ফর্ম 15H

ফর্ম ১৫জি এবং ১৫এইচ: একটি বিস্তারিত আলোচনা

ভূমিকা: আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে, ভারতের বয়স্ক নাগরিক এবং যাদের আয়কর ছাড়ের প্রয়োজন, তাদের জন্য ফর্ম ১৫জি এবং ১৫এইচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ফর্মগুলি ব্যবহার করে, তারা তাদের ব্যাংক আমানত এবং অন্যান্য নির্দিষ্ট আয়ের উপর কর ছাড়ের জন্য আবেদন করতে পারেন। এই নিবন্ধে, আমরা ফর্ম ১৫এইচ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, এর নিয়মাবলী, যোগ্যতা, কীভাবে এটি পূরণ করতে হয় এবং এর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি জানব।

ফর্ম ১৫এইচ কী? ফর্ম ১৫এইচ হল একটি ঘোষণা ফর্ম, যা কোনো ব্যক্তি তার ব্যাংক, পোস্ট অফিস বা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রাখা আমানতের উপর অর্জিত সুদ থেকে কর ছাড়ের জন্য জমা দেন। এই ফর্মটি মূলত বয়স্ক নাগরিক (৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী) এবং যাদের মোট আয় করযোগ্য সীমার নিচে, তাদের জন্য প্রযোজ্য।

ফর্ম ১৫জি এবং ১৫এইচ এর মধ্যে পার্থক্য: ফর্ম ১৫জি এবং ১৫এইচ উভয়ই আয়কর ছাড়ের জন্য ব্যবহৃত হলেও, তাদের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। নিচে একটি টেবিলে এই পার্থক্যগুলি তুলে ধরা হলো:

ফর্ম ১৫জি এবং ১৫এইচ এর মধ্যে পার্থক্য

! ফর্ম ১৫জি |! ফর্ম ১৫এইচ

! ৬০ বছরের কম বয়সী ব্যক্তি |! ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তি

! বেতন, বাড়ি ভাড়া, সুদ ইত্যাদি যেকোনো উৎস থেকে আয় |! শুধুমাত্র সুদ (আমানত, পোস্ট অফিস ইত্যাদি)

! করযোগ্য সীমার নিচে হতে হবে |! করযোগ্য সীমার নিচে হতে হবে

! মোট আয় করযোগ্য সীমার নিচে এই মর্মে ঘোষণা |! ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী এবং মোট আয় করযোগ্য সীমার নিচে এই মর্মে ঘোষণা

ফর্ম ১৫এইচ-এর যোগ্যতা: ফর্ম ১৫এইচ জমা দেওয়ার জন্য নিম্নলিখিত যোগ্যতাগুলি পূরণ করতে হয়:

• বয়স: আবেদনকারীর বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
• আয়ের উৎস: আয়ের উৎস শুধুমাত্র সুদ হতে হবে, যেমন ব্যাংক আমানত, পোস্ট অফিস সঞ্চয় ইত্যাদি।
• মোট আয়: আবেদনকারীর মোট আয় আয়কর আইনের অধীনে করযোগ্য সীমা অতিক্রম করা উচিত নয়। অর্থাৎ, আপনার মোট আয় যদি ২,৫০,০০০ টাকার নিচে হয় তবে আপনি এই ফর্মটি পূরণ করতে পারবেন। (এই সীমা পরিবর্তনশীল, তাই সর্বশেষ নিয়মাবলী দেখে নেওয়া উচিত)।
• প্যান নম্বর: আবেদনকারীর বৈধ প্যান নম্বর থাকতে হবে।
• ঠিকানা: আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা সঠিক হতে হবে।

ফর্ম ১৫এইচ কীভাবে পূরণ করবেন: ফর্ম ১৫এইচ পূরণ করার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে পারেন: ১. ফর্ম ডাউনলোড: প্রথমে, আয়কর বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ফর্ম ১৫এইচ ডাউনলোড করুন। অথবা, আপনি সরাসরি এই লিঙ্কে গিয়ে ফর্মটি পেতে পারেন: [[1]] ২. ব্যক্তিগত তথ্য: ফর্মে আপনার নাম, ঠিকানা, প্যান নম্বর, বয়স এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন। ৩. আয়ের বিবরণ: আপনার আয়ের উৎস, যেমন ব্যাংক বা পোস্ট অফিসের নাম এবং আপনার অর্জিত সুদের পরিমাণ উল্লেখ করুন। ৪. ঘোষণা: ঘোষণা অংশে, আপনি নিশ্চিত করুন যে আপনার মোট আয় করযোগ্য সীমার নিচে এবং আপনি এই ফর্মের নিয়মাবলী মেনে চলছেন। ৫. স্বাক্ষর: ফর্মটি পূরণ করার পর, তারিখ দিয়ে স্বাক্ষর করুন।

ফর্ম ১৫এইচ জমা দেওয়ার নিয়ম: ফর্ম ১৫এইচ জমা দেওয়ার জন্য নিম্নলিখিত নিয়মগুলি অনুসরণ করতে পারেন:

• আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা: আপনি আপনার ব্যাংক, পোস্ট অফিস বা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এই ফর্মটি জমা দিতে পারেন।
• সময়সীমা: সাধারণত, আর্থিক বছর শেষ হওয়ার আগে এই ফর্মটি জমা দেওয়া উচিত।
• প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: ফর্মের সাথে আপনার পরিচয়পত্র এবং ঠিকানা প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হতে পারে।

ফর্ম ১৫এইচ-এর সুবিধা: ফর্ম ১৫এইচ জমা দেওয়ার প্রধান সুবিধা হল, আপনি আপনার আমানতের উপর অর্জিত সুদের উপর কর ছাড় পেতে পারেন। এর ফলে আপনার করের বোঝা কমে এবং আপনি বেশি পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করতে পারেন।

ফর্ম ১৫এইচ এবং ট্যাক্স সাভিং বিনিয়োগ: ফর্ম ১৫এইচ-এর পাশাপাশি, আপনি অন্যান্য ট্যাক্স সাভিং বিনিয়োগ বিকল্পগুলিও বিবেচনা করতে পারেন, যেমন:

• পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (PPF): এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ বিকল্প, যা আয়কর আইনের অধীনে কর ছাড় প্রদান করে।
• ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (NPS): এটি অবসর গ্রহণের জন্য একটি জনপ্রিয় বিনিয়োগ বিকল্প, যা কর ছাড়ের সুবিধা প্রদান করে।
• ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম (ELSS): এটি একটি মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগ, যা আয়কর আইনের অধীনে কর ছাড় প্রদান করে।
• জীবন বীমা : জীবন বীমা পলিসিতে বিনিয়োগ করেও কর সাশ্রয় করা যায়।

ফর্ম ১৫এইচ সম্পর্কিত সাধারণ ভুল এবং সমাধান: ফর্ম ১৫এইচ পূরণ করার সময় কিছু সাধারণ ভুল হতে পারে। নিচে কয়েকটি ভুল এবং তার সমাধান দেওয়া হলো:

• ভুল প্যান নম্বর: প্যান নম্বর ভুলভাবে লিখলে ফর্মটি বাতিল হতে পারে। তাই, প্যান নম্বর সঠিকভাবে লেখা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করুন।
• ভুল আয়ের বিবরণ: আয়ের বিবরণ ভুলভাবে দিলে কর ছাড় পাওয়া নাও যেতে পারে। তাই, আপনার আয়ের পরিমাণ সঠিকভাবে উল্লেখ করুন।
• সময়সীমা মিস করা: সময়সীমার মধ্যে ফর্ম জমা দিতে না পারলে, আপনি কর ছাড়ের সুবিধা নাও পেতে পারেন। তাই, সময়সীমার মধ্যে ফর্ম জমা দিন।

ফর্ম ১৫এইচ-এর নতুন নিয়মাবলী (২০২৩-২৪): আয়কর আইন এবং নিয়মাবলী সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়। তাই, ফর্ম ১৫এইচ জমা দেওয়ার আগে সর্বশেষ নিয়মাবলী সম্পর্কে অবগত থাকা জরুরি। ২০২৩-২৪ সালের জন্য, কিছু নতুন নিয়মাবলী চালু হয়েছে, যা নিচে উল্লেখ করা হলো:

• আয়কর ছাড়ের সীমা: করযোগ্য আয়ের সীমা পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন, যদি আপনার মোট আয় ৫,০০,০০০ টাকার নিচে হয়, তবে আপনি এই ফর্মটি ব্যবহার করে কর ছাড় পেতে পারেন।
• ডিজিটাল স্বাক্ষর: আপনি এখন ডিজিটাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে অনলাইনেও ফর্ম ১৫এইচ জমা দিতে পারেন।

গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক:

• আয়কর বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: [[2]]
• ফর্ম ১৫এইচ ডাউনলোড করার লিঙ্ক: [[3]]
• ট্যাক্স সাভিং বিনিয়োগ বিকল্প: [[4]]

ফর্ম ১৫এইচ সম্পর্কিত প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ): ১. ফর্ম ১৫এইচ কে জমা দিতে পারে? উত্তর: ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী যে সকল ব্যক্তির মোট আয় করযোগ্য সীমার নিচে, তারা এই ফর্মটি জমা দিতে পারেন।

২. ফর্ম ১৫এইচ জমা দেওয়ার সময়সীমা কী? উত্তর: সাধারণত, আর্থিক বছর শেষ হওয়ার আগে এই ফর্মটি জমা দেওয়া উচিত।

৩. আমি যদি ফর্ম ১৫এইচ পূরণ করতে ভুল করি, তাহলে কী হবে? উত্তর: আপনি যদি ফর্ম ১৫এইচ পূরণ করতে ভুল করেন, তবে আপনার কর ছাড়ের আবেদন বাতিল হতে পারে।

৪. ফর্ম ১৫এইচ জমা দেওয়ার জন্য কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন? উত্তর: ফর্মের সাথে আপনার পরিচয়পত্র, ঠিকানা প্রমাণ এবং প্যান কার্ডের কপি জমা দিতে হতে পারে।

৫. আমি কি অনলাইনে ফর্ম ১৫এইচ জমা দিতে পারি? উত্তর: হ্যাঁ, আপনি ডিজিটাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে অনলাইনে ফর্ম ১৫এইচ জমা দিতে পারেন।

উপসংহার: ফর্ম ১৫এইচ বয়স্ক নাগরিকদের জন্য একটি অত্যন্ত उपयोगी ফর্ম, যা তাদের আয়কর সাশ্রয়ে সাহায্য করে। এই ফর্মটি সঠিকভাবে পূরণ করে এবং সময়মতো জমা দিয়ে, আপনি আপনার করের বোঝা কমাতে পারেন এবং আর্থিক পরিকল্পনাকে আরও কার্যকর করতে পারেন। এই নিবন্ধটি আপনাকে ফর্ম ১৫এইচ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেছে এবং আশা করি এটি আপনার জন্য সহায়ক হবে।

অতিরিক্ত অভ্যন্তরীণ লিঙ্ক:

১. আয়কর ২. প্যান কার্ড ৩. আয়কর রিটার্ন ৪. ফিনান্সিয়াল প্ল্যানিং ৫. বিনিয়োগ ৬. সঞ্চয় ৭. আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৮. ব্যাংক আমানত ৯. পোস্ট অফিস সঞ্চয় ১০. করযোগ্য আয় ১১. আয়কর আইন ১২. ডিজিটাল স্বাক্ষর ১৩. পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (PPF) ১৪. ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (NPS) ১৫. ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম (ELSS) ১৬. ট্যাক্স সাভিং মিউচুয়াল ফান্ড ১৭. বীমা ১৮. আর্থিক পরামর্শক ১৯. আয়কর ছাড় ২০. ফর্ম ১৬ ২১. ফর্ম ১২বিবি ২২. ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স ২৩. ডিভিডেন্ড আয় ২৪. ভ্যাট (VAT) ২৫. জিএসটি (GST)

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ