রাজশাহী
রাজশাহী বিভাগ : ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি
রাজশাহী বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ [[বিভাগ]। এটি দেশের অষ্টম বৃহত্তম বিভাগ। রাজশাহী শহরটি ‘শিরিশের শহর’ নামেও পরিচিত। এই অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি, অর্থনীতি এবং ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য এটিকে অন্যান্য অঞ্চল থেকে স্বতন্ত্র করেছে।
ইতিহাস
রাজশাহীর ইতিহাস প্রাচীনকাল থেকে শুরু হয়েছে। মৌর্য, গুপ্ত, পাল এবং সেন রাজবংশের শাসনামলে এই অঞ্চল বিভিন্ন সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। মধ্যযুগে এটি বাংলার সুফি সাধকদের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
- প্রাচীন ইতিহাস: রাজশাহী অঞ্চলের প্রাচীনতম ইতিহাস সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায় মহাস্থানগড় থেকে। এটি বৌদ্ধধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল।
- মধ্যযুগ: ১২০৪ সালে লক্ষ্মীসেন-এর পতনের পর রাজশাহী মুসলিম শাসনের অধীনে আসে। বখতিয়ার খিলজি এই অঞ্চলে প্রথম মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
- ব্রিটিশ শাসন: ১৭৬৫ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। রাজশাহী ব্রিটিশ শাসনের অধীনে একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। পলাশীর যুদ্ধ-এর পূর্বে এই অঞ্চলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
- স্বাধীনতা যুদ্ধ: ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজশাহী ছিল সেক্টর-১ এর অন্তর্ভুক্ত। এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং স্থানীয় জনগণ বীরত্বের সাথে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-এর ছাত্র ও শিক্ষকরা এই যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য
রাজশাহী বিভাগ পদ্মা ও মেঘনা নদীর অববাহিকায় অবস্থিত। এই অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি মূলত সমতল।
- আয়তন: রাজশাহী বিভাগের আয়তন প্রায় ১৯,২৪৬ বর্গকিলোমিটার।
- জলবায়ু: এখানে উষ্ণ গ্রীষ্মকাল এবং শীতল শীতকাল দেখা যায়।
- নদ-নদী: পদ্মা, মেঘনা, ইছামতি, রূপা ইত্যাদি প্রধান নদী এই অঞ্চলের ভূমিকে উর্বর করেছে। গঙ্গা নদীর প্রভাব এখানকার কৃষিকাজে গুরুত্বপূর্ণ।
- মৃত্তিকা: রাজশাহীর মাটি মূলত পলিমাটি, যা কৃষিকাজের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
| জেলা | আয়তন (বর্গ কিমি) | জনসংখ্যা (২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী) |
|---|---|---|
| রাজশাহী | ২,৪১৪ | ৪৭,৪২,০৫২ |
| নাটোর | ৩,৪৩৫ | ২৯,৬৩,০০০ |
| নওগাঁ | ৩,৭৮৯ | ৩৫,৬২,৬৯৫ |
| বগুড়া | ৬,৫০০ | ৫৬,৯৭,৭৮২ |
| জয়পুরহাট | ৮৮৮ | ৯,৯৯,৫৬২ |
| চাঁপাইনবাবগঞ্জ | ২,৭৩৪ | ১৬,৭২,৮৯৪ |
অর্থনীতি
রাজশাহী বিভাগের অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। তবে এখানে শিল্প ও সেবা খাতের অবদানও বাড়ছে।
- কৃষি: ধান, গম, পাট, তুলা, সয়াবিন, সূর্যমুখী এবং আনারস এই অঞ্চলের প্রধান কৃষি ফসল। রাজশাহী আনারসের জন্য বিখ্যাত। আম এবং লitchি-র ফলনও এখানে প্রচুর হয়।
- শিল্প: রাজশাহীতে তন্তুজাত, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া এবং পাদুকা শিল্প বিদ্যমান। বিসিক শিল্পনগরী এই শিল্পের বিকাশে সহায়তা করছে।
- সেবা খাত: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন এবং পর্যটন sector এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি এখানকার অর্থনীতিকে সচল রেখেছে।
- মৎস্য চাষ: পদ্মা নদীতে মৎস্য চাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যক্রম।
সংস্কৃতি
রাজশাহী বিভাগের সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময়।
- ভাষা: এই অঞ্চলের মানুষের প্রধান ভাষা বাংলা। তবে এখানে বিভিন্ন উপভাষা প্রচলিত আছে।
- লোকসংগীত: ভাওয়াইয়া এই অঞ্চলের জনপ্রিয় লোকসংগীত। এটি সাধারণত কৃষক ও নৌকা মাঝিদের মধ্যে প্রচলিত।
- লোকনৃত্য: ঝুমুর এবং গম্ভীরা এখানকার জনপ্রিয় লোকনৃত্য।
- ধর্মীয় উৎসব: দুর্গাপূজা, ঈদ, বড়দিন এবং বৌদ্ধ পূর্ণিমা সহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব এখানে উদযাপিত হয়।
- ঐতিহ্যবাহী খাবার: রাজশাহী বিখ্যাত মিষ্টির জন্য। রসমালাই, চামচাম, খরবোজা এখানকার জনপ্রিয় মিষ্টি।
শিক্ষা
রাজশাহী বিভাগে শিক্ষার হার জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: এখানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং স্কুল রয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।
- কারিগরি শিক্ষা: রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং অন্যান্য কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সহায়তা করছে।
- মাদ্রাসা শিক্ষা: এখানে অনেক ইসলামিয়া মাদ্রাসা রয়েছে, যা ইসলামিক শিক্ষা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পর্যটন
রাজশাহী বিভাগে অনেক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে।
- মহাস্থানগড়: এটি বগুড়া জেলার একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান। এখানে বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মের অনেক মন্দির ও স্থাপনা রয়েছে।
- পকুড়িয়া: এটি নওগাঁ জেলার নন্দনপুর গ্রামে অবস্থিত। এখানে কৃষ্ণচূড়া গাছের সারি দেখতে পাওয়া যায়।
- কুসুম্বা: নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় অবস্থিত এই গ্রামটি ঐতিহ্যবাহী ঘরবাড়ি এবং গ্রাম্য জীবনের জন্য পরিচিত।
- দুর্গাপুরের পাহাড় : এটি রাজশাহী জেলার দুর্গাপুরে অবস্থিত।
- পদ্মার নদীর পাড়: রাজশাহী শহরের কাছে পদ্মা নদীর পাড় একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এখানে সূর্যাস্ত দেখা এবং নৌকায় ভ্রমণ করা যায়।
স্থানীয় সরকার
রাজশাহী বিভাগে আটটি জেলা রয়েছে। প্রতিটি জেলার প্রশাসনিক প্রধান হলেন জেলা প্রশাসক। স্থানীয় সরকার কাঠামোতে উপজেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদ অন্তর্ভুক্ত।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
রাজশাহী বিভাগের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত।
- সড়কপথ: এখানে সড়কপথে বাস, ট্রাক এবং প্রাইভেট কার চলাচল করে।
- রেলপথ: রাজশাহী শহরটি পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলওয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন।
- নৌপথ: পদ্মা নদীপথে নৌকা এবং স্টিমার চলাচল করে।
- বিমানপথ: রাজশাহীতে একটি বিমানবন্দর রয়েছে, যা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে।
বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব
রাজশাহী বিভাগ অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি জন্ম দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন হলেন:
- নজরুল ইসলাম : কবি ও মুক্তিযোদ্ধা।
- এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামান : ভাষা আন্দোলন-এর কর্মী ও রাজনীতিবিদ।
- মলয় কুমার গাঙ্গুলী : শিক্ষাবিদ ও গবেষক।
- ফারুক খান : চিত্রশিল্পী ও শিক্ষক।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
রাজশাহী বিভাগকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে:
- শিল্পায়নের প্রসার
- কৃষির আধুনিকীকরণ
- পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন
- যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি
- শিক্ষার মান বৃদ্ধি
এই পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত হলে রাজশাহী বিভাগ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।
রাজশাহী বিভাগ-এর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এটিকে একটি বিশেষ স্থান করে তুলেছে। এই অঞ্চলের উন্নয়নে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
বিভাগ সুফি সাধক মহাস্থানগড় বৌদ্ধধর্ম বখতিয়ার খিলজি পলাশীর যুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ সেক্টর-১ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পদ্মা মেঘনা ইছামতি রূপা গঙ্গা কৃষি তন্তুজাত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ চামড়া পাদুকা বিসিক বাংলা ভাওয়াইয়া ঝুমুর গম্ভীরা দুর্গাপূজা ঈদ বড়দিন বৌদ্ধ পূর্ণিমা মিষ্টির রসমালাই চামচাম খরবোজা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ স্কুল রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ইসলামিয়া মাদ্রাসা পর্যটন কেন্দ্র ঐতিহাসিক স্থান মন্দির স্থাপনা কৃষ্ণচূড়া ঐতিহ্যবাহী পাহাড় নদীর পাড় জেলা প্রশাসক উপজেলা পরিষদ ইউনিয়ন পরিষদ সড়ক বাস ট্রাক প্রাইভেট কার পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলওয়ে নৌকা স্টিমার বিমানবন্দর কবি মুক্তিযোদ্ধা ভাষা আন্দোলন কর্মী রাজনীতিবিদ শিক্ষাবিদ গবেষক চিত্রশিল্পী শিক্ষক
Although this article is about the region of Rajshahi, here are 15 links related to trading, technical analysis and volume analysis as requested. These are included for completeness and to fulfill the prompt's requirements, but are not directly related to the main topic of the article.
1. Technical Analysis - A general overview of technical analysis. 2. Candlestick Patterns - Understanding candlestick patterns in trading. 3. Moving Averages - Using moving averages for trend identification. 4. Relative Strength Index (RSI) - An oscillator used to identify overbought or oversold conditions. 5. MACD - A trend-following momentum indicator. 6. Bollinger Bands - A volatility indicator. 7. Fibonacci Retracement - Using Fibonacci levels to predict support and resistance. 8. Support and Resistance Levels - Identifying key support and resistance levels. 9. Chart Patterns - Recognizing chart patterns for trading opportunities. 10. Volume Analysis - Understanding the importance of volume in trading. 11. On-Balance Volume (OBV) - A momentum indicator that uses volume flow. 12. Accumulation/Distribution Line - Another volume-based indicator. 13. Trading Strategies - Different strategies used in trading. 14. Risk Management - Importance of risk management in trading. 15. Binary Options Trading - A brief overview of binary options trading.
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
