ফ্রিকোয়েন্সি-ডিভিশন মাল্টিপল অ্যাক্সেস

ফ্রিকোয়েন্সি-ডিভিশন মাল্টিপল অ্যাক্সেস (Frequency-Division Multiple Access বা FDMA) একটি মাল্টিপল অ্যাক্সেস পদ্ধতি যা ওয়্যারলেস যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে, উপলব্ধ ফ্রিকোয়েন্সি স্পেকট্রামকে একাধিক ছোট ফ্রিকোয়েন্সি চ্যানেলে ভাগ করা হয় এবং প্রতিটি চ্যানেল একজন ব্যবহারকারীকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বরাদ্দ করা হয়। এর ফলে একাধিক ব্যবহারকারী একই সময়ে যোগাযোগ করতে পারে, কিন্তু তারা প্রত্যেকে ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে ডেটা প্রেরণ করে।

এফডিএমএ-র মূল ধারণা

এফডিএমএ-র মূল ধারণা হল ফ্রিকোয়েন্সি রিসোর্সকে ভাগ করে দেওয়া। প্রতিটি ব্যবহারকারীকে একটি নির্দিষ্ট ব্যান্ডউইথ বরাদ্দ করা হয়, যার মধ্যে তারা তাদের ডেটা প্রেরণ করতে পারে। এই ব্যান্ডউইথগুলি একে অপরের থেকে সুরক্ষিত থাকে গার্ড ব্যান্ড ব্যবহারের মাধ্যমে। গার্ড ব্যান্ড হল দুটি সংলগ্ন ফ্রিকোয়েন্সি চ্যানেলের মধ্যে একটি ছোট ফাঁকা স্থান, যা ইন্টারফেরেন্স কমাতে সাহায্য করে।

এফডিএমএ-র মূল বৈশিষ্ট্য
বৈশিষ্ট্য
ফ্রিকোয়েন্সি বিভাজন		চ্যানেল বরাদ্দ		গার্ড ব্যান্ড		ব্যান্ডউইথ		মাল্টিপ্লেক্সিং

এফডিএমএ কিভাবে কাজ করে?

এফডিএমএ পদ্ধতিতে, প্রথমে বেস স্টেশন থেকে একটি সংকেত প্রেরণ করা হয়। এই সংকেতটি একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে থাকে। এরপর, মোবাইল স্টেশন সেই সংকেতটিকে গ্রহণ করে এবং তার ডেটা একটি ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে প্রেরণ করে। বেস স্টেশন এবং মোবাইল স্টেশন উভয়ই তাদের নিজ নিজ ফ্রিকোয়েন্সি চ্যানেলে ডেটা আদান-প্রদান করে।

উদাহরণস্বরূপ, ধরা যাক একটি মোট স্পেকট্রাম 10 MHz এবং এটিকে 5টি চ্যানেলে ভাগ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি চ্যানেলের ব্যান্ডউইথ হবে 2 MHz। যদি 5 জন ব্যবহারকারী থাকে, তবে প্রত্যেককে একটি করে চ্যানেল বরাদ্দ করা হবে। প্রত্যেক ব্যবহারকারী 2 MHz ব্যান্ডউইথের মধ্যে তাদের ডেটা প্রেরণ করতে পারবে।

এফডিএমএ-র সুবিধা

সরল বাস্তবায়ন: এফডিএমএ পদ্ধতিটি বাস্তবায়ন করা তুলনামূলকভাবে সহজ।
কম জটিলতা: এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মডুলেশন এবং ডিমডুলেশন সার্কিট তুলনামূলকভাবে সরল।
ইন্টারফেরেন্স নিয়ন্ত্রণ: গার্ড ব্যান্ড ব্যবহারের মাধ্যমে ইন্টারফেরেন্স কমানো যায়।
ফ্রিকোয়েন্সি পুনর্ব্যবহার: সীমিত ফ্রিকোয়েন্সি রিসোর্স দক্ষতার সাথে ব্যবহার করা যায়। ফ্রিকোয়েন্সি প্ল্যানিং এর মাধ্যমে ফ্রিকোয়েন্সি পুনর্ব্যবহার করা সম্ভব।

এফডিএমএ-র অসুবিধা

স্পেকট্রাম অপচয়: গার্ড ব্যান্ড ব্যবহারের কারণে কিছু পরিমাণ স্পেকট্রাম অব্যবহৃত থাকে, যা স্পেকট্রাম অপচয়ের কারণ হতে পারে।
নমনীয়তার অভাব: একবার ফ্রিকোয়েন্সি চ্যানেলগুলো বরাদ্দ করা হয়ে গেলে, সেগুলোকে পরিবর্তন করা কঠিন।
হ্যান্ডওভার জটিলতা: যখন একজন ব্যবহারকারী একটি সেল থেকে অন্য সেলে যায়, তখন ফ্রিকোয়েন্সি হ্যান্ডওভার জটিল হতে পারে।
ব্যান্ডউইথ সীমাবদ্ধতা: প্রতিটি চ্যানেলের ব্যান্ডউইথ সীমিত হওয়ায় ডেটা ট্রান্সমিশন রেট কম হতে পারে।

এফডিএমএ-র প্রকারভেদ

এফডিএমএ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন:

ন্যারোব্যান্ড এফডিএমএ: এই পদ্ধতিতে খুব ছোট ব্যান্ডউইথের চ্যানেল ব্যবহার করা হয়। এটি সাধারণত ভয়েস কমিউনিকেশন-এর জন্য ব্যবহৃত হয়।
ব্রডব্যান্ড এফডিএমএ: এই পদ্ধতিতে বড় ব্যান্ডউইথের চ্যানেল ব্যবহার করা হয়। এটি সাধারণত ডেটা কমিউনিকেশন-এর জন্য ব্যবহৃত হয়।
অ্যাডাপ্টিভ এফডিএমএ: এই পদ্ধতিতে চ্যানেলের ব্যান্ডউইথ ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন করা যায়।

এফডিএমএ-র ব্যবহারিক প্রয়োগ

এফডিএমএ প্রথম প্রজন্মের সেলুলার নেটওয়ার্ক যেমন অ্যানালগ মোবাইল ফোন সিস্টেম (যেমন AMPS) এ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। এছাড়াও, এটি কিছু স্যাটেলাইট যোগাযোগ এবং বেতার যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হয়।

এফডিএমএ এবং অন্যান্য মাল্টিপল অ্যাক্সেস পদ্ধতির মধ্যে তুলনা

অন্যান্য মাল্টিপল অ্যাক্সেস পদ্ধতির সাথে এফডিএমএ-র একটি তুলনা নিচে দেওয়া হলো:

মাল্টিপল অ্যাক্সেস পদ্ধতির তুলনা
পদ্ধতি	সুবিধা
এফডিএমএ	সরল বাস্তবায়ন, কম জটিলতা, ইন্টারফেরেন্স নিয়ন্ত্রণ		টিডিএমএ	স্পেকট্রাম ব্যবহার দক্ষতা, নমনীয়তা		সিডিএমএ	উচ্চ ক্ষমতা, ইন্টারফেরেন্স প্রতিরোধ ক্ষমতা		ওএফডিএমএ	উচ্চ ডেটা রেট, মাল্টিপাথ ফেইডিং প্রতিরোধ ক্ষমতা

এফডিএমএ-র ভবিষ্যৎ

যদিও এফডিএমএ বর্তমানে 4G ও 5G নেটওয়ার্কে তেমন ব্যবহৃত হয় না, তবে এর মূল ধারণাগুলো অন্যান্য আধুনিক মাল্টিপল অ্যাক্সেস পদ্ধতিতে কাজে লাগানো হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ওএফডিএমএ (Orthogonal Frequency-Division Multiple Access) যা 4G এবং 5G নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত হয়, তা এফডিএমএ-র একটি উন্নত সংস্করণ।

এফডিএমএ সম্পর্কিত অতিরিক্ত তথ্য

মডুলেশন এবং ডিমডুলেশন: এফডিএমএ সিস্টেমে ব্যবহৃত সংকেত মডুলেশন এবং ডিমডুলেশন প্রক্রিয়া।
চ্যানেল প্ল্যানিং: ফ্রিকোয়েন্সি চ্যানেলগুলো কিভাবে বরাদ্দ করা হয় তার পরিকল্পনা।
ইন্টার-সেল ইন্টারফেরেন্স: একটি সেলের সংকেত অন্য সেলে কিভাবে ইন্টারফেরেন্স সৃষ্টি করে।
স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট: ফ্রিকোয়েন্সি স্পেকট্রাম কিভাবে পরিচালনা করা হয়।
ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন স্ট্যান্ডার্ড: বিভিন্ন ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন স্ট্যান্ডার্ড এবং তাদের মধ্যে এফডিএমএ-র ব্যবহার।
গার্ড ইন্টারভাল: সংকেতের মধ্যে অতিরিক্ত সময় যোগ করে ইন্টারফেরেন্স কমানো।
ফ্রিকোয়েন্সি হপিং: ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তন করে যোগাযোগ স্থাপন করা।
ডুপ্লেক্সিং: একই ফ্রিকোয়েন্সিতে ডেটা আদান-প্রদান করার পদ্ধতি।
মাল্টিপাথ ফেইডিং: সংকেতের একাধিক পথে প্রতিফলনের কারণে সৃষ্ট সমস্যা।
সিগন্যাল টু নয়েজ রেশিও: সংকেতের শক্তি এবং নয়েজের মধ্যে সম্পর্ক।
বিট এরর রেট: ডেটা ট্রান্সমিশনে ত্রুটির হার।
কোড ডিভিশন মাল্টিপল অ্যাক্সেস: অন্য একটি মাল্টিপল অ্যাক্সেস পদ্ধতি।
টাইম ডিভিশন মাল্টিপল অ্যাক্সেস: অন্য একটি মাল্টিপল অ্যাক্সেস পদ্ধতি।
স্প্রেড স্পেকট্রাম: একটি যোগাযোগ কৌশল যা সংকেতকে বিস্তৃত ফ্রিকোয়েন্সিতে ছড়িয়ে দেয়।
বেস স্টেশন: ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মূল কেন্দ্র।
মোবাইল স্টেশন: ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কে ব্যবহারকারীর ডিভাইস।
সেলুলার নেটওয়ার্ক: ওয়্যারলেস যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত নেটওয়ার্ক।
অ্যান্টেনা: সংকেত প্রেরণ এবং গ্রহণের জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস।
ট্রান্সমিটার: সংকেত প্রেরণ করার ডিভাইস।
রিসিভার: সংকেত গ্রহণ করার ডিভাইস।

এই নিবন্ধটি ফ্রিকোয়েন্সি-ডিভিশন মাল্টিপল অ্যাক্সেস (এফডিএমএ) সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ধারণা প্রদান করে। কারণ।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ