ব্র্যাকেট অর্ডার

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

ব্র্যাকেট অর্ডার: বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর একটি কার্যকরী কৌশল

ভূমিকা

বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি জটিল এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল জগৎ। এখানে সফল হতে হলে, ট্রেডারদের বিভিন্ন ধরনের ট্রেডিং কৌশল এবং অর্ডার সম্পর্কে জানতে হয়। ব্র্যাকেট অর্ডার তেমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল, যা ট্রেডারদের ঝুঁকি কমাতে এবং লাভের সম্ভাবনা বাড়াতে সাহায্য করে। এই নিবন্ধে, ব্র্যাকেট অর্ডার কী, এটি কীভাবে কাজ করে, এর সুবিধা, অসুবিধা এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ এটি ব্যবহারের নিয়মাবলী বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে।

ব্র্যাকেট অর্ডার কী?

ব্র্যাকেট অর্ডার হল এমন একটি ট্রেডিং কৌশল যেখানে একই সাথে তিনটি অর্ডার দেওয়া হয়: একটি মূল অর্ডার এবং দুটি অপেক্ষমান অর্ডার। এই তিনটি অর্ডার একটি নির্দিষ্ট দামের সীমার মধ্যে সেট করা হয়। ব্র্যাকেট অর্ডার সাধারণত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং লাভ নিশ্চিতকরণ এর জন্য ব্যবহৃত হয়।

ব্র্যাকেট অর্ডারের তিনটি অংশ:

  • মূল অর্ডার (Main Order): এটি প্রথম দেওয়া অর্ডার, যা ট্রেডিং শুরু করে।
  • লিমিট অর্ডার (Limit Order): এটি মূল অর্ডারের উপরে একটি নির্দিষ্ট দামে সেট করা হয়। যখন দাম এই লিমিট অর্ডারের দামে পৌঁছায়, তখন এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিক্রি হয়ে যায় এবং লাভ নিশ্চিত করে।
  • স্টপ লস অর্ডার (Stop Loss Order): এটি মূল অর্ডারের নিচে একটি নির্দিষ্ট দামে সেট করা হয়। যদি দাম এই স্টপ লস অর্ডারের নিচে নেমে যায়, তখন এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিক্রি হয়ে যায় এবং ক্ষতি সীমিত করে।

ব্র্যাকেট অর্ডার কিভাবে কাজ করে?

ধরা যাক, একজন ট্রেডার একটি নির্দিষ্ট স্টকের বাইনারি অপশন কিনতে আগ্রহী। তিনি ব্র্যাকেট অর্ডার ব্যবহার করে নিম্নলিখিত তিনটি অর্ডার দিলেন:

১. মূল অর্ডার: স্টকটি ১০০ টাকায় কিনলেন। ২. লিমিট অর্ডার: স্টকটি ১০৫ টাকায় বিক্রি করার জন্য লিমিট অর্ডার দিলেন। ৩. স্টপ লস অর্ডার: যদি স্টকটির দাম ৯৫ টাকায় নেমে যায়, তবে তা বিক্রি করার জন্য স্টপ লস অর্ডার দিলেন।

এখানে, ট্রেডারের প্রত্যাশা হলো স্টকটির দাম বাড়বে এবং ১০৫ টাকায় পৌঁছালে তিনি লাভবান হবেন। কিন্তু যদি দাম কমে গিয়ে ৯৫ টাকায় পৌঁছায়, তবে স্টপ লস অর্ডার স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্টকটি বিক্রি করে দেবে, যা তার ক্ষতি কমাবে।

ব্র্যাকেট অর্ডারের প্রকারভেদ

ব্র্যাকেট অর্ডার বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে, যা ট্রেডারের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা যায়। নিচে কয়েকটি প্রধান প্রকার আলোচনা করা হলো:

১. বাই ব্র্যাকেট অর্ডার (Buy Bracket Order): এই অর্ডারে প্রথমে একটি স্টক কেনা হয়, তারপর উপরে লিমিট অর্ডার এবং নিচে স্টপ লস অর্ডার সেট করা হয়। এটি সাধারণত bullish মার্কেটের জন্য উপযুক্ত।

২. সেল ব্র্যাকেট অর্ডার (Sell Bracket Order): এই অর্ডারে প্রথমে একটি স্টক বিক্রি করা হয়, তারপর নিচে লিমিট অর্ডার এবং উপরে স্টপ লস অর্ডার সেট করা হয়। এটি bearish মার্কেটের জন্য উপযুক্ত।

৩. গুড-টিল- cancelled (GTC) ব্র্যাকেট অর্ডার: এই অর্ডার বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকে। যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লিমিট বা স্টপ লস অর্ডারে হিট না হয়, তবে অর্ডারটি সিস্টেমে খোলা থাকে।

ব্র্যাকেট অর্ডারের সুবিধা

ব্র্যাকেট অর্ডারের অনেক সুবিধা রয়েছে, যা ট্রেডারদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কয়েকটি প্রধান সুবিধা উল্লেখ করা হলো:

  • ঝুঁকি হ্রাস: স্টপ লস অর্ডার ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রেডাররা তাদের সম্ভাব্য ক্ষতি সীমিত করতে পারে।
  • লাভ নিশ্চিতকরণ: লিমিট অর্ডার ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রেডাররা একটি নির্দিষ্ট লাভে তাদের অপশন বিক্রি করে লাভ নিশ্চিত করতে পারে।
  • স্বয়ংক্রিয়তা: ব্র্যাকেট অর্ডার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে, তাই ট্রেডারদের সবসময় মার্কেট পর্যবেক্ষণ করতে হয় না।
  • সময় সাশ্রয়: ট্রেডারদের ম্যানুয়ালি অর্ডার পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় না, যা তাদের সময় সাশ্রয় করে।
  • মানসিক চাপ কমায়: যেহেতু অর্ডারগুলো আগে থেকেই সেট করা থাকে, তাই ট্রেডাররা মানসিক শান্তিতে ট্রেড করতে পারে।

ব্র্যাকেট অর্ডারের অসুবিধা

ব্র্যাকেট অর্ডারের কিছু অসুবিধা রয়েছে, যা ট্রেডারদের সম্পর্কে অবগত থাকা উচিত। নিচে কয়েকটি প্রধান অসুবিধা উল্লেখ করা হলো:

  • সীমিত লাভের সম্ভাবনা: লিমিট অর্ডার সেট করার কারণে, ট্রেডাররা দাম আরও বাড়লে বা কমলে অতিরিক্ত লাভ করতে পারে না।
  • স্লিপেজ (Slippage): দ্রুত পরিবর্তনশীল মার্কেটে, অর্ডারের দাম প্রত্যাশিত দাম থেকে ভিন্ন হতে পারে।
  • জটিলতা: নতুন ট্রেডারদের জন্য ব্র্যাকেট অর্ডার বোঝা এবং সেট করা কঠিন হতে পারে।
  • ভুল সেটআপ: ভুলভাবে ব্র্যাকেট অর্ডার সেট করলে, ট্রেডারদের অপ্রত্যাশিত ক্ষতি হতে পারে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ ব্র্যাকেট অর্ডার ব্যবহারের নিয়মাবলী

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ ব্র্যাকেট অর্ডার ব্যবহার করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়মাবলী অনুসরণ করা উচিত। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়মাবলী আলোচনা করা হলো:

১. মার্কেট বিশ্লেষণ: ব্র্যাকেট অর্ডার দেওয়ার আগে মার্কেট ভালোভাবে বিশ্লেষণ করা উচিত। টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ এর মাধ্যমে মার্কেটের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পেতে হবে।

২. সঠিক দাম নির্বাচন: লিমিট এবং স্টপ লস অর্ডারের জন্য সঠিক দাম নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দামগুলো ট্রেডারের ঝুঁকির মাত্রা এবং লাভের লক্ষ্যের উপর নির্ভর করে নির্বাচন করা উচিত।

৩. ভলিউম বিশ্লেষণ: ভলিউম বিশ্লেষণ করে মার্কেটের গতিবিধি বোঝা যায়। যদি ভলিউম বেশি থাকে, তবে ব্র্যাকেট অর্ডার কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

৪. ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ: ট্রেডারদের তাদের ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী স্টপ লস অর্ডার সেট করতে হবে।

৫. নিয়মিত পর্যবেক্ষণ: ব্র্যাকেট অর্ডার দেওয়ার পরেও মার্কেট নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা উচিত। প্রয়োজনে অর্ডার পরিবর্তন বা বাতিল করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

৬. ব্রোকার নির্বাচন: ব্র্যাকেট অর্ডার সমর্থন করে এমন একটি নির্ভরযোগ্য ব্রোকার নির্বাচন করা উচিত।

ব্র্যাকেট অর্ডার এবং অন্যান্য ট্রেডিং কৌশল

ব্র্যাকেট অর্ডার অন্যান্য ট্রেডিং কৌশলের সাথে সমন্বিতভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। নিচে কয়েকটি কৌশল আলোচনা করা হলো:

  • মুভিং এভারেজ (Moving Average): মুভিং এভারেজ ব্যবহার করে মার্কেটের ট্রেন্ড নির্ধারণ করা যায় এবং সেই অনুযায়ী ব্র্যাকেট অর্ডার সেট করা যায়।
  • আরএসআই (RSI): RSI ব্যবহার করে ওভারবট এবং ওভারসোল্ড পরিস্থিতি চিহ্নিত করা যায় এবং সেই অনুযায়ী লিমিট এবং স্টপ লস অর্ডার সেট করা যায়।
  • ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট (Fibonacci Retracement): ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট ব্যবহার করে সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল নির্ধারণ করা যায় এবং সেই অনুযায়ী ব্র্যাকেট অর্ডার সেট করা যায়।
  • সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল (Support and Resistance Level): সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল চিহ্নিত করে ব্র্যাকেট অর্ডারের লিমিট এবং স্টপ লস নির্ধারণ করা যায়।
  • ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন (Candlestick Pattern): ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে মার্কেটের ভবিষ্যৎ গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়, যা ব্র্যাকেট অর্ডার সেট করতে সহায়ক।

ব্র্যাকেট অর্ডারের উদাহরণ

উদাহরণস্বরূপ, একজন ট্রেডার যদি মনে করেন যে একটি নির্দিষ্ট স্টক বাড়বে, তবে তিনি নিম্নলিখিত ব্র্যাকেট অর্ডার দিতে পারেন:

  • মূল অর্ডার: স্টকটি ৫০ টাকায় কিনলেন।
  • লিমিট অর্ডার: স্টকটি ৫৫ টাকায় বিক্রি করার জন্য লিমিট অর্ডার দিলেন।
  • স্টপ লস অর্ডার: যদি স্টকটির দাম ৪৫ টাকায় নেমে যায়, তবে তা বিক্রি করার জন্য স্টপ লস অর্ডার দিলেন।

এই ক্ষেত্রে, যদি স্টকটির দাম ৫৫ টাকায় পৌঁছায়, তবে ট্রেডার ৫ টাকা লাভ করবেন। কিন্তু যদি দাম ৪৫ টাকায় নেমে যায়, তবে স্টপ লস অর্ডার স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্টকটি বিক্রি করে দেবে, যা তার ক্ষতি ৫ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবে।

উপসংহার

ব্র্যাকেট অর্ডার বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর একটি অত্যন্ত উপযোগী কৌশল। এটি ট্রেডারদের ঝুঁকি কমাতে, লাভ নিশ্চিত করতে এবং ট্রেডিং প্রক্রিয়াকে সহজ করতে সাহায্য করে। তবে, এই কৌশল ব্যবহারের আগে মার্কেট বিশ্লেষণ, সঠিক দাম নির্বাচন এবং ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, ব্র্যাকেট অর্ডার অন্যান্য ট্রেডিং কৌশলের সাথে সমন্বিতভাবে ব্যবহার করে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আরও জানতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা দেখুন। টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ সম্পর্কে আরও জানতে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ দেখুন। ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ সম্পর্কে আরও জানতে ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ দেখুন। ভলিউম বিশ্লেষণ সম্পর্কে আরও জানতে ভলিউম বিশ্লেষণ দেখুন। মুভিং এভারেজ সম্পর্কে আরও জানতে মুভিং এভারেজ দেখুন। আরএসআই সম্পর্কে আরও জানতে আরএসআই দেখুন। ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট সম্পর্কে আরও জানতে ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট দেখুন। সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল সম্পর্কে আরও জানতে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল দেখুন। ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন সম্পর্কে আরও জানতে ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন দেখুন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং সম্পর্কে আরও জানতে বাইনারি অপশন ট্রেডিং দেখুন। ট্রেডিং কৌশল সম্পর্কে আরও জানতে ট্রেডিং কৌশল দেখুন। ঝুঁকি সহনশীলতা সম্পর্কে আরও জানতে ঝুঁকি সহনশীলতা দেখুন। ব্রোকার নির্বাচন সম্পর্কে আরও জানতে ব্রোকার নির্বাচন দেখুন। অর্ডার প্রকার সম্পর্কে আরও জানতে অর্ডার প্রকার দেখুন। ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে আরও জানতে ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম দেখুন। বাজারের পূর্বাভাস সম্পর্কে আরও জানতে বাজারের পূর্বাভাস দেখুন। অর্থ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আরও জানতে অর্থ ব্যবস্থাপনা দেখুন। মানসিক প্রস্তুতি সম্পর্কে আরও জানতে মানসিক প্রস্তুতি দেখুন। ট্রেডিং জার্নাল সম্পর্কে আরও জানতে ট্রেডিং জার্নাল দেখুন।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер