বাইনারি অপশন পরিভাষা
বাইনারি অপশন ট্রেডিং পরিভাষা
বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি জটিল বিষয়, যেখানে বিভিন্ন বিশেষায়িত শব্দ ব্যবহৃত হয়। এই শব্দগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকলে ট্রেডিং করা কঠিন হতে পারে। তাই, নতুন ট্রেডার এবং এই বিষয়ে আগ্রহী সকলের জন্য বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিভাষা এখানে আলোচনা করা হলো:
১. বাইনারি অপশন (Binary Option): বাইনারি অপশন হলো একটি আর্থিক চুক্তি, যেখানে বিনিয়োগকারী একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সম্পদের (যেমন: স্টক, কমোডিটি, কারেন্সি পেয়ার) দাম বাড়বে নাকি কমবে, তা অনুমান করেন। যদি অনুমান সঠিক হয়, তবে বিনিয়োগকারী একটি পূর্বনির্ধারিত লাভ পান; অন্যথায়, বিনিয়োগের সম্পূর্ণ পরিমাণ നഷ്ട হয়। এটি অল অর নাথিং ধরনের ট্রেডিং হিসাবেও পরিচিত।
২. কল অপশন (Call Option): কল অপশন হলো এমন একটি চুক্তি, যেখানে বিনিয়োগকারী মনে করেন যে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পদের দাম বাড়বে। যদি দাম বাড়ে, তবে বিনিয়োগকারী লাভ করেন। বুলিশ মার্কেট পরিস্থিতিতে এই অপশনটি ব্যবহার করা হয়।
৩. পুট অপশন (Put Option): পুট অপশন হলো এমন একটি চুক্তি, যেখানে বিনিয়োগকারী মনে করেন যে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পদের দাম কমবে। যদি দাম কমে, তবে বিনিয়োগকারী লাভ করেন। বেয়ারিশ মার্কেট পরিস্থিতিতে এই অপশনটি ব্যবহার করা হয়।
৪. স্ট্রাইক প্রাইস (Strike Price): স্ট্রাইক প্রাইস হলো সেই নির্দিষ্ট দাম, যেখানে অপশনটি কার্যকর হয়। অর্থাৎ, এই দামে পৌঁছালে বিনিয়োগকারী লাভ বা ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়।
৫. এক্সপায়ারি টাইম (Expiry Time): এক্সপায়ারি টাইম হলো সেই সময়সীমা, যার মধ্যে অপশনটি কার্যকর থাকতে পারে। এই সময়ের মধ্যে যদি সম্পদের দাম স্ট্রাইক প্রাইসের উপরে বা নিচে যায়, তবে বিনিয়োগকারী লাভ পান।
৬. পেআউট (Payout): পেআউট হলো বিনিয়োগের উপর লাভের পরিমাণ। বাইনারি অপশনে পেআউট সাধারণত শতকরা হারে দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি পেআউট ৭০% হয়, তবে বিনিয়োগকারী লাভের ৭০% পাবেন।
৭. রিস্ক (Risk): রিস্ক হলো বিনিয়োগের পরিমাণ হারানোর সম্ভাবনা। বাইনারি অপশনে রিস্ক সাধারণত বিনিয়োগের সম্পূর্ণ পরিমাণ পর্যন্ত হতে পারে। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৮. রিটার্ন (Return): রিটার্ন হলো বিনিয়োগ থেকে লাভের পরিমাণ। বাইনারি অপশনে রিটার্ন পেআউটের উপর নির্ভর করে।
৯. ইন-দ্য-মানি (In-the-Money): ইন-দ্য-মানি হলো সেই অবস্থা, যখন অপশনটি লাভজনক থাকে। অর্থাৎ, সম্পদের দাম স্ট্রাইক প্রাইসের উপরে (কল অপশনের জন্য) বা নিচে (পুট অপশনের জন্য) থাকে।
১০. আউট-অব-দ্য-মানি (Out-of-the-Money): আউট-অব-দ্য-মানি হলো সেই অবস্থা, যখন অপশনটি লোকসানি হয়। অর্থাৎ, সম্পদের দাম স্ট্রাইক প্রাইসের উপরে (পুট অপশনের জন্য) বা নিচে (কল অপশনের জন্য) থাকে।
১১. অ্যাট-দ্য-মানি (At-the-Money): অ্যাট-দ্য-মানি হলো সেই অবস্থা, যখন সম্পদের দাম স্ট্রাইক প্রাইসের সমান থাকে।
১২. প্রিমিয়াম (Premium): প্রিমিয়াম হলো অপশনটি কেনার জন্য দেওয়া মূল্য।
১৩. বাইনারি (Binary): বাইনারি মানে হলো দুটি সম্ভাব্য ফলাফল - হয় লাভ, না হয় ক্ষতি। এই কারণে একে বাইনারি অপশন বলা হয়।
১৪. স্প্রেড (Spread): স্প্রেড হলো বিড (bid) এবং আস্ক (ask) প্রাইসের মধ্যে পার্থক্য।
১৫. বিড (Bid): বিড হলো কোনো অপশন কেনার জন্য সর্বোচ্চ মূল্য, যা ক্রেতা দিতে রাজি।
১৬. আস্ক (Ask): আস্ক হলো কোনো অপশন বিক্রির জন্য সর্বনিম্ন মূল্য, যা বিক্রেতা নিতে রাজি।
১৭. ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম (Trading Platform): ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম হলো সেই ওয়েবসাইট বা সফটওয়্যার, যেখানে বাইনারি অপশন ট্রেড করা হয়। ভালো ব্রোকার নির্বাচন করা এক্ষেত্রে জরুরি।
১৮. টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস (Technical Analysis): টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস হলো চার্ট এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে ভবিষ্যতের দামের গতিবিধিPredict করার পদ্ধতি। ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন এর মাধ্যমেও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
১৯. ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস (Fundamental Analysis): ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস হলো অর্থনৈতিক খবর এবং অন্যান্য মৌলিক বিষয় বিশ্লেষণ করে সম্পদের দামের পূর্বাভাস দেওয়ার পদ্ধতি।
২০. রিস্ক ম্যানেজমেন্ট (Risk Management): রিস্ক ম্যানেজমেন্ট হলো বিনিয়োগের ঝুঁকি কমানোর কৌশল। স্টপ-লস অর্ডার এবং পজিশন সাইজিং এর মাধ্যমে ঝুঁকি কমানো যায়।
২১. ভলিউম (Volume): ভলিউম হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো সম্পদের কতগুলো ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে তার পরিমাণ। ভলিউম বিশ্লেষণ ট্রেডিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
২২. ভোলাটিলিটি (Volatility): ভোলাটিলিটি হলো দামের পরিবর্তনশীলতা। উচ্চ ভোলাটিলিটি সাধারণত বেশি লাভের সুযোগ তৈরি করে, তবে ঝুঁকিও বেশি থাকে। এটআর (Average True Range) ইন্ডিকেটর দিয়ে ভোলাটিলিটি পরিমাপ করা যায়।
২৩. ট্রেন্ড (Trend): ট্রেন্ড হলো দামের সামগ্রিক গতিবিধি। আপট্রেন্ড (uptrend) মানে দাম বাড়ছে, ডাউনট্রেন্ড (downtrend) মানে দাম কমছে, এবং সাইডওয়েজ (sideways) মানে দাম তেমন বাড়ছে বা কমছে না। মুভিং এভারেজ ব্যবহার করে ট্রেন্ড নির্ণয় করা যায়।
২৪. সাপোর্ট (Support): সাপোর্ট হলো সেই মূল্যস্তর, যেখানে দাম সাধারণত কমতে বাধা পায়।
২৫. রেজিস্ট্যান্স (Resistance): রেজিস্ট্যান্স হলো সেই মূল্যস্তর, যেখানে দাম সাধারণত বাড়তে বাধা পায়।
২৬. ইন্ডিকেটর (Indicator): ইন্ডিকেটর হলো mathematical calculation যা চার্টের ডেটার উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যৎ দামের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা দেয়। আরএসআই (Relative Strength Index), এমএসিডি (Moving Average Convergence Divergence) বহুল ব্যবহৃত কিছু ইন্ডিকেটর।
২৭. বুলিশ (Bullish): বুলিশ হলো এমন একটি বাজার পরিস্থিতি, যেখানে দাম বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
২৮. বেয়ারিশ (Bearish): বেয়ারিশ হলো এমন একটি বাজার পরিস্থিতি, যেখানে দাম কমার সম্ভাবনা থাকে।
২৯. ওভারবট (Overbought): ওভারবট হলো সেই অবস্থা, যখন কোনো সম্পদ অতিরিক্ত কেনা হয়েছে এবং দাম কমার সম্ভাবনা থাকে।
৩০. ওভারসোল্ড (Oversold): ওভারসোল্ড হলো সেই অবস্থা, যখন কোনো সম্পদ অতিরিক্ত বিক্রি করা হয়েছে এবং দাম বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
৩১. লিভারেজ (Leverage): লিভারেজ হলো ব্রোকার কর্তৃক প্রদত্ত একটি সুবিধা, যা বিনিয়োগকারীকে কম মূলধন দিয়েও বড় পজিশন নিতে সাহায্য করে।
৩২. মার্জিন (Margin): মার্জিন হলো বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্টে থাকা সেই পরিমাণ অর্থ, যা পজিশন খোলা রাখার জন্য প্রয়োজন।
৩৩. অটো ট্রেডিং (Auto Trading): অটো ট্রেডিং হলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেড করার জন্য প্রোগ্রাম ব্যবহার করা। ট্রেডিং রোবট এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
৩৪. সিগন্যাল (Signal): সিগন্যাল হলো ট্রেড করার জন্য দেওয়া প্রস্তাবনা, যা সাধারণত কোনো বিশেষজ্ঞ বা অটোমেটেড সিস্টেম প্রদান করে।
৩৫. ডেমো অ্যাকাউন্ট (Demo Account): ডেমো অ্যাকাউন্ট হলো একটি অনুশীলন অ্যাকাউন্ট, যেখানে আসল টাকা ব্যবহার না করে ট্রেডিংয়ের অনুশীলন করা যায়।
এই পরিভাষাগুলো বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মৌলিক বিষয়গুলো বুঝতে সাহায্য করবে। এছাড়াও, ট্রেডিংয়ের আগে ভালোভাবে শিক্ষা গ্রহণ করা এবং অনুশীলন করা জরুরি।
| Term | |||||||||||||||||||||||||
| Binary Option | Call Option | Put Option | Strike Price | Expiry Time | Payout | Risk | Return | In-the-Money | Out-of-the-Money | Technical Analysis | Fundamental Analysis | Volatility |
বাইনারি অপশন কৌশল এবং ট্রেডিং টিপস সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের অন্যান্য নিবন্ধগুলো দেখুন।
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
