ফিলিপাইন

ফিলিপাইন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপরাষ্ট্র। এটি প্রায় ৭,৬৪১টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং পাপুয়া নিউগিনি-র সাথে এর সীমান্ত রয়েছে। ম্যানিলা দেশটির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। ফিলিপাইনের ইতিহাস, সংস্কৃতি, অর্থনীতি এবং ভূ-রাজনীতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময়।

ইতিহাস

ফিলিপাইনের ইতিহাস হাজার হাজার বছর আগের। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে প্রমাণিত হয় যে প্রায় ৫০,০০০ বছর আগে এখানে মানুষের বসতি ছিল। দ্বাদশ শতাব্দীতে এখানে বিভিন্ন ক্ষুদ্র রাজ্য এবং সালতানাত গড়ে ওঠে। ১৫২১ সালে ফার্দিনান্দ ম্যাগেলান ফিলিপাইনে পৌঁছান এবং এটিকে স্পেনের উপনিবেশ হিসেবে ঘোষণা করেন। প্রায় ৩৩৩ বছর ধরে ফিলিপাইন স্প্যানিশ শাসনের অধীনে ছিল। স্প্যানিশ-আমেরিকান যুদ্ধ-এর পর ১৮৯৮ সালে ফিলিপাইন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-এর অধীনে আসে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান ফিলিপাইন দখল করে নেয়, কিন্তু ১৯৪৬ সালে ফিলিপাইন স্বাধীনতা লাভ করে।

ভূগোল

ফিলিপাইন প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ার-এর উপর অবস্থিত হওয়ায় এখানে ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত প্রায়ই ঘটে। দেশটির ভূখণ্ড মূলত পার্বত্য এবং এখানে অনেক ক্রান্তীয় অরণ্য রয়েছে। ফিলিপাইনের দীর্ঘতম নদী হলো রিও গ্রান্ডে ডি কাগান। এখানে মায়ন আগ্নেয়গিরি অবস্থিত, যা একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি।

ফিলিপাইনের বৃহত্তম দ্বীপসমূহ
দ্বীপের নাম	আয়তন (কিমি²)	জনসংখ্যা (২০২০)
লুজন	১৭০,৫৯৯	৬৭.৪ মিলিয়ন
মিন্ডানাও	৯৭,৫৩০	২৩.৭ মিলিয়ন
ভিসায়াস	১৬,৬৭২	১০.১ মিলিয়ন
পালওয়ান	১২,১৮৪	২.২ মিলিয়ন

জলবায়ু

ফিলিপাইনের জলবায়ু ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু। এখানে সারা বছর তাপমাত্রা উষ্ণ থাকে এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। বর্ষাকাল জুন থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ঘূর্ণিঝড় এবং টাইফুন প্রায়শই ফিলিপাইনকে আঘাত করে।

সরকার ও রাজনীতি

ফিলিপাইন একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। রাষ্ট্রপতি হলেন রাষ্ট্রের প্রধান এবং সরকারের প্রধান। ফিলিপাইনের সংবিধান অনুযায়ী, এখানে আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগ রয়েছে। আইনসভা দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট - ফিলিপাইনের সিনেট এবং ফিলিপাইনের প্রতিনিধি পরিষদ।

অর্থনীতি

ফিলিপাইনের অর্থনীতি মূলত কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাত-এর উপর নির্ভরশীল। ধান, কোকোনাট, আনারস, কলা এবং চিনি এখানকার প্রধান কৃষিজ ফসল। শিল্পখাতে ইলেকট্রনিক্স, টেক্সটাইল, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন উল্লেখযোগ্য। পর্যটন শিল্প ফিলিপাইনের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিদেশের মুদ্রা প্রেরণের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ফিলিপিনো শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ফিলিপাইনের অর্থনীতির প্রধান সূচক (২০২৩)
সূচক	পরিমাণ
জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন)	$404.28 বিলিয়ন
জিডিপি বৃদ্ধির হার	৫.৬%
মাথাপিছু জিডিপি	$3,634
মুদ্রাস্ফীতি	৬.৮%

জনসংখ্যা ও সংস্কৃতি

ফিলিপাইনের জনসংখ্যা প্রায় ১১৫ মিলিয়ন। এখানকার প্রধান ভাষা হলো ফিলিপিনো এবং ইংরেজি। ফিলিপিনো সংস্কৃতিতে স্প্যানিশ, আমেরিকান, চীনা এবং মালাঈ সংস্কৃতির প্রভাব দেখা যায়। ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্ম এখানকার প্রধান ধর্ম। ফিলিপাইনেরা তাদের আতিথেয়তা, হাসি-খুশি স্বভাব এবং শক্তিশালী পারিবারিক বন্ধনের জন্য পরিচিত।

ফিলিপাইনের খাদ্য সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। অ্যাডোবো, সিনিগং, লেচোন এবং প্যানসিট এখানকার জনপ্রিয় খাবার।

পর্যটন

ফিলিপাইন পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। এখানকার সুন্দর সমুদ্র সৈকত, প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রতি বছর বহু পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

বোরাকাই: সাদা বালির জন্য বিখ্যাত।
পালাওয়ান: সুন্দর প্রবাল প্রাচীর এবং চুনাপাথরের পাহাড়ের জন্য পরিচিত।
বাগুইও: শীতল আবহাওয়া এবং পাহাড়ের দৃশ্যের জন্য জনপ্রিয়।
বান্টায়ান: শান্ত এবং মনোরম দ্বীপ।
ভিগান: স্প্যানিশ ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের জন্য ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান।

যোগাযোগ ও পরিবহন

ফিলিপাইনে সড়ক, রেল, বিমান এবং নৌপথের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান। ম্যানিলা-তে নিনয় অ্যাকুইনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অবস্থিত, যা দেশের বৃহত্তম বিমানবন্দর। এখানে ফিলিপাইন ন্যাশনাল রেলওয়েজ দেশের প্রধান রেলপথ।

শিক্ষা

ফিলিপাইনে শিক্ষা ব্যবস্থা মূলত তিনটি স্তরে বিভক্ত: প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা। ফিলিপাইনের শিক্ষা বিভাগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এখানে অনেক সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ রয়েছে। ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয় দেশের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে অন্যতম।

স্বাস্থ্য

ফিলিপাইনে সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে। ফিলিপাইনের স্বাস্থ্য বিভাগ স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং ফিলিপাইন

ফিলিপাইন সরকার বাইনারি অপশন ট্রেডিং এর উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। ফিলিপাইন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC) এই ধরনের ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মগুলির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। অবৈধ প্ল্যাটফর্মগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে, কিছু আন্তর্জাতিক ব্রোকার ফিলিপাইনের বাসিন্দাদের জন্য পরিষেবা প্রদান করে, কিন্তু ট্রেডারদের অবশ্যই স্থানীয় আইন সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন বিনিয়োগ। এখানে, একজন ট্রেডার একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের (যেমন: মুদ্রা, শেয়ার, কমোডিটি) দাম বাড়বে নাকি কমবে তা অনুমান করে। সঠিক অনুমান করলে লাভ হয়, ভুল হলে বিনিয়োগের সম্পূর্ণ পরিমাণ നഷ്ട হয়ে যায়।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং মানি ম্যানেজমেন্ট বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর গুরুত্বপূর্ণ দিক।

আরও দেখুন

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ