রাজ্যসভা

রাজ্যসভার পরিচিতি
রাজ্যসভা হল ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ। এটি ভারতের আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রাজ্যসভা, লোকসভার মত সরাসরি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়, বরং রাজ্য বিধানসভার সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হয়।

রাজ্যসভার গঠন

রাজ্যসভা একটি স্থায়ী সংস্থা। ভারতের সংবিধানের ধারা ৭৯ রাজ্যসভার গঠন সম্পর্কিত বিধানগুলি উল্লেখ করে। রাজ্যসভার সদস্য সংখ্যা রাজ্যগুলির জনসংখ্যার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। সংবিধান অনুসারে, রাজ্যসভার সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ২৫০ হতে পারে। এর মধ্যে ১২ জন সদস্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত হন, যারা শিল্পকলা, বিজ্ঞান, সাহিত্য, সমাজসেবা বা পাবলিক লাইফের অন্যান্য ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তি হন। বাকি ২৩৮ জন সদস্য রাজ্য বিধানসভার নির্বাচিত সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন।

রাজ্যসভার সদস্য সংখ্যা (সর্বোচ্চ)
সদস্যের প্রকার	সংখ্যা	রাজ্য বিধানসভা দ্বারা নির্বাচিত	২৩৮	রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত	১২	মোট	২৫০

রাজ্যসভার নির্বাচন প্রক্রিয়া

রাজ্যসভার নির্বাচন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি রাজ্য থেকে নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা সেই রাজ্যের জনসংখ্যার উপর নির্ভরশীল। রাজ্য বিধানসভার সদস্যরা বহু-ভোট পদ্ধতির মাধ্যমে রাজ্যসভার সদস্যদের নির্বাচন করেন। এই পদ্ধতিতে, প্রতিটি বিধায়ককে একাধিক প্রার্থীকে র‍্যাঙ্ক করার সুযোগ দেওয়া হয়।

রাজ্যসভার যোগ্যতা ও মেয়াদ

রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার জন্য একজন ব্যক্তির বয়স কমপক্ষে ৩০ বছর হতে হবে এবং তাকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। রাজ্যসভার সদস্যের মেয়াদ ৬ বছর। প্রতি দুই বছর পর পর রাজ্যসভার এক-তৃতীয়াংশ সদস্য অবসর গ্রহণ করেন।

রাজ্যসভার কার্যাবলী

রাজ্যসভা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী সম্পাদন করে। এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি হল:

আইন প্রণয়ন: রাজ্যসভা লোকসভার পাস করা বিলগুলি পর্যালোচনা করে এবং সংশোধন করতে পারে। কোনো বিল আইনে পরিণত হতে হলে উভয় কক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।
আর্থিক বিল: যদিও আর্থিক বিলগুলি লোকসভায় প্রথম উপস্থাপন করা হয়, রাজ্যসভা সেগুলির উপর আলোচনা করতে এবং সংশোধন প্রস্তাব দিতে পারে।
কেন্দ্রীয় সরকারের উপর নিয়ন্ত্রণ: রাজ্যসভা কেন্দ্রীয় সরকারের কাজকর্মের উপর নজর রাখে এবং সরকারের নীতিগুলির বিষয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারে।
সংবিধান সংশোধন: রাজ্যসভার সদস্যদের উপস্থিতির দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতিতে সংবিধান সংশোধন করা যায়।
রাষ্ট্রপতির অপসারণ: রাজ্যসভা রাষ্ট্রপতির অপসারণের জন্য প্রস্তাব আনতে পারে।
জাতীয় জরুরি অবস্থা: জাতীয় জরুরি অবস্থার উপর রাজ্যসভার অনুমোদন প্রয়োজন।

রাজ্যসভার অধ্যক্ষ

রাজ্যসভার অধ্যক্ষ হলেন এই কক্ষের প্রধান। তিনি রাজ্যসভার কাজকর্ম পরিচালনা করেন এবং সংসদের নিয়মকানুন মেনে চলতে সহায়তা করেন। অধ্যক্ষ সাধারণত রাজ্যসভার নির্বাচিত সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন। বর্তমানে জগদীপ ধনখড় রাজ্যসভার অধ্যক্ষ।

রাজ্যসভার ভূমিকা

রাজ্যসভা ভারতীয় গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এটি বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকারের মধ্যে একটি যোগসূত্র হিসাবে কাজ করে। রাজ্যসভা কেন্দ্র সরকারের নীতি নির্ধারণে এবং আইন প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করে এবং ফেডারেল কাঠামো বজায় রাখতে সহায়তা করে।

রাজ্যসভার ক্ষমতা

রাজ্যসভার কিছু বিশেষ ক্ষমতা আছে যা এটিকে লোকসভা থেকে আলাদা করে। যেমন:

লোকসভার পাস করা বিল রাজ্যসভা প্রত্যাখ্যান করতে পারে।
রাজ্যসভা কেন্দ্রীয় সরকারের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে।
রাজ্যসভা সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
রাজ্যসভা রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের প্রস্তাব আনতে পারে।

রাজ্যসভা এবং লোকসভা: একটি তুলনামূলক আলোচনা

রাজ্যসভা ও লোকসভার মধ্যেকার পার্থক্য
বৈশিষ্ট্য	রাজ্যসভা	বৈশিষ্ট্য	লোকসভা
সদস্য সংখ্যা	সর্বোচ্চ ২৫০	সদস্য সংখ্যা	৫৪৩
নির্বাচন পদ্ধতি	রাজ্য বিধানসভার সদস্য দ্বারা নির্বাচিত ও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত	নির্বাচন পদ্ধতি	সরাসরি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত
সদস্যের মেয়াদ	৬ বছর	সদস্যের মেয়াদ	৫ বছর
প্রতিনিধিত্ব	রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব	প্রতিনিধিত্ব	জনগণের প্রতিনিধিত্ব
অধ্যক্ষ	জগদীপ ধনখড়	অধ্যক্ষ	ওম বিড়লা

রাজ্যসভার কার্যপ্রণালী

রাজ্যসভার কার্যপ্রণালী সংসদীয় নিয়মাবলী দ্বারা পরিচালিত হয়। রাজ্যসভার অধিবেশন সাধারণত বছরে তিনটিSession) সময়ে অনুষ্ঠিত হয়: বাজেট অধিবেশন, বর্ষাকালীন অধিবেশন এবং শীতকালীন অধিবেশন। অধিবেশনের সময়, রাজ্যসভার সদস্যরা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন এবং বিল উত্থাপন করেন।

রাজ্যসভার কমিটি

রাজ্যসভায় বিভিন্ন স্থায়ী এবং অস্থায়ী কমিটি রয়েছে। এই কমিটিগুলি বিভিন্ন বিল পর্যালোচনা করে, সরকারের কাজকর্মের উপর নজর রাখে এবং সংসদকে রিপোর্ট জমা দেয়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ কমিটি হল:

প্রাক-বিল কমিটি
সংসদীয় কমিটি
প্রশাসনিক সংস্কার কমিটি
যোগাযোগ কমিটি

রাজ্যসভার আধুনিক প্রবণতা

বর্তমানে, রাজ্যসভায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। রাজ্যসভার অধিবেশনগুলি লাইভ স্ট্রিমিং করা হয় এবং সদস্যরা এখন অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে মতামত দিতে পারেন। এছাড়াও, রাজ্যসভা তার কাজকর্মকে আরও স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।

রাজ্যসভা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এর সাথে রাজ্যসভার সম্পর্ক

যদিও সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই, তবে রাজ্যসভার নীতি এবং সিদ্ধান্তগুলি আর্থিক বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, রাজ্যসভায় পাস হওয়া কোনো নতুন আইন শেয়ার বাজার এবং বিনিময় হার এর উপর প্রভাব ফেলতে পারে, যা বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। বিনিয়োগকারীদের জন্য রাজ্যসভার কাজকর্ম এবং নীতিগুলির উপর নজর রাখা উচিত।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং

বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ। এখানে সাফল্যের জন্য সঠিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল অবলম্বন করা জরুরি। রাজ্যসভার নীতি পরিবর্তনের কারণে বাজারের অস্থিরতা বাড়তে পারে, তাই ট্রেডারদের সতর্ক থাকতে হবে।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং রাজ্যসভা

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়। রাজ্যসভার অধিবেশন চলাকালীন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিল পাসের সময় বাজারের আচরণ বিশ্লেষণ করে ট্রেডাররা সুযোগ খুঁজে নিতে পারেন।

ভলিউম বিশ্লেষণ এবং রাজ্যসভা

ভলিউম বিশ্লেষণ বাজারের লেনদেনের পরিমাণ নির্দেশ করে। রাজ্যসভার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ফলে বাজারের ভলিউমে পরিবর্তন আসতে পারে, যা ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংকেত দিতে পারে।

উপসংহার

রাজ্যসভা ভারতের সংসদীয় ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি আইন প্রণয়ন, সরকারের উপর নিয়ন্ত্রণ এবং সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজ্যসভার কাজকর্ম এবং নীতিগুলি দেশের অর্থনীতি এবং আর্থিক বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই, বিনিয়োগকারীদের জন্য রাজ্যসভার বিষয়ে অবগত থাকা জরুরি।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ