MSN Search

এমএসএন সার্চ

এমএসএন সার্চ (MSN Search) ছিল মাইক্রোসফট কর্তৃক প্রদত্ত একটি ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন। এটি ১৯৯৮ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সক্রিয় ছিল। পরবর্তীতে এটি লাইভ সার্চ (Live Search) নামে পরিচিত হয় এবং সবশেষে বিং (Bing) নামে আত্মপ্রকাশ করে। এমএসএন সার্চ একসময় ইন্টারনেটে তথ্য খোঁজার অন্যতম প্রধান মাধ্যম ছিল। এই নিবন্ধে এমএসএন সার্চের ইতিহাস, বৈশিষ্ট্য, কার্যকারিতা এবং সময়ের সাথে সাথে এর বিবর্তন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ইতিহাস

এমএসএন সার্চের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৮ সালে, যখন মাইক্রোসফট তাদের এমএসএন (Microsoft Network) অনলাইন পরিষেবাটির অংশ হিসেবে এটি চালু করে। প্রথম দিকে, এমএসএন সার্চ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন যেমন – Altavista এবং Yahoo! এর থেকে প্রযুক্তিগত দিক থেকে পিছিয়ে ছিল। কিন্তু মাইক্রোসফট দ্রুত এর উন্নতি সাধনের জন্য কাজ শুরু করে এবং বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করে। ২০০০-এর দশকের শুরুতে, এমএসএন সার্চ ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করে এবং ব্যবহারকারীদের কাছে একটি নির্ভরযোগ্য বিকল্প হিসেবে পরিচিত হয়।

এমএসএন সার্চের বৈশিষ্ট্য

এমএসএন সার্চের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলো:

• সার্চ অ্যালগরিদম: এমএসএন সার্চ একটি উন্নত সার্চ অ্যালগরিদম ব্যবহার করত, যা ওয়েব পেজগুলোর বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করে প্রাসঙ্গিক ফলাফল প্রদর্শন করত। এই অ্যালগরিদম সময়ের সাথে সাথে আরও উন্নত করা হয়েছে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
• ইনডেক্সিং: এমএসএন সার্চের ইনডেক্সিং ক্ষমতা ছিল বিশাল। এটি কোটি কোটি ওয়েব পেজ ইনডেক্স করতে পারত, যার ফলে ব্যবহারকারীরা প্রায় যেকোনো বিষয়ে তথ্য খুঁজে পেত।
• বিশেষায়িত অনুসন্ধান: এমএসএন সার্চে ছবি, ভিডিও, নিউজ এবং ম্যাপের জন্য বিশেষায়িত অনুসন্ধান অপশন ছিল। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট ধরনের কনটেন্ট সহজে খুঁজে নিতে পারত।
• ভাষা সমর্থন: এমএসএন সার্চ বিভিন্ন ভাষা সমর্থন করত, যা এটিকে আন্তর্জাতিক ব্যবহারকারীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছিল। বহুভাষিক অনুসন্ধান একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল।
• ব্যবহারকারী বান্ধব ইন্টারফেস: এমএসএন সার্চের ইন্টারফেস ছিল সহজ এবং ব্যবহারকারী বান্ধব, যা নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য এটি ব্যবহার করা সহজ করত।

কার্যকারিতা

এমএসএন সার্চ যেভাবে কাজ করত তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিচে দেওয়া হলো:

১. ক্রলিং: এমএসএন সার্চের ওয়েব ক্রলার বা স্পাইডার (Spider) স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঘুরে বেড়াত এবং নতুন ওয়েব পেজ খুঁজে বের করত। ২. ইনডেক্সিং: ক্রলার দ্বারা খুঁজে পাওয়া ওয়েব পেজগুলোর তথ্য ইনডেক্সিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হতো। এই তথ্য একটি বিশাল ডাটাবেসে সংরক্ষণ করা হতো। ৩. অনুসন্ধান: যখন কোনো ব্যবহারকারী এমএসএন সার্চে কোনোquery প্রবেশ করাত, তখন সার্চ ইঞ্জিন সেই query-র সাথে সম্পর্কিত ওয়েব পেজগুলো ডাটাবেস থেকে খুঁজে বের করত। ৪. র‍্যাংকিং: খুঁজে পাওয়া ওয়েব পেজগুলোকে তাদের প্রাসঙ্গিকতা এবং গুণগত মানের ভিত্তিতে র‍্যাঙ্ক করা হতো। এরপর র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী ফলাফলগুলো ব্যবহারকারীর সামনে উপস্থাপন করা হতো। পেজ র‍্যাঙ্ক এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সময়ের সাথে সাথে বিবর্তন

এমএসএন সার্চ সময়ের সাথে সাথে বেশ কয়েকবার পরিবর্তিত হয়েছে। এর বিবর্তনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় নিচে উল্লেখ করা হলো:

• ২০০১: মাইক্রোসফট এমএসএন সার্চের অ্যালগরিদম এবং ইনডেক্সিং প্রযুক্তিতে বড় ধরনের উন্নতি আনে।
• ২০০২: এমএসএন সার্চ নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত করে, যেমন – উন্নত ইমেজ সার্চ এবং নিউজ সার্চ।
• ২০০৪: মাইক্রোসফট এমএসএন সার্চ এবং Yahoo! এর মধ্যে একটি চুক্তি করে, যেখানে Yahoo! তাদের সার্চ ফলাফল এমএসএন সার্চ থেকে গ্রহণ করত।
• ২০০৬: মাইক্রোসফট এমএসএন সার্চকে লাইভ সার্চ (Live Search) নামে rebranding করে। লাইভ সার্চে আরও নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয়, যেমন – অটো-কমপ্লিট এবং সার্চ suggestion।
• ২০০৯: লাইভ সার্চকে বিং (Bing) নামে নতুন করে আত্মপ্রকাশ করানো হয়। বিং বর্তমানে মাইক্রোসফটের প্রধান সার্চ ইঞ্জিন। বিং সার্চ ইঞ্জিন এমএসএন সার্চের আধুনিক সংস্করণ।

এমএসএন সার্চের প্রযুক্তিগত দিক

এমএসএন সার্চের প্রযুক্তিগত দিকগুলো বেশ জটিল ছিল। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত দিক নিয়ে আলোচনা করা হলো:

• ইনডেক্সিং: এমএসএন সার্চ একটি ডিস্ট্রিবিউটেড ইনডেক্সিং সিস্টেম ব্যবহার করত, যা বিশাল পরিমাণ ডেটা পরিচালনা করতে সক্ষম ছিল।
• অ্যালগরিদম: এমএসএন সার্চের অ্যালগরিদম বিভিন্ন ফ্যাক্টর বিবেচনা করত, যেমন – keywords, link structure, content quality এবং user behavior।
• ডাটা সেন্টার: এমএসএন সার্চের ডেটা সেন্টারগুলো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিল, যা দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য পরিষেবা প্রদান করত।
• সার্ভার: এমএসএন সার্চ অসংখ্য সার্ভার ব্যবহার করত, যা ব্যবহারকারীদের অনুসন্ধান query process করতে সাহায্য করত। ক্লাউড কম্পিউটিং এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এমএসএন সার্চের প্রভাব

এমএসএন সার্চ ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিল। এর কিছু উল্লেখযোগ্য প্রভাব নিচে উল্লেখ করা হলো:

• তথ্য প্রাপ্তি: এমএসএন সার্চ ব্যবহারকারীদের জন্য তথ্য প্রাপ্তি সহজ করে তুলেছিল।
• ই-কমার্স: এটি ই-কমার্স ব্যবসায়ের উন্নতিতে সাহায্য করেছিল, কারণ ব্যবহারকারীরা সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য খুঁজে পেতে পারত।
• বিজ্ঞাপন: এমএসএন সার্চ বিজ্ঞাপনের একটি নতুন মাধ্যম তৈরি করেছিল, যা व्यवसाয়ীদের তাদের পণ্য এবং পরিষেবা প্রচার করতে সাহায্য করত। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
• ওয়েব ডেভেলপমেন্ট: এটি ওয়েব ডেভেলপারদের সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) সম্পর্কে সচেতন করে তুলেছিল।

এমএসএন সার্চের প্রতিদ্বন্দ্বী

এমএসএন সার্চের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল গুগল (Google), ইয়াহু (Yahoo!) এবং আল্টাভিস্তা (AltaVista)। গুগল খুব দ্রুত এমএসএন সার্চকে ছাড়িয়ে যায় এবং বাজারের শীর্ষস্থান দখল করে নেয়। এর কারণ ছিল গুগলের উন্নত অ্যালগরিদম এবং ব্যবহারকারী বান্ধব ইন্টারফেস। গুগল সার্চ ইঞ্জিন বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন।

এমএসএন সার্চ থেকে বিং-এর পথে

এমএসএন সার্চ থেকে বিং-এর পথে মাইক্রোসফট বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। বিং-এ নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয়েছে, যেমন – উন্নত ইমেজ এবং ভিডিও সার্চ, সোশ্যাল মিডিয়া ইন্টিগ্রেশন এবং ব্যক্তিগতকৃত ফলাফল। মাইক্রোসফট বিং-কে একটি শক্তিশালী সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য लगातार কাজ করে যাচ্ছে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং এমএসএন সার্চের সম্পর্ক

যদিও এমএসএন সার্চ সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে সম্পর্কিত নয়, তবে এটি তথ্য সংগ্রহ এবং বাজার বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। বাইনারি অপশন ট্রেডাররা বিভিন্ন আর্থিক খবরের উৎস, অর্থনৈতিক সূচক এবং কোম্পানির তথ্য খুঁজে বের করার জন্য সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে। এমএসএন সার্চ সেই সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস ছিল। বাইনারি অপশন ট্রেডিং বর্তমানে একটি জনপ্রিয় বিনিয়োগ মাধ্যম।

কৌশল এবং টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর জন্য বিভিন্ন কৌশল এবং টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ রয়েছে। কিছু জনপ্রিয় কৌশল নিচে উল্লেখ করা হলো:

• ট্রেন্ড ট্রেডিং: বাজারের trend অনুসরণ করে ট্রেড করা। ট্রেন্ড বিশ্লেষণ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
• ব্রেকআউট ট্রেডিং: price level ব্রেক করার সময় ট্রেড করা।
• রিভার্সাল ট্রেডিং: trend পরিবর্তনের সময় ট্রেড করা।
• পিনি বার ট্রেডিং: পিনি বার ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন ব্যবহার করে ট্রেড করা। ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন সম্পর্কে জ্ঞান এক্ষেত্রে সহায়ক।
• মুভিং এভারেজ: মুভিং এভারেজ ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে ট্রেড করা। মুভিং এভারেজ একটি বহুল ব্যবহৃত টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর।

ভলিউম বিশ্লেষণ

ভলিউম বিশ্লেষণ বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভলিউম ডেটা ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি এবং সম্ভাব্য trend সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ভলিউম ইন্ডিকেটর যেমন – অন ব্যালেন্স ভলিউম (OBV) এবং ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস (VWAP) ব্যবহার করে ট্রেডাররা তাদের ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

উপসংহার

এমএসএন সার্চ একসময় ইন্টারনেটে তথ্য খোঁজার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিল। সময়ের সাথে সাথে এটি লাইভ সার্চ এবং অবশেষে বিং-এ রূপান্তরিত হয়েছে। এমএসএন সার্চের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং বৈশিষ্ট্যগুলো ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর একটি গভীর প্রভাব ফেলেছিল। যদিও এটি এখন আর সক্রিয় নেই, তবে এর অবদান ইন্টারনেটের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

বৈশিষ্ট্য	বিবরণ	উন্নত অ্যালগরিদম ব্যবহার করে প্রাসঙ্গিক ফলাফল প্রদর্শন করত|	কোটি কোটি ওয়েব পেজ ইনডেক্স করতে পারত|	ছবি, ভিডিও, নিউজ এবং ম্যাপের জন্য বিশেষ অনুসন্ধান অপশন ছিল|	বিভিন্ন ভাষা সমর্থন করত|	সহজ এবং ব্যবহারকারী বান্ধব ইন্টারফেস ছিল|

ওয়েব ক্রলার সার্চ ইঞ্জিন ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তথ্য পুনরুদ্ধার মাইক্রোসফট ইন্টারনেট ইতিহাস ওয়েব প্রযুক্তি ডিজিটাল মার্কেটিং অনলাইন বিজ্ঞাপন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) পেজ র‍্যাঙ্ক ক্লাউড কম্পিউটিং সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং গুগল সার্চ ইঞ্জিন বিং সার্চ ইঞ্জিন বহুভাষিক অনুসন্ধান ট্রেন্ড বিশ্লেষণ ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন মুভিং এভারেজ ভলিউম ইন্ডিকেটর

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ