Trading Mistakes

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

ট্রেডিং ভুল : বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ সাধারণ ভুল এবং প্রতিকার

বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ আর্থিক মাধ্যম। এখানে দ্রুত মুনাফা অর্জনের সম্ভাবনা থাকলেও, ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। নতুন এবং অভিজ্ঞ উভয় ট্রেডারই কিছু সাধারণ ভুল করে থাকেন যা তাঁদের ট্রেডিংয়ের সাফল্যকে ব্যাহত করে। এই নিবন্ধে, বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সময় করা কিছু সাধারণ ভুল এবং সেগুলো থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো।

সাধারণ ট্রেডিং ভুলগুলো

১. পর্যাপ্ত জ্ঞান এবং শিক্ষা ছাড়াই ট্রেড শুরু করা:

বাইনারি অপশন ট্রেডিং শুরু করার আগে এই বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান থাকা অত্যাবশ্যক। অনেক ট্রেডার কোনো প্রকার প্রস্তুতি ছাড়াই শুধুমাত্র শুনে বা দেখে ট্রেড শুরু করেন, যা তাঁদের ব্যর্থতার দিকে ঠেলে দেয়।

২. সঠিক ট্রেডিং কৌশল অনুসরণ না করা:

একটি সুনির্দিষ্ট ট্রেডিং কৌশল ছাড়া ট্রেড করা অনেকটা অন্ধকারে তীর ছোড়ার মতো। অনেক ট্রেডার আবেগপ্রবণ হয়ে বা অন্যের পরামর্শে ট্রেড করেন, যা তাঁদের ক্ষতির কারণ হয়।

  • প্রতিকার: একটি সুস্পষ্ট ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজি তৈরি করুন এবং তা কঠোরভাবে অনুসরণ করুন। আপনার ঝুঁকির মাত্রা এবং আর্থিক লক্ষ্যের সাথে সঙ্গতি রেখে কৌশল নির্বাচন করুন। মানি ম্যানেজমেন্ট কৌশল অবলম্বন করে ট্রেডের আকার নির্ধারণ করুন।

৩. অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়া:

কিছু ট্রেডার অল্প কিছু ট্রেডে সফল হওয়ার পর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়েন এবং বেশি ঝুঁকি নিতে শুরু করেন। এই ধরনের মানসিকতা তাঁদের বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।

  • প্রতিকার: বিনয়ী থাকুন এবং নিজের ট্রেডিংয়ের ভুলগুলো থেকে শিখুন। ঝুঁকি মূল্যায়ন করুন এবং সেই অনুযায়ী ট্রেড করুন। মনে রাখবেন, প্রতিটি ট্রেডেই ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।

৪. আবেগ দ্বারা প্রভাবিত হওয়া:

ট্রেডিংয়ের সময় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি। ভয় বা লোভের বশে ট্রেড করলে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

  • প্রতিকার: শান্ত থাকুন এবং যুক্তি দিয়ে ট্রেড করুন। মানসিক শৃঙ্খলা বজায় রাখুন এবং আবেগপ্রবণ হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। ট্রেডিংয়ের সময় ব্যক্তিগত অনুভূতিকে দূরে রাখুন।

৫. অপর্যাপ্ত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা:

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার অভাবে ট্রেডাররা তাঁদের মূলধন হারাতে পারেন। প্রতিটি ট্রেডে আপনার অ্যাকাউন্টের একটি নির্দিষ্ট অংশ ঝুঁকির মধ্যে রাখা উচিত।

  • প্রতিকার: স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করে আপনার ঝুঁকি সীমিত করুন। আপনার ট্রেডিং অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্সের ১-২% এর বেশি কোনো ট্রেডে ঝুঁকি নেবেন না। ডাইভারসিফিকেশন এর মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাসেটে বিনিয়োগ করুন।

৬. মার্কেট বিশ্লেষণ না করা:

মার্কেট সম্পর্কে ধারণা না নিয়ে ট্রেড করা একটি বড় ভুল। ট্রেড করার আগে মার্কেট ট্রেন্ড, সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো বিশ্লেষণ করা উচিত।

৭. ভুল ব্রোকার নির্বাচন করা:

একটি নির্ভরযোগ্য এবং রেগুলেটেড ব্রোকার নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ব্রোকার অবৈধ এবং প্রতারণামূলক কার্যকলাপের সাথে জড়িত থাকে।

  • প্রতিকার: ব্রোকার নির্বাচনের আগে তাঁদের রেগুলেশন, খ্যাতি এবং গ্রাহক পরিষেবা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। বাইনারি অপশন ব্রোকার বাছাই করার সময় সতর্ক থাকুন এবং শুধুমাত্র বিশ্বস্ত ব্রোকারদের সাথে ট্রেড করুন।

৮. অতিরিক্ত ট্রেড করা:

অতিরিক্ত ট্রেড করা বা ওভারট্রেডিং একটি সাধারণ ভুল। এর ফলে ট্রেডাররা ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

  • প্রতিকার: একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ট্রেড করার পরিকল্পনা করুন এবং তা অনুসরণ করুন। প্রতিটি ট্রেডের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিন এবং তাড়াহুড়ো করে ট্রেড করবেন না।

৯. নিউজ এবং ইভেন্টগুলি উপেক্ষা করা:

অর্থনৈতিক নিউজ এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলি মার্কেটের উপর বড় প্রভাব ফেলে। এই নিউজ এবং ইভেন্টগুলি উপেক্ষা করলে ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত ভুল হতে পারে।

  • প্রতিকার: অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করুন এবং গুরুত্বপূর্ণ নিউজ ও ইভেন্ট সম্পর্কে অবগত থাকুন। নিউজ প্রকাশের সময় ট্রেড করা থেকে বিরত থাকুন অথবা সতর্কতার সাথে ট্রেড করুন।

১০. ট্রেডিং জার্নাল না রাখা:

ট্রেডিং জার্নাল হলো আপনার ট্রেডিং কার্যকলাপের একটি রেকর্ড। এটি আপনাকে আপনার ভুলগুলো চিহ্নিত করতে এবং ভবিষ্যতে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।

  • প্রতিকার: একটি ট্রেডিং জার্নাল তৈরি করুন এবং প্রতিটি ট্রেডের বিস্তারিত তথ্য যেমন - ট্রেডের সময়, অ্যাসেট, ট্রেডের পরিমাণ, লাভের পরিমাণ, এবং আপনার চিন্তাভাবনা লিপিবদ্ধ করুন।

১১. লিভারেজের ভুল ব্যবহার:

লিভারেজ আপনার লাভের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে, তবে এটি আপনার ক্ষতির ঝুঁকিও বৃদ্ধি করে। অতিরিক্ত লিভারেজ ব্যবহার করলে দ্রুত মূলধন হারানোর সম্ভাবনা থাকে।

  • প্রতিকার: লিভারেজ ব্যবহারের আগে ভালোভাবে বুঝুন। কম লিভারেজ দিয়ে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে লিভারেজ বাড়াতে পারেন।

১২. অপর্যাপ্ত মূলধন:

ট্রেডিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত মূলধন না থাকলে, আপনি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন এবং আপনার ট্রেডিং কৌশল কার্যকর নাও হতে পারে।

  • প্রতিকার: ট্রেডিং শুরু করার আগে পর্যাপ্ত মূলধন নিশ্চিত করুন। আপনার ট্রেডিং অ্যাকাউন্টে যথেষ্ট ব্যালেন্স থাকতে হবে যাতে আপনি ক্ষতির সম্মুখীন হলেও ট্রেডিং চালিয়ে যেতে পারেন।

১৩. ভুল সময়ে ট্রেড করা:

কিছু নির্দিষ্ট সময়ে মার্কেট বেশি অস্থির থাকে, আবার কিছু সময়ে মার্কেট শান্ত থাকে। ভুল সময়ে ট্রেড করলে আপনার লাভের সম্ভাবনা কমে যেতে পারে।

  • প্রতিকার: মার্কেটের ভলাটিলিটি পর্যবেক্ষণ করুন এবং উপযুক্ত সময়ে ট্রেড করুন। সাধারণত, বড় নিউজ ইভেন্টের সময় মার্কেট বেশি অস্থির থাকে।

১৪. ট্রেডিং সিস্টেমের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা:

কিছু ট্রেডার অটোমেটেড ট্রেডিং সিস্টেম বা বট এর উপর অতিরিক্ত নির্ভর করেন। এই সিস্টেমগুলি সবসময় লাভজনক নাও হতে পারে এবং মার্কেটের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে ভুল সংকেত দিতে পারে।

  • প্রতিকার: অটোমেটেড ট্রেডিং সিস্টেম ব্যবহার করার সময় সতর্ক থাকুন। সিস্টেমের কার্যকারিতা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন এবং প্রয়োজনে নিজের কৌশল প্রয়োগ করুন।

১৫. অন্যদের অন্ধভাবে অনুসরণ করা:

অন্যদের ট্রেডিং সিগন্যাল বা পরামর্শ অন্ধভাবে অনুসরণ করা উচিত নয়। প্রত্যেকের ঝুঁকির মাত্রা এবং ট্রেডিংয়ের উদ্দেশ্য ভিন্ন থাকে।

  • প্রতিকার: নিজের গবেষণা এবং বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন। অন্যের পরামর্শকে শুধুমাত্র একটি অতিরিক্ত তথ্য হিসেবে বিবেচনা করুন।

১৬. প্র্যাকটিস অ্যাকাউন্টের গুরুত্ব না দেওয়া:

প্র্যাকটিস অ্যাকাউন্ট বা ডেমো অ্যাকাউন্ট ব্যবহার না করে সরাসরি রিয়েল ট্রেড শুরু করা একটি বড় ভুল। ডেমো অ্যাকাউন্টে আপনি কোনো ঝুঁকি ছাড়াই ট্রেডিংয়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।

  • প্রতিকার: রিয়েল ট্রেড শুরু করার আগে ডেমো অ্যাকাউন্টে যথেষ্ট সময় ধরে অনুশীলন করুন। বিভিন্ন কৌশল এবং ইন্ডিকেটর পরীক্ষা করুন এবং নিজের ট্রেডিং স্টাইল তৈরি করুন।

১৭. টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে অজ্ঞতা:

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস একটি গুরুত্বপূর্ণ টুল হলেও এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। শুধুমাত্র টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের উপর নির্ভর করে ট্রেড করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

১৮. পজিশন সাইজিংয়ের ভুল:

পজিশন সাইজিং হলো প্রতিটি ট্রেডে আপনার অ্যাকাউন্টের কত শতাংশ ঝুঁকি নেবেন তা নির্ধারণ করা। ভুল পজিশন সাইজিংয়ের কারণে দ্রুত মূলধন হারাতে পারেন।

  • প্রতিকার: আপনার ঝুঁকির মাত্রা এবং অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্সের উপর ভিত্তি করে পজিশন সাইজিং করুন। প্রতিটি ট্রেডে আপনার অ্যাকাউন্টের ১-২% এর বেশি ঝুঁকি নেবেন না।

১৯. ট্রেডিংয়ের মানসিক চাপ মোকাবেলা করতে না পারা:

ট্রেডিংয়ের সময় মানসিক চাপ অনুভব করা স্বাভাবিক। অতিরিক্ত মানসিক চাপ আপনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে।

  • প্রতিকার: ট্রেডিংয়ের সময় শান্ত থাকার জন্য মেডিটেশন বা যোগা করতে পারেন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন।

২০. শেখার মানসিকতার অভাব:

ট্রেডিং একটি চলমান প্রক্রিয়া। মার্কেটের পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়, তাই নতুন জিনিস শিখতে এবং নিজের কৌশলকে উন্নত করতে থাকতে হয়।

  • প্রতিকার: সবসময় নতুন কিছু শেখার জন্য প্রস্তুত থাকুন। ট্রেডিং কমিউনিটি এবং ফোরামগুলোতে যোগদান করুন এবং অন্যদের অভিজ্ঞতা থেকে শিখুন।

উপসংহার

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ সফল হতে হলে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে এবং উপরে উল্লিখিত ভুলগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। সঠিক জ্ঞান, কৌশল, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং মানসিক শৃঙ্খলা আপনাকে সফল ট্রেডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। মনে রাখবেন, ট্রেডিং একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া এবং এতে সময় ও ধৈর্যের প্রয়োজন।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер