Version control system (git)
গিট: একটি পেশাদার নির্দেশিকা
ভূমিকা গিট একটি ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম। এটি সময়ের সাথে সাথে ফাইলের পরিবর্তনগুলি ট্র্যাক করে এবং একাধিক ব্যক্তির একটি প্রকল্পে একসাথে কাজ করার সুবিধা দেয়। গিট মূলত লিনাস টোরভাল্ডস তৈরি করেন, যিনি লিনাক্স কার্নেল-এর নির্মাতা হিসেবে পরিচিত। এটি ওপেন সোর্স সফটওয়্যার এবং বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো জটিল কাজে, যেখানে ডেটা বিশ্লেষণ এবং কৌশলগুলির পরিবর্তন একটি সাধারণ ঘটনা, সেখানে গিট ব্যবহার করে পূর্বের অবস্থা পুনরুদ্ধার করা বা বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে তুলনা করা অত্যন্ত উপযোগী হতে পারে।
গিট ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা গিট ব্যবহারের প্রধান কারণগুলো হলো:
- পরিবর্তন ট্র্যাকিং: গিট প্রতিটি ফাইলের পরিবর্তনের ইতিহাস রাখে। ফলে, কোনো ভুল হলে আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া যায়।
- কোলাবরেশন: একাধিক ডেভেলপার একই সাথে একটি প্রকল্পে কাজ করতে পারে এবং গিট তাদের কাজগুলো মার্জ করতে সাহায্য করে।
- শাখা তৈরি (Branching): গিট ব্যবহার করে মূল প্রোজেক্টের কাঠামো ঠিক রেখে নতুন ফিচার নিয়ে কাজ করা যায়।
- ব্যাকআপ: গিট একটি ডিসেন্ট্রালাইজড সিস্টেম হওয়ায়, এটি প্রকল্পের ব্যাকআপ হিসেবে কাজ করে।
- সংস্করণ নিয়ন্ত্রণ: সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট লাইফসাইকেল-এ বিভিন্ন সংস্করণ নিয়ন্ত্রণ করতে এটি অপরিহার্য।
গিট এর মূল ধারণা গিট ব্যবহারের আগে কিছু মৌলিক ধারণা সম্পর্কে জানা দরকার:
- রেপোজিটরি (Repository): এটি প্রকল্পের সমস্ত ফাইল এবং তাদের পরিবর্তনের ইতিহাস ধারণ করে।
- কমিট (Commit): ফাইলের পরিবর্তনের একটি স্ন্যাপশট। প্রতিটি কমিটের সাথে একটি বার্তা যুক্ত থাকে যা পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করে।
- শাখা (Branch): এটি রেপোজিটরির একটি স্বতন্ত্র অংশ, যেখানে নতুন ফিচার বা বাগ ফিক্স নিয়ে কাজ করা হয়।
- মার্জ (Merge): একটি শাখার পরিবর্তনগুলি অন্য শাখায় যুক্ত করা।
- রিমোট (Remote): এটি একটি নেটওয়ার্কের অন্য স্থানে অবস্থিত রেপোজিটরি। যেমন - গিটহাব বা বিটবাকেট।
- পুশ (Push): লোকাল রেপোজিটরি থেকে রিমোট রেপোজিটরিতে পরিবর্তন পাঠানো।
- পুল (Pull): রিমোট রেপোজিটরি থেকে লোকাল রেপোজিটরিতে পরিবর্তন আনা।
- клон (Clone): রিমোট রেপোজিটরি থেকে লোকাল রেপোজিটরিতে একটি কপি তৈরি করা।
গিট কিভাবে কাজ করে? গিট একটি ডিসেন্ট্রালাইজড ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম। এর মানে হলো, প্রতিটি ডেভেলপার তার কম্পিউটারে প্রকল্পের সম্পূর্ণ ইতিহাস ধারণ করে। যখন কোনো ডেভেলপার কোনো ফাইল পরিবর্তন করে, তখন গিট সেই পরিবর্তনের একটি স্ন্যাপশট নেয় এবং এটিকে একটি কমিট হিসেবে সংরক্ষণ করে। এই কমিটগুলো একটি নির্দিষ্ট ক্রমে সাজানো থাকে, যা প্রকল্পের ইতিহাস তৈরি করে।
গিট এর প্রাথমিক ব্যবহার গিট ব্যবহার শুরু করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:
১. গিট ইনস্টল করা: আপনার অপারেটিং সিস্টেমের জন্য গিট ডাউনলোড এবং ইনস্টল করুন। গিট ডাউনলোড-এর জন্য অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
২. রেপোজিটরি তৈরি করা: একটি নতুন প্রকল্প শুরু করতে, প্রথমে একটি নতুন রেপোজিটরি তৈরি করতে হবে। এর জন্য, আপনার প্রকল্পের ডিরেক্টরিতে নেভিগেট করুন এবং `git init` কমান্ডটি চালান।
৩. ফাইল যোগ করা: রেপোজিটরিতে ফাইল যোগ করার জন্য, `git add` কমান্ডটি ব্যবহার করুন। উদাহরণস্বরূপ, `git add filename.txt` ফাইলটিকে যোগ করবে।
৪. কমিট করা: ফাইল যোগ করার পরে, `git commit` কমান্ডটি ব্যবহার করে পরিবর্তনগুলি সংরক্ষণ করুন। কমিট করার সময় একটি বার্তা লিখুন যা পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করে। উদাহরণস্বরূপ, `git commit -m "Added new feature"`।
৫. শাখা তৈরি করা: নতুন ফিচার নিয়ে কাজ করার জন্য, `git branch` কমান্ডটি ব্যবহার করে একটি নতুন শাখা তৈরি করুন। উদাহরণস্বরূপ, `git branch feature/new-feature`।
৬. শাখায় সুইচ করা: তৈরি করা শাখায় সুইচ করার জন্য, `git checkout` কমান্ডটি ব্যবহার করুন। উদাহরণস্বরূপ, `git checkout feature/new-feature`।
৭. মার্জ করা: একটি শাখার কাজ শেষ হলে, এটিকে মূল শাখায় মার্জ করার জন্য `git merge` কমান্ডটি ব্যবহার করুন। উদাহরণস্বরূপ, `git checkout main` লিখে মেইন ব্রাঞ্চে ফিরে যান, তারপর `git merge feature/new-feature` কমান্ডটি চালান।
৮. রিমোট রেপোজিটরি যোগ করা: রিমোট রেপোজিটরি যোগ করার জন্য, `git remote add` কমান্ডটি ব্যবহার করুন। উদাহরণস্বরূপ, `git remote add origin [email protected]:username/repository.git`।
৯. পুশ করা: লোকাল রেপোজিটরি থেকে রিমোট রেপোজিটরিতে পরিবর্তন পাঠানোর জন্য, `git push` কমান্ডটি ব্যবহার করুন। উদাহরণস্বরূপ, `git push origin main`।
১০. পুল করা: রিমোট রেপোজিটরি থেকে লোকাল রেপোজিটরিতে পরিবর্তন আনার জন্য, `git pull` কমান্ডটি ব্যবহার করুন। উদাহরণস্বরূপ, `git pull origin main`।
গিট এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ কমান্ড | কমান্ড | বর্ণনা | |---|---| | `git init` | একটি নতুন গিট রেপোজিটরি তৈরি করে। | | `git clone` | একটি রিমোট রেপোজিটরি থেকে লোকাল রেপোজিটরিতে কপি করে। | | `git add` | ফাইলের পরিবর্তনগুলি স্টেজিং এরিয়াতে যোগ করে। | | `git commit` | স্টেজিং এরিয়ার পরিবর্তনগুলি রেপোজিটরিতে সংরক্ষণ করে। | | `git push` | লোকাল রেপোজিটরি থেকে রিমোট রেপোজিটরিতে পরিবর্তন পাঠায়। | | `git pull` | রিমোট রেপোজিটরি থেকে লোকাল রেপোজিটরিতে পরিবর্তন আনে। | | `git branch` | নতুন শাখা তৈরি করে বা বিদ্যমান শাখাগুলি দেখায়। | | `git checkout` | একটি নির্দিষ্ট শাখায় সুইচ করে। | | `git merge` | একটি শাখার পরিবর্তনগুলি অন্য শাখায় যুক্ত করে। | | `git status` | রেপোজিটরির বর্তমান অবস্থা দেখায়। | | `git log` | কমিট ইতিহাস দেখায়। | | `git diff` | ফাইলের পরিবর্তনগুলি দেখায়। | | `git reset` | কমিটগুলি বাতিল করে। | | `git revert` | একটি নির্দিষ্ট কমিটের পরিবর্তনগুলি বাতিল করে। | | `git stash` | পরিবর্তনগুলি সাময়িকভাবে সংরক্ষণ করে। |
বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে গিট এর ব্যবহার বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে, গিট বিভিন্ন ট্রেডিং কৌশল, স্ক্রিপ্ট এবং ডেটা বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ:
- ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজি: আপনি আপনার ট্রেডিং কৌশলগুলির বিভিন্ন সংস্করণ গিট ব্যবহার করে সংরক্ষণ করতে পারেন।
- ব্যাকটেস্টিং স্ক্রিপ্ট: ব্যাকটেস্টিংয়ের জন্য ব্যবহৃত স্ক্রিপ্টগুলির পরিবর্তনগুলি ট্র্যাক করতে গিট ব্যবহার করা যেতে পারে।
- ডেটা বিশ্লেষণ: ট্রেডিং ডেটা বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহৃত স্ক্রিপ্ট এবং নোটবুকগুলি গিট-এ সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মডেল এবং প্যারামিটারগুলির সংস্করণ নিয়ন্ত্রণ করতে গিট ব্যবহার করা যেতে পারে।
- অটোমেটেড ট্রেডিং সিস্টেম: অটোমেটেড ট্রেডিং সিস্টেমের কোড এবং কনফিগারেশন ফাইলগুলি গিট-এ ট্র্যাক করা যেতে পারে।
গিট এবং অন্যান্য ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেমের মধ্যে পার্থক্য গিট ছাড়াও আরো কিছু ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম রয়েছে, যেমন:
- সাবভার্সন (Subversion): এটি একটি সেন্ট্রালাইজড ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম।
- মারকারি (Mercurial): এটি একটি ডিসেন্ট্রালাইজড ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম, তবে গিট এর মতো জনপ্রিয় নয়।
- টিএফএস (Team Foundation Server): এটি মাইক্রোসফটের তৈরি একটি ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম।
গিট এর সুবিধা
- ডিসেন্ট্রালাইজড: প্রতিটি ডেভেলপার প্রকল্পের সম্পূর্ণ ইতিহাস ধারণ করে।
- দ্রুত: গিট খুব দ্রুত কাজ করে।
- শক্তিশালী: গিট অনেক শক্তিশালী এবং নমনীয়।
- ওপেন সোর্স: গিট বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়।
- জনপ্রিয়: গিট বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম।
গিট শেখার রিসোর্স
- গিট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
- গিটহাব লার্নিং ল্যাব
- প্রো গিট (বই)
- বিভিন্ন অনলাইন টিউটোরিয়াল এবং কোর্স
উপসংহার গিট একটি শক্তিশালী এবং প্রয়োজনীয় টুল যা সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো জটিল এবং পরিবর্তনশীল পরিবেশে, গিট ব্যবহার করে আপনার কাজকে আরও সুসংগঠিত এবং নিরাপদ করতে পারেন। গিট শেখা প্রথমে কঠিন মনে হতে পারে, তবে নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি এর সুবিধাগুলি উপলব্ধি করতে পারবেন।
কমিট মেসেজ লেখার নিয়মাবলী গিট কনফ্লিক্ট সমাধান গিট ইগনোর ফাইল গিট সাবমডিউল গিট রিবেসিং গিট Cherry-Pick বাইনারি অপশন ট্রেডিং কৌশল টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ভলিউম বিশ্লেষণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ব্যাকটেস্টিং ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন মুভিং এভারেজ আরএসআই (RSI) এমএসিডি (MACD) বলিঙ্গার ব্যান্ড ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট ট্রেডিং সাইকোলজি অর্থ ব্যবস্থাপনা ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
