বাংলাদেশের আয়কর ব্যবস্থা

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1
    1. বাংলাদেশের আয়কর ব্যবস্থা

ভূমিকা

আয়কর একটি দেশের রাজস্ব আদায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এটি সরকারের বাজেট প্রণয়ন এবং জনকল্যাণমূলক কাজে অর্থায়নের জন্য অপরিহার্য। বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর জাতীয় বাজেট পেশ করে, যেখানে আয়করের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এই নিবন্ধে বাংলাদেশের আয়কর ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক, যেমন - আয়করের প্রকারভেদ, করহার, কর ছাড়, কর পরিশোধের নিয়মাবলী এবং অনলাইন কর পরিশোধের পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

আয়করের প্রকারভেদ

বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের আয়করের প্রচলন রয়েছে। প্রধান আয়করগুলো হলো:

  • ব্যক্তিগত আয়কর: একজন ব্যক্তি তার উপার্জিত আয়ের উপর এই কর প্রদান করেন। এই আয়ের মধ্যে বেতন, ব্যবসা, বিনিয়োগ এবং অন্যান্য উৎস থেকে প্রাপ্ত আয় অন্তর্ভুক্ত। ব্যক্তিগত আয়কর ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয় এবং করদাতার আয়ের স্তরের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়।
  • কর্পোরেট আয়কর: কোম্পানি এবং অন্যান্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের আয়ের উপর এই কর আরোপ করা হয়। কর্পোরেট আয়কর সাধারণত ব্যক্তিগত আয়করের চেয়ে আলাদা হারে নির্ধারিত হয়।
  • উৎস কর: কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অন্যকে কোনো অর্থ পরিশোধ করার সময় সরকারের কাছে নির্দিষ্ট হারে কর কেটে রাখে, তাকে উৎস কর বলা হয়। উৎস কর সাধারণত বেতন, ভাড়া, সুদ, লভ্যাংশ ইত্যাদি পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়।
  • মূল্য সংযোজন কর (Value Added Tax - VAT): পণ্য ও পরিষেবার উপর এই কর আরোপ করা হয়। মূল্য সংযোজন কর ভোক্তাদের কাছ থেকে সংগৃহীত হয়, কিন্তু সরকার তা বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে আদায় করে।
  • সম্পদ কর: সম্পদ কর মূলত স্থানীয় সরকার কর্তৃক আরোপিত হয় এবং এর মাধ্যমে স্থাবর সম্পত্তি (যেমন: জমি, বাড়ি) এর উপর কর ধার্য করা হয়।

আয়কর গণনা ও করহার

বাংলাদেশের আয়কর ব্যবস্থা একটি ক্রমবর্ধমান হার (Progressive Tax System) কাঠামো অনুসরণ করে। অর্থাৎ, আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে করের হারও বৃদ্ধি পায়। ২০২২-২৩ করবর্ষের জন্য ব্যক্তিগত আয়করের হার নিচে উল্লেখ করা হলো:

২০২২-২৩ করবর্ষে ব্যক্তিগত আয়করের হার
! আয়ের পরিমাণ (টাকা) !! করের হার (%) !! 0 - 3,00,000 0 3,00,001 - 5,00,000 5 5,00,001 - 7,00,000 10 7,00,001 - 10,00,000 15 10,00,001 - 20,00,000 20 20,00,001 এর বেশি 25

কর্পোরেট আয়করের হার বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির জন্য ভিন্ন। সাধারণত, পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির জন্য কর্পোরেট আয়কর ২৫% এবং প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির জন্য ২২.৫% হয়।

কর ছাড়

আয়কর আইন, ২০২৩-এ করদাতাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের কর ছাড়ের সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো:

  • বিনিয়োগ ছাড়: নির্দিষ্ট কিছু খাতে বিনিয়োগ করলে কর ছাড় পাওয়া যায়, যেমন - শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ, বন্ডে বিনিয়োগ, এবং গৃহনির্মাণ ঋণ
  • চিকিৎসা খরচ: নিজের, স্ত্রী, সন্তান বা পিতামাতার চিকিৎসা খরচ বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কর ছাড়ের আওতায় আসে।
  • শিক্ষাব্যয়: সন্তান বা নিজের শিক্ষাব্যয়ের জন্য প্রদত্ত খরচ নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে কর ছাড় পাওয়া যায়।
  • দান-খয়রাত: নিবন্ধিত দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করলে কর ছাড় পাওয়া যায়।
  • জীবন বীমা: জীবন বীমা প্রিমিয়াম পরিশোধের উপর কর ছাড় পাওয়া যায়।
  • প্রভিডেন্ট ফান্ড: প্রভিডেন্ট ফান্ড-এ বিনিয়োগের উপর কর ছাড় পাওয়া যায়।

কর পরিশোধের নিয়মাবলী

আয়কর পরিশোধের নিয়মাবলী নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • করবর্ষ: বাংলাদেশে করবর্ষ শুরু হয় ১ জুলাই এবং শেষ হয় ৩০ জুন।
  • আয়কর রিটার্ন: প্রত্যেক করদাতাকে প্রতি বছর নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয়। সাধারণত, সময়সীমা ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত থাকে।
  • কর পরিশোধের পদ্ধতি: কর পরিশোধের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে, যেমন - ব্যাংক, ডাকঘর, অনলাইন এবং মোবাইল ব্যাংকিং।
  • ই-টিআইএন: ই-টিআইএন (Electronic Tax Identification Number) একটি অত্যাবশ্যকীয় নম্বর, যা করদাতাকে অনলাইনে কর সংক্রান্ত কাজ করতে সাহায্য করে।

অনলাইন কর পরিশোধের পদ্ধতি

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার অনলাইন কর পরিশোধের ব্যবস্থা চালু করেছে। এর মাধ্যমে করদাতারা ঘরে বসেই সহজে কর পরিশোধ করতে পারেন। অনলাইন কর পরিশোধের জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে:

১. জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (NBR) ওয়েবসাইটে (www.nbr.gov.bd) যান। ২. ই-পেমেন্ট অপশনটি নির্বাচন করুন। ৩. আপনার ই-টিআইএন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করুন। ৪. আপনার পছন্দের পেমেন্ট পদ্ধতি (যেমন - ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং) নির্বাচন করুন। ৫. পেমেন্ট সম্পন্ন করুন এবং রসিদ সংগ্রহ করুন।

আয়কর সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক

উপসংহার

বাংলাদেশের আয়কর ব্যবস্থা একটি জটিল প্রক্রিয়া। তবে, সরকারের আধুনিকীকরণ এবং অনলাইন সেবার প্রসারের ফলে কর প্রদান প্রক্রিয়া সহজতর হয়েছে। করদাতাদের উচিত আয়কর আইন সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান রাখা এবং সময়মতো কর পরিশোধ করে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা। নিয়মিতভাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নতুন নিয়মাবলী ওCircular অনুসরণ করা উচিত।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер