প্রাইভেট ইকুইটি

প্রাইভেট ইকুইটি (Private Equity) হলো এমন বিনিয়োগ যা পাবলিক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিগুলোতে করা হয়। এই ধরনের বিনিয়োগ সাধারণত কর্পোরেট পুনর্গঠন, অধিগ্রহণ, বা কোম্পানির প্রবৃদ্ধিFinancing-এর জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে পেনশন ফান্ড, endowment, বীমা কোম্পানি, এবং উচ্চ সম্পদ সম্পন্ন ব্যক্তিরা।

প্রাইভেট ইকুইটির প্রকারভেদ

প্রাইভেট ইকুইটি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, এদের মধ্যে কিছু প্রধান প্রকার নিচে উল্লেখ করা হলো:

leveraged buyout (LBO): এটি প্রাইভেট ইকুইটির সবচেয়ে পরিচিত রূপ। এক্ষেত্রে, বিনিয়োগকারীরা ঋণের (debt) মাধ্যমে অর্জিত কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং কোম্পানির সম্পদ ব্যবহার করে ঋণ পরিশোধ করে। Leveraged buyout একটি জটিল প্রক্রিয়া, যেখানে কোম্পানির ভবিষ্যৎ আয় এবং সম্পদের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়।

venture capital (VC): ভেঞ্চার ক্যাপিটাল হলো প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা startup এবং ছোট কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগের উদ্দেশ্য হলো কোম্পানির দ্রুত প্রবৃদ্ধি এবং উচ্চ রিটার্ন অর্জন। Venture capital বিনিয়োগ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, তবে সফল হলে লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি।

growth equity: গ্রোথ ইকুইটি হলো প্রতিষ্ঠিত এবং দ্রুত বর্ধনশীল কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগ কোম্পানিকে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং নতুন বাজারে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। Growth equity সাধারণত ভেঞ্চার ক্যাপিটালের চেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ।

distressed investing: ডিস্ট্রেসড ইনভেস্টিং হলো আর্থিক সংকটে পড়া কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগের উদ্দেশ্য হলো কোম্পানিকে পুনর্গঠন করে তার মূল্য বৃদ্ধি করা। Distressed investing অত্যন্ত জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

mezzanine financing: এটি ঋণ এবং ইক্যুইটির মিশ্রণ। এই ধরনের বিনিয়োগ সাধারণত কোম্পানির মূলধন কাঠামোকে শক্তিশালী করতে ব্যবহৃত হয়। Mezzanine financing LBO-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে।

প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগের প্রক্রিয়া

প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগের প্রক্রিয়া সাধারণত কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়:

1. লক্ষ্য নির্ধারণ: বিনিয়োগকারীরা প্রথমে তাদের বিনিয়োগের লক্ষ্য নির্ধারণ করে, যেমন - কোন শিল্পে বিনিয়োগ করতে চায়, বিনিয়োগের সময়কাল কত হবে, এবং প্রত্যাশিত রিটার্ন কেমন হবে।

2. কোম্পানি চিহ্নিতকরণ: এরপর, বিনিয়োগকারীরা উপযুক্ত কোম্পানি চিহ্নিত করে, যাদের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এই ক্ষেত্রে, Due diligence একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যেখানে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, পরিচালনা পর্ষদ, এবং বাজারের অবস্থান মূল্যায়ন করা হয়।

3. আলোচনা ও চুক্তি: কোম্পানি চিহ্নিত করার পর, বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির মালিকপক্ষের সাথে বিনিয়োগের শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা করে এবং একটি চুক্তি সম্পন্ন করে।

4. অর্থায়ন ও অধিগ্রহণ: চুক্তির পর, বিনিয়োগকারীরা প্রয়োজনীয় অর্থায়ন করে এবং কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নেয়।

5. মূল্য সংযোজন: বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির পরিচালন ব্যবস্থাকে উন্নত করে, খরচ কমায়, এবং নতুন বাজারে প্রবেশ করে কোম্পানির মূল্য বৃদ্ধি করে।

6. exits: বিনিয়োগের পর, বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে নেয়। এই exits বিভিন্ন উপায়ে হতে পারে, যেমন - IPO (Initial Public Offering), কৌশলগত বিক্রয়, অথবা অন্য প্রাইভেট ইকুইটি ফার্মের কাছে বিক্রয়। IPO একটি গুরুত্বপূর্ণ exits strategy।

প্রাইভেট ইকুইটির সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা:

উচ্চ রিটার্নের সম্ভাবনা: প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগে পাবলিক মার্কেটের চেয়ে বেশি রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যকরণ: প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগ পোর্টফোলিওকে বৈচিত্র্যময় করতে সাহায্য করে, যা ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
সরাসরি প্রভাব: বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির পরিচালন ব্যবস্থায় সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে, যা মূল্য বৃদ্ধিতে সহায়ক।
দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ: প্রাইভেট ইকুইটি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ, যা স্থিতিশীল রিটার্ন প্রদান করে।

অসুবিধা:

কম তরলতা: প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগে কম তরলতা (illiquidity) থাকে, অর্থাৎ বিনিয়োগ সহজে নগদে রূপান্তর করা যায় না।
উচ্চ ঝুঁকি: প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগে উচ্চ ঝুঁকি থাকে, বিশেষ করে startup এবং distressed কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে।
কম স্বচ্ছতা: পাবলিক মার্কেটের তুলনায় প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগে কম স্বচ্ছতা থাকে।
উচ্চ ব্যবস্থাপনা ফি: প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ডগুলো সাধারণত উচ্চ ব্যবস্থাপনা ফি নেয়।

প্রাইভেট ইকুইটি এবং পাবলিক ইকুইটির মধ্যে পার্থক্য

| বৈশিষ্ট্য | প্রাইভেট ইকুইটি | পাবলিক ইকুইটি | |---|---|---| | ট্রেডিং | পাবলিক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত নয় | পাবলিক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত | | তরলতা | কম | বেশি | | ঝুঁকি | উচ্চ | তুলনামূলকভাবে কম | | রিটার্ন | উচ্চ | তুলনামূলকভাবে কম | | স্বচ্ছতা | কম | বেশি | | বিনিয়োগের সময়কাল | দীর্ঘমেয়াদী | স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী |

প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগের কৌশল

প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল অবলম্বন করা হয়:

Due Diligence: বিনিয়োগের আগে কোম্পানির পুঙ্খানুপুঙ্খ মূল্যায়ন করা। Due diligence checklist ব্যবহার করে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যেতে পারে।
Valuation: কোম্পানির সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা। Valuation methods যেমন - Discounted Cash Flow (DCF) এবং Comparable Company Analysis ব্যবহার করা হয়।
Financial Modeling: ভবিষ্যৎ আর্থিক কর্মক্ষমতা прогнозирование করা। Financial modeling techniques ব্যবহার করে কোম্পানির সম্ভাব্য আয় এবং ব্যয় বিশ্লেষণ করা হয়।
Negotiation: কোম্পানির মালিকপক্ষের সাথে বিনিয়োগের শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা করা।
Post-Investment Management: বিনিয়োগের পর কোম্পানির পরিচালন ব্যবস্থাকে উন্নত করা এবং মূল্য বৃদ্ধি করা।

প্রাইভেট ইকুইটি ফার্ম

প্রাইভেট ইকুইটি ফার্ম হলো এমন সংস্থা, যারা প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগ করে। এই ফার্মগুলো সাধারণত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করে এবং সেই তহবিল বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে। কিছু উল্লেখযোগ্য প্রাইভেট ইকুইটি ফার্ম হলো:

Blackstone
KKR
Carlyle Group
TPG Capital
Apollo Global Management

প্রাইভেট ইকুইটির ভবিষ্যৎ

প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। বর্তমানে, প্রাইভেট ইকুইটি ফার্মগুলোর কাছে প্রচুর পরিমাণে শুকনো পাউডার (dry powder) রয়েছে, অর্থাৎ বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত অর্থ। এই অর্থ বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত। এছাড়াও, ESG investing (Environmental, Social, and Governance) প্রাইভেট ইকুইটিতে জনপ্রিয়তা লাভ করছে, যা টেকসই এবং দায়িত্বশীল বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে।

উপসংহার

প্রাইভেট ইকুইটি একটি জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং বিনিয়োগ ক্ষেত্র। তবে, সঠিক কৌশল এবং পরিচালনার মাধ্যমে উচ্চ রিটার্ন অর্জন করা সম্ভব। বিনিয়োগকারীদের উচিত প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগের ঝুঁকি এবং সুবিধা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে তারপর বিনিয়োগ করা।

Corporate finance Mergers and acquisitions Investment banking Financial analysis Risk management Portfolio management Capital markets Alternative investment Private equity valuation Due diligence process Leveraged buyout modeling Venture capital funding Growth equity strategy Distressed debt investing Mezzanine finance terms Private equity exits Fundraising for private equity Regulatory compliance in private equity ESG investing in private equity Impact investing Financial statement analysis Technical analysis Volume analysis Options trading strategies Candlestick patterns

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ