ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ

ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ (Friends of the Earth) একটি আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী নেটওয়ার্ক। এই সংস্থাটি পরিবেশ সুরক্ষার জন্য কাজ করে এবং বিভিন্ন পরিবেশগত সমস্যা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করে। এটি ১৯৭০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং পরবর্তীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শাখা বিস্তার লাভ করে। ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিবেশগত ন্যায়বিচার, জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং দূষণ কমানোর জন্য প্রচারণা চালায়।

সংস্থার ইতিহাস

ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ-এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৯ সালে ডেভিড ব্রাউন, ডেভিড ফক্স, গ্যাব্রিয়েল মুইরাস এবং স্যামুয়েল কারের হাত ধরে। তারা সিয়ার ক্লাব এবং অন্যান্য পরিবেশবাদী গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্যমান পার্থক্যগুলো দূর করে একটি নতুন, আরও সক্রিয় এবং রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী সংস্থা তৈরি করতে চেয়েছিলেন। ১৯৭০ সালে ওয়াশিংটন ডি.সি.-তে ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ-এর প্রথম অফিস খোলা হয়।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে, ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

কীটনাশক ব্যবহার হ্রাস করার জন্য প্রচারণা।
পারমাণবিক শক্তির বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশ সুরক্ষার জন্য আইন প্রণয়ন।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য চাপ সৃষ্টি।
বনভূমি ধ্বংস রোধ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ-এর প্রধান লক্ষ্যগুলো হলো:

পরিবেশগত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা: পরিবেশগত ঝুঁকির ক্ষেত্রে সমাজের দুর্বল এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা: জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করা।
জীববৈচিত্র্য রক্ষা: বিপন্ন প্রজাতি এবং তাদের আবাসস্থল রক্ষা করা।
দূষণ কমানো: বায়ু দূষণ, পানি দূষণ এবং মাটি দূষণ রোধ করা।
টেকসই উন্নয়ন: পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব কমিয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
কৃষি ব্যবস্থাকে পরিবেশ-বান্ধব করা : রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে জৈব কৃষির প্রসার ঘটানো।

কার্যক্রম

ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়ন করে। এর মধ্যে রয়েছে:

প্রচারণা ও লবিং: নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করার জন্য প্রচারণা চালানো এবং পরিবেশ বান্ধব নীতি প্রণয়নে সহায়তা করা।
গবেষণা ও বিশ্লেষণ: পরিবেশগত সমস্যাগুলো নিয়ে গবেষণা করা এবং তথ্য সংগ্রহ করে জনসমক্ষে প্রকাশ করা।
জনসচেতনতা বৃদ্ধি: কর্মশালা, সেমিনার, এবং প্রচারণার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
আইনগত পদক্ষেপ: পরিবেশ দূষণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
grassroots movement| তৃণমূল আন্দোলন: স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য আন্দোলন গড়ে তোলা।

ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ-এর কার্যক্রমের তালিকা
কার্যক্রম	বিবরণ	উদাহরণ
প্রচারণা ও লবিং	নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করা	জলবায়ু পরিবর্তন আইন প্রণয়নে সহায়তা করা
গবেষণা ও বিশ্লেষণ	পরিবেশগত সমস্যা নিয়ে গবেষণা	কীটনাশকের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে গবেষণা
জনসচেতনতা বৃদ্ধি	জনগণের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি	পরিবেশ দিবস উদযাপন
আইনগত পদক্ষেপ	দূষণকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা	অবৈধভাবে বনভূমি ধ্বংসের বিরুদ্ধে মামলা
তৃণমূল আন্দোলন	স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করা	নদী দূষণ রোধে স্থানীয় প্রতিবাদ

সাংগঠনিক কাঠামো

ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ একটি ফেডারেল সংস্থা। এর সদস্য সংগঠনগুলো বিভিন্ন দেশে স্বাধীনভাবে কাজ করে, তবে তারা একটি সাধারণ আন্তর্জাতিক কাঠামোর অধীনে সমন্বিতভাবে কাজ করে। এই কাঠামোর মধ্যে রয়েছে:

আন্তর্জাতিক প্রোগ্রাম ডিরেক্টর: সামগ্রিক আন্তর্জাতিক কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন করেন।
নীতি নির্ধারণ কমিটি: সংস্থার নীতি ও কৌশল নির্ধারণ করে।
সদস্য সংগঠন: বিভিন্ন দেশের জাতীয় শাখাগুলো।
সাপোর্টার নেটওয়ার্ক: ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের একটি নেটওয়ার্ক যারা ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ-কে সমর্থন করে।

ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ-এর কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জন

১৯৭০-এর দশকে, সংস্থাটি ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFCs)-এর ব্যবহার বন্ধ করার জন্য সফল প্রচারণা চালায়, যা ওজোন স্তরের ক্ষয় রোধে সহায়ক ছিল।
ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ কিয়োটো প্রোটোকল এবং প্যারিস চুক্তির মতো আন্তর্জাতিক জলবায়ু চুক্তিগুলো স্বাক্ষরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সংস্থাটি বিভিন্ন দেশে জ্বালানি কোম্পানিগুলোর দূষণ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করে এবং তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে সহায়তা করে।
ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ জেনেটিক্যালি মডিফাইড অর্গানিজম (GMO)-এর ব্যবহার এবং এর সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে।
প্লাস্টিক দূষণ রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তা করেছে এবং বিকল্প ব্যবহারের জন্য উৎসাহিত করেছে।

সমালোচনা

ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ কিছু সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। কিছু সমালোচক অভিযোগ করেন যে সংস্থাটি পরিবেশগত সমস্যাগুলোর সমাধানে খুব বেশি radical approach| চরমপন্থী অবস্থান নেয় এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করে। আবার কেউ কেউ বলেন যে সংস্থাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কাজ করে এবং নির্দিষ্ট কিছু এজেন্ডা বাস্তবায়নে মনোযোগ দেয়।

তবে, ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ তাদের কাজের মাধ্যমে পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে এবং এটি বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী পরিবেশবাদী সংস্থা হিসেবে পরিচিত।

ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং

যদিও ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ একটি পরিবেশবাদী সংস্থা এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি আর্থিক কার্যক্রম, এদের মধ্যে একটি পরোক্ষ সম্পর্ক বিদ্যমান। পরিবেশগত বিপর্যয় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সংকটগুলো অর্থনৈতিকভাবে বিভিন্ন শিল্প এবং বিনিয়োগের উপর প্রভাব ফেলে। এই প্রেক্ষাপটে, বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা পরিবেশ-বান্ধব কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগের মাধ্যমে ESG বিনিয়োগ (Environmental, Social, and Governance investment) করতে উৎসাহিত হতে পারেন।

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের কিছু কৌশল:

ট্রেন্ড ফলোয়িং : বাজারের গতিবিধির উপর ভিত্তি করে ট্রেড করা।
ব্রেকআউট ট্রেডিং : নির্দিষ্ট মূল্যস্তরের বাইরে বাজারের মুভমেন্টের সুযোগ নেওয়া।
রিভার্সাল ট্রেডিং : বাজারের দিক পরিবর্তনের পূর্বাভাস করে ট্রেড করা।
পিনি বার কৌশল : ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন বিশ্লেষণের মাধ্যমে ট্রেড করা।
বোলিঙ্গার ব্যান্ড : বাজারের অস্থিরতা পরিমাপ করে ট্রেড করা।

ভলিউম বিশ্লেষণ কৌশল:

অন ব্যালেন্স ভলিউম (OBV) : ভলিউমের পরিবর্তন দেখে বাজারের গতিবিধি বোঝা।
Accumulation/Distribution Line : ক্রয় ও বিক্রয়ের চাপ বিশ্লেষণ করা।
Volume Price Trend (VPT) : মূল্য এবং ভলিউমের সমন্বয়ে বাজারের প্রবণতা নির্ণয় করা।
Chaikin Money Flow (CMF) : নির্দিষ্ট সময়কালে অর্থের প্রবাহ পরিমাপ করা।
Moving Averages : ভলিউমের গড় বিশ্লেষণ করে বাজারের গতিবিধি বোঝা।

এই কৌশলগুলো ব্যবহার করে, বাইনারি অপশন ট্রেডাররা পরিবেশ-বান্ধব এবং টেকসই ব্যবসায়িক মডেল অনুসরণ করে এমন কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ করতে পারেন, যা ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ-এর লক্ষ্যগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ ভবিষ্যতে তাদের কার্যক্রম আরো বিস্তৃত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত communities| সম্প্রদায়গুলোকে সহায়তা করা।
টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রচারণা চালানো।
প্লাস্টিক দূষণ রোধে নতুন প্রযুক্তি এবং নীতি উদ্ভাবনে সহায়তা করা।
জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
পরিবেশগত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য advocacy| ওকালতি করা।

ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ বিশ্বাস করে যে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তাই, তারা ব্যক্তি, সরকার, এবং অন্যান্য সংস্থার সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে।

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

[ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট](https://www.foei.org/)
[ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)](https://foe.org/)

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ