বিহেভিয়ার-driven ডেভেলপমেন্ট

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়ন: একটি বিস্তারিত আলোচনা

ভূমিকা

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়ন (Behaviour-Driven Development বা BDD) হলো একটি সফটওয়্যার উন্নয়ন প্রক্রিয়া। এটি এক্সট্রিম প্রোগ্রামিং এবং টেস্ট-ড্রাইভেন ডেভেলপমেন্ট (TDD)-এর একটি সম্প্রসারিত রূপ। BDD-এর মূল উদ্দেশ্য হলো সফটওয়্যারকে ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে বোঝা এবং সে অনুযায়ী ডেভেলপ করা। এটি মূলত বিজনেস অ্যানালিস্ট, ডেভেলপার এবং টেস্টারদের মধ্যে একটি সাধারণ ভাষা তৈরি করে, যা প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তাগুলো স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করতে সাহায্য করে। এই নিবন্ধে, আমরা BDD-এর মূল ধারণা, সুবিধা, অসুবিধা, বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়নের মূল ধারণা

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়নের ভিত্তি হলো 'বিহেভিয়ার'। এখানে বিহেভিয়ার বলতে বোঝায় সিস্টেম কীভাবে কাজ করবে তার একটি সুস্পষ্ট বর্ণনা। BDD-এর মূল ধারণাগুলো হলো:

• ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ: BDD সবসময় ব্যবহারকারীর চাহিদা এবং প্রত্যাশার উপর জোর দেয়।
• উদাহরণ-ভিত্তিক সংজ্ঞা: সিস্টেমের আচরণকে বাস্তব উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়।
• সহযোগিতামূলক উন্নয়ন: BDD দলবদ্ধভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেয়, যেখানে ডেভেলপার, টেস্টার এবং বিজনেস অ্যানালিস্টরা একসাথে কাজ করে।
• স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষা: BDD-এর মাধ্যমে লেখা উদাহরণগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরীক্ষা করা যায়।

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়নের সুবিধা

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়নের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা রয়েছে। নিচে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা আলোচনা করা হলো:

• স্পষ্ট এবং বোধগম্য প্রয়োজনীয়তা: BDD ব্যবহারকারীদের ভাষায় সিস্টেমের আচরণ বর্ণনা করে, যা সকলের জন্য বোঝা সহজ হয়। এর ফলে ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনা কমে যায়।
• উন্নত যোগাযোগ: এটি বিজনেস এবং টেকনিক্যাল টিমের মধ্যে যোগাযোগ উন্নত করে, কারণ তারা একটি সাধারণ ভাষা ব্যবহার করে।
• উচ্চ গুণমান সম্পন্ন সফটওয়্যার: BDD-এর মাধ্যমে তৈরি করা সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী তৈরি হয়, ফলে এর গুণমান বৃদ্ধি পায়।
• দ্রুত প্রতিক্রিয়া: স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষার মাধ্যমে দ্রুত প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়, যা উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে।
• কম ত্রুটি: BDD-এর কারণে ত্রুটিগুলো আগেভাগে ধরা পড়ে, যা পরবর্তীতে বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে না।
• পুনরায় ব্যবহারযোগ্যতা: BDD-তে লেখা স্ক্রিপ্টগুলো পুনরায় ব্যবহার করা যায়, যা সময় এবং খরচ সাশ্রয় করে।

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়নের অসুবিধা

কিছু সুবিধা থাকা সত্ত্বেও, BDD-এর কিছু অসুবিধা রয়েছে যা ডেভেলপারদের বিবেচনা করতে হয়:

• শেখার সময়: BDD-এর জন্য নতুন সিনট্যাক্স এবং সরঞ্জাম শিখতে সময় লাগতে পারে।
• শুরুতে বেশি সময় লাগা: BDD-এর পরিকল্পনা এবং উদাহরণ তৈরি করতে শুরুতে বেশি সময় লাগতে পারে।
• পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা: যদি প্রয়োজন পরিবর্তন হয়, তবে BDD স্ক্রিপ্টগুলো আপডেট করা কঠিন হতে পারে।
• সরঞ্জামের অভাব: কিছু ক্ষেত্রে, BDD সমর্থনকারী সরঞ্জামের অভাব হতে পারে।
• দলের সহযোগিতা: BDD-এর সাফল্যের জন্য দলের সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতা অপরিহার্য, যা সবসময় সহজ নাও হতে পারে।

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়নের বাস্তবায়ন পদ্ধতি

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়ন বাস্তবায়নের জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করা হয়:

1. প্রয়োজনীয়তা সংগ্রহ: প্রথমে, ব্যবহারকারীর প্রয়োজনগুলো সংগ্রহ করতে হবে। এই ধাপে বিজনেস অ্যানালিস্ট এবং স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করে সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তাগুলো নির্ধারণ করা হয়। 2. ব্যবহারের পরিস্থিতি তৈরি: এরপর, সংগৃহীত প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ব্যবহারের পরিস্থিতি (Use Cases) তৈরি করতে হবে। এই পরিস্থিতিগুলো ব্যবহারকারী কীভাবে সিস্টেমের সাথে ইন্টার‍্যাক্ট করবে তা বর্ণনা করে। 3. উদাহরণ লেখা: প্রতিটি ব্যবহারের পরিস্থিতির জন্য উদাহরণ লিখতে হবে। এই উদাহরণগুলো Gherkin-এর মতো বিশেষ ভাষায় লেখা হয়। Gherkin একটি সহজবোধ্য ভাষা যা ইংরেজি ভাষায় কাছাকাছি এবং সহজেই বোঝা যায়। Gherkin সিনট্যাক্স হলো:

   ```gherkin
   Feature: Login Functionality
     Scenario: Successful Login
       Given User is on the Login Page
       When User enters valid username and password
       And Clicks on Login button
       Then User should be redirected to the Home Page

     Scenario: Unsuccessful Login
       Given User is on the Login Page
       When User enters invalid username and password
       And Clicks on Login button
       Then Error message should be displayed
   ```

4. স্ক্রিপ্ট তৈরি: Gherkin-এ লেখা উদাহরণগুলোর জন্য কোড লিখতে হবে। এই কোডগুলো সাধারণত Cucumber, SpecFlow বা Behat-এর মতো BDD ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে লেখা হয়। 5. পরীক্ষা চালানো: লেখা কোডগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরীক্ষা করার জন্য রান করা হয়। যদি কোনো পরীক্ষা ব্যর্থ হয়, তবে ডেভেলপাররা ত্রুটিগুলো সংশোধন করে পুনরায় পরীক্ষা চালায়। 6. পুনরাবৃত্তি: এই প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করা হয় যতক্ষণ না সমস্ত পরীক্ষা সফল হয় এবং সিস্টেম ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী কাজ করে।

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়নের সরঞ্জাম

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়নকে সমর্থন করার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম উপলব্ধ রয়েছে। নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় সরঞ্জাম আলোচনা করা হলো:

• Cucumber: এটি একটি বহুল ব্যবহৃত BDD ফ্রেমওয়ার্ক যা Ruby, Java, এবং JavaScript-এর মতো বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষা সমর্থন করে।
• SpecFlow: এটি .NET প্ল্যাটফর্মের জন্য একটি BDD ফ্রেমওয়ার্ক।
• Behat: এটি PHP-এর জন্য একটি BDD ফ্রেমওয়ার্ক।
• JBehave: এটি Java-এর জন্য একটি BDD ফ্রেমওয়ার্ক।
• Lettuce: এটি Python-এর জন্য একটি BDD ফ্রেমওয়ার্ক।

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়ন এবং অন্যান্য উন্নয়ন পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য

| বৈশিষ্ট্য | টেস্ট-ড্রাইভেন ডেভেলপমেন্ট (TDD) | বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়ন (BDD) | |---|---|---| | ফোকাস | কোডের গুণমান নিশ্চিত করা | ব্যবহারকারীর আচরণ বোঝা | | ভাষা | প্রোগ্রামিং ভাষা | সাধারণ ভাষা (যেমন Gherkin) | | উদ্দেশ্য | ইউনিট পরীক্ষা লেখা | ব্যবহারের পরিস্থিতি সংজ্ঞায়িত করা | | সহযোগিতা | ডেভেলপার | ডেভেলপার, টেস্টার, বিজনেস অ্যানালিস্ট | | উদাহরণ | কোড-ভিত্তিক উদাহরণ | ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে উদাহরণ |

টেস্ট-ড্রাইভেন ডেভেলপমেন্ট (TDD) এবং BDD প্রায়শই একসাথে ব্যবহৃত হয়। TDD মূলত ডেভেলপারদের জন্য, যেখানে BDD পুরো দলের জন্য একটি সাধারণ ভাষা সরবরাহ করে।

বাস্তব জীবনে বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়নের উদাহরণ

একটি অনলাইন শপিং ওয়েবসাইটের উদাহরণ নেওয়া যাক। BDD ব্যবহার করে এই ওয়েবসাইটের জন্য আমরা নিম্নলিখিত ব্যবহারের পরিস্থিতিগুলো তৈরি করতে পারি:

• পণ্য অনুসন্ধান: ব্যবহারকারী একটি নির্দিষ্ট পণ্য অনুসন্ধান করতে পারবে।
• কার্টে যোগ করা: ব্যবহারকারী পণ্যটিকে কার্টে যোগ করতে পারবে।
• চেকআউট: ব্যবহারকারী কার্টে থাকা পণ্যগুলোর জন্য অর্থ পরিশোধ করতে পারবে।
• অর্ডার নিশ্চিতকরণ: ব্যবহারকারী সফলভাবে অর্ডার করার পরে একটি নিশ্চিতকরণ বার্তা দেখতে পাবে।

এই প্রতিটি ব্যবহারের পরিস্থিতির জন্য Gherkin ভাষায় উদাহরণ তৈরি করা হবে এবং তারপর সেগুলোর জন্য কোড লেখা হবে।

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়নের ভবিষ্যৎ

বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়ন বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় এবং ভবিষ্যতে এর চাহিদা আরও বাড়বে বলে আশা করা যায়। আধুনিক সফটওয়্যার উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় BDD একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে উন্নত মানের সফটওয়্যার তৈরি করা সম্ভব, যা ব্যবহারকারীর চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম।

কিছু অতিরিক্ত রিসোর্স

• Agile software development
• Domain-driven design
• Continuous integration
• Continuous delivery
• Software testing
• User stories
• Acceptance criteria
• Gherkin
• Cucumber
• SpecFlow
• Behat
• JBehave
• Lettuce
• Test automation
• Regression testing
• Unit testing
• Integration testing
• System testing
• User acceptance testing
• DevOps

এই নিবন্ধটি বিহেভিয়ার-চালিত উন্নয়ন সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ধারণা প্রদান করে। আশা করি, এটি পাঠককে BDD সম্পর্কে জানতে এবং তাদের প্রকল্পে এটি বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করবে।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ