National Geographic

thumb|300px|ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির সদর দফতর

National Geographic Society একটি আমেরিকান অলাভজনক বৈজ্ঞানিক এবং শিক্ষামূলক সংস্থা। এটি ১৮৮৮ সালের জানুয়ারী ১৩ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সংস্থাটির লক্ষ্য হল বিজ্ঞান, শিক্ষা এবং সংরক্ষণের মাধ্যমে বিশ্বের মানুষের মধ্যে জ্ঞান বৃদ্ধি করা। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি তার বিখ্যাত ম্যাগাজিন, National Geographic Magazine এবং টেলিভিশন চ্যানেল, National Geographic Channel-এর জন্য সুপরিচিত।

ইতিহাস

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ওয়াশিংটন, ডি. সি.-তে। এর প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে ছিলেন বিজ্ঞানী এবং অভিযাত্রীরা, যারা ভৌগোলিক জ্ঞান এবং অনুসন্ধিৎসু মনকে একত্রিত করতে চেয়েছিলেন। প্রথম দিকে, সোসাইটি মূলত ভৌগোলিক গবেষণা এবং অনুসন্ধানের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। ১৮৯০ সালে, সোসাইটি তার প্রথম ম্যাগাজিন প্রকাশ করে, যা দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

National Geographic Magazine

National Geographic Magazine ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির সবচেয়ে পরিচিত প্রকাশনা। এটি ১৮৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ম্যাগাজিন হিসেবে বিবেচিত। ম্যাগাজিনটি বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, ইতিহাস, এবং পরিবেশ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে ছবি ও নিবন্ধ প্রকাশ করে। এর ফটোগ্রাফি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, যা প্রায়শই নতুন মান নির্ধারণ করে।

ম্যাগাজিনের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য:

উচ্চ মানের ফটোগ্রাফি: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক তার ব্যতিক্রমী ফটোগ্রাফির জন্য বিখ্যাত।
গবেষণামূলক সাংবাদিকতা: ম্যাগাজিনের নিবন্ধগুলি গভীর গবেষণা এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়।
সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য: বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়।
পরিবেশ সচেতনতা: পরিবেশগত সমস্যা এবং সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা হয়।

National Geographic Channel

National Geographic Channel একটি টেলিভিশন চ্যানেল, যা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির একটি অংশ। এটি ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে এবং দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। চ্যানেলটি বিজ্ঞান, প্রকৃতি, ইতিহাস, এবং সংস্কৃতি সম্পর্কিত বিভিন্ন ডকুমেন্টারি, চলচ্চিত্র এবং অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে।

চ্যানেলের কিছু জনপ্রিয় অনুষ্ঠান:

Explorer: এই অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনুসন্ধান এবং আবিষ্কারের কাহিনী দেখানো হয়।
Drain the Oceans: সমুদ্রের তলদেশে লুকানো রহস্য উন্মোচন করা হয়।
Life Below Zero: প্রতিকূল পরিবেশে মানুষের জীবনযাপন চিত্রিত করা হয়।
The Incredible Dr. Pol: পশুচিকিৎসক ডঃ পলের জীবন এবং কাজ দেখানো হয়।

National Geographic Partners

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পার্টনার্স হল ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি এবং 21st Century Fox-এর মধ্যে একটি যৌথ উদ্যোগ। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক তার বিষয়বস্তু বিশ্বব্যাপী আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে।

সংরক্ষণ এবং গবেষণা

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি সংরক্ষণ এবং গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সংস্থাটি বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী এবং তাদের আবাসস্থল রক্ষার জন্য কাজ করে। এছাড়াও, এটি জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ, এবং অন্যান্য পরিবেশগত সমস্যা নিয়ে গবেষণা চালায়।

সংরক্ষণ কার্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

প্রতীকী প্রজাতি সংরক্ষণ: বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী রক্ষার জন্য কাজ করা।
আবাসস্থল সংরক্ষণ: বন, জলাভূমি, এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করা।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হ্রাস করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া।

গবেষণা কার্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

ভূগোল এবং পরিবেশ বিজ্ঞান: পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য এবং পরিবেশগত পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করা।
নৃবিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি: বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং সমাজের উপর গবেষণা করা।
প্রাণীবিদ্যা এবং উদ্ভিদবিদ্যা: প্রাণী এবং উদ্ভিদের জীবন এবং আচরণ নিয়ে গবেষণা করা।

শিক্ষা কার্যক্রম

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করে। সংস্থাটি স্কুল এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক উপকরণ সরবরাহ করে। এছাড়াও, এটি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং কর্মশালার আয়োজন করে।

শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

জিওগ্রাফি বি: একটি অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ভূগোল এবং অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষামূলক উপকরণ পাওয়া যায়।
শিক্ষকদের জন্য রিসোর্স: শিক্ষকদের জন্য বিভিন্ন শিক্ষণ সহায়ক উপকরণ সরবরাহ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিযোগিতা: শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান এবং আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও সক্রিয়। সংস্থাটি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষণা এবং অনুসন্ধানের কাজকে আরও উন্নত করে। এছাড়াও, এটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) এবং অগমেন্টেড রিয়েলিটি (AR)-এর মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা তৈরি করে।

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

VR এবং AR অভিজ্ঞতা: ভার্চুয়াল এবং অগমেন্টেড রিয়েলিটির মাধ্যমে শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা তৈরি করা।
ড্রোন প্রযুক্তি: ড্রোন ব্যবহার করে দুর্গম অঞ্চলে গবেষণা এবং অনুসন্ধান চালানো।
স্যাটেলাইট ইমেজারি: স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবি ব্যবহার করে পৃথিবীর পরিবেশ এবং ভূগোল পর্যবেক্ষণ করা।

সমালোচনা

National Geographic কিছু ক্ষেত্রে সমালোচিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

জাতিগত উপস্থাপনা: পূর্বে, ম্যাগাজিনে জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রায়শই Stereotypical ভাবে উপস্থাপন করা হতো।
পরিবেশগত প্রভাব: কিছু সমালোচক মনে করেন, পর্যটনকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাণিজ্যিকীকরণ: বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কিছু বিষয়কে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে জ্ঞান এবং সচেতনতা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সংস্থাটি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষামূলক কার্যক্রমকে আরও উন্নত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এছাড়াও, এটি সংরক্ষণ এবং গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার জন্য আরও বেশি পদক্ষেপ নেবে।

আরও দেখুন

ডিসকভারি চ্যানেল
অ্যানিমেল প্ল্যানেট
জিওগ্রাফি: ভূগোল সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
পরিবেশ বিজ্ঞান: পরিবেশ বিজ্ঞান সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
সংরক্ষণ জীববিজ্ঞান: সংরক্ষণ জীববিজ্ঞান সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
ফটোগ্রাফি: ফটোগ্রাফি সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
ডকুমেন্টারি ফিল্ম: ডকুমেন্টারি ফিল্ম সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
বৈজ্ঞানিক গবেষণা: বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য: সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
জলবায়ু পরিবর্তন: জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ: প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান: ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা: ইউনেস্কো সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
ওয়াশিংটন, ডি. সি.: ওয়াশিংটন, ডি. সি. সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
বিজ্ঞান: বিজ্ঞান সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
শিক্ষা: শিক্ষা সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
সংরক্ষণ: সংরক্ষণ সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
প্রযুক্তি: প্রযুক্তি সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।
পর্যটন: পর্যটন সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক
বছর	ঘটনা
১৮৮৮	ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত
১৮৯০	প্রথম National Geographic Magazine প্রকাশিত
২০০১	National Geographic Channel যাত্রা শুরু
২০০৭	ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত
২০১৬	ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পার্টনার্স গঠিত

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ