Consumer behaviour

ভোক্তা আচরণ

ভূমিকা

ভোক্তা আচরণ একটি জটিল এবং বহুমাত্রিক ক্ষেত্র। এটি সেই প্রক্রিয়াগুলি নিয়ে আলোচনা করে যা একজন ভোক্তা কোনো পণ্য বা পরিষেবা কেনা বা ব্যবহার করার আগে, কেনার সময় এবং কেনার পরে অনুসরণ করে। এই আচরণ ব্যক্তিগত, মানসিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলির দ্বারা প্রভাবিত হয়। বিপণন এবং বিজ্ঞাপনয়ের ক্ষেত্রে ভোক্তা আচরণ বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ব্যবসায়ীদের তাদের লক্ষ্য দর্শকদের চাহিদা পূরণ করতে এবং কার্যকর বিপণন কৌশল তৈরি করতে সাহায্য করে। এই নিবন্ধে, আমরা ভোক্তা আচরণের মূল ধারণা, প্রভাব বিস্তারকারী বিষয় এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করব।

ভোক্তা আচরণের সংজ্ঞা

ভোক্তা আচরণ হলো সেই সমস্ত কার্যক্রম এবং সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়া যা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তাদের প্রয়োজন এবং আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য পণ্য বা পরিষেবা নির্বাচন, কেনা, ব্যবহার এবং নিষ্পত্তি করে। এই সংজ্ঞার মধ্যে শুধু কেনাকাটার সিদ্ধান্তই নয়, বরং কেনাকাটার আগের গবেষণা, কেনার পরের মূল্যায়ন এবং পণ্যের ব্যবহার সম্পর্কিত অভিজ্ঞতাও অন্তর্ভুক্ত।

ভোক্তা আচরণের প্রকারভেদ

ভোক্তা আচরণকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। নিচে কয়েকটি প্রধান প্রকার উল্লেখ করা হলো:

• কমপ্লেক্স কেনাকাটা আচরণ (Complex Buying Behavior): এই ধরনের আচরণ সাধারণত ব্যয়বহুল এবং বিরল কেনাকাটার ক্ষেত্রে দেখা যায়, যেখানে ভোক্তারা পণ্য বা পরিষেবা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে এবং বিভিন্ন বিকল্পের মধ্যে তুলনা করে। যেমন - একটি বাড়ি বা গাড়ি কেনা। ঝুঁকি উপলব্ধি এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
• বিভেদপূর্ণ কেনাকাটা আচরণ (Dissonance-Reducing Buying Behavior): এই ক্ষেত্রে, ভোক্তারা ব্যয়বহুল পণ্য কেনার সময় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য খুঁজে পান না। কেনার পরে, তারা তাদের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক প্রমাণ করার চেষ্টা করেন। ব্র্যান্ড আনুগত্য এক্ষেত্রে কম থাকে।
• অভ্যাসগত কেনাকাটা আচরণ (Habitual Buying Behavior): এই ধরনের আচরণ কম মূল্যের এবং প্রায়শই কেনা পণ্যের ক্ষেত্রে দেখা যায়, যেখানে ভোক্তারা খুব বেশি চিন্তা না করে অভ্যাসের বশে কেনাকাটা করেন। যেমন - দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য।
• অনুসন্ধানমূলক কেনাকাটা আচরণ (Variety-Seeking Buying Behavior): এই ক্ষেত্রে, ভোক্তারা প্রায়শই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য চেষ্টা করতে পছন্দ করেন এবং নতুনত্বের প্রতি আকৃষ্ট হন। পণ্যের বৈচিত্র্য এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

ভোক্তা আচরণে প্রভাব বিস্তারকারী কারণসমূহ

ভোক্তা আচরণ বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই কারণগুলোকে প্রধানত চারটি ভাগে ভাগ করা যায়:

• সাংস্কৃতিক কারণ (Cultural Factors): সংস্কৃতি, উপসংস্কৃতি এবং সামাজিক শ্রেণী ভোক্তাদের চাহিদা এবং পছন্দকে প্রভাবিত করে। সংস্কৃতির প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
• সামাজিক কারণ (Social Factors): পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি (opinion leaders) ভোক্তাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। সামাজিক মাধ্যম এক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী মাধ্যম।
• ব্যক্তিগত কারণ (Personal Factors): বয়স, লিঙ্গ, পেশা, আয়, জীবনধারা এবং ব্যক্তিত্ব ভোক্তাদের আচরণকে প্রভাবিত করে। জীবনধারা বিশ্লেষণ এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়।
• মনস্তাত্ত্বিক কারণ (Psychological Factors): অনুপ্রেরণা, ধারণা, শিক্ষণ এবং দৃষ্টিভঙ্গি ভোক্তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলে।

বাইনারি অপশনে ভোক্তা আচরণ

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে ভোক্তা আচরণ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বিনিয়োগকারীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের দাম বাড়বে নাকি কমবে, তা নিয়ে বাজি ধরেন। এই ক্ষেত্রে, বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক এবং আবেগিক কারণ দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে।

• ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতা (Risk Tolerance): কিছু বিনিয়োগকারী উচ্চ ঝুঁকি নিতে পছন্দ করেন, আবার কেউ কেউ কম ঝুঁকিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
• আবেগিক প্রভাব (Emotional Influence): ভয়, লোভ এবং প্রত্যাশা বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
• তথ্য বিশ্লেষণ (Information Analysis): প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ, মৌলিক বিশ্লেষণ এবং বাজারের পূর্বাভাস বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করে।
• সামাজিক প্রভাব (Social Influence): অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের মতামত এবং সামাজিক মাধ্যম বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করতে পারে। ট্রেডিং কমিউনিটি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
• প্রবণতা অনুসরণ (Trend Following): বিনিয়োগকারীরা প্রায়শই বাজারের প্রবণতা অনুসরণ করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। ট্রেন্ড লাইন এবং মুভিং এভারেজ এক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
• গ্যাবলিংয়ের প্রবণতা (Gambling Tendency): বাইনারি অপশন ট্রেডিং প্রায়শই জুয়ার মতো মনে হতে পারে, এবং কিছু বিনিয়োগকারী এই প্রবণতার শিকার হন। মানসিক শৃঙ্খলা এক্ষেত্রে প্রয়োজন।

বাইনারি অপশনে ব্যবহৃত কিছু কৌশল

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে সফল হওয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। নিচে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কৌশল উল্লেখ করা হলো:

• 60 সেকেন্ডের কৌশল (60-Second Strategy): এই কৌশলটি স্বল্পমেয়াদী ট্রেডিংয়ের জন্য উপযুক্ত। স্বল্পমেয়াদী ট্রেডিং
• בולিংগার ব্যান্ড কৌশল (Bollinger Bands Strategy): এই কৌশলটি বাজারের অস্থিরতা পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। অস্থিরতা বিশ্লেষণ
• আরএসআই কৌশল (RSI Strategy): এই কৌশলটি বাজারের অতিরিক্ত কেনা বা অতিরিক্ত বিক্রির অবস্থা সনাক্ত করতে সাহায্য করে। আরএসআই নির্দেশক
• MACD কৌশল (MACD Strategy): এই কৌশলটি বাজারের গতি এবং দিকনির্দেশনা নির্ণয় করতে ব্যবহৃত হয়। MACD নির্দেশক
• পিনি বার কৌশল (Pin Bar Strategy): এই কৌশলটি মূল্য চার্টের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে ট্রেডিংয়ের সুযোগ খুঁজে বের করে। চার্ট প্যাটার্ন
• ডাবল টপ/বটম কৌশল (Double Top/Bottom Strategy): এই কৌশলটি বাজারের সম্ভাব্য বিপরীতমুখী প্রবণতা সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। রিভার্সাল প্যাটার্ন
• ব্রেকেভেন্ট কৌশল (Break-Even Strategy): এই কৌশলটি ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ঝুঁকি হ্রাস
• মার্টিংগেল কৌশল (Martingale Strategy): এই কৌশলটি ক্ষতির পরিমাণ পুনরুদ্ধার করার জন্য ব্যবহৃত হয়, তবে এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল
• ফিবোনাচ্চি কৌশল (Fibonacci Strategy): এই কৌশলটি সম্ভাব্য সমর্থন এবং প্রতিরোধের স্তর সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট
• জাপানি ক্যান্ডেলস্টিক কৌশল (Japanese Candlestick Strategy): এই কৌশলটি মূল্য চার্টের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে ট্রেডিংয়ের সুযোগ খুঁজে বের করে। ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন
• টাইম-ইন-দ্য-মার্কেট কৌশল (Time-in-the-Market Strategy): দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত। দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ
• ডলার-কস্ট এভারেজিং কৌশল (Dollar-Cost Averaging Strategy): নিয়মিত বিরতিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা। বিনিয়োগ পরিকল্পনা
• স্কাল্পিং কৌশল (Scalping Strategy): খুব অল্প সময়ের মধ্যে ছোট লাভ করার চেষ্টা করা। স্কাল্পিং ট্রেডিং
• ডে ট্রেডিং কৌশল (Day Trading Strategy): দিনের মধ্যে ট্রেড শুরু এবং শেষ করা। ডে ট্রেডিং
• সুইং ট্রেডিং কৌশল (Swing Trading Strategy): কয়েক দিন বা সপ্তাহের জন্য ট্রেড ধরে রাখা। সুইং ট্রেডিং

ভোক্তা আচরণ এবং বিপণন কৌশল

ভোক্তা আচরণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে ব্যবসায়ীরা কার্যকর বিপণন কৌশল তৈরি করতে পারেন। নিচে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো:

• লক্ষ্য দর্শকদের চিহ্নিতকরণ (Target Audience Identification): ভোক্তা আচরণের উপর ভিত্তি করে সঠিক লক্ষ্য দর্শকদের চিহ্নিত করা যায়। বাজার বিভাজন
• পণ্যের অবস্থান নির্ধারণ (Product Positioning): ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধাগুলো তুলে ধরা যায়। ব্র্যান্ডিং
• মূল্য নির্ধারণ (Pricing): ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা এবং মূল্য সংবেদনশীলতা বিবেচনা করে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করা যায়। মূল্য নির্ধারণ কৌশল
• বিতরণ কৌশল (Distribution Strategy): ভোক্তাদের কাছে পণ্য সহজলভ্য করার জন্য সঠিক বিতরণ চ্যানেল নির্বাচন করা যায়। সরবরাহ শৃঙ্খল
• যোগাযোগ কৌশল (Communication Strategy): ভোক্তাদের সাথে কার্যকরভাবে যোগাযোগের জন্য সঠিক মাধ্যম এবং বার্তা নির্বাচন করা যায়। যোগাযোগ পরিকল্পনা

উপসংহার

ভোক্তা আচরণ একটি জটিল বিষয়, যা বিভিন্ন কারণের দ্বারা প্রভাবিত হয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রেও ভোক্তা আচরণ বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়ীরা এবং বিনিয়োগকারীরা যদি ভোক্তা আচরণ সম্পর্কে সচেতন হন, তাহলে তারা আরও সফল হতে পারবেন।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন জমা $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন জমা $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগদান করুন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন @strategybin এই সুবিধাগুলি পেতে: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশল বিশ্লেষণ ✓ বাজারের ট্রেন্ড সতর্কবার্তা ✓ নবাগতদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ