে। উচ্চ ভলিউমের সাথে দামের পতন NPA সম্পর্কিত উদ্বেগের ইঙ্গিত দিতে পারে।
-এনপিএ মোকাবিলা করার জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় নিচে উল্লেখ করা হলো:
+* অন ব্যালেন্স ভলিউম (OBV): OBV ব্যবহার করে দাম এবং ভলিউমের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা যায়।
+* অ্যাকুমুলেশন/ডিস্ট্রিবিউশন লাইন (A/D Line): A/D Line ব্যবহার করে বাজারের ক্রয় এবং বিক্রয় চাপ পরিমাপ করা যায়।
+* ভলিউম প্রাইস ট্রেন্ড (VPT): VPT ব্যবহার করে ভলিউম এবং দামের সমন্বিত বিশ্লেষণ করা যায়।
-* কঠোর ঋণ মূল্যায়ন: ঋণ দেওয়ার আগে গ্রহীতার ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা কঠোরভাবে মূল্যায়ন করতে হবে।
+== NPA-এর ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ ==
-* নিয়মিত পর্যবেক্ষণ: ঋণ দেওয়ার পর নিয়মিতভাবে ঋণের পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি চিহ্নিত করতে হবে।
-* দ্রুত পুনরুদ্ধার: খেলাপি ঋণ দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যেমন জামানত বিক্রি করা বা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
-* ঋণ পুনর্গঠন: কিছু ক্ষেত্রে, ঋণগ্রহীতাদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে ঋণের শর্তাবলী পুনর্গঠন করা যেতে পারে।
-* ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম: সরকার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যৌথভাবে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালু করতে পারে, যা ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি কমাবে।
-* সম্পদ পুনরুদ্ধার কোম্পানি (Asset Reconstruction Company): এনপিএ পুনরুদ্ধারের জন্য সম্পদ পুনরুদ্ধার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এই কোম্পানিগুলো খেলাপি ঋণ কিনে সেগুলোকে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে।
-* আইনি সংস্কার: ঋণ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে দ্রুত এবং সহজ করার জন্য [[আইনি সংস্কার]] করা উচিত।
-* প্রযুক্তি ব্যবহার: ঋণ মূল্যায়ন এবং পর্যবেক্ষণের জন্য আধুনিক [[প্রযুক্তি]] ব্যবহার করা যেতে পারে।
-* ডেটা বিশ্লেষণ: ঋণগ্রহীতাদের ক্রেডিট স্কোর এবং লেনদেনের ডেটা বিশ্লেষণ করে খেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা আগে থেকে চিহ্নিত করা যেতে পারে।
-এনপিএ এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর মধ্যে সম্পর্ক
+NPA মোকাবিলা একটি চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে NPA-এর ক্ষেত্রে কিছু নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে:
-সরাসরিভাবে এনপিএ এবং [[বাইনারি অপশন ট্রেডিং]]-এর মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। তবে, অর্থনৈতিক মন্দা বা আর্থিক সংকটের কারণে এনপিএ বাড়লে তা বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর উপর প্রভাব ফেলতে পারে। অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময়, বিনিয়োগকারীরা সাধারণত ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ থেকে দূরে থাকে, যার ফলে বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর [[ভলিউম]] কমে যেতে পারে। এছাড়াও, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতার কারণে বাইনারি অপশন প্ল্যাটফর্মগুলোর উপর আস্থা কমে যেতে পারে।
+* কোভিড-১৯ এর প্রভাব: [[কোভিড-১৯ মহামারী]]র কারণে অনেক ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে NPA আরও বাড়তে পারে।
+* ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ঋণ: ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (SME) থেকে নেওয়া ঋণের NPA-এর সম্ভাবনা বেশি, কারণ এই শিল্পগুলো অর্থনৈতিক shocks-এর প্রতি বেশি সংবেদনশীল।
+* কৃষিঋণ: কৃষিঋণের NPA একটি বড় সমস্যা, কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং ফসলের দামের অনিশ্চয়তার কারণে কৃষকরা ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন।
+* কর্পোরেট ঋণ: বড় কর্পোরেট ঋণ খেলাপি হলে NPA-এর পরিমাণ অনেক বেড়ে যেতে পারে।
+* জলবায়ু পরিবর্তন: [[জলবায়ু পরিবর্তন]]র কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষিঋণের NPA বাড়তে পারে।
-টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ, ভলিউম বিশ্লেষণ এবং কৌশল
+== উপসংহার ==
-* টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ: [[টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ]] ব্যবহার করে বাজারের প্রবণতা এবং সম্ভাব্য প্রস্থান বিন্দু চিহ্নিত করা যায়।
+নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস (NPA) একটি জটিল সমস্যা, যা আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য হুমকি স্বরূপ। NPA মোকাবিলায় সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। বাইনারি অপশন ট্রেডারদের NPA-এর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অস্থিরতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং সতর্কতার সাথে ট্রেড করতে হবে। প্রযুক্তিগত এবং ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাজারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
-* ভলিউম বিশ্লেষণ: [[ভলিউম বিশ্লেষণ]] বাজারের গতিবিধি এবং বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সম্পর্কে ধারণা দেয়।
-* মুভিং এভারেজ (Moving Average): [[মুভিং এভারেজ]] ব্যবহার করে বাজারের গড় মূল্য নির্ণয় করা যায় এবং প্রবণতা শনাক্ত করা যায়।
-* রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স (Relative Strength Index): [[আরএসআই]] ব্যবহার করে বাজারের অতিরিক্ত কেনা বা অতিরিক্ত বিক্রির অবস্থা চিহ্নিত করা যায়।
-* বলিঙ্গার ব্যান্ডস (Bollinger Bands): [[বোলিঙ্গার ব্যান্ডস]] ব্যবহার করে বাজারের অস্থিরতা পরিমাপ করা যায়।
-* ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট (Fibonacci Retracement): [[ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট]] ব্যবহার করে সম্ভাব্য সমর্থন এবং প্রতিরোধের স্তর চিহ্নিত করা যায়।
-* সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল (Support and Resistance Level): [[সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল]] ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি অনুমান করা যায়।
-* ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন (Candlestick Pattern): [[ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন]] ব্যবহার করে বাজারের সম্ভাব্য পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
-* অপশন চেইন (Option Chain): [[অপশন চেইন]] বিশ্লেষণ করে বাজারের ভবিষ্যৎ গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
-* গ্রিকস (Greeks): [[গ্রিকস]] যেমন ডেল্টা, গামা, থিটা, ভেগা ব্যবহার করে অপশনের ঝুঁকি পরিমাপ করা যায়।
-* মানি ম্যানেজমেন্ট (Money Management): [[মানি ম্যানেজমেন্ট]] কৌশল ব্যবহার করে ঝুঁকি কমানো এবং লাভজনক ট্রেডিং নিশ্চিত করা যায়।
-* রিস্ক রিওয়ার্ড রেশিও (Risk Reward Ratio): [[রিস্ক রিওয়ার্ড রেশিও]] ব্যবহার করে ট্রেডের লাভজনকতা মূল্যায়ন করা যায়।
-* ডাইভারজেন্স (Divergence): [[ডাইভারজেন্স]] ব্যবহার করে বাজারের সম্ভাব্য পরিবর্তন চিহ্নিত করা যায়।
-* ভলিউম স্প্রেড অ্যানালাইসিস (Volume Spread Analysis): [[ভলিউম স্প্রেড অ্যানালাইসিস]] ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি এবং বিনিয়োগকারীদের আচরণ বিশ্লেষণ করা যায়।
-* এল্ডার রোল (Elder Roll): [[এল্ডার রোল]] ব্যবহার করে বাজারের প্রবণতা এবং পরিবর্তনের সময় চিহ্নিত করা যায়।
-উপসংহার
+[[আর্থিক ঝুঁকি]] ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব উপলব্ধি করে বিনিয়োগকারীদের সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
-নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস একটি জটিল বিষয়, যা আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অর্থনীতির উপর গভীর প্রভাব ফেলে। এনপিএ মোকাবিলা করার জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্কতার সাথে ঋণ মূল্যায়ন, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং দ্রুত পুনরুদ্ধার পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারের নীতিগত সহায়তা এবং আইনি সংস্কারও এনপিএ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
+{| class="wikitable"
+|+ NPA শ্রেণীবিভাগ
+|-
+| শ্রেণী || বিবরণ || পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
+|-
+| সাব-স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসেটস || ১২ মাস বা তার বেশি সময় ধরে খেলাপি || কম
+|-
+| ডাউটফুল অ্যাসেটস || ১২ মাসের বেশি সময় ধরে সাব-স্ট্যান্ডার্ড || খুবই কম
+|-
+| লস অ্যাসেটস || ব্যাংক কর্তৃক লোকসান হিসেবে চিহ্নিত || নেই
+|}
-[[Category:"Non-Performing Assets"]]
+[[শ্রেণী:নন-পারফর্মিং_অ্যাসেটস]]
+[[বিনিয়োগ]]
+[[ব্যাংকিং]]
+[[অর্থনীতি]]
+[[ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা]]
+[[আর্থিক স্থিতিশীলতা]]
+[[ঋণ]]
+[[বিনিয়োগের ঝুঁকি]]
+[[শেয়ার বাজার]]
+[[বন্ড মার্কেট]]
+[[মুদ্রা বিনিময়]]
+[[বৈদেশিক বিনিয়োগ]]
+[[আর্থিক নীতি]]
+[[ব্যাংক ঋণ]]
+[[কোভিড-১৯]]
+[[জলবায়ু পরিবর্তন]]
+[[ইনসলভেন্সি আইন]]
+[[SARFAESI অ্যাক্ট]]
+[[ডেট রিকভারি ট্রাইব্যুনাল]]
+[[মুভিং এভারেজ]]
+[[রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স]]
+[[MACD]]
+[[ভলিউম বিশ্লেষণ]]
+[[অন ব্যালেন্স ভলিউম]]
+[[অ্যাকুমুলেশন/ডিস্ট্রিবিউশন লাইন]]
+[[ভলিউম প্রাইস ট্রেন্ড]]
+[[আর্থিক ঝুঁকি]]
 == এখনই ট্রেডিং শুরু করুন ==