মারকারি

মারকারি গ্রহ

মারকারি সৌরজগতের ক্ষুদ্রতম এবং সূর্যের নিকটতম গ্রহ। এটি একটি পাথুরে গ্রহ এবং এর পৃষ্ঠ craters (খোদাই) দ্বারা পরিপূর্ণ। মারকারি একই সাথে দ্রুততম গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে এবং নিজের অক্ষের উপরও দ্রুত ঘোরে। এই নিবন্ধে মারকারি গ্রহের গঠন, বৈশিষ্ট্য, কক্ষপথ, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

গঠন ও ভৌত বৈশিষ্ট্য

মারকারীর ব্যাসার্ধ প্রায় ২,৪৪২ কিলোমিটার, যা পৃথিবীর ব্যাসার্ধের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। এর ভর পৃথিবীর ভরের প্রায় ৫.৫%। মারকারীর ঘনত্ব ৫.৪৩ গ্রাম/ঘন সেন্টিমিটার, যা পৃথিবীর চেয়ে বেশি। এই উচ্চ ঘনত্ব ইঙ্গিত করে যে গ্রহটির অভ্যন্তর প্রধানত লোহা দ্বারা গঠিত।

মারকারীর অভ্যন্তরীণ গঠন নিম্নরূপ:

কোর (Core): মারকারীর কেন্দ্রে রয়েছে একটি বিশাল লোহা-সমৃদ্ধ কোর, যা গ্রহের ব্যাসার্ধের প্রায় ৮০% জুড়ে বিস্তৃত। এই কোরটি সম্ভবত আংশিকভাবে তরল অবস্থায় রয়েছে।
ম্যান্টেল (Mantle): কোরের চারপাশে রয়েছে একটি পাথুরে ম্যান্টেল, যা মূলত সিলিকেট দিয়ে গঠিত।
ক্রাস্ট (Crust): সবচেয়ে বাইরের স্তরটি হলো ক্রাস্ট, যা প্রায় ৩-২০ কিলোমিটার পুরু।

মারকারীর পৃষ্ঠ অত্যন্ত এবড়োখেবড়ো এবং অসংখ্য উল্কাপাতের কারণে সৃষ্ট craters (খোদাই) দ্বারা চিহ্নিত। গ্রহের পৃষ্ঠে বিশাল আকারের escarpments (খাড়া ঢাল) রয়েছে, যা সম্ভবত গ্রহের গঠনকালে তৈরি হয়েছিল। মারকারীর পৃষ্ঠের রঙ ধূসর এবং এর মধ্যে সামান্য কমলা এবং বাদামী আভা দেখা যায়।

বায়ুমণ্ডল

মারকারীর বায়ুমণ্ডল অত্যন্ত পাতলা এবং এটিকে exosphere বলা হয়। এই বায়ুমণ্ডলের প্রধান উপাদানগুলো হলো অক্সিজেন, সোডিয়াম, হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, এবং পটাশিয়াম। মারকারীর বায়ুমণ্ডল এতটাই পাতলা যে এটি পৃথিবীর মতো সুরক্ষা প্রদান করতে পারে না। তাই এখানে তাপমাত্রা ব্যাপক fluctuations (পরিবর্তন) দেখা যায়।

তাপমাত্রা

মারকারীর তাপমাত্রা ব্যাপক পরিসরে পরিবর্তিত হয়। দিনের বেলায় তাপমাত্রা প্রায় ৪৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা সৌরজগতের অন্য যেকোনো গ্রহের চেয়ে বেশি। রাতে তাপমাত্রা -১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। এই চরম তাপমাত্রার পার্থক্য মারকারীর প্রায় কোনো বায়ুমণ্ডল না থাকার কারণে ঘটে।

কক্ষপথ ও ঘূর্ণন

মারকারি সূর্যের চারপাশে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ঘোরে। এর কক্ষপথের সময়কাল প্রায় ৮৮ দিন। মারকারি তার অক্ষের উপরও দ্রুত ঘোরে, যা প্রায় ৫৯ পৃথিবীর দিনে একবার সম্পন্ন হয়। মারকারীর ঘূর্ণন এবং কক্ষপথের মধ্যে একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে: এটি ২:৩ স্পিন-অরবিট রেজোন্যান্সে ঘোরে, অর্থাৎ মারকারি দুইবার ঘুরলে সূর্যকে তিনবার প্রদক্ষিণ করে।

মারকারীর কক্ষপথ এবং ঘূর্ণন সংক্রান্ত তথ্য
বৈশিষ্ট্য	মান	কক্ষপথের সময়কাল	৮৮ দিন	অক্ষীয় ঘূর্ণনের সময়কাল	৫৯ দিন	কক্ষপথের গড় গতি	৪৭.৮৭ কিমি/সেকেন্ড	সূর্যের থেকে গড় দূরত্ব	৫৭.৯১ মিলিয়ন কিমি

চৌম্বক ক্ষেত্র

মারকারীর একটি দুর্বল চৌম্বক ক্ষেত্র রয়েছে, যা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রায় ১%। এই চৌম্বক ক্ষেত্রটি গ্রহের অভ্যন্তরীণ তরল কোরের কারণে সৃষ্ট বলে মনে করা হয়। মারকারীর চৌম্বক ক্ষেত্র সৌর বায়ু থেকে গ্রহকে রক্ষা করে।

পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা

মারকারি গ্রহটি প্রথমদিকে সীমিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। ২০Eleven সালে NASA-এর MESSENGER (MErcury Surface, Space ENvironment, GEochemistry, and Ranging) মহাকাশযানটি মারকারীর কক্ষপথে প্রবেশ করে এবং প্রায় চার বছর ধরে গ্রহটি সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর ২০১৮ সালে ESA (European Space Agency) এবং JAXA (Japan Aerospace Exploration Agency) যৌথভাবে BepiColombo নামক একটি মিশন শুরু করে, যা মারকারি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য পাঠানো হয়েছে।

মারকারীর পৃষ্ঠের বৈশিষ্ট্য

মারকারীর পৃষ্ঠ বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য দ্বারা গঠিত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

Caloris Basin: এটি মারকারীর বৃহত্তম impact crater (উল্কাপাত গর্ত), যার ব্যাস প্রায় ১৫৫০ কিলোমিটার।
Scarps: মারকারীর পৃষ্ঠে লম্বা, খাড়া ঢাল রয়েছে, যা scarps নামে পরিচিত। এগুলি সম্ভবত গ্রহের গঠনকালে তৈরি হয়েছিল, যখন গ্রহটি ঠান্ডা হয়ে সংকুচিত হয়েছিল।
Plains: মারকারীর পৃষ্ঠে কিছু মসৃণ সমভূমি রয়েছে, যা লাভা প্রবাহের ফলে গঠিত হয়েছে বলে মনে করা হয়।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এর সাথে মারকারীর সম্পর্ক (রূপক)

মারকারি গ্রহের দ্রুত গতি এবং পরিবর্তনশীল তাপমাত্রার সাথে বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের কিছু মিল রয়েছে। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং বাজারের গতিবিধি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।

দ্রুত গতি: মারকারি যেমন দ্রুত সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়েও খুব অল্প সময়ের মধ্যে ট্রেড সম্পন্ন করতে হয়।
পরিবর্তনশীলতা: মারকারীর তাপমাত্রার মতো, বাজারের পরিস্থিতিও দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। তাই ট্রেডারদের দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে সক্ষম হতে হয়।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: মারকারীর চরম তাপমাত্রা সহ্য করার জন্য যেমন সুরক্ষা প্রয়োজন, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়েও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিহার্য।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং চার্ট প্যাটার্ন ব্যবহার করে বাইনারি অপশনে ট্রেড করা মারকারীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার মতো। এছাড়াও, ভলিউম বিশ্লেষণ বাজারের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে, যা মারকারীর কক্ষপথের মতো জটিল।

ভবিষ্যৎ গবেষণা

মারকারি গ্রহ নিয়ে ভবিষ্যৎ গবেষণা ভবিষ্যতে আরও অনেক নতুন তথ্য উন্মোচন করতে পারে। BepiColombo মিশনের মাধ্যমে মারকারীর গঠন, চৌম্বক ক্ষেত্র, এবং পৃষ্ঠ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। এই গবেষণা সৌরজগতের গঠন এবং গ্রহগুলোর বিবর্তন সম্পর্কে আমাদের ধারণা আরও স্পষ্ট করবে।

আরও দেখুন

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ