Linguistic geography
ভাষা ভূগোল
ভাষা ভূগোল (Linguistic geography) ভাষাবিজ্ঞান ও ভূগোলের একটি আন্তঃবিষয়ক শাখা। এটি ভৌগোলিক স্থান অনুযায়ী ভাষার বৈশিষ্ট্যগুলির পরিবর্তন ও বিস্তার নিয়ে আলোচনা করে। অন্যভাবে বলা যায়, ভাষা ভূগোল হলো ভাষার ভৌগোলিক বিন্যাস এবং সেই বিন্যাসের কারণ অনুসন্ধান। এই ক্ষেত্রটি ভাষাতত্ত্ব এবং ভূগোল উভয় বিষয়ের পদ্ধতি ব্যবহার করে ভাষার স্থানিক ভিন্নতা, ভাষার বিস্তার, এবং ভাষা সংস্পর্শের প্রভাব ইত্যাদি বিষয়গুলি বিশ্লেষণ করে।
ভাষা ভূগোলের সংজ্ঞা ও পরিধি
ভাষা ভূগোল শুধুমাত্র ভাষার ভৌগোলিক বিতরণ নিয়েই কাজ করে না, বরং এটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সাথে ভাষার সম্পর্কও খতিয়ে দেখে। এর পরিধির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলি হলো:
- ভাষার অঞ্চল (Language region): কোনো নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে ব্যবহৃত ভাষার বৈশিষ্ট্যগুলির সমষ্টি।
- উপভাষা (Dialect): একটি ভাষার স্থানীয় রূপ যা উচ্চারণ, শব্দভাণ্ডার এবং ব্যাকরণের দিক থেকে মূল ভাষা থেকে ভিন্ন হতে পারে। উপভাষা ভাষা ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
- ভাষা সংস্পর্শ (Language contact): যখন দুটি বা ততোধিক ভাষা একে অপরের সংস্পর্শে আসে, তখন তাদের মধ্যে যে পরিবর্তন ঘটে।
- ভাষার বিস্তার (Language spread): কোনো ভাষা কীভাবে একটি অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
- স্থানিক উপভাষা (Spatial dialect): ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে ভাষার ভিন্নতা।
- সামাজিক উপভাষা (Social dialect): সামাজিক গোষ্ঠীর ভিত্তিতে ভাষার ভিন্নতা।
- ভাষা পরিকল্পনা (Language planning): কোনো ভাষার ব্যবহার এবং উন্নয়নকে প্রভাবিত করার জন্য সচেতনভাবে গৃহীত পদক্ষেপ।
ভাষা ভূগোলের ইতিহাস
ভাষা ভূগোলের যাত্রা শুরু হয় ১৯ শতকে, যখন ভাষাবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ভাষার মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক নির্ণয়ের চেষ্টা করেন। ইয়াকব গ্রিম-এর ভাষার উৎপত্তি (Origin of Language) বইটি এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। গ্রিম জার্মান ভাষার উপভাষাগুলির ভৌগোলিক বিন্যাস অধ্যয়ন করে ভাষার পরিবর্তন এবং বিকাশের ধারণা দেন।
বিংশ শতাব্দীতে, এই ক্ষেত্রটি আরও বিকশিত হয়। উইলিয়াম মারি এবং অগাস্ট ব্রুগম্যান-এর মতো ভাষাবিজ্ঞানীরা রোমান্স ভাষাগুলির (Romance languages) ভৌগোলিক বিস্তার নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁরা দেখান যে ভাষার পরিবর্তনগুলি একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক পথে কিভাবে বিস্তার লাভ করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভাষা ভূগোল আরও নতুন মাত্রা পায়। ইউজিন ক্যাসপার এবং তাঁর দল "ভাষা অ্যাটলাস"-এর (Language Atlas) ধারণা নিয়ে আসেন, যা কোনো অঞ্চলের ভাষার বৈচিত্র্যকে মানচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরে।
বর্তমান যুগে, ভাষা ভূগোল কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ভূ-পরিসংখ্যান (Geostatistics)-এর সাথে যুক্ত হয়ে নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছে। এর ফলে ভাষার ভৌগোলিক বিশ্লেষণ আরও নির্ভুল এবং দ্রুত করা সম্ভব হচ্ছে।
ভাষা ভূগোলের পদ্ধতিসমূহ
ভাষা ভূগোল বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে ভাষার ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যগুলি বিশ্লেষণ করে। এর মধ্যে কিছু প্রধান পদ্ধতি নিচে উল্লেখ করা হলো:
- ক্ষেত্র সমীক্ষা (Field survey): ভাষাবিজ্ঞানীরা সরাসরি বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে ভাষার নমুনা সংগ্রহ করেন।
- উপভাষা সমীক্ষা (Dialect survey): কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের উপভাষাগুলির বৈশিষ্ট্য এবং তাদের ভৌগোলিক বিন্যাস জানার জন্য সমীক্ষা চালানো হয়।
- মানচিত্রায়ণ (Mapping): সংগৃহীত তথ্য মানচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়, যা ভাষার ভৌগোলিক বিন্যাস বুঝতে সাহায্য করে।
- পরিসংখ্যানিক বিশ্লেষণ (Statistical analysis): ভাষার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের পরিমাণগত বিশ্লেষণ করে তাদের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করা হয়।
- কম্পিউটার মডেলিং (Computer modelling): কম্পিউটারের সাহায্যে ভাষার বিস্তার এবং পরিবর্তন মডেল তৈরি করা হয়।
- ভূ-তথ্য প্রযুক্তি (Geographic Information
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
