Open University

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (Open University) একটি বিশেষ ধরনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা দূরশিক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ঐতিহ্যবাহী শ্রেণীকক্ষের শিক্ষার বাইরে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে, বিশেষ করে যারা সময়, ভৌগোলিক অবস্থান বা ব্যক্তিগত পরিস্থিতির কারণে নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারেন না। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণাটি বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে প্রথম শুরু হয়েছিল এবং সময়ের সাথে সাথে এটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

ইতিহাস

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণাটি প্রথম ব্রিটেনে ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্রিটিশ ওপেন ইউনিভার্সিটির মাধ্যমে শুরু হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল কর্মজীবী এবং যাদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ সীমিত, তাদের জন্য শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করা। পরবর্তীতে, এই ধারণাটি অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন নামে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। ভারতে ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (IGNOU) এই ধারার একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা এটিকে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আলাদা করে:

দূরশিক্ষণ পদ্ধতি: এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো দূরশিক্ষণ। শিক্ষার্থীরা সরাসরি ক্যাম্পাসে উপস্থিত না থেকেও অধ্যয়ন করতে পারে। শিক্ষা উপকরণ সাধারণত পোস্ট, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বা অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়।
নমনীয় সময়সূচী: উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার সময় শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব সময়সূচী অনুযায়ী পড়াশোনা করতে পারে। এটি কর্মজীবী এবং অন্যান্য বাধ্যবাধকতা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী।
প্রবেশের যোগ্যতা: সাধারণত, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কঠোর একাডেমিক যোগ্যতা প্রয়োজন হয় না। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়তে মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই ভর্তি হওয়া যায়।
বিস্তৃত বিষয়ভিত্তিক সুযোগ: উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন ধরনের বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ থাকে, যা শিক্ষার্থীদের তাদের আগ্রহ ও প্রয়োজন অনুযায়ী কোর্স নির্বাচন করতে সাহায্য করে।
সাশ্রয়ী শিক্ষা: ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি সাধারণত কম হয়।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষণ পদ্ধতি

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন শিক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে, যেমন:

অডিও-ভিজুয়াল উপকরণ: লেকচার, ডকুমেন্টারি এবং অন্যান্য শিক্ষামূলক ভিডিও শিক্ষার্থীদের জন্য সরবরাহ করা হয়।
অডিও ক্যাসেট ও সিডি: অনেক ক্ষেত্রে, শিক্ষার্থীরা অডিও ক্যাসেট বা সিডির মাধ্যমে লেকচার শুনতে পারে।
পাঠ্য উপকরণ: বিস্তারিত পাঠ্যপুস্তক এবং স্টাডি গাইড শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হয়।
অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম: বর্তমানে, অধিকাংশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, যেখানে শিক্ষার্থীরা কোর্স ম্যাটেরিয়াল ডাউনলোড করতে পারে, আলোচনা ফোরামে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
সামাজিক মাধ্যম ও ওয়েবিনারে অংশগ্রহণ: অনেক বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক মাধ্যম এবং ওয়েবিনারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে এবং তাদের সহায়তা প্রদান করে।

বিশ্বের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

উল্লেখযোগ্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্ববিদ্যালয়	দেশ	প্রতিষ্ঠা
ব্রিটিশ ওপেন ইউনিভার্সিটি	যুক্তরাজ্য	১৯৬৯
ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (IGNOU)	ভারত	১৯৮৫
জার্মানি ওপেন ইউনিভার্সিটি	জার্মানি	১৯৭৪
স্প্যানিশ ন্যাশনাল ডিস্টেন্স এডুকেশন ইউনিভার্সিটি (UNED)	স্পেন	১৯৭৫
সাউথ আফ্রিকান ওপেন ইউনিভার্সিটি (UNISA)	দক্ষিণ আফ্রিকা	১৮৭৩ (দূরশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু: ১৯৪৬)

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা

সময় এবং স্থানের স্বাধীনতা: শিক্ষার্থীরা যেকোনো সময় এবং যেকোনো স্থান থেকে পড়াশোনা করতে পারে।
ব্যক্তিগতকৃত শিক্ষা: শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব গতিতে শিখতে পারে এবং প্রয়োজনে শিক্ষকের সহায়তা নিতে পারে।
কর্মজীবনের সাথে সমন্বয়: কর্মজীবী মানুষের জন্য এটি অত্যন্ত উপযোগী, কারণ তারা চাকরি করার পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।
উচ্চশিক্ষার সুযোগ: যারা বিভিন্ন কারণে নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না, তাদের জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরি হয়।
জীবনব্যাপী শিক্ষা: উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ প্রদান করে, যা মানুষকে নতুন দক্ষতা অর্জন এবং জ্ঞান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অসুবিধা

স্ব-অনুপ্রেরণার অভাব: দূরশিক্ষণে শিক্ষার্থীদের নিজেদেরকে অনুপ্রাণিত রাখতে হয়, যা অনেকের জন্য কঠিন হতে পারে।
সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার অভাব: শ্রেণীকক্ষে সরাসরি যোগাযোগের অভাবে সামাজিক মিথস্ক্রিয়া কম হতে পারে।
প্রযুক্তিগত সমস্যা: অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার সময় প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মূল্যায়ন পদ্ধতি: অনেক সময়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
মানসিক চাপ: কাজ এবং পড়াশোনা একসাথে সামলানো অনেক শিক্ষার্থীর জন্য মানসিক চাপের কারণ হতে পারে।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদের শিক্ষণ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনছে। অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার শিক্ষার অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করছে। ভবিষ্যতে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছাতে পারবে এবং শিক্ষার সুযোগ আরও সহজলভ্য করতে পারবে বলে আশা করা যায়।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সম্পর্ক

যদিও বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই, তবে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান এবং দক্ষতা বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো জটিল আর্থিক বাজারে সহায়ক হতে পারে।

অর্থনৈতিক জ্ঞান: উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি, পরিসংখ্যান এবং ফিনান্সের মতো বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করলে বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মূল ধারণাগুলো বোঝা সহজ হয়। অর্থনীতি
বিশ্লেষণ দক্ষতা: উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্সগুলো শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণ দক্ষতা বৃদ্ধি করে, যা টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ এর জন্য অপরিহার্য।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: বিনিয়োগের ঝুঁকি সম্পর্কে জ্ঞান এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কৌশল শেখা বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা: উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শিক্ষার্থীদের দ্রুত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে, যা ট্রেডিংয়ের জন্য খুবই জরুরি।
সময় ব্যবস্থাপনা: উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার সময় শিক্ষার্থীরা সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা অর্জন করে, যা ট্রেডিংয়ের পাশাপাশি অন্যান্য কাজ সামলাতে সহায়ক।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর মৌলিক ধারণা

বাইনারি অপশন ট্রেডিং হলো একটি আর্থিক বিনিয়োগ পদ্ধতি যেখানে বিনিয়োগকারী একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সম্পদের (যেমন: স্টক, মুদ্রা, কমোডিটি) দাম বাড়বে নাকি কমবে তা অনুমান করে। যদি অনুমান সঠিক হয়, তবে বিনিয়োগকারী একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ লাভ পান, আর ভুল হলে বিনিয়োগের পুরো পরিমাণ হারান।

কল অপশন (Call Option): যদি বিনিয়োগকারী মনে করেন যে সম্পদের দাম বাড়বে, তবে তিনি কল অপশন কিনবেন।
পুট অপশন (Put Option): যদি বিনিয়োগকারী মনে করেন যে সম্পদের দাম কমবে, তবে তিনি পুট অপশন কিনবেন।
পেমআউট (Payout): বাইনারি অপশনে বিনিয়োগের লাভের পরিমাণ আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে।
মেয়াদকাল (Expiry Time): বাইনারি অপশনের একটি নির্দিষ্ট মেয়াদকাল থাকে, যার মধ্যে দামের পরিবর্তন অনুমান করতে হয়।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর কৌশল

ট্রেন্ড ট্রেডিং (Trend Trading): বাজারের প্রবণতা অনুসরণ করে ট্রেড করা। ট্রেন্ড অনুসরণ
ব্রেকআউট ট্রেডিং (Breakout Trading): যখন দাম একটি নির্দিষ্ট স্তর অতিক্রম করে, তখন ট্রেড করা। ব্রেকআউট কৌশল
রিভার্সাল ট্রেডিং (Reversal Trading): যখন বাজারের প্রবণতা বিপরীত দিকে যায়, তখন ট্রেড করা। রিভার্সাল কৌশল
প্যাটার্ন ট্রেডিং (Pattern Trading): চার্টে বিভিন্ন প্যাটার্ন সনাক্ত করে ট্রেড করা। চার্ট প্যাটার্ন
নিউজ ট্রেডিং (News Trading): গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খবরের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করা। সংবাদ ভিত্তিক ট্রেডিং

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ঝুঁকি

বাইনারি অপশন ট্রেডিং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এখানে কিছু ঝুঁকি উল্লেখ করা হলো:

উচ্চ ঝুঁকি: বাইনারি অপশনে বিনিয়োগের ঝুঁকি অনেক বেশি, কারণ বিনিয়োগকারী পুরো পরিমাণ হারাতে পারেন।
অতিরিক্ত লিভারেজ: কিছু ব্রোকার অতিরিক্ত লিভারেজ প্রদান করে, যা ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
নিয়ন্ত্রণের অভাব: অনেক দেশে বাইনারি অপশন ট্রেডিং এখনও সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রিত নয়।
স্ক্যাম ব্রোকার: কিছু ব্রোকার জালিয়াতি করতে পারে এবং বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎ করতে পারে।

অতএব, বাইনারি অপশন ট্রেডিং শুরু করার আগে ভালোভাবে জেনে নেওয়া এবং ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।

উপসংহার

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ