Correlation

Correlation ( correlation এর ধারণা )

Correlation বা সহসম্বন্ধ হল দুটি চলকের মধ্যেকার সম্পর্ক। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে, Correlation বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ট্রেডারদের বিভিন্ন অ্যাসেটের মুভমেন্ট অনুমান করতে এবং সেই অনুযায়ী ট্রেড করতে সাহায্য করে। এই নিবন্ধে, Correlation এর বিভিন্ন দিক, প্রকারভেদ, এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে এর ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

Correlation কি?

Correlation মানে হল দুটি জিনিসের মধ্যে সম্পর্ক কেমন। এই সম্পর্ক ইতিবাচক (Positive), নেতিবাচক (Negative) বা নিরপেক্ষ (Neutral) হতে পারে।

ইতিবাচক Correlation (Positive Correlation): যখন একটি চলক বাড়লে অন্যটিও বাড়ে, তখন তাকে ইতিবাচক Correlation বলে। উদাহরণস্বরূপ, সাধারণত সোনালী দাম বাড়লে মুদ্রাস্ফীতি-ও বাড়ে।
নেতিবাচক Correlation (Negative Correlation): যখন একটি চলক বাড়লে অন্যটি কমে, তখন তাকে নেতিবাচক Correlation বলে। যেমন, US Dollar এর দাম বাড়লে সোনা-র দাম সাধারণত কমে।
নিরপেক্ষ Correlation (Neutral Correlation): যখন দুটি চলকের মধ্যে কোনো সম্পর্ক দেখা যায় না, তখন তাকে নিরপেক্ষ Correlation বলে।

Correlation Coefficient

Correlation Coefficient একটি সংখ্যা যা দুটি চলকের মধ্যে সম্পর্কের তীব্রতা নির্দেশ করে। এর মান -১ থেকে +১ এর মধ্যে থাকে।

+১ মানে হল সম্পূর্ণ ইতিবাচক Correlation।
-১ মানে হল সম্পূর্ণ নেতিবাচক Correlation।
০ মানে হল কোনো Correlation নেই।

Correlation Coefficient নির্ণয় করার জন্য পিয়ারসন Correlation Coefficient বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়।

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে Correlation এর গুরুত্ব

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে Correlation বোঝা ট্রেডারদের জন্য অনেক সুবিধা নিয়ে আসে:

ঝুঁকি হ্রাস (Risk Management): Correlation ব্যবহার করে ট্রেডাররা তাদের পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য আনতে পারে এবং ঝুঁকি কমাতে পারে।
লাভের সম্ভাবনা বৃদ্ধি (Profit Potential): সঠিক Correlation চিহ্নিত করতে পারলে, ট্রেডাররা একাধিক অ্যাসেটের মুভমেন্টের সুবিধা নিয়ে লাভবান হতে পারে।
সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী (Accurate Prediction): Correlation এর মাধ্যমে একটি অ্যাসেটের মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়, যা ট্রেড করার সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।

বিভিন্ন অ্যাসেটের মধ্যে Correlation

বিভিন্ন অ্যাসেটের মধ্যে Correlation বিভিন্ন হতে পারে। নিচে কয়েকটি সাধারণ উদাহরণ দেওয়া হলো:

মুদ্রা এবং সোনা (Currencies and Gold): সাধারণত, USD দুর্বল হলে সোনার দাম বাড়ে, এবং USD শক্তিশালী হলে সোনার দাম কমে। এটি একটি নেতিবাচক Correlation।
স্টক মার্কেট এবং বন্ড মার্কেট (Stock Market and Bond Market): স্টক মার্কেট বাড়লে বন্ড মার্কেট সাধারণত কমে, এবং স্টক মার্কেট কমলে বন্ড মার্কেট বাড়ে। এটিও একটি নেতিবাচক Correlation।
সোনা এবং তেল (Gold and Oil): এই দুটি অ্যাসেটের মধ্যে সাধারণত ইতিবাচক Correlation দেখা যায়।
বিভিন্ন মুদ্রার মধ্যে Correlation (Correlation between Different Currencies): যেমন, EUR/USD এবং GBP/USD এর মধ্যে একটি শক্তিশালী Correlation থাকতে পারে।

Correlation ট্রেডিং কৌশল

Correlation ট্রেডিং কৌশল হল দুটি বা ততোধিক অ্যাসেটের মধ্যে সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে ট্রেড করা। নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় কৌশল আলোচনা করা হলো:

পেয়ার ট্রেডিং (Pair Trading): এই কৌশলে, দুটি correlated অ্যাসেটের মধ্যেকার দামের পার্থক্য (spread) পর্যবেক্ষণ করা হয়। যখন spread স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা কম হয়, তখন ট্রেডাররা এই সুযোগটি কাজে লাগায়। একটি অ্যাসেট কেনার সময় অন্যটি বিক্রি করা হয়, এবং দাম স্বাভাবিক হয়ে এলে উভয় ট্রেড বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর্বিট্রেজ এর একটি রূপ এটি।
ট্রায়াঙ্গেল ট্রেডিং (Triangle Trading): এই কৌশলে তিনটি correlated অ্যাসেট ব্যবহার করা হয়। তিনটি অ্যাসেটের দামের মুভমেন্ট পর্যবেক্ষণ করে ট্রেড করা হয়।
Correlation Based Option Strategies: Correlation ব্যবহার করে বিভিন্ন অপশন কৌশল তৈরি করা যায়, যেমন butterfly spread এবং calendar spread।

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস এবং Correlation

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস-এর বিভিন্ন টুলস এবং ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে Correlation বিশ্লেষণ করা যায়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ টুলস হলো:

মুভিং এভারেজ (Moving Averages): দুটি অ্যাসেটের মুভিং এভারেজ তুলনা করে Correlation বোঝা যায়।
রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইনডেক্স (RSI): RSI ব্যবহার করে দুটি অ্যাসেটের আপট্রেন্ড বা ডাউনট্রেন্ডের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করা যায়।
MACD (Moving Average Convergence Divergence): MACD ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে দুটি অ্যাসেটের মুভমেন্টের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে বের করা যায়।
বলিঙ্গার ব্যান্ড (Bollinger Bands): এই টুল ব্যবহার করে অ্যাসেটের ভোলাটিলিটি এবং দামের মুভমেন্টের মধ্যে সম্পর্ক বোঝা যায়।

ভলিউম অ্যানালাইসিস এবং Correlation

ভলিউম অ্যানালাইসিস Correlation ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভলিউম পরিবর্তনগুলি Correlation এর শক্তি এবং নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে।

ভলিউম স্পাইক (Volume Spikes): যখন দুটি অ্যাসেটের ভলিউম একই সাথে বাড়ে বা কমে, তখন এটি একটি শক্তিশালী Correlation নির্দেশ করে।
ডাইভারজেন্স (Divergence): যদি দামের মুভমেন্টের সাথে ভলিউমের কোনো সম্পর্ক না থাকে, তাহলে এটি Correlation দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
অন-ব্যালেন্স ভলিউম (OBV): OBV ব্যবহার করে কেনা ও বিক্রির চাপ পরিমাপ করা যায়, যা Correlation বিশ্লেষণে সাহায্য করে।

Correlation এর সীমাবদ্ধতা

Correlation সবসময় কারণ ও ফলাফল নির্দেশ করে না। কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে যা ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে:

স্পুরিয়াস Correlation (Spurious Correlation): দুটি চলকের মধ্যে আপাত সম্পর্ক দেখা গেলেও, তাদের মধ্যে কোনো কার্যকারণ সম্পর্ক নাও থাকতে পারে।
পরিবর্তনশীল Correlation (Changing Correlation): Correlation সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে।
বহুমুখী প্রভাব (Multiple Factors): অ্যাসেটের দামের উপর অনেক কারণের প্রভাব থাকে, শুধুমাত্র Correlation-এর উপর নির্ভর করে ট্রেড করা উচিত নয়।

Correlation নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ডেটা

Correlation নির্ণয় করার জন্য ঐতিহাসিক ডেটা প্রয়োজন। এই ডেটা বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে:

ফাইন্যান্সিয়াল ডেটা প্রোভাইডার (Financial Data Providers): যেমন Bloomberg, Reuters, এবং Yahoo Finance।
ব্রোকারের প্ল্যাটফর্ম (Broker Platforms): অনেক ব্রোকার তাদের প্ল্যাটফর্মে ঐতিহাসিক ডেটা সরবরাহ করে।
ওয়েবসাইট এবং API (Websites and APIs): বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং API ব্যবহার করে বিনামূল্যে বা পেইড ডেটা সংগ্রহ করা যায়।

Correlation এবং Risk Management

Correlation ব্যবহার করে পোর্টফোলিওতে ঝুঁকি কমানো যায়। বিভিন্ন অ্যাসেটের মধ্যে নেতিবাচক Correlation থাকলে, একটি অ্যাসেটের দাম কমলেও অন্যটির দাম বাড়তে পারে, যা সামগ্রিক পোর্টফোলিওকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।

ডাইভারসিফিকেশন (Diversification): Correlation কম এমন অ্যাসেট দিয়ে পোর্টফোলিও তৈরি করা উচিত।
হেজিং (Hedging): নেতিবাচক Correlation আছে এমন অ্যাসেট ব্যবহার করে পোর্টফোলিওকে হেজ করা যায়।
স্টপ-লস অর্ডার (Stop-Loss Orders): অপ্রত্যাশিত মুভমেন্ট থেকে বাঁচতে স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করা উচিত।

Correlation এবং মার্কেট সেন্টিমেন্ট

মার্কেট সেন্টিমেন্ট Correlation-কে প্রভাবিত করতে পারে। যখন বাজারে বুলিশ সেন্টিমেন্ট থাকে, তখন ইতিবাচক Correlation শক্তিশালী হতে পারে, এবং বিয়ারিশ সেন্টিমেন্টের সময় নেতিবাচক Correlation বাড়তে পারে।

নিউজ এবং ইভেন্ট (News and Events): অর্থনৈতিক নিউজ এবং গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টগুলি Correlation-কে প্রভাবিত করতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media): সোশ্যাল মিডিয়া সেন্টিমেন্টও অ্যাসেটের দামের উপর প্রভাব ফেলে।
ইনভেস্টরদের আচরণ (Investor Behavior): বিনিয়োগকারীদের আবেগ এবং আচরণ Correlation-কে প্রভাবিত করতে পারে।

উপসংহার

Correlation বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। এটি ট্রেডারদের ঝুঁকি কমাতে, লাভের সম্ভাবনা বাড়াতে এবং সঠিক ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। Correlation সঠিকভাবে বুঝলে এবং উপযুক্ত কৌশল অবলম্বন করলে, ট্রেডাররা সফলভাবে মার্কেট থেকে লাভ করতে পারে। তবে, Correlation এর সীমাবদ্ধতাগুলি মনে রাখা এবং অন্যান্য বিশ্লেষণের সাথে মিলিয়ে ট্রেড করা উচিত।

আরও জানতে

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ