Psalm

পসালম

পসালম (Psalm) হলো বাইবেলের পুরাতনTestament-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি মূলত গানের সমষ্টি, যা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লেখক দ্বারা রচিত। হিব্রু ভাষায় ‘মিজমোর’ (Mizmor) নামে পরিচিত, যার অর্থ “গান” বা “কবিতা”। গ্রিক ভাষায় এটি ‘পসালমোস’ (Psalmos) নামে পরিচিত, যেখান থেকে ইংরেজি ‘Psalm’ শব্দটি এসেছে।

পসালমের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

পসালমগুলো লেখার সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ১৪০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১০০ অব্দের মধ্যে ধরা হয়। এই সময়ে ইস্রায়েল জাতির রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় জীবনে নানা পরিবর্তন আসে। পাসালমগুলোতে সেই সময়ের মানুষের আনন্দ, বেদনা, আশা, হতাশা, বিশ্বাস, অবিশ্বাস – সবকিছুই প্রতিফলিত হয়েছে। মনে করা হয়, রাজা দাভিদ (David) ছিলেন এই পাসালমগুলোর প্রধান লেখক, যদিও অন্যান্য লেখকদের অবদানও রয়েছে। দাভিদ-এর জীবন এবং শাসনের বিভিন্ন ঘটনা পাসালমগুলোতে বিশেষভাবে উল্লেখিত।

পসালমের প্রকারভেদ

পসালমগুলোকে সাধারণত বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়, যা তাদের বিষয়বস্তু ও লেখার ধরনের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। নিচে কয়েকটি প্রধান প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো:

স্তোত্রিক পাসালম (Hymnic Psalms): এই ধরনের পাসালমগুলোতে ঈশ্বরের মহিমা, ক্ষমতা ও সৃষ্টিকর্তা হিসেবে তাঁর গুণকীর্তন করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, পসালম ৮।
কৃতজ্ঞতাঞ্জলি পাসালম (Thanksgiving Psalms): এই পাসালমগুলোতে ঈশ্বর প্রদত্ত বিভিন্ন আশীর্বাদের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে। পসালম ১০৩ এই ধরণের একটি উদাহরণ।
অনুশোচনামূলক পাসালম (Penitential Psalms): এই পাসালমগুলোতে পাপের স্বীকারোক্তি ও ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়েছে। পসালম ৫১ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আরোপণামূলক পাসালম (Imprecatory Psalms): এই পাসালমগুলোতে শত্রুদের উপর ঈশ্বরের অভিশাপ কামনা করা হয়েছে, যা বিতর্কিত হিসেবে বিবেচিত হয়। পসালম ১০৯ এর উদাহরণ।
রাজকীয় পাসালম (Royal Psalms): এই পাসালমগুলোতে ইস্রায়েলের রাজার প্রতি ঈশ্বরের আশীর্বাদ এবং তাঁর শাসনের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। পসালম ২১ এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
বিলাপের পাসালম (Lament Psalms): এই পাসালমগুলোতে ব্যক্তিগত বা জাতীয় কষ্টের কথা উল্লেখ করে ঈশ্বরের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে। পসালম ২২ একটি পরিচিত উদাহরণ।

পসালমের গঠনশৈলী

পসালমগুলোর একটি বিশেষ গঠনশৈলী রয়েছে, যা তাদের কাব্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। এর মধ্যে প্রধান হলো:

সমান্তরালতা (Parallelism): এটি পাসালমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এখানে দুটি পংক্তির অর্থ একই বা একে অপরের পরিপূরক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন: “সদাপ্রভু আমার Shepherd, আমার অভাব কিছুই হবে না।” (পসালম ২৩:১)।
অক্ষরবৃত্ত (Acrostic): কিছু পাসালমে হিব্রু বর্ণমালার অক্ষরগুলো ক্রমানুসারে ব্যবহার করা হয়েছে। এটি সাধারণত দীর্ঘ পাসালমগুলোতে দেখা যায়।
রিফেইন (Refrain): কিছু পাসালমের শেষে একটি নির্দিষ্ট পংক্তি বা শব্দ বারবার ফিরে আসে, যা সুরের মাধুর্য যোগ করে।
চিত্রকল্প (Imagery): পাসালমগুলোতে বিভিন্ন ধরনের চিত্রকল্প ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিষয়বস্তুকে আরও জীবন্ত করে তোলে।

পসালমের ধর্মীয় তাৎপর্য

পসালমগুলো ইহুদি ও খ্রিস্টান উভয় ধর্মের কাছেই অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ। এটি ঈশ্বরের সঙ্গে মানুষের ব্যক্তিগত সম্পর্কের একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়।

উপাসনা ও প্রার্থনা: পাসালমগুলো উপাসনার সময় গান হিসেবে গাওয়া হয় এবং ব্যক্তিগত প্রার্থনার অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
আধ্যাত্মিক নির্দেশনা: পাসালমগুলো বিশ্বাসীদের আধ্যাত্মিক পথে চালিত করে এবং ঈশ্বরের প্রতি তাদের বিশ্বাস দৃঢ় করে।
যিশুর ভবিষ্যদ্বাণী: অনেক খ্রিস্টান মনে করেন যে পাসালমগুলোতে যিশু খ্রিস্ট-এর জীবন, মৃত্যু ও পুনরুত্থান সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে।
দৈনন্দিন জীবনের প্রতিফলন: পাসালমগুলো মানুষের দৈনন্দিন জীবনের আনন্দ, বেদনা, আশা ও হতাশার প্রতিচ্ছবি, যা তাদের ঈশ্বরের কাছে সান্ত্বনা ও নির্দেশনা পেতে সাহায্য করে।

পসালমের সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য

পসালমগুলো হিব্রু সাহিত্যের এক অনন্য উদাহরণ। এর কাব্যিক সৌন্দর্য, গভীরতা এবং ভাষার মাধুর্য এটিকে অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে আলাদা করেছে।

রূপক ও উপমা: পাসালমগুলোতে বিভিন্ন রূপক ও উপমা ব্যবহার করা হয়েছে, যা জটিল বিষয়গুলোকে সহজভাবে উপস্থাপন করে।
অনুভূতি ও আবেগ: এই পাসালমগুলোতে মানুষের গভীর অনুভূতি ও আবেগ প্রকাশ করা হয়েছে, যা পাঠককে সহানুভূতিশীল করে তোলে।
ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট: পাসালমগুলোতে প্রাচীন ইস্রায়েলের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার প্রতিফলন ঘটেছে।

পসালমের প্রভাব

পসালমের প্রভাব শুধুমাত্র ধর্মীয় ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি সাহিত্য, সঙ্গীত ও শিল্পকলায়ও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

সাহিত্য: অনেক লেখক ও কবি পাসালম থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছেন তাদের কাজে। শেক্সপিয়র-এর রচনাতেও এর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
সঙ্গীত: পাসালমগুলো সঙ্গীতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। অনেক সুরকার পাসালমের শব্দ ব্যবহার করে সুর সৃষ্টি করেছেন। বাখ-এর ক্যান্টাটাগুলো এর উদাহরণ।
শিল্পকলা: পাসালমের বিভিন্ন দৃশ্য ও চরিত্র শিল্পকলায় চিত্রিত হয়েছে, যা দর্শকদের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে পাসালমের সম্পর্ক (রূপক অর্থে)

যদিও পাসালম সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে সম্পর্কিত নয়, তবে এর কিছু নীতি ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যেতে পারে।

১. ঝুঁকি মূল্যায়ন: পাসালমে যেমন জীবনের কঠিন পরিস্থিতি ও কষ্টের কথা বলা হয়েছে, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও ঝুঁকির মূল্যায়ন করা জরুরি। প্রতিটি ট্রেডের আগে সম্ভাব্য ঝুঁকি বিবেচনা করা উচিত। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

২. ধৈর্য ও অধ্যবসায়: পাসালমে ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখতে বলা হয়েছে, তেমনি ট্রেডিং-এও ধৈর্য ও অধ্যবসায় প্রয়োজন। দ্রুত লাভের আশায় তাড়াহুড়ো করে ট্রেড করলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। ধৈর্যশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং কৌশল।

৩. অনুশোচনা ও সংশোধন: পাসালমে পাপের স্বীকারোক্তি ও অনুশোচনার কথা বলা হয়েছে, তেমনি ট্রেডিং-এ ভুল হলে তা স্বীকার করে সংশোধন করা উচিত। নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ ট্রেডগুলোতে উন্নতি করা যায়। ট্রেডিং জার্নাল ব্যবহার করে ভুলগুলো চিহ্নিত করা যেতে পারে।

৪. কৃতজ্ঞতা: পাসালমে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কথা বলা হয়েছে, তেমনি ট্রেডিং-এ লাভ হলে বিনয়ী থাকা উচিত এবং সাফল্যের জন্য কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এটি সহায়ক।

৫. দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা: পাসালমে জীবনের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে, তেমনি ট্রেডিং-এও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা উচিত। স্বল্পমেয়াদী লাভের পিছনে না ছুটে একটি সুচিন্তিত কৌশল অনুসরণ করা উচিত। বিনিয়োগ কৌশল এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

পসালমের কিছু বিখ্যাত উদাহরণ

পসালম ২৩: “সদাপ্রভু আমার Shepherd, আমার অভাব কিছুই হবে না।” – এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় পাসালমগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা ঈশ্বরের তত্ত্বাবধান ও সুরক্ষার কথা বলে।
পসালম ৫১: অনুশোচনামূলক পাসালম, যেখানে পাপের ক্ষমা চাওয়া হয়েছে।
পসালম ৯১: ঈশ্বরের আশ্রয় ও নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে।
পসালম ১২১: ঈশ্বরের উপর ভরসা রাখার গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে।
পসালম ১৩৯: ঈশ্বরের সর্বজ্ঞতা ও সর্বত্র বিরাজমানতার কথা বলা হয়েছে।

উপসংহার

পসালম হলো বাইবেলের এক অমূল্য সম্পদ, যা যুগ যুগ ধরে মানুষকে ঈশ্বরের পথে চালিত করে আসছে। এর ধর্মীয়, সাহিত্যিক ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য এটিকে বিশেষ করে তুলেছে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর মতো পার্থিব বিষয়েও এর নীতিগুলো অনুসরণ করে সফলতা অর্জন করা যেতে পারে।

বাইবেল পুরাতনTestament ধর্মীয় গ্রন্থ ইহুদি ধর্ম খ্রিস্ট ধর্ম দাভিদ যিশু খ্রিস্ট উপাসনা প্রার্থনা কাব্য সাহিত্য সঙ্গীত শিল্পকলা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ধৈর্যশীলতা ট্রেডিং জার্নাল মানসিক স্থিতিশীলতা বিনিয়োগ কৌশল টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ভলিউম বিশ্লেষণ ফিনান্সিয়াল মার্কেট ট্রেডিং কৌশল প্যাটার্ন রিকগনিশন

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ