WPS

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

ওয়াইফাই প্রটেক্টেড সেটআপ (WPS)

ভূমিকা

ওয়াইফাই প্রটেক্টেড সেটআপ (WPS) হলো একটি নেটওয়ার্কিং স্ট্যান্ডার্ড যা ওয়্যারলেস ডিভাইসগুলোকে সহজে এবং সুরক্ষিতভাবে ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে। এটি বিশেষ করে उन ব্যবহারকারীদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যাদের ওয়াইফাই সেটিংস সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা নেই। WPS এর মাধ্যমে জটিল পাসওয়ার্ড ছাড়াই নেটওয়ার্কের সাথে ডিভাইস সংযোগ করা যায়। এই নিবন্ধে, WPS এর কার্যকারিতা, সুবিধা, অসুবিধা, নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং এটি ব্যবহারের নিয়মাবলী বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে।

WPS এর ইতিহাস

WPS স্ট্যান্ডার্ডটি Wi-Fi Alliance দ্বারা ২০০৬ সালে প্রবর্তিত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের সাথে ডিভাইস সংযোগের প্রক্রিয়াকে সহজ করা। পূর্বে, ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে SSID (Service Set Identifier) এবং একটি জটিল পাসওয়ার্ড প্রয়োজন হতো, যা অনেক ব্যবহারকারীর জন্য কঠিন ছিল। WPS এই প্রক্রিয়াটিকে কয়েকটি সহজ পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।

WPS কিভাবে কাজ করে

WPS মূলত দুইটি পদ্ধতির মাধ্যমে কাজ করে:

১. পিন (PIN) পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে, ব্যবহারকারীকে একটি ৮-সংখ্যার পিন নম্বর প্রবেশ করতে হয়, যা সাধারণত ওয়াইফাই রাউটারের গায়ে লেখা থাকে। এরপর ডিভাইসটি এই পিন নম্বরটি ব্যবহার করে নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ স্থাপন করে।

২. পুশ-বাটন পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে, রাউটারের উপরে থাকা WPS বাটনটি চাপতে হয় এবং এরপর ডিভাইসের WPS সংযোগ শুরু করতে হয়। উভয় ডিভাইস কিছুক্ষণের মধ্যে একে অপরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে এবং সংযোগ সম্পন্ন হয়।

WPS এর সুবিধা

  • সহজ স্থাপন: WPS এর প্রধান সুবিধা হলো এটি ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের সাথে ডিভাইস সংযোগ করাকে অত্যন্ত সহজ করে তোলে।
  • দ্রুত সংযোগ: জটিল পাসওয়ার্ড মনে রাখার বা টাইপ করার প্রয়োজন হয় না বলে দ্রুত সংযোগ স্থাপন করা যায়।
  • ব্যবহারকারী-বান্ধব: যারা প্রযুক্তি বিষয়ে অভিজ্ঞ নন, তাদের জন্য WPS খুবই উপযোগী।
  • বিভিন্ন ডিভাইসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ: WPS প্রায় সকল আধুনিক ওয়াইফাই রাউটার এবং ডিভাইসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

WPS এর অসুবিধা

  • নিরাপত্তা ঝুঁকি: WPS এর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো এর নিরাপত্তা ঝুঁকি। WPS পিন বা পুশ-বাটন পদ্ধতির মাধ্যমে হ্যাকাররা সহজেই নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারে।
  • সীমিত সময়সীমা: WPS সংযোগের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে, যার মধ্যে সংযোগ সম্পন্ন করতে হয়।
  • দুর্বল এনক্রিপশন: WPS সাধারণত WEP (Wired Equivalent Privacy) এনক্রিপশন ব্যবহার করে, যা বর্তমানে খুব দুর্বল এবং সহজেই ক্র্যাক করা যায়।

WPS এর নিরাপত্তা ঝুঁকি

WPS এর নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলো নিম্নরূপ:

১. ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক: হ্যাকাররা WPS পিন ক্র্যাক করার জন্য ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক ব্যবহার করতে পারে। এই অ্যাটাকে, হ্যাকাররা সম্ভাব্য সকল পিন নম্বর চেষ্টা করে যতক্ষণ না সঠিক পিনটি খুঁজে পাওয়া যায়।

২. পিন পুনরুদ্ধার: WPS পিনটি রাউটারের ফার্মওয়্যার থেকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। একবার পিনটি জানা গেলে, হ্যাকাররা সহজেই নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারে।

৩. ম্যান-ইন-দ্য-মিডল অ্যাটাক: এই অ্যাটাকে, হ্যাকাররা ডিভাইস এবং রাউটারের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে এবং ডেটা চুরি করে।

৪. WPS বাটন দুর্বলতা: WPS বাটনটি সবসময় চালু থাকলে, হ্যাকাররা এটি ব্যবহার করে নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারে।

WPS ব্যবহারের নিয়মাবলী

WPS ব্যবহার করার সময় নিম্নলিখিত নিয়মাবলী অনুসরণ করা উচিত:

  • WPS সবসময় বন্ধ রাখুন: যদি আপনি WPS ব্যবহার না করেন, তবে রাউটারের সেটিংস থেকে এটি বন্ধ করে রাখুন।
  • শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন: WPS ব্যবহার করার সময় একটি শক্তিশালী এবং জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
  • ফার্মওয়্যার আপডেট করুন: রাউটারের ফার্মওয়্যার সবসময় আপডেট করুন, যাতে নিরাপত্তা ত্রুটিগুলো সমাধান করা যায়।
  • WPS সংযোগের সময়সীমা কম রাখুন: WPS সংযোগের সময়সীমা কমিয়ে দিন, যাতে হ্যাকারদের জন্য পিন ক্র্যাক করা কঠিন হয়।
  • নেটওয়ার্ক মনিটরিং করুন: আপনার নেটওয়ার্ক নিয়মিত মনিটর করুন এবং কোনো অস্বাভাবিক কার্যকলাপ দেখলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন।

WPS এবং WPA/WPA2 এর মধ্যে পার্থক্য

WPS এবং WPA/WPA2 হলো দুটি ভিন্ন নিরাপত্তা প্রোটোকল। WPA (Wi-Fi Protected Access) এবং WPA2 হলো ওয়াইফাই নেটওয়ার্ককে সুরক্ষিত রাখার জন্য ব্যবহৃত এনক্রিপশন স্ট্যান্ডার্ড। অন্যদিকে, WPS হলো এই নেটওয়ার্কের সাথে ডিভাইস সংযোগ করার একটি সহজ পদ্ধতি। নিচে এদের মধ্যেকার মূল পার্থক্যগুলো উল্লেখ করা হলো:

WPS বনাম WPA/WPA2
WPS | WPA/WPA2 |
সহজ সংযোগ স্থাপন | নেটওয়ার্ক সুরক্ষা | WEP (সাধারণত) | WPA/WPA2 (AES/TKIP) | দুর্বল | শক্তিশালী | কম | বেশি | ডিভাইস সংযোগের সরলীকরণ | নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা |

WPS এর বিকল্প

WPS এর নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে, এর বিকল্প হিসেবে নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে:

  • ম্যানুয়াল কনফিগারেশন: ডিভাইসের ওয়াইফাই সেটিংস-এ গিয়ে SSID এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে ম্যানুয়ালি সংযোগ স্থাপন করুন।
  • QR কোড: কিছু রাউটার QR কোড ব্যবহার করে সহজে ডিভাইস সংযোগ করার সুবিধা দেয়।
  • ওয়াইফাই ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ: বিভিন্ন ওয়াইফাই ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করে ডিভাইস সংযোগ এবং নেটওয়ার্ক পরিচালনা করা যায়।

WPS এর ভবিষ্যৎ

WPS এর নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত হওয়ার পর, Wi-Fi Alliance এই স্ট্যান্ডার্ডটিকে উন্নত করার চেষ্টা করছে। ভবিষ্যতে, WPS এর নতুন সংস্করণগুলোতে আরও শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা যুক্ত করা হতে পারে। তবে, বর্তমানে WPS এর ব্যবহার সীমিত হয়ে আসছে, কারণ ব্যবহারকারীরা এখন নেটওয়ার্ক সুরক্ষার বিষয়ে আরও সচেতন।

WPS সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

  • WPS এর মাধ্যমে স্মার্ট ডিভাইস যেমন স্মার্ট টিভি, স্মার্ট লাইট বাল্ব এবং অন্যান্য IoT (Internet of Things) ডিভাইস সংযোগ করা সহজ।
  • WPS এর দুর্বলতার কারণে, অনেক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ WPS ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন।
  • রাউটারের ফার্মওয়্যার আপডেট করার সময়, WPS সেটিংস পরীক্ষা করে দেখা উচিত এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করা উচিত।
  • WPS ব্যবহার করার সময়, রাউটারের আশেপাশে অপরিচিত ডিভাইস দেখলে সতর্ক থাকুন।

উপসংহার

ওয়াইফাই প্রটেক্টেড সেটআপ (WPS) একটি সুবিধাজনক প্রযুক্তি হলেও, এর নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলো উপেক্ষা করা উচিত নয়। WPS ব্যবহারের সময় সতর্কতা অবলম্বন করা এবং বিকল্প পদ্ধতিগুলো বিবেচনা করা জরুরি। নেটওয়ার্ক সুরক্ষার জন্য WPA/WPA2 এর মতো শক্তিশালী এনক্রিপশন ব্যবহার করা এবং রাউটারের ফার্মওয়্যার নিয়মিত আপডেট করা উচিত। প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সবসময়ই প্রথম priority হওয়া উচিত।

আরও জানতে:

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер