Put option trading

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

পুট অপশন ট্রেডিং: একটি বিস্তারিত গাইড

পুট অপশন ট্রেডিং একটি জনপ্রিয় এবং জটিল বিনিয়োগ কৌশল, যা অভিজ্ঞ ট্রেডারদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এই নিবন্ধে, আমরা পুট অপশন ট্রেডিংয়ের মূল বিষয়গুলি, কৌশল, ঝুঁকি এবং সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

পুট অপশন কী?

পুট অপশন হলো একটি আর্থিক চুক্তি যা বিনিয়োগকারীকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট দামে কোনো সম্পদ (যেমন স্টক, কমোডিটি, কারেন্সি ইত্যাদি) বিক্রি করার অধিকার দেয়, কিন্তু বাধ্য করে না। এই অধিকার পাওয়ার জন্য বিনিয়োগকারীকে অপশন বিক্রেতাকে একটি প্রিমিয়াম দিতে হয়।

  • স্ট্রাইক প্রাইস (Strike Price):* যে দামে সম্পদটি বিক্রি করার অধিকার পাওয়া যায়, তাকে স্ট্রাইক প্রাইস বলে।
  • মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ (Expiration Date):* অপশনটি ব্যবহারের শেষ তারিখ হলো মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ।
  • প্রিমিয়াম (Premium):* পুট অপশন কেনার জন্য বিনিয়োগকারীকে যে অর্থ পরিশোধ করতে হয়, তা হলো প্রিমিয়াম।

পুট অপশন কিভাবে কাজ করে?

পুট অপশন ট্রেডিংয়ের মূল ধারণা হলো, যদি কোনো বিনিয়োগকারী মনে করেন যে কোনো সম্পদের দাম ভবিষ্যতে কমবে, তাহলে তিনি একটি পুট অপশন কিনতে পারেন। যদি দাম কমে যায়, তবে তিনি স্ট্রাইক প্রাইসে সম্পদটি বিক্রি করে লাভ করতে পারেন।

উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি একটি কোম্পানির স্টকের জন্য একটি পুট অপশন কিনেছেন, যার স্ট্রাইক প্রাইস ১০০ টাকা এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ ১ মাস পর। আপনি এই অপশনটির জন্য ৫ টাকা প্রিমিয়াম দিয়েছেন। যদি ১ মাস পর স্টকের দাম কমে ৮০ টাকায় নেমে আসে, তবে আপনি স্ট্রাইক প্রাইস ১০০ টাকায় স্টকটি বিক্রি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার লাভ হবে (১০০ - ৮০) - ৫ = ১৫ টাকা। কিন্তু যদি স্টকের দাম ১০০ টাকার উপরে বেড়ে যায়, তবে আপনার ৫ টাকা প্রিমিয়াম ক্ষতি হবে।

পুট অপশনের প্রকারভেদ

পুট অপশন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন:

  • ইউরোপীয় পুট অপশন:* এই অপশনটি মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখেই ব্যবহার করা যায়।
  • আমেরিকান পুট অপশন:* এই অপশনটি মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখের আগে যেকোনো সময় ব্যবহার করা যায়।

পুট অপশন ট্রেডিংয়ের কৌশল

পুট অপশন ট্রেডিংয়ের জন্য বিভিন্ন কৌশল রয়েছে। কিছু জনপ্রিয় কৌশল নিচে উল্লেখ করা হলো:

১. প্রোটেক্টিভ পুট (Protective Put):

এটি একটি রক্ষণাত্মক কৌশল। এই কৌশলে, বিনিয়োগকারী তার কাছে থাকা স্টকের দাম কমে যাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য পুট অপশন কেনে। এটি অনেকটা বীমা পলিসির মতো কাজ করে।

২. কভারড পুট (Covered Put):

এই কৌশলে, বিনিয়োগকারী স্টক বিক্রি করার জন্য একটি পুট অপশন বিক্রি করেন। যদি স্টকের দাম স্ট্রাইক প্রাইসের নিচে নেমে যায়, তবে বিনিয়োগকারীকে স্টকটি বিক্রি করতে হতে পারে।

৩. নেটিভ পুট (Naked Put):

এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল। এই কৌশলে, বিনিয়োগকারীর কাছে স্টক না থাকা সত্ত্বেও তিনি একটি পুট অপশন বিক্রি করেন। যদি স্টকের দাম স্ট্রাইক প্রাইসের নিচে নেমে যায়, তবে বিনিয়োগকারীকে স্টকটি কিনতে হতে পারে।

৪. পুট স্প্রেড (Put Spread):

এই কৌশলে, বিনিয়োগকারী একই সাথে দুটি পুট অপশন কেনেন এবং বিক্রি করেন, যাদের স্ট্রাইক প্রাইস ভিন্ন। এর মাধ্যমে ঝুঁকির পরিমাণ কমানো যায়।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং পুট অপশন

পুট অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর, যেমন মুভিং এভারেজ, আরএসআই (Relative Strength Index), এমএসিডি (Moving Average Convergence Divergence) ইত্যাদি ব্যবহার করে ভবিষ্যতের দামের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

  • মুভিং এভারেজ:* এটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্টকের গড় দাম দেখায় এবং ট্রেন্ড নির্ধারণে সাহায্য করে।
  • আরএসআই:* এটি স্টকের অতিরিক্ত কেনা বা অতিরিক্ত বিক্রির অবস্থা নির্দেশ করে।
  • এমএসিডি:* এটি দুটি মুভিং এভারেজের মধ্যে সম্পর্ক দেখায় এবং সম্ভাব্য ট্রেডিং সংকেত প্রদান করে।

ভলিউম বিশ্লেষণ এবং পুট অপশন

ভলিউম বিশ্লেষণ পুট অপশন ট্রেডিংয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভলিউম হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে কত সংখ্যক শেয়ার কেনা বা বেচা হয়েছে তার পরিমাণ।

  • ভলিউম বৃদ্ধি:* যদি কোনো স্টকের ভলিউম বৃদ্ধি পায়, তবে এটি দামের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে।
  • ভলিউম এবং দামের সম্পর্ক:* ভলিউম এবং দামের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা

পুট অপশন ট্রেডিংয়ে ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি হতে পারে। তাই, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কিছু নিয়ম অনুসরণ করা উচিত:

  • স্টপ-লস অর্ডার (Stop-Loss Order):* একটি নির্দিষ্ট দামে পৌঁছালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অপশনটি বিক্রি করার জন্য স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন।
  • পজিশন সাইজিং (Position Sizing):* আপনার মোট বিনিয়োগের একটি ছোট অংশ দিয়ে ট্রেড করুন।
  • ডাইভারসিফিকেশন (Diversification):* বিভিন্ন স্টকে বিনিয়োগ করে আপনার ঝুঁকি কমান।

পুট অপশন ট্রেডিংয়ের সুবিধা

  • কম বিনিয়োগ:* পুট অপশন ট্রেডিংয়ের জন্য কম বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়।
  • উচ্চ লাভের সম্ভাবনা:* সঠিকভাবে ট্রেড করতে পারলে উচ্চ লাভের সম্ভাবনা থাকে।
  • ঝুঁকি হ্রাস:* কিছু কৌশল ব্যবহার করে ঝুঁকির পরিমাণ কমানো যায়।

পুট অপশন ট্রেডিংয়ের অসুবিধা

  • উচ্চ ঝুঁকি:* পুট অপশন ট্রেডিংয়ে ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি।
  • জটিলতা:* এই ট্রেডিং কৌশলটি জটিল এবং অভিজ্ঞতার প্রয়োজন।
  • সময়সীমা:* অপশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ থাকে, তাই সময়সীমার মধ্যে লাভজনক হতে হয়।

কিছু অতিরিক্ত টিপস

  • মার্কেট সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন: শেয়ার বাজার এবং অপশন ট্রেডিং সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান থাকা জরুরি।
  • সঠিক ব্রোকার নির্বাচন করুন: একটি নির্ভরযোগ্য এবং নিয়ন্ত্রিত ব্রোকার নির্বাচন করুন।
  • ডেমো অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করুন: প্রথমে ডেমো অ্যাকাউন্টে অনুশীলন করুন এবং তারপর আসল অর্থ বিনিয়োগ করুন।
  • মানসিক дисциплиিন বজায় রাখুন: আবেগপ্রবণ হয়ে ট্রেড করবেন না।
  • নিয়মিত পর্যালোচনা করুন: আপনার ট্রেডিং কৌশল এবং ফলাফল নিয়মিত পর্যালোচনা করুন।

উপসংহার

পুট অপশন ট্রেডিং একটি শক্তিশালী বিনিয়োগ কৌশল হতে পারে, তবে এটি জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ। সঠিক জ্ঞান, দক্ষতা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই ট্রেডিং থেকে লাভবান হওয়া সম্ভব। নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য এই কৌশলটি শেখার আগে ভালোভাবে গবেষণা করা এবং অভিজ্ঞ ট্রেডারদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এই নিবন্ধটি পুট অপশন ট্রেডিংয়ের একটি প্রাথমিক ধারণা প্রদান করে। আরও বিস্তারিত জানার জন্য, আপনি বিভিন্ন অনলাইন রিসোর্স এবং শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন।

পুট অপশন ট্রেডিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা
সুবিধা অসুবিধা
কম বিনিয়োগ প্রয়োজন উচ্চ ঝুঁকি
উচ্চ লাভের সম্ভাবনা জটিল কৌশল
ঝুঁকি কমানোর সুযোগ সময়সীমা
বাজারের মন্দার সুযোগ গ্রহণ দ্রুত প্রিমিয়াম হ্রাস

আরও জানতে:

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер